শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৭

যে কারণে বাঘাইছড়ি উপজাতি সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য

বাঘাইছড়ি থেকে বছরে কয়েক কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। যে কারণে বাঘাইছড়ির গহীন অরণ্য অঞ্চল সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এখান থেকে চাঁদা আদায় করে পাহাড়ের গহীন শ্যামল অরণ্যে নিরাপদে বাস করা যায় বলে পাহাড়ের বিভিন্ন চাঁদাবাজ গ্রুপ এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে ঘাঁটি করে আছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলাটি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এ উপজেলাটির আয়তন সমতলের একটি জেলার সমান। জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ। এখানে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বৃহৎ চিরহরিৎ প্রাকৃতিক বন। বনে রয়েছে নানা জীববৈচিত্রের বন্যপ্রাণী। এখানে রয়েছে এশিয়ার বিখ্যাত কর্ণফুলী পেপার মিলের কাঁচামাল সংগ্রহের বিশাল বন।

এই বন থেকে ঠিকাদারেরা প্রতিবছর মিলের জন্য কয়েক কোটি টাকার কাঁচামাল সংগ্রহ করেন। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, সন্ত্রাসীরা ওই সব ঠিকাদারদের কাছ থেকে নীরবে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করে থাকে। চাঁদার পরিমাণ গাছের বেলায় ফুটপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা এবং বাঁশের ক্ষেত্রে হাজার প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিরাপদে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করার জন্য বাঘাইছড়ি উর্বর স্থান। তাই পার্বত্য শান্তিচুক্তির পক্ষ-বিপক্ষ ইউপিডিএফ ও জেএসএস সংস্কার গ্রুপের ক্যাডারেরা এ উপজেলাকে একেকটি অঞ্চলে ভাগ করে নিয়েছে। সাজেকে সড়ক তৈরি হওয়ায় সাজেকের সংরক্ষিত বন বর্তমানে অনেকটা বিলীন হয়ে গেছে। বিশেষ করে সন্ত্রাসীরা কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করায় বন বিভাগের লোকেরা অবৈধ কাঠ পাচারকারীকে তোয়াজ করে চলে। আবার সন্ত্রাসীরা মাঝে মধ্যে তাদের শক্তি প্রদর্শন করে। ১৫ আগস্টে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংর্ঘষের ঘটনাটিও ছিল অনুরূপ শক্তি প্রদর্শনের একটি ঘটনা। এ ঘটনায় ৫ সন্ত্রাসী নিহত ও ৮টি ভারি অস্ত্রসহ বিপুলসংখ্যক গুলি উদ্ধার করা হয়। নিহত সন্ত্রাসীদের পরনে সেনাবাহিনীর পোশাক ছিল। সম্প্রতি পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের পরনে সেনাবাহিনীর পোশাকের রঙের ড্রেস দেখা যাচ্ছে।

পার্বত্যাঞ্চলের ২৫টি উপজেলার মধ্যে শুধু বাঘাইছড়ি উপজেলায় পাহাড়ের তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। অন্য কোন উপজেলায় তিন গ্রুপ একসঙ্গে নেই। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, বাঘাইছড়ির দুর্গম এলাকায় আরও বেশকিছু ঘাঁটি রয়েছে। এসব ঘাঁটি থেকে সন্ত্রাসীরা ভারি অস্ত্র নিয়ে চাঁদা আদায় করার জন্য লোকালয়ে এসে শক্তির মহড়াও দিয়ে যায়।


বিগত উপজেলা নির্বাচনে বাঘাইছড়ি উপজেলায় জেএসএস নেতা বড়ঋষি চাকমার উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়া এবং গত বছর সাজেকে নতুন থানা করায় সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা একটু কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এলাকায় তাদের শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য সম্প্রতি সংস্কারপন্থী ক্যাডাররা মরিয়া হয়ে ওঠেছে। তারা চলতি বছরের ২৩ এপ্রিলে সাজেকে সেনাবাহিনী সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তখন সেনাবাহিনী সদস্যদের পাল্টা গুলিতে এক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছিল। এবার তারা উপজেলা সদরের কাছে এসে শক্তি প্রদর্শন করতে গেলে বাঘাইহাট জোন টের পায়; ফলে সেনা টহল মুভ করায় এ সংঘর্ষ হয়।

ওই সংঘর্ষের দায় এ পর্যন্ত কোন পক্ষ স্বীকার করেনি। এদিকে শনিবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৫ সন্ত্রাসীর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার বিকেলে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ জানান। শান্তিচুক্তির দীর্ঘ ১৮ বছর পর পাহাড় থেকে বড় ধরনের ভারি অস্ত্র উদ্ধার ও আর্মি পোশাক পরিহিত অবস্থায় সংঘর্ষে ৫ সন্ত্রাসী নিহত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথমÑ যে কারণে পাহাড়ের সচেতন মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গামাটি, ১৬ আগস্ট ॥ বাঘাইছড়ি থেকে বছরে কয়েক কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে পার্বত্য সন্ত্রাসীরা। যে কারণে বাঘাইছড়ির গহীন অরণ্য অঞ্চল সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এখান থেকে চাঁদা আদায় করে পাহাড়ের গহীন শ্যামল অরণ্যে নিরাপদে বাস করা যায় বলে পাহাড়ের বিভিন্ন চাঁদাবাজ গ্রুপ এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে ঘাঁটি করে আছে।

