শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭

মাটিরাঙা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী মনির আহাম্মদর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ

মাটিরাঙা উপজেলা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারীর অসদাচরণ, অনিয়ম, আর্থিক কেলেংকারী ও দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। মনির আহাম্মদ নামের ওই উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে এর আগেও দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগে। অভিযোগে শিক্ষকরা ১৩ টি অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে বলেন, স্লীপ বাবদ প্রতি স্কুল ১০০০ টাকা কওে ৮৭ স্কুলে ৮৭ হাজার, ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ ১৫%, প্রাক-প্রাথমিক ও আন্ত:ক্রীড়া বাবদ ১০০০ টাকা কওে ৮৭ স্কুলে ৮৭ হাজার, জিপিএফ লোন-১ হাজার, সার্বিস বুক-১ হাজার, পেনশন- প্রতি শিক্ষক হতে ৩০ হাজার, উচ্চ শিক্ষার অনুমতি ২ হাজার, বদলি আবেদন অগ্রায়ন ১০ হাজার, নতুন শিক্ষক যোগদান ২০ হাজার টাকা করে আদায় করেন। এছাড়াও শিক্ষকদের পাশাপাশি নিজ অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণসহ সপ্তাহে ২/৩ দিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত অফিস করেন বলে শিক্ষকরা অভিযোগে উল্লেখ করেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মাটিরাঙা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো: এরশাদ আলী আলোকিত পাহাড়কে বলেন, প্রতিবছর স্লিপের টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে মোটা অঙ্কের উৎকোচ দিতে হচ্ছে উপজেলা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী মনির আহাম্মদকে। টাকা না দেয়ায় গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের আন্ত:ক্রীড়া প্রতিযোগীতার বিল দেয়া হয়নি এ বিদ্যালয়কে। এছাড়া বিদ্যালয় মেরামত থেকে শুরু করে যেকোন কাজের জন্য শতকরা হারে কমিশন দাবি করেন তিনি।


বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, মাটিরাংগা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মংসাইপ্রু মারমা বলেন, তার অনিয়ম ও দূর্ণীতির কারণে শিক্ষকরা অতিষ্ঠ। এ বিষয়ে আমরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।

কীর্তি ভূষণ ত্রিপুরা নামে আরেক প্রধান শিক্ষক জানান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অযুহাতে টাকা দাবি করেন মনির আহাম্মদ। টাকা না দিলে সার্ভিস বুকে নয়ছয় করার হুশিয়ারী দেন। এমনকি নিজেদের শ্রমে গড়া জিপিএফ’র লোন নেয়ার সময়ও ১০০০-২০০০ টাকা করে উৎকোচ দিতে হয় তাকে। অন্যথায় ফাইলে স্বাক্ষর করেনা। বরণ ত্রিপুরা নামে এক সহকারী শিক্ষক জানান, নতুন শিক্ষকদের যোগদানের সময় মনির আহাম্মদকে টাকা না দিলে কাগজপত্র গ্রহণ কিংবা সার্ভিস বুক ওপেন করেন না। অনেক সময় শিক্ষকরা উচ্চ শিক্ষার অনুমতি নিতে গিয়েও তাকে উৎকোচ দিতে হয়। এককথায় পুরো শিক্ষা অফিস তাঁর কাছেই এক প্রকার জিম্মি। অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক নাম না প্রকাশের অনুরোধে জানান, দেড় বছর আগে অবসর গ্রহণ করেছি। সারাজীবনের সঞ্চয়ে গড়া প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তুলতে গিয়ে মনির আহাম্মদের কাছে বারবার গিয়েও কাজ হয়নি। তাঁর দাবিকৃত ৫০ হাজার টাকা না দেয়ায় কাগজপত্র এখনও তাঁর টেবিলে ফাইলবন্দী। মাটিরাঙা উপজেলা শিক্ষা অফিসের একজন কর্মচারী জানান, মনির আহাম্মদের কথায় পুরো শিক্ষা অফিস চলে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্যারও তাঁর হাতে জিম্মি। কিছুদিন আগে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সমাবেশ চাকমাকে অফিসের ভেতর লাঞ্ছিত করেছেন মনির আহাম্মদ। এছাড়া সপ্তাহে ১-২দিন অফিসে আসলেও নেশাগ্রস্ত থাকায় অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা-স্টাফের সাথে দূর্ব্যবহার করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মনির আহাম্মদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী জানান, মাটিরাঙা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নুরুজ্জামানকে গঠন কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাটিরাঙা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী মনির আহাম্মদর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]