সোমবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৮

রাণীর ফেসবুক স্ট্যাটাস, মহাসমাবেশে সন্ত্রাস বিরোধী বক্তব্য-উষাতন তালুকদারের প্রতিবাদ

২৮ জানুয়ারি রবিবার সচেতন নাগরিক কমিটি কর্তৃক অায়োজিত বিক্ষোভ মহাসমাবেশ। বিক্ষোভ মহাসমাবেশে সকল নেতৃবৃন্দ চাকমা রাজার রাণী ইয়েন ইয়েন এর ব্যাপক সমালোচনা করেন। সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দাতা হিসেবে রাণীকে দায়ী করেন, দিপংকর তালুকদার, এমপি ফিরোজা বেগম চিনু, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সম্প্রতি রাঙ্গামাটি বিলাইছড়ি দুই কিশোরী নিয়ে রাণী ইয়েন ইয়েন উস্কানিমূল ফেসবুক প্রচার ও গঠনাকে অন্যভাবে প্রভাবিত করার ছিল তার উদ্দৈশ্য। পার্বত্য চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন হত্যাকান্ড নিয়ে রাণী ইয়েন ইয়েন চুপ ছিলো, এখন কেন হঠাৎ তৎপর? এসকল তৎপরতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি শৃংখলা অবনতি হবে বলে মহাসমাবেশ থেকে দাবি করে সচেতন নাগরিক কমিটি ও রাজনৈতিক ব্যবসায়ী মহলের নেতৃবৃন্দ।

মানবাধিকার নেত্রী বাঞ্চিতা চাকমা, চাকমা রাজ রাণী ইয়েন ইয়েন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ করেন সমাবেশ থেকে। লংগদু ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাণীর কর্মসূচী ঘোষণা নিয়ে ও সমালোচনা করেন। বিশাখা চাকমা, অায়না চাকমার ধর্ষণ নিয়ে কেন মানবাধিকার নেত্রী বাঞ্চিতা চাকমা, চাকমা রাজ রাণী নীরব ছিলেন? এমন অভিযোগ উঠে রাণীর বিরুদ্ধে। গত ২১ জানুয়ারি রাতে রাঙ্গামাটি বিলাইছড়ি ফারুয়া দুই বোনকে’ কে বা কাহারা ধর্ষণ করেন তা জানা যায়নি। পরবর্তীতে অাঞ্চলিক সংগঠন গুলো সেনাবাহিনীকে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করে। তবে তদন্ত হওয়ার অাগ মূহূর্তে বলা যাচ্ছে না প্রকৃত ধর্ষণ করা করেছে। যেহেতু কিশোরীর পিতা-মাতা ২৫জানুয়ারি রাঙামাটি প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন সেনাবাহিনী ধর্ষণ করেনি। এবং ধর্ষিত কিশোরীদের তারা রাঙামাটি মেডিকেলে ভর্তি করেনি, কে’বা কাহারা ভর্তি করিয়েছে সেই ব্যাপারে তারা অবগত নয়।
চাকমা রাণী ইয়েন ইয়েন মানবাধিকার নেত্রী বাঞ্চিতা চাকমা ৬০/৭০ জন যুবক নিয়ে রাঙামাটি মেডিকেল গিয়ে চিকিৎসাধীন দুই ধর্ষিত কিশোরীকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা ও নিজের মতো করে চিকিৎসা করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই কিশোরীকে পিতা-মাতা ব্যতীত অন্য কারো হেফাজতে দিতে পারবে না বলে চাকমা রাণীকে বুঝিয়ে বলেন। রাণী রাজা দেবাশীষ রায়কে ফোন করে হাসপাতালে অাসতে বলেন। রাজা হাসপাতালে অাসলে পরবর্তী পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহযোগিতা চাই। জেএসএস সমর্থিত ও জেএসএস সহ-সভাপতি রাঙামাটির এমপি উষাতন তালুকদারও হাসপাতালে অাসেন। পুলিশ ও জেলা প্রশাসন হাসপাতালে এসে রাণীকে বুঝানোর চেষ্টা করলে রাণী ইয়েন ইয়েন তাদের সাথে অশোভন অাচরণ করেছে বলে অভিযোগ করে কর্তৃপক্ষ । যথাস্থানে উপস্থিত ছিলো সংবাদকর্মী’রা
অাইনগত ভাবে অসংগত হওয়াতে কিশোরীদের পিতা-মাতা ব্যতীত চাকমা রাজ রাণীর জিম্মি দেওয়া সম্ভব্য হয়নি বলেন হাসপাতাল ও প্রশাসন জানান। পরে এই নিয়ে প্রশাসনের সাথে রাজা দেবাশীষ রায়, এমপি উষাতন তালুকদার বৈঠক বসে। কিশোরীদের পিতা-মাতা অন্য কাহারো জিম্মা দিতে রাজি নয়। রাণীর কার্যকলাপের ব্যাপার নিয়ে সমাবেশের অাগে দিপংকর তালুকদার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল বক্তব্য ও সমালোচনা করেন।
রাঙ্গামাটির সংরক্ষিত মহিলা অাসনের এমপি ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, যাদের পার্বত্য অঞ্চলে থাকতে ইচ্ছা হয়না তারা পার্বত্য অঞ্চল থেকে চলে যান। পার্বত্য অঞ্চলে আমরা পাহাড়ি-বাঙ্গালী শান্তিতে বসবাস করতে চাই। পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশের অংশ এই অঞ্চল থেকে অামরা কখনো যাবো না। অযাচিত পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তির জনপদের মাঝে অশান্তি সৃষ্টি করবেন না।
সচেতন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক দিপংকর তালুকদার রাণীর তৎপরতা নিয়ে সমালোচনা করে বলেন, পাহাড়ের দুই নারী নেত্রী এতো দিন কোথায় ছিলো? এখন মাঠে এসে স্বাভাবিক পরিবেশকে অন্যদিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা কেন করতেছেন? সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ড নিয়ে কেন নীরব ছিলেন? দুই কিশোরী নিয়ে বাড়াবাড়ি করে শান্ত পরিবেশ অশান্ত করে তুলছেন কেন? যেহেতু ধর্ষিত কিশোরদের নিয়ে এখন পর্যন্ত তদন্ত কোন রিপোর্ট অাসেনি তার অাগে দুই নেত্রী কি উদ্দৈশ্য নিয়ে মেডিকেল গিয়ে অযাচিত বাড়াবাড়ি করেন?

