১৮। লোগাং গনহত্যা: খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় লোগাং একটি ইউনিয়নের নাম। লোগাং শব্দটির অর্থ রক্তের নদী। ১৯৯২ সালে ১০ই এপ্রিল লোগাং তার নামের সার্থকতা রেখেছিল। সেই দিনে লোগাং এলাকাটি সত্যিই বাঙালীর রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল, আপনারা জানেন কি সেটা কাদের রক্ত ছিল? উপজাতিদের ভাষায় সেটেলার তথা বাঙালীর রক্ত। আসলে কি ঘটেছিল সেদিন? সেইদিন লোগাং এ এক অমানবিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা। সেইদিন বাঙ্গালী নারী তার গবাদি পশু চড়াতে গ্রামের অদূরে গিয়েছিল সেখানে শান্তি বাহিনী ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা তাকে গণধর্ষণ শেষে হত্যা করে। এতে আরেক বাঙ্গালী বাধা দিলে তাকে সেখানেই হত্যা করা হয়। বাঙ্গালীরা প্রতিবাদ জানালেও এর কোন সুষ্ঠু সমাধান হয়নি। উল্টো পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা বাঙ্গালী গ্রামে অগ্নি সংযোগ সহ লুটতরাজ, সামনে বাঙ্গালী যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ, নরকীয়তা সৃষ্টি করেছিলো।
সেইদিন দুপুর, আর দুদিন পরেই শুরু হবে বাঙালীদের প্রাণের উৎসব বৈশাখী নতুন বছর। তাই গ্রামের সবাই সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঘর বাড়ি সাজাচ্ছিল, বাজার সদাই করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কেউ দুপুরে খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল। হঠাৎ করে শান্তিবাহিনী (তৎকালীন সন্তু লারমার জানোয়ার) গ্রুপের সদস্যের উপস্থিতিতে বিশ্বের ভয়াংকর অস্ত্র শস্ত্র হাতে গুচ্ছগ্রামে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা তিব্বতীয়, মঙ্গোলীয়, বার্মা থেকে আগত (বৃটিশদের পুনর্বাসিত উপজাতি, যারা মূলত দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়)। মুহুর্তের মধ্যে শান্ত জনপদটি পরিণত হয় রক্তাক্ত এক জনপদে। ছেলে থেকে বুড়ো, দুধের শিশু থেকে নারী পর্যন্ত কেউ রেহাই পায়নি সে আক্রমন থেকে। কেউ কেউ ক্ষত বিক্ষত শরীর নিয়ে পালাতে পেরেছে, যারা পালাতে পারেনি তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে এবং অবশেষে উপজাতিদের দেওয়া আগুণে পুড়ে মারা গেছে।
চারদিকে লাশের স্তুপ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল হতভাগ্য মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কিংবা পোড়া হাড়গোড়। সেদিনের সেই সম্মিলিত তান্ডবলীলায় ৮৯ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ বনিতা নিরস্ত্র নিরীহ বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়েছে, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ ও পরে হত্যা, আহত করা হয়েছে আরও ২০০ জনের অধিক, অপহরণ ও গুম করা হয়েছে শত শত বাঙ্গালীকে। ২৪৮টি বাড়ি লুটতরাজ করে সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় পাঁচশতাধীক পরিবার। দূর থেকে চোখের সামনেই পিতা-মাতা, ভাইবোন, আত্মীয় স্বজনদের ভিনদেশী বহিরাগতদের রামদা, তীর ধনুক, লাঠিসোটার উপর্যুপরি আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে মরতে দেখে কোন রকম ভাবে পালিয়ে বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শীরা।
পরবর্তীতে উপজাতিদের পক্ষথেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী নাকি উপজাতীয় কোন এক জুম্মচাষীকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর নাকি এ সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। অথচ মূল কাহিনী হল, একজন বাঙালী নারী মহিলা ঘটনার দিন কয়েক আগে তার গরু চড়াতে মাঠে যায়। পথিমধ্যে সন্ত্রাসী কিছু পাহাড়ি যুবক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে সে হাতের কাছে থাকা দা দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালায়। এতে একজন গুরুতর আহত হয় এবং পরবর্তীতে সে মারা যায়। এতে করে পাহাড়িদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে এবং তারা বিনা উস্কানিতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা বাঙালীদের গ্রামে হামলা চালায়।
এর পর আহত নিহতের সংখ্যা আর আক্রমণকারী নিয়ে তৎকালীন গণমাধ্যমে চলে সর্বোচ্ছ মিথ্যাচার। এমনকি এর দায়ভার সেনাবাহিনী আর বাঙালীদের উপর পর্যন্ত চাপিয়ে দেওয়ার নগ্ন চেষ্টা চলে। আর সে সময়ে পার্বত্য অঞ্চলে গণমাধ্যমের প্রবেশ আর বস্তুনিরপেক্ষ সংবাদ ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। সেই সময়েও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংবাদে অদৃশ্য সেন্সর আরোপ করে দিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা, যেটা আজো জারি রয়েছে। শান্তি বাহিনীর অপহরণ, হত্যার হুমকির ভয়ে মিডিয়া সত্য প্রকাশ করতো না। আজো সেই সময়ে শান্তি বাহিনীতে থাকা লোকজন সেসব ঘটবার কথা অস্বীকার করতে চায়, সন্তু লারমা পর্যন্ত মিথ্যা হিসেবে প্রমাণ করতে চায়। কিন্তু পারেনা, সত্য সত্য হিসেবেই প্রকাশ পায়।
বর্তমান প্রজন্মের বাঙালীদের ভিতরে পূর্ব এই লোহাং গণহত্যাটির প্রকৃত সঠিক ইতিহাস জানা নেই। ভুলতে বসছে লোগাং গণহত্যাকে। লোগাং গণহত্যা নিয়ে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন ভাবে লিখলেও প্রকৃত সত্য কেউ উদঘাটন করতে পারেনি। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সেই বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পার্বত্য ইতিহাসে চিরদিন স্বরণীয় হয়ে থাকবে। হয়ত এই বাঙালী গণহত্যাