শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭

পাহাড়ের সমস্যা নিয়ে আয়নাবাজি

পাহাড়ের মূল সমস্যা কি? সবার এখন একই প্রশ্ন। আন্দোলনের ধরন ও ক্ষমতা পিপাসু নেতাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে চাদাবাজঁ, সন্ত্রাস ও অবৈধ অস্ত্রই হলো পাহাড়ের মূল সমস্যা! আদতে কি তাই? পাহাড়ের ' মূল ' সমস্যা অস্ত্র, আর চাদাবাজঁ নয়! মূল সমস্যাকে আড়াল করার জন্য এই সমস্যাকে সামনে আনা হয়েছে! মূলত ২০১৪ সালে দীপাংকর তালুকদার হেরে যাওয়ার পর থেকেই সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিষয়টি সামনে এসেছে! পার্বত্য চট্টগ্রামে এমন কিছু আইন করা হয়েছে করা হয়েছে যার ফলে সেখানে বাঙালিদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিনত করা হয়েছে! আইনে অ-উপজাতি বলে উল্লেখ করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে বাঙালির জাতিসত্তার পরিচয়! আইনগুলো পাহাড়ে বাঙালি ও উপজাতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে! আইনের আওতায় বিভিন্ন অগ্রাধিকার সুযোগ নিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে উপজাতীয়রা! পিছিয়ে পরছে বাঙালি জনগোষ্ঠী!


২০১৪ সালের পূর্বে বাঙালি সংগঠনগুলো তাদের ন্যায্য আইনগত সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেতে কমবেশি সোচ্চার ছিলো! গত নির্বাচনে দাদা হেরে যাওয়ার পর পাহাড়ে অস্ত্রের বিষয়টি সামনে আসে! হেরে গিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করলেন দাদা! হারার পর দাদার মনে হলো পাহাড়ে অস্ত্র বেড়ে গেছে! কিন্তু যখন ক্ষমতায়(প্রতিমন্ত্রী) তখন অস্ত্রের কথা মনে পড়েনি! একবারে জন্যও পাহাড় থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করেনি!

কি হবে পাহাড় থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে?
বাঙালিরা কি তাদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাবে? পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন, জেলা পরিষদ আইন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন পরিবর্তন হবে কি? পাহাড়ের স্থানীয় পরিষদে বাঙালিদের সমান অংশগ্রহন সুযোগ উন্মুক্ত হবে কি? রাজাকারের ছেলের হাত থেকে নাগরিকত্ব সনদ নেওয়ার আইন বন্ধ হবে কি? পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে বাঙালি সম্প্রদায়ের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু হবে কি?

যদি নিজেদের অধিকার ফিরিয়ে পাওয়া না যায় তাহলে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বাঙালিরা ঝাপিয়ে পড়লো কেন?আমি বলবো বাঙালিরা ঝাপিয়ে পড়েনি! ক্ষমতার লালসায় রাজনৈতিক নেতারা বাঙালি সম্প্রদায়কে মূল সমস্যা থেকে দূরে রেখে অস্ত্রের মতো স্পর্শকাতর সমস্যা দিয়ে বুদ করে রেখেছে! সেই চক্রে হারিয়ে গিয়ে নিজেদের অধিকারের কথা ভুলেই গেছে বাঙালিরা! এখন আর নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে বাঙালি সংগঠনগুলোকে আন্দোলন করতে দেখা যায় না।

রাঙামাটি আওয়ামীলীগ প্রকাশ্যেই বলেছেন, যদি অস্ত্র উদ্ধার করা না হয় তাহলে রাঙামাটি আসন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্থী হলেও জয়ী হতে পারবে না! অর্থাৎ তাদের উদ্দেশ্য যেকোন মূল্য ক্ষমতায় যাওয়া! সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের সমস্যা এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই! তবে সেই সমস্যায় বাঙালিদের গা ভাসিয়ে দিলে হবেনা। বাঙালির যে সাংবিধানিক অধিকার সেটা আদায় করার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়াই বাঙালিদের মূল লক্ষ হওয়া উচিত!

অস্ত্র উদ্ধার না হলে যারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না বলে হায় হুতাশ করছে পাহাড় থেকে অস্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনটা তাদের উপরে ছেড়ে দেওয়াই ভালো। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি(লীগ বা বিএনপি) ওয়াদা দেয় যে, ক্ষমতায় গেলে পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালিদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে তাহলে তাদের পক্ষ হয়ে বাঙালি সম্প্রদায় একযোগে কাজ করে যাবে এতে কারো আপত্তি নেই!

সচেতন বাঙালিদের প্রতি উদাত্ত্ব আহবান, কোন দাদাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবেন না! নিজেদের নিয়ে চিন্তা করুন! নাগরিক হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য যেসব অধিকার পাপ্য তা আদায়ের জন্য যুগোপযোগী আন্দোলন গড়ে তুলুন!

[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]