নানিয়ারচর গনহত্যার ছবি |
ঘটনার ইতিহাস : মিয়ানমার ও ভারতের মিজোরাম, আসাম, নাগাল্যান্ড, অরুনাচল, ত্রিপুরা থেকে বিতাড়িত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে আসা উপজাতি Refugee বা শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থী বা সেটেলার বা উদ্বাস্তু বা নতুন উন্নয়নশীল দেশে বাস করতে আসা বিদেশী বসতকার বা অনুপ্রবেশকারী বা বসতিস্থাপনকারী কর্তৃক আরেকবার পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটির নানিয়ারচরে বসবাসরত বাঙ্গালীর রক্তে ভাসিয়ে দিল পার্বত্য চট্টগ্রাম। এটি হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) কর্তৃক ১৯তম বাঙ্গালী গণহত্যা, যা নানিয়ারচর গণহত্যা ১৯৯৩ নামে পরিচিত। গণহত্যা হলো একটি জাতি গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়কে নির্মূল করণ প্রক্রিয়া ৷ সেহেতু উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে একচেটিয়া তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী নির্মূল করণের লক্ষ্যে পাহাড়ের বাঙ্গালীদের হত্যা করেছে৷ তারা মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী বা বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলার উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি। কথিত আছে যে, উগ্রবাদি উপজাতিরা ভারতের মিজোরাম প্রদেশ থেকে এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালীদের উপর হামলা চালায় দেখে তাদেরকে মিজো বলা হতো। আসলে তারা মিজো নয়, তারা হলো উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সংগঠক ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার উগ্রবাদি জঙ্গি বাহিনী বা শান্তি বাহিনী বা গেরিলা বাহিনী। উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা নিরীহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালীদের আক্রমণ করা, তাদের হত্যা করা, অপহরণ ও গুম করা, তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, তাদের সম্পত্তি লুঠপাট বা ঘর-বাড়ি লুটতরাজ করে সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেওয়া, তাদের গৃহহীন করার অসংখ্য নজির বাংলাদেশ আমলের বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি। এসবই এখানকার নিয়মিত ঘটনা। আবার কোনো কোনো সময় উগ্র উপজাতিরাই বিভিন্ন অজুহাত তৈরি করে। তারপর শুরু হয় এসব তাণ্ডবলীলা।
ঘটনার সূত্রপাত : পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালীগনের বিষাদময় ইতিহাসে নানিয়ারচর গনহত্যার ঘটনা এই বিংশশতাব্দীর অন্যতম নৃশংস সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ডগুলোর এক নতুন সংযোজন বলা চলে। নানিয়ারচরের ভৌগলিক অবস্থান রাঙ্গামাটি থেকে ২০ মাইল উত্তরে হ্রদ বেষ্টিত। নানিয়াচরের যোগাযোগ একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌযান। লঞ্চঘাটের কোন যাত্রী ছাউনি নাই। তাই লঞ্চঘাটের পাহাড়ি বাঙালী সবাই রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। যাত্রী ছাউনি ও সেনা পোষ্ট না থাকার কারনে সেখানে মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী বা বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলার উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর উগ্রবাদি জঙ্গি বাহিনী বা শান্তি বাহিনী বা গেরিলা বাহিনী, উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গিগোষ্ঠী এবং পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সন্ত্রাসীরা অপেক্ষারত বাঙালী নারীদের নিয়মিত হয়রানি ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে আসছিল দীর্ঘ দিন