১৯৮৪ সালের ৩১ মে দিবাগত রাত আনুমানিক ৪টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা ৩০মিনিট পর্যন্ত সময়ে ঘুমন্ত মানুষের উপর রাঙ্গামাটি জেলার বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় শান্তি বাহিনীর এরিয়া কমান্ডার তথাকথিত মেজর রাজেশ (আসল নাম- মনিস্বপন দেওয়ান) এর নেতৃত্বে পরিচালিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় ভূষণছড়া গণহত্যা করে ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা।
সেদিন বাঙ্গালীদের প্রত্যেকটি গ্রামে অগ্নি সংযোগ সহ লুটতরাজ, সামনে বাঙ্গালী যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ, নরকীয়তা সৃষ্টি করেছিলো খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা। যে ঘটনার মাধ্যমে মাত্র কয়েক ঘন্টা সময়ে ১৪৫০ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ বনিতা নিরস্ত্র নিরীহ বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়েছে, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ ও পরে হত্যা, আহত করা হয়েছে আরও সহস্রাধিক, অপহরণ ও গুম করা হয়েছে আরো কয়েক হাজার বাঙ্গালীকে। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে একটি জনপদ। বরকলের ১৬০০ পরিবারের মধ্যে ৮০০টি পরিবার সেদিন আক্রান্ত হয়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩০টি পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অবাক করার বিষয় হচ্ছে যে, শান্তি বাহিনী সেদিন এতগুলো মানুষকে হত্যা করতে বুলেটের পাশাপাশি হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে, বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খোঁচিয়ে খোঁচিয়ে নানা ভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল এই অসহায় মানুষ গুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তারা। পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েক শত বছরের ইতিহাস ঘাটলেও ভূষণছড়া গণহত্যার মতো এত বড় ধ্বংসযজ্ঞের আর কোন নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হানাদাররাও এখানে এমন জঘন্যতম ঘটনার জন্ম দেয়নি। ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখা এবং বেচে যাওয়া কিছু কিছু সাক্ষী আজো আছে কিন্তু ঘটনার কথা মনে পড়লে আজও তাদের গায়ের পশম খাড়া হয়ে যায়।
দুঃখজনক হলেও নির্মম সত্য এই যে, ভূষণছড়া গণহত্যা সহ অসংখ্য বর্বরোচিত ঘটনার শিকার হয়েছে পার্বত্য অঞ্চলে বাঙ্গালীরা। কিন্তু বাঙ্গালীদের উপর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা
কর্তৃক সংঘটিত এসব নির্যাতনের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমতো দূরের কথা দেশীয় প্রচার মাধ্যমেও স্থান পায়নি। দেশে তখন সামরিক শাসন ও সংবাদ প্রচারের উপর সেন্সরর ব্যবস্থা আরোপিত থাকায় এবং পাহাড়ের অভ্যন্তরে যাতায়াত ও অবস্থান নিরাপদ না হওয়ায় অধিকাংশ গণহত্যা ও নিপীড়ন খবর হয়ে পত্র পত্রিকায় স্থান পায়নি। আর এই সুযোগে নির্যাতনকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা
নিজেদের নৃশংসতার স্বরূপকে ঢেকে তিলকে তাল করে নিজেদের পক্ষে প্রচার চালিয়েছে বিশ্বব্যাপী। এতে দুনিয়াব্যাপী ধারণা জন্মেছে যে, পার্বত্যাঞ্চলের উপজাতীয়রাই নির্যাতনের শিকার। যার ফলে দেশ এবং সরকারের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম অর্জনকারী সেনাবাহিনীর চরিত্রেও কলঙ্ক আরোপিত হয়েছে।
পার্বত্য অঞ্চলের বাঙ্গালীরা একদিকে নির্মম হত্যাকন্ডের শিকার হবে অন্যদিকে উপজাতীয়দের অপপ্রচারে নির্যাতনকারী হিসেবে পরিচিত হবে আর সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে এমন ব্যবস্থা চিরদিন চলতে পারে না । তাই সরকারের আশু কর্তব্য হচ্ছে মেজর মনি স্বপনদের বিচারের কাঠ গড়ায় দাঁড় করানো। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে ভূষণছড়া গণহত্যাসহ পার্বত্য অঞ্চলের সকল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের প্রকৃত বিচারের মাধ্যমেই পার্বত্য অঞ্চলের সঠিক চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা সম্ভব। এর মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা সম্ভব দেশের সরকার ও সেনাবাহিনীর হারানো ভাবমূর্তি।
তাছাড়া ১৯৯৭
সালে তথাকথিত শান্তিুচুক্তি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলেও আজও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি আসেনি। বন্ধ হয়নি হত্যাকাণ্ড। কাগজে-কলমে শান্তিবাহিনী না থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র সংগঠনগুলোর দৌড়াত্ম্য কমেনি, বরং তাদের হাতে বাঙালিরা যেমন হত্যার শিকার হচ্ছে, তেমনি নিহত হচ্ছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোর মানুষজনও।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে জাতিসংঘের নিজস্ব বিচার ব্যবস্থাও। আমেরিকার মত প্রবল শক্তিধর সেনাবাহিনীও যখন ইরাকে বন্দী নির্যাতন করে পার পায়নি। আমাদের দেশেও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা বিরোধীদের মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডের বিচার চলছে। তা হলে, স্বাধীন দেশে পার্বত্য অঞ্চলে যারা হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে তাদের কেন বিচার হবে না? ভূষণছড়া গণহত্যা কি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ নয়?
- যেসকল সুপারিশ আমলে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে:
- গণহত্যাকারীদের বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ঘাতকদের শাস্তির দাবী এবং তাদের উৎখাতে এগিয়ে আসুন!
- এদের উৎখাতের জন্য সকল পাহাড়ী বাঙালী জনতা সোচ্চার হোন।
- ক্ষতিগ্রস্থদের পর্যাপ্ত জননিরাপত্তাসহ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
- বাঙালীদের ভুমিতে উপজাতি বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলারদের আগমন বন্ধ করতে হবে।
- বাঙালীদের ভুমিতে যেসব উপজাতি বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলার ইতোমধ্যে বসতি গড়েছে তাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নিতে হবে।
- জাতি বিদ্বেষী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ - নিপাত যাক! পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ - ধ্বংস হোক!
- পাহাড়ে বাঙালী জনতার পুনর্বাসন বৃদ্ধি কর! আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার সমর্থন করুন!
(বিশেষ: দ্রষ্টব্য: এই লেখায় প্রকাশিত দৃষ্টিভঙ্গি হিল ব্লগারস অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরামের নিজস্ব, আর লেখা বিষয়ক সমস্ত দায়ভারও তাদের।)
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]