রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিকথাঃ উদোর পিন্দি বুধোর ঘাড়ে


বাংলায় একটা প্রবাদ আছে- “উদোর পিন্দি বুধোর ঘাড়ে”। এই প্রবাদের সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হল পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিরা। যে কোন ঘটনা ঘটলেই তার দায়ভার সরকার, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী আর সেখানে বসবাসরত বাংগালীদের ঘাড়ে চাপানোর স্বভাবটা যেন তাদের রক্তে মিশে গেছে। এমনকি তারা গোপনে নিজেরা অপকর্ম করেও তার দায়ভার এদের উপর চাপায়। মিছিল, মিটিং, সমাবেশ করে একাকার করে ফেলে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকের মাধ্যমে তারা মিথ্যা, বানোয়াট আর বিভ্রান্তিকর তথ্য পোস্ট করে শান্তির পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টির পায়তারা করে আর নিজেদের অপকর্মগুলো ঢাকার ব্যর্থ অপচেষ্টা করে। পাহাড়ে একটা সংগঠন আছে, নাম- “হিল উইমেন্স ফেডারেশন”। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে যে এটি একটি নারী সংগঠন। পান থেকে চুন খসলেই এই সংগঠন বেশ সরব হয়ে ওঠে। তবে পাহাড়ে বসবাসরত কোন বাংগালী নারী বা ইসলাম ধর্মে রুপান্তরিত কোন উপজাতি নারী যদি উপজাতি পুরুষ কর্তৃক খুন, ধর্ষণ, অপহরণ বা শ্লীলতাহানির শিকার হয় এই সংগঠন তখন মুখে কুলুপ এটে বসে থাকে। হায় সেলুকাস! কি অদ্ভুত এক সংগঠন। কি অদ্ভুত তাদের মানসিকতা।

উপজাতিদের উদোর পিন্দি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর জ্বলন্ত প্রমাণ খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইতি চাকমার হত্যাকান্ড। কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এ হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি বাঙালিদের দায়ী করে নানা রং ছড়ানোর অপচেষ্টা চালায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে নানা অপপ্রচার চালায়। এমনকি বাংলাদেশ ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের ফেসবুকের চাকমা পেইজগুলোতেও আলোচনায় স্থান পায় ইতি চাকমা। তারা সকলেই এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি বাঙালিদের দায়ী করে পোস্ট প্রকাশ করে। 
ইতি চাকমার হত্যাকন্ডের পর হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকান্ডে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবীতে মিছিল, সমাবেশ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জন, কালো ব্যাজ ধারণসহ নানান কর্মসূচি পালন করে উপজাতী সংগঠনগুলি। যেখানে বারবার তারা বাংগালীদেরকে দোষারোপ করে। কিন্তু সকল রহস্যের উন্মোচন করে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় তুষার চাকমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং আদালতে সে (তুষার চাকমা) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছে যে ৫ জন চাকমা যুবক এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এখন কথা হলো সেই সব উপজাতী সংগঠনগুলি নীরব কেন যারা ইতি চাকমার হত্যাকারীদের শাস্তি দাবী করেছিলো? হত্যাকারীতো ধরা পড়েছে এবং সে স্বীকারও করেছে এবার তাহলে তাদের ফাঁসির দাবীতে উপজাতী সংগঠনগুলি মিছিল, সমাবেশ করবে কি? খুনি তুষার চাকমার মা নিরূপা চাকমা ইউপিডিএফ সমর্থিত সাজেক নারী সমাজ সংগঠনের নেত্রী যে একসময় ইতি চাকমার হত্যাকারীদের ফাঁসি চেয়েছিলো সে কি এবার ইতি চাকমার হত্যাকারী তার নিজ ছেলের ফাঁসি দাবী করবে? 

সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক মারমা তরুণীকে শাহাদাত নামে এক বাঙালী যুবক ধর্ষণ করায় এর প্রবল প্রতিবাদ করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন। এ জন্য হিল উইমেন্স ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু ইতি চাকমার প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য গলা কেটে জবাই করে হত্যা করেছে রণী এবং তুষারসহ ৫ চাকমা যুবক। ইতি চাকমার ঘাতক এই ৫ চাকমা যুবকের বিরুদ্ধে হিলস উইমেন্স ফেডারেশন কি ব্যবস্থা নেয় তা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।