পার্বত্য অঞ্চলে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের এ অঞ্চলের দুর্গম পাহাড়ি পথ দিয়ে অবৈধ অস্ত্র আমদানি রোধে বিজিবিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে গহিন পাহাড়ি পথ দিয়ে অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের একটি চালান পার্বত্য জেলার সশস্ত্র গ্রুপগুলোর কাছে পৌঁছেছে। অবৈধ পথে আসা এসব আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক হাতবদল হয়ে দেশের অন্যান্য এলাকায় পাঠানো হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া অতীতে পার্বত্য অঞ্চলে তৎপর থাকা বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্যও অস্ত্র আমদানি করছে। এরই মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ১৬টি একে৪৭ রাইফেল ধরা পড়েছে। সম্প্রতি একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গোয়েন্দা সংস্থাটির তদন্ত প্রতিবেদনে পার্বত্যাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার
নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। পরে মন্ত্রণালয় থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রশাসনসহ সব গোয়েন্দা সংস্থাকে নিবিড় ও নিরবচ্ছিন্ন নজরদারিসহ সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। পরে মন্ত্রণালয় থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রশাসনসহ সব গোয়েন্দা সংস্থাকে নিবিড় ও নিরবচ্ছিন্ন নজরদারিসহ সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্রের চালান পাঠানোর নেপথ্যে রয়েছে মিয়ানমারের আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি)। শান্ত থাকা পার্বত্য এলাকায় আবারও অশান্ত করার চেষ্টা হিসেবে একটি গোষ্ঠী অস্ত্রগুলো নিয়ে এসেছে। পাহাড়ি এলাকার একটি সংগঠনের আড়ালে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী বা সংগঠন কিংবা জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকরাও এসব অস্ত্রের চালান আমদানি করতে পারে, যা শুধু পার্বত্য অঞ্চলেই নয়, দেশের অন্যান্য স্থানেও নাশকতায় ব্যবহৃত হতে পারে এসব অস্ত্র। সন্ত্রাসীদের হাতে এসব অস্ত্র গেলে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কোনো গোষ্ঠীই বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে পারবে না। দেশের অভ্যন্তরেও কাউকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালাতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সীমান্ত দিয়ে যাতে অস্ত্রসহ অবৈধ কিছু প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সীমান্ত বাহিনীসহ গোয়েন্দারা সতর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সীমান্ত দিয়ে যাতে অস্ত্রসহ অবৈধ কিছু প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সীমান্ত বাহিনীসহ গোয়েন্দারা সতর্ক রয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশের পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য এসব অস্ত্র আমদানি করছে। এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য এটি উদ্বেগজনক। গত বছরের আগস্টে এএলপির সহযোগিতায় একটি অস্ত্রের চালান আসে। যার মধ্যে ২৫টি রাইফেল ও গুলি রয়েছে। একই বছরের ডিসেম্বরে মিয়ানমারের কারেন প্রদেশে এএলপির অর্থ সম্পাদক ১৬টি একে৪৭ রাইফেলসহ ধরা পড়ে। চালানটির গন্তব্য ছিল তিন পার্বত্য জেলায়।
চলতি বছরের শুরুতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে নিজ বাসভবন থেকে একটি ম্যাগাজিন ৫ রাউন্ড তাজা গুলি ও যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি ফাইভ স্টার পিস্তলসহ গ্রেফতার করে। তিনি এখন জামিনে রয়েছেন।
গোয়েন্দাদের তথ্য মতে, তিন পার্বত্য জেলাসহ কক্সবাজারের দুর্গম পাহাড়ি সীমান্ত এখনও অরক্ষিত। সেখানে বিভিন্ন নামে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে আরাকান আর্মি (এএ), এএলপি এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সবচেয়ে বেশি তৎপর। সংগঠনগুলো ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। এর বাইরেও ছোট-বড় কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপও সক্রিয় রয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশ-ভারত ও বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের অরক্ষিত পাহাড়ি অঞ্চলের ৩৬৯ কিলোমিটার বিজিবির নজরদারি এবং টহল জোরদার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ভারত ও মিয়ানমারের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সহায়তায় দেশি-বিদেশি চক্র পার্বত্য এলাকায় নানা ষড়যন্ত্র ও অশান্তের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলোকে সংগঠিত করতে আর্থিক সহায়তাও দিচ্ছে। সেই সঙ্গে পার্বত্য জেলাগুলোয় সশস্ত্র দলগুলোকে কৌশলে ইন্ধন দিচ্ছে।
ফসিহ উদ্দীন মাহতাব: সূত্র: সমকাল
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]