ধরে। বাঙালীরা প্রতিবাদ করলে আটকে রেখে হয়রানি ও নির্যাতন চালানো হতো এবং হত্যা, অপহরণ করা হতো। লঞ্চঘাটটি শান্তি বাহিনীর আস্তানা হিসেবে পরিচিত ছিল। উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি বা সন্ত্রাসী শান্তি বাহিনী নামক হায়নার হাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের হত্যা, অপহরণ ও শান্তিবাহিনীর হাত থেকে নানিয়ারচরের নিরীহ বাঙালীদের বাঁচাতে, যাত্রী ছাউনি ও সেনাবাহিনীর ৪০ ইবি রেজিমেন্টের সেনাছাউনি স্থাপনের ন্যায়সঙ্গত দাবিতে শান্তিপুর্ন সমাবেশের ডাক দেয় বাঙালীদের একমাত্র প্রানের সংগঠন পার্বত্য গণপরিষদ ।
ঘটনার পর্যালোচনা :
গণহত্যার তারিখ, সময় ও ঘটনাস্থল : রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার নানিয়ারচর বাজার ১৯৯৩ সালের ১৭ নভেম্বর দুপুর ১২ ঘটিকা থেকে ২ ঘটিকা সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত বাঙালীদের সমাবেশে এ হত্যা কান্ড ঘটানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে নানিয়ারচর গণহত্যাটি ১৯তম কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে পরিচিত।
উপজাতি রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী বা বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলারদের কর্মকান্ড : পার্বত্য চট্টগ্রামে চরমভাবে অবহেলিত, সরকারি সুযোগ- সুবিধা বঞ্চিত, নিপিড়িত, নির্যাতিত, অধিকার বঞ্চিত, বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়ের শিকার, নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালীদের খুন করা, তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, তাদের সম্পত্তি লুঠপাট করার জন্য উপজাতি জঙ্গিরা, যারা মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী বা বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলার উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সংগঠক ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার উগ্রবাদি জঙ্গি বাহিনী বা শান্তি বাহিনী বা গেরিলা বাহিনী, উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা নিরীহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালীদের আক্রমণ করা, তাদের হত্যা করা, অপহরণ ও গুম করা, তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, তাদের সম্পত্তি লুঠপাট বা ঘর-বাড়ি লুটতরাজ করে সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেওয়া, তাদের গৃহহীন করার অসংখ্য নজির বাংলাদেশ আমলের বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি। এসবই এখানকার নিয়মিত ঘটনা। আবার কোনো কোনো সময় উগ্র উপজাতিরাই বিভিন্ন অজুহাত তৈরি করে। তারপর শুরু হয় এসব তাণ্ডবলীলা।
রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার নানিয়ারচর বাজারে ১৭ নভেম্বর ১৯৯৩ সালে সংঘটিত এই বর্বর গনহত্যায় ৪৯ জন বাঙ্গালীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, ছাত্র জনতা, নারী, শিশু, বৃদ্ধ আহত হয় শতাধিক, গুম করে শত শত বাঙালী ছাত্র-জনতা-নারী-শিশু-বৃদ্ধ, আহত হয় শতাধিক। এই জঘন্য বর্বর গনহত্যায় উগ্রবাদি জঙ্গি বাহিনী বা শান্তি বাহিনী বা গেরিলা বাহিনীর বন্দুক গর্জে উঠেছিল নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার মিচ্ছিলে, উগ্রবাদি জঙ্গি বাহিনী বা শান্তি বাহিনী বা গেরিলা বাহিনী পরিকল্পিত ইশারায় সেদিন ধারালো দা, বর্শা, বল্লম নিয়ে নানিয়াচর বাজারে আগত নিরিহ বাঙালীদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল বেতছড়ি, ছয়কুড়িবিল, মাইচছড়ি, গবছড়ি, তৈচাকমা, যাদুকাছড়া, বগাছড়ি, বড়াদম, বুড়িঘাট, কাঁঠালতলী, শৈলেশ্বরী, নানাক্রুম, সাবেক্ষ্যং, এগারাল্যাছড়া, বাকছড়ি, কেঙ্গালছড়ি থেকে আগত সশস্ত্র উপজাতি অনুপ্রবেশকারীরা। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিল বাঙালীদের ১শ ৩২টি ঘর বাড়ি।
