সোমবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৮

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রাঙামাটিতে মহাসমাবেশ

পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম ও খুন বন্ধসহ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে মহাসমাবেশ হয়েছে। রবিবার সচেতন নাগরিক কমিটির আয়োজনে ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল এগারোটার দিকে সচেতন নাগরিক কমিটির নেতৃত্বে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল রাঙামাটি শহরের পৌর চত্বর থেকে শুরু হয়ে নিউ মার্কেটে গিয়ে হয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের জন্য দরকার স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ অবস্থা। সন্তুবাবুকে অনুরোধ করছি আপনিও শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন চান আমরাও চাই। চুক্তি আমরা একত্রে করেছি, বাস্তবায়নও আমরা একত্রে করতে চাই। আগে আপনি অবৈধ অস্ত্রধারীদের ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। তাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’ তিনি আরও বলেন,‘দেশি-বিদেশি শক্তি মিলে পাহাড়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। একাত্তরে রাজাকাররা যেভাবে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, তেমনিভাবে পাহাড়ের রাজাকারের বংশধররা আইএসআইয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এখানকার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’

মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব হাজি মুছা মাতব্বর, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, পৌরসভার মেয়র আবকর হোসেন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল।
জাতীয় মানবাধিকারের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেন,‘আওয়ামী লীগ নেত্রী ঝর্ণা খীসাকে হত্যার চেষ্টা, নানিয়ারচরে সাধারণ পথচারী বাঙালি নারীকে গুলি করা, জুরাছড়ি আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা ও বিলাইছড়ি আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যার চেষ্টাসহ এতোগুলো ঘটনায় আপনাদের কোনও কথা বলতে দেখিনি। তাহলে কি আমরা বুঝে নিব জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কারও অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে?’

বক্তারা সমাবেশে চাঁদাবাজিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, ‘অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোকে সতর্ক করে বলা হয়, ক্রমাগত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে এর পরিণতি শুভ হবে না। ভবিষ্যতে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হবে।’

সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই শহরের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যান চলাচল বন্ধ ছিল। সমাবেশে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মচারি ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ যোগ দেন। এছাড়াও রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ এসে সমাবেশে যোগ দেন। এছাড়াও সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিলে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পুরো শহর।