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলাটি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এ উপজেলাটির আয়তন সমতলের একটি জেলার সমান। জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ। এখানে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বৃহৎ চিরহরিৎ প্রাকৃতিক বন। বনে রয়েছে নানা জীববৈচিত্রের বন্যপ্রাণী। এখানে রয়েছে এশিয়ার বিখ্যাত কর্ণফুলী পেপার মিলের কাঁচামাল সংগ্রহের বিশাল বন।

এই বন থেকে ঠিকাদারেরা প্রতিবছর মিলের জন্য কয়েক কোটি টাকার কাঁচামাল সংগ্রহ করেন। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, সন্ত্রাসীরা ওই সব ঠিকাদারদের কাছ থেকে নীরবে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করে থাকে। চাঁদার পরিমাণ গাছের বেলায় ফুটপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা এবং বাঁশের ক্ষেত্রে হাজার প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিরাপদে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করার জন্য বাঘাইছড়ি উর্বর স্থান। তাই পার্বত্য শান্তিচুক্তির পক্ষ-বিপক্ষ ইউপিডিএফ ও জেএসএস সংস্কার গ্রুপের ক্যাডারেরা এ উপজেলাকে একেকটি অঞ্চলে ভাগ করে নিয়েছে। সাজেকে সড়ক তৈরি হওয়ায় সাজেকের সংরক্ষিত বন বর্তমানে অনেকটা বিলীন হয়ে গেছে। বিশেষ করে সন্ত্রাসীরা কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করায় বন বিভাগের লোকেরা অবৈধ কাঠ পাচারকারীকে তোয়াজ করে চলে। আবার সন্ত্রাসীরা মাঝে মধ্যে তাদের শক্তি প্রদর্শন করে। ১৫ আগস্টে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংর্ঘষের ঘটনাটিও ছিল অনুরূপ শক্তি প্রদর্শনের একটি ঘটনা। এ ঘটনায় ৫ সন্ত্রাসী নিহত ও ৮টি ভারি অস্ত্রসহ বিপুলসংখ্যক গুলি উদ্ধার করা হয়। নিহত সন্ত্রাসীদের পরনে সেনাবাহিনীর পোশাক ছিল। সম্প্রতি পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের পরনে সেনাবাহিনীর পোশাকের রঙের ড্রেস দেখা যাচ্ছে।

পার্বত্যাঞ্চলের ২৫টি উপজেলার মধ্যে শুধু বাঘাইছড়ি উপজেলায় পাহাড়ের তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। অন্য কোন উপজেলায় তিন গ্রুপ একসঙ্গে নেই। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, বাঘাইছড়ির দুর্গম এলাকায় আরও বেশকিছু ঘাঁটি রয়েছে। এসব ঘাঁটি থেকে সন্ত্রাসীরা ভারি অস্ত্র নিয়ে চাঁদা আদায় করার জন্য লোকালয়ে এসে শক্তির মহড়াও দিয়ে যায়।

বিগত উপজেলা নির্বাচনে বাঘাইছড়ি উপজেলায় জেএসএস নেতা বড়ঋষি চাকমার উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়া এবং গত বছর সাজেকে নতুন থানা করায় সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা একটু কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এলাকায় তাদের শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য সম্প্রতি সংস্কারপন্থী ক্যাডাররা মরিয়া হয়ে ওঠেছে। তারা চলতি বছরের ২৩ এপ্রিলে সাজেকে সেনাবাহিনী সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তখন সেনাবাহিনী সদস্যদের পাল্টা গুলিতে এক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছিল। এবার তারা উপজেলা সদরের কাছে এসে শক্তি প্রদর্শন করতে গেলে বাঘাইহাট জোন টের পায়; ফলে সেনা টহল মুভ করায় এ সংঘর্ষ হয়।

ওই সংঘর্ষের দায় এ পর্যন্ত কোন পক্ষ স্বীকার করেনি। এদিকে শনিবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৫ সন্ত্রাসীর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার বিকেলে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ জানান। শান্তিচুক্তির দীর্ঘ ১৮ বছর পর পাহাড় থেকে বড় ধরনের ভারি অস্ত্র উদ্ধার ও আর্মি পোশাক পরিহিত অবস্থায় সংঘর্ষে ৫ সন্ত্রাসী নিহত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম যে কারণে পাহাড়ের সচেতন মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]