মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০২০

আমরা উপজাতি নই, ক্ষুদ্র জাতি: সন্তু লারমা

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা উপজাতি নই ক্ষুদ্র জাতি।’ খাগড়াছড়ির পানছড়ির দুদক ছড়ায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পিসিজেএসএস’র শীর্ষস্থানীয় নেতা রূপায়ন দেওয়ান, যোগাযোগ কমিটির আহ্বায়ক বাবু হংসধ্বজ চাকমা, অন্যতম সদস্য মো. শফি এবং পানছড়ি থানা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহাবুদ্দিন। ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২টায় শুরু হয়ে এ সংবাদ সম্মেলন বেলা ৩টায় শেষ হয়। সন্তু লারমা সংগঠনের পক্ষ থেকে উষ্ণ শুভেচ্ছা ও সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভিন্ন দশ ভাষাভাষি ও ভিন্ন জাতির আবাসভূমি পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিসত্তা, জাতীয় অস্তিত্ব এবং সংস্কৃতি ও কৃষ্টি রক্ষার ক্ষেত্রসমূহ বিপদের প্রেক্ষিতে জুম্ম জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ২১ বছর ধরে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি দুঃখের সাথে বলেন, আমাদের আন্দোলন সম্পর্কে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়, সভা-সমিতিতে অপব্যাখ্যা দিয়ে আমাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। —’ ‘তিনি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে পার্বত্য সমস্যা নিরসনের উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য সংবাদপত্রের প্রতি আহ্বান জানান।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উপজাতি নই, আমরা ক্ষুদ্র জাতি।’

শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০২০

মাটিরাঙ্গায় উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক নুর মোহাম্মদকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

খাগড়াছড়ি জেলাধীন মাটিরাঙ্গা পৌর এলাকার বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক নুর মোহাম্মদ টিপুকে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক চিকিৎসার নামে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। ২৪ জুলাই শুক্রবার ভোর ৪টায় দিকে ৩ জন উপজাতীয় ব্যক্তি নুর মোহাম্মদের বাড়িতে আসে। তাদের এক জনের স্ত্রীর প্রসব বেদনার কথা বলে চিকিৎসার জন্য নুর মোহাম্মদকে ডেকে নিয়ে যায়। দুপুর ১টার দিকে সাপমারা ব্রীজের নিচে হাত-পা বাধা ও বিবস্ত্র অবস্থায় নুর মোহাম্মদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া ও মহাসচিব আলমগীর কবিরসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

পাহাড়ে সাম্প্রতিক উৎকন্ঠা- সন্তু লারমা কি দায়িত্ব এড়াতে পারে?

পার্বত্য শান্তিচুক্তির দীর্ঘ ২২ বছর পেরিয়ে গেলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি অধরা রয়ে গেল। ১৯৯৭ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং তৎকালীন পিসিজেএসএস এর মাঝে সংঘঠিত শান্তি চুক্তির অন্যতম শর্ত হিসেবে তৎকালীন শান্তি বাহিনীর সকল সদস্যের অস্ত্র জমা দেওয়া এবং আত্মসমর্পণের কথা ছিল। চুক্তি পরবর্তী বিভিন্ন সময় তৎকালীন শান্তিবাহিনীর বেশ কিছু সদস্য আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলেও সন্তু লারমা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কিছু অস্ত্র জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেয়। পরবর্তীতে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং আদর্শিক কারণে পিসিজেএসএস তথা জেএসএস ভেঙে ১৯৯৮ সালে প্রসিত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে ইউপিডিএফ নামে একটি দলের জন্ম হয়। ২০১০ সালে জেএসএস আবার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে। সেইবার সন্তু লারমার একসময়ের সহযোগী প্রসিত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে জেএসএসের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী দল থেকে বের হয়ে জেএসএস সংস্কার নামে নতুন একটি সংগঠন গঠন করে। আবার ২০১৭ সালে তপন জ্যোতি চাকমা নেতৃত্ব ইউপিডিএফ ভেঙ্গে নতুন আরও একটি সংগঠন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক সৃষ্টি হয়। 

পার্বত্যাঞ্চলে গ্যাস অনুসন্ধানে ত্রি-মাত্রিক জরিপ চালাবে বাপেক্স

পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানে ত্রি-মাত্রিক জরিপ বা থ্রি-ডি সিসমিক সার্ভে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি-বাপেক্স। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এ নিয়ে গঠিত পার্বত্য অঞ্চল। আর এর সাথে যদি যুক্ত করা হয় চট্টগ্রামকে তা হবে দেশের মোট আয়তনের ১৩ শতাংশ। এই অঞ্চলকে ষাটের দশক থেকে তেল-গ্যাসের জন্য ধরা হয় সম্ভবনাময় একটি এলাকা। আর সেই পার্বত্য অঞ্চল থেকে গ্যাস খুঁজতে এবার ত্রি-মাত্রিক জরিপ করবে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি-বাপেক্স।
ত্রি-মাত্রিক জরিপ বা থ্রি-ডি সিসমিক সার্ভের মাধ্যমে অত্যন্ত দুর্গম ও জটিল এলাকায়ও ভূ-গঠনের সার্বিক চিত্র পাওয়া সম্ভব। মাটির নিচের প্রাকৃতিক সম্পদেরও ধারণা পাওয়া যায়। বাপেক্সের বোর্ড সম্প্রতি এর অনুমোদন দিয়েছে বলে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড চেয়ারম্যান ও জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান এই অঞ্চলে গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম পাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে বলেন, পার্বত্যাঞ্চল, খাগড়াছড়ি থেকে নোয়াখালী, ফেনী পর্যন্ত অঞ্চলে আমরা থ্রি-ডি সিসমিক সার্ভে করবো।

বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২০

যে আগুনে পুড়ছে পাহাড়

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)’র সাথে সরকার চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল; প্রত্যাশা ছিল দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান হানাহানি বন্ধ করে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। চুক্তির পরও পাহাড়ে খুনোখুনি, গুম, অপহরণ এবং বেপরোয়া চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। তার উপর পূর্বে যেখানে একটি সশস্ত্র সংগঠন ছিল চুক্তির পর বিভিন্ন সময় সেটি ভেঙ্গে ৪টি সশস্ত্র সংগঠন তৈরি হওয়ায় এবং তাদের চাঁদাবাজি এবং আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে পার্বত্য জনগণের নাভিশ্বাস উঠার উপক্রম। এই অবস্থার মধ্যেই ২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর চুক্তির ২০ বছর উদযাপনকে ঘিরে পাহাড়ের অধিবাসীদের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা জন্মে, এবার অন্তত শান্তির অন্বেষণে নতুন কোনো পথ খুঁজবে বিবদমান পক্ষগুলো। অথচ, বাস্তবে ঘটে উল্টোটা।চুক্তির দুই দশক পূর্তির আগের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল প্রকার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়ার পরও ২ ডিসেম্বর রাজধানীতে আয়োজিত এক সম্মেলনে চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন জেএসএস সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে পাহাড়ে আগুন জ্বলবে।’এর পরিপ্রেক্ষিতে ৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জনসংহতি সমিতির চেয়ারম্যান সন্তু লারমার সঙ্গে বৈঠক করা হবে।’প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস কিংবা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বৈঠক কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই রাঙামাটিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অ্যাকশান শুরু হয়ে যায়।