১৭ই নভেম্বর দিনটি ছিল বুধবার, নানিয়ারচর বাজারের সাপ্তাহিক বাজার দিন। তাই স্বভাবিকভাবে দুর-দূরান্ত থেকে বাজারে এসেছিল শত শত বাঙালী শিশু-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে। ১৭ই নভেম্বর সকালের দিকে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার আহমেদ মিয়া ও বুড়িঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ সহ পার্বত্য গণপরিষদের মিছিলটি স্থানীয় লাইবেরী প্রঙ্গন থেকে শুরু হয় যাদের প্রধান দাবীগুলো ছিল- শান্তিবাহিনীর হাত থেকে নানিয়ারচরের নিরীহ বাঙালীদের বাঁচাও, লঞ্চঘাটের যাত্রী ছাউনি দিতে হবে ও সেনাবাহিনীর ৪০ ইবি রেজিমেন্টের সেনাছাউনি স্থাপন করতে হবে। কয়েক হাজার বাঙালী ছাত্র-জনতার মিচ্ছিলে তখন সারা নানিয়ারচর উজ্জীবিত। মিচ্ছিল থেকে গনতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকারের দাবী উচ্চকন্ঠে জানানো হচ্ছিল। মিচ্ছিলটি শান্তিপুর্ণভাবে শহরের রাস্তা প্রদক্ষিন শেষে কৃষি ব্যাংক এর সামনে সমাবেশ করে।
অন্যদিকে, উগ্র উপজাতি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উগ্রবাদি উপজাতি জঙ্গি সন্ত্রাসী হায়নারা সমাবেশকে প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে জঙ্গী মিচ্ছিল বের করে। তারা মিচ্ছিল থেকে সাম্প্রদায়িক স্লোগান তুলতে থাকে। এক পর্যায়ে উপজাতি জঙ্গি মিছিল থেকে হামলা করে এক বৃদ্ধ বাঙালীকে আহত করা হয়। এতে করে বাঙালীদের মাঝে ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে অনুপ্রবেশকারী জঙ্গি উপজাতিদের মিছিল থেকে দা, বল্লম ইত্যাদি দিয়ে হামলা হলে পার্বত্য গণপরিষদের ছাত্র সমাজ জনতাকে নিয়ে প্রবল প্রতিরোধ করে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনী ফনি ভূষণ চাকমা, শোভাপূর্ণ চাকমা, বীরেন্দ্র চাকমা নেতৃত্বে আরো ৩০/৩৫ জন জঙ্গি শান্তিবাহিনী সন্ত্রাসীরা নিরীহ বাঙালীদের উপর গুলি চালায়, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্যরা বেয়নেট দিয়ে কুপায় আর দাঙ্গায় মারা গেছে দেখানোর জন্য লেলিয়ে দেয়া উগ্রবাদি উপজাতিরা জ়েট বোট ও নৌকার উপর থেকে দা, বর্শা, বল্লম দিয়ে নৃশংসভাবে মেরে, কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে অনেক বাঙালীদেরকে। আহত বাঙালীদেরকে আহত অবস্থায়ই কাপুরুষেরা অনেক পশুর মত জবাই করে হত্যা করেছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে সেদিন বাঙালীরা কাপ্তাই লেকের পানিতে ঝাঁপ দিলেও জনসংহতি সমিতির শান্তিবাহিনী ও উগ্র পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ নামক হায়নার নির্মমতার হাত থেকে রক্ষা পায়নি। যারা দোকানে, বাড়িতে লুকিয়ে ছিল তাদেরকে টেনে হিচড়ে বের করে হত্যা করা হয়েছে অথবা পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পাশের বাঙালীদের গ্রামগুলি লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সময় রাঙ্গামাটি থেকে আসা লঞ্চ পৌছালে সেখানেও হামলা করে অনেক নিরীহ নিরস্ত্র বাঙ্গালীকে হতাহত করা হয়। আনিসুজ্জামান নামক এক মৌলভীকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়।এভাবে প্রায় দু ঘন্টা ধরে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় বাঙালীদের উপর।
ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা: ১৯৯৩ সালের ১৭ শে নভেম্বর রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর গণহত্যাটি ঘটনার মাধ্যমে কয়েক ঘন্টা সময়ের ব্যবধানে ৪৯ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল বৃদ্ধ বনিতা নিরস্ত্র নিরীহ বাঙ্গালীকে হত্যা করে, অধিকাংশ লাশগুলোকে গুম করা হয়েছে এবং আহত করা হয়েছে আরও শতাধিকের অধিক, অপহরণ করা হয়েছে আরো শত শত বাঙ্গালীকে। ২০৪টি বাড়ি লুটতরাজ করে সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিল বাঙালীদের ১শ ৩২টি ঘর বাড়ি। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় শহস্রাধীক পরিবার। এরা লাশগুলোকে গুম করে আত্মীয়-স্বজনকে ফেরত না দিয়ে বা কবর দেয়ার সুযোগ না দিয়ে একত্রে পুড়িয়ে ফেলে মুসলিম ধর্মীয় রীতিকে অবমাননা করে। এ খবর দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল। ইতিপূর্বেও সর্বদাই এরা এভাবে বাঙালীদের গণহত্যাকে ধামাচাপা দিতে চেয়েছে। ১৭ই নভেম্বর তারিখে শান্তি বাহিনী ও উগ্র পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ নামক হায়নার কতৃক রচিত হয়েছিলো এক কালো গনহত্যার ইতিহাস যা বাঙ্গালী জনগন কখনোই ক্ষমা করবে না।
প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষাতকার : ১৯৯৩ সালের ১৭ শে নভেম্বর রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচরে যে গণহত্যা হয়েছিল প্রাণে বেঁচে যাওয়া কযেকজনের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনলে গা শিউরে উঠে। যাকে যখন যেভাবে পেয়েছে সেখানে হত্যা করেছিল। মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করা হয় নিস্পাপ শিশু আর শিশুটির মাকে করেছিল ধর্ষণ। এভাবে কত নিরপরাধ বাঙালী হত্যা করেছিল তার প্রকৃত হিসাব এখনো পায়নি। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী কিছু মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী বা বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলার উগ্র উপজাতি জঙ্গিদের সনাক্ত করেছিল। যারা বাঙ্গালীদের ঘরে অগ্নি সংযোগ সহ লুটতরাজ করেছে, হত্যা করেছে, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ ও ধর্ষণের পরে হত্যা করে নরকীয়তার সৃষ্টি করেছিলো।
পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ : পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নার এ প্রক্রিয়া রোধ করতেই তৎকালীন সরকার বাধ্য হয় বাঙ্গালীদেকে স্ব- বসতভিটা, বাগান বাগিচা থেকে তুলে এনে গুচ্ছগ্রাম নামক বন্দী শিবিরে আটক করতে। এ প্রক্রিয়ায় তৎকালীন ১০৯ টি বাঙ্গালী গুচ্ছগ্রামে ৩১ হাজার ৬২০ পরিবারের ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৭ জন বাঙ্গালীকে (বর্তমানে ৬,৫০,০০০ এরও বেশি)। সেই খানেও হামলা থামেনি। চুতর্দিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী সৃষ্টি করে ছোট্ট গুচ্ছগ্রামে সরকার পরিবার প্রতি একটি ২০ ফুট বাই ২০ ফুট বন্দী কুটিরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শুরু হয় গুচ্ছগ্রাম বাসীদের জীবন-জীবিকা। এতে বাঙ্গালীরা নিরাপত্তা পেলেও তাদের বসত ভিটা ও চাষের জমি হারাতে হয়। সেই আশির দশকের শেষভাগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাঙ্গালীরা আর তাদের সেই বসত ভিটা, বাগান বাগিচা ও আবাদী জমি ফেরত পায়নি। শান্তি বাহিনীর অব্যাহত হুমকির মুখে সেসব গ্রামের উপজাতীয় বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ শরণার্থী হয়ে ভারতে যেতে বাধ্য হয়। যারা ভারতে যেতে রাজি হয়নি তাদের পার্শবর্তী বাঙ্গালী গ্রামগুলোতে শান্তি বাহিনী এমনভাবে হামলা করে যাতে বাঙ্গালীরা পাল্টা আঘাত দিয়ে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে হামলা চালাতে বাধ্য হয়। এভাবেই শান্তি বাহিনী নিরীহ পাহাড়িদের ভারতে শরণার্থী হতে বাধ্য করে।