সন্তু লারমার উদ্দৈশে দিপংকর তালুকদার বলেন, বাবু সন্তু লারমা অাপনিও অবৈধ অস্ত্রধারীদের ধরতে সাহায্যে এগিয়ে আসুন। অাপনি এগিয়ে না অাসলে পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসবে না। নতুন শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে আমাদের সমস্যা হবে। অস্ত্র সহ কোন সন্ত্রাসী আটক হলে প্রশাসনকে আমাদের লোক বলবেন না। প্রশাসনকে আরো তৎপর ও অভিযান তীব্র করতে বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি অস্ত্রবাজির প্রসঙ্গতে বলেন, পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করতে হলে সকল সাধারণ মানুষ এক সাথে ঐক্য-বদ্ধ হতে হবে।

এলজিডি অফিসের এক কর্মকর্তা প্রসঙ্গে বলেন, তিনি একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের বাজেটের ৫% সন্ত্রাসীদের দিতে বলেন একজন কাউন্সিল’র’কে। এইটা তদন্ত ও তদারকি করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করি তারা জেনো ধরা পড়ে।চাঁদাবাজ কারা, তা জেনো নিঃসন্দেহ পার্বত্য বাসী জানতে পারে। অস্ত্রধারী চাঁদাবাজদের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি সম্প্রীতি উন্নয়নের অগ্রগতি বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
সচেতন নাগরিক কমিটি কর্তৃক আয়োজিত বিক্ষোভ মহাসমাবেশে অংশ গ্রহণ করে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। মহাসমাবেশ স্থল পরিণত হয় মানুষের গণজাগরণ। পরো রাঙ্গামাটি শহরে মানুষ ঢল নামে, পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অংশ গ্রহণ ছিলো চোখে পড়ার মতো।
রাঙ্গামাটি সংসদীয় আসনের এমপি জেএসএস’র সহ-সভাপতি উষাতন তালুকদার দিপংকর তালুকদারের বক্তব্যর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, চাঁদাবাজি করছে কাহারা এলজিডি অফিস থেকে? আমি এলজিডি অফিসে গিয়েছি কাজের অগ্রগতি সহ অন্য কারণে। আমি এমপি আমি যে কোন কিছু দেখতে জানতে পারি। উষাতন তালুকদার এমপি অভিযোগ করে বলেন, অামি একজন এমপি হয়ে সরকারী গাড়ি ব্যবহার করতে পারি না। কোন অনুষ্ঠান ও উদ্বোধনের নামফলক আমার নামে হয় না, সব কিছু দিপংকর তালুকদারের নামে হয়, সেই অংশ গ্রহণ করে। আমি করছিনা।