গণহত্যায় সুপারিশসমূহ বা কার্যকরি পদক্ষেপ : সংবাদ সম্মেলনে তারা যে সকল সুপারিশ করেছিলেন : সে সকল সুপারিশ আমলে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে:
- নানিয়ারচরের ১৯৯৩ সালের ১৭ নভেম্বরের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ঘাতকদের শাস্তির দাবী।
- লঞ্চঘাটের যাত্রী ছাউনি ও সেনাবাহিনীর ৪০ ইবি রেজিমেন্টের সেনাছাউনি নির্মান করা।
- ক্ষতিগ্রস্থদের পর্যাপ্ত জননিরাপত্তাসহ পুনর্বাসন নিশ্চিত করা।
- সরকার কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্থদের ঘর বাড়ি নির্মান করা এবং ক্ষতিপুরণ দেয়া।
- বসবাসরত বাঙালীদের ভুমিতে উপজাতি রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী বা বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলারদের আগমন বন্ধ করা।
- বসবাসরত বাঙালীদের ভুমিতে যেসব উপজাতি বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলার ইতোমধ্যে বসতি গড়েছে তাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নেয়া।
- পাহাড়ে পর্যাপ্ত সেনাবাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীদের আহবান :
- গণহত্যাকারীদের উৎখাতে এগিয়ে আসুন!
- গণহত্যাকারীদে উৎখাতের জন্য সকল পাহাড়ী বাঙালী জনতা সোচ্চার হোন।
- জাতি বিদ্বেষী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ - নিপাত যাক! পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ - ধ্বংস হোক!
- পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালী জনতার পুনর্বাসন বৃদ্ধি কর! আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার সমর্থন করুন!
- উপজাতি নিরীহ পাহাড়ী জনতা আমাদের শত্রু নয়, শত্রু তাদের নিপীড়ক জাতি বিদ্বেষী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, ইউপিডিএফ ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।
গণহত্যার শেষ কথা : যারা ঘর বাড়ি লুট করে আজ সেই সব সম্পত্তি নিয়ে সচ্চল ভাবে জীবন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আবার তাদের কেউ কেউ সরকারি, আধা-সরকারি চাকুরিতে বর্তমানে নিযুক্ত রয়েছে। যারা সংগঠনে জড়িয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হয়ে জবর দখল করে নিয়ে যাচ্ছে বাঙালীদের পূর্ব পুরুষের ভিটে মাটি। তিন পার্বত্য জেলায় চলছে ঐসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। আর গণহত্যার পৃষ্টপোষকতায় যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া বর্তমান সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। এইভাবে নির্বিচারে অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা জোরপুর্বক বসতি স্থাপন একদিকে শান্ত পাহাড়কে নরকের দিকে ঠেলে দিয়েছে অন্যদিকে শান্তিপ্রিয় বাঙালীর জীবনকে করেছে বিপন্ন। এভাবে পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালী জাতির প্রতি চাপিয়ে দেয়া জাতি হত্যার নীলনকশার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দল-মত নির্বিশেষে সকল বাঙালী ভাইবোনদেরকে একপতাকা তলে এসে প্রতিরোধের চেতনাকে জাগ্রত করার আহবান জানাচ্ছি। তাই প্রথম শর্ত হওয়ার দরকার ছিল, নিরীহ নিরাপরাধ বাঙালীদের নিরাপত্তার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম আরো সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা, প্রতিবিপ্লবী উগ্র পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও শান্তিবাহিনী বা খুনী বাহিনীকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ করা। সেটা না করে বরং সরকার শান্তিবাহিনীর সাথে অস্ত্রবিরতি চুক্তি করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]