দীর্ঘদিন থেকে দিপংকর তালুকদার মিছিল সমাবেশ করছে, এইটা করার তার অধিকার অাছে, তাই বলে কি অন্য জনের ব্যক্তিত্ব নিয়ে মিছিল সমাবেশে বিতর্ক সৃষ্টি করবেন। আমি এই বক্তব্যর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

গতকাল ২৮ জানুয়ারি রবিবার সমাবেশ চলাকালীন সময়ে চাকমা রাজ রাণীর ইয়েন ইয়েন এর বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে ফেসবুক অাইডি’র স্ট্যাটাস। স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো।

সময় নেই। গতকালের ঘটনার আপডেট দেয়ার কথা থাকলেও দিতে পারিনি। আপাতত দুই বোনের কাছে আমরা যে কথা দিয়েছি প্রথম সাক্ষাতে, সেটি রক্ষা করতে চরম ব্যস্ত। কি পরিমাণ চাপের মধ্যে আমরা সকলে সম্মিলিতভাবে হাজারটা কাজ করছি, তা যারা জানেন, তারা এমনিই জানবেন। যারা জানেন না, তারা আশা করি একদিন জানতে পারবেন।
…………………………………………………………………………
আমাদের অনেকগুলো লক্ষ্যের মধ্যে প্রধান কয়েকটি হচ্ছে দুই বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সারভাইভার হিসেবে তাদের যে প্রাইভেসি ও কাউন্সিলিং প্রয়োজন, তা দেয়ার চেষ্টা করা, তাদের মানসিকভাবে সবল সুস্থ রাখার চেষ্টা করা, খাদ্যাভাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ খাবার সরবরাহ দেয়া। এ কাজগুলো আমাদের সাধ্যমত আমরা করছি। অচেনা অজানা পরিবেশে কর্তব্যরত অচেনা অনেকের সামনে আটকে থাকা মেয়ে দুইজনকে ভলান্টিয়াররা হাসিমুখে সাহচর্য দিচ্ছেন সার্বক্ষণিকভাবে।
………………………………………………………………………
বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের অ্যাটেনশন ডাইভারট করে অন্য ঘটনা মোকাবেলা করতে যেয়ে আমাদের শক্তি নিঃশেষ করার চেষ্টা করা হতে পারে। খাগড়াছড়িতে ছাত্রদের উপর চড়াও, রামগড়ে আদিবাসী নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা, রামগড়ে বিজিবি-সেটেলারদের দিনভর তাণ্ডব- বিভিন্ন পোর্টালে প্রকাশিত এইসব কোন ঘটনাকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের নিত্য নৈমেত্তিক ঘটনা ধরে নিয়ে খুব বেশি সাদা চোখে দেখার সুযোগ কম। বি ভিজিলেন্ট।
………………………………………………………

গতকাল হাসপাতালের ঘটনাটিকে নিয়ে যে সত্যমিথ্যার মিশেল খবর সঞ্চালিত হচ্ছে, সেটি নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা করার এবং সময় নষ্ট করার কোন কারণই নেই। যারা জানেন, তারা এমনিই জানেন। যাদের ওইসব সস্তা মিথ্যে ভেদ করে সত্য দেখতে পারার মত সামান্যতম বোধ বুদ্ধি নেই, তাদের সত্য জানিয়ে কোন লাভ আছে বলে মনে হয় না।

তবে যারা যারা সংহতি জানাতে সব ভয় তুচ্ছ করে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ছুটে এসেছিলেন, সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার একটিই আক্ষেপ মেয়ে দুইজন স্বচক্ষে এটি দেখতে পারেনি, আমার কাছ থেকে বর্ণনা শুনতে হয়েছে। একইভাবে আমি আপনাদের জানিয়ে দিই, আপনাদের এত জনের উপস্থিতির কথা শুনে বড় বোনটির দুই চোখ থেকে কেবল পানি ঝরেছে। কিছু বলার মত অবস্থা তার ছিল না। এই মুহূর্তটির কথা আমার আজীবন মনে থাকবে।

…………………………………………………………………………………
দীপঙ্কর তালুকদার বাবুর নারীনেত্রীদের উদ্দেশ্যে বলা কথাগুলোর লিঙ্ক আমার একজন বন্ধু আমাকে ইনবক্স-এ পাঠিয়েছেন। আমি নারীনেত্রী নই বলে শোনার প্রয়োজন মনে করিনি। পার্বত্য অঞ্চলের নারীনেত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এখানে শিক্ষণীয় কিছু থাকলে নিজ দায়িত্বে শিখে নিবেন আশা করি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসের স্কিনশর্ট সংযুক্ত 3Copy,


2Copy

3Copy

মেহরাজ হোসেন, রাঙ্গামাটি।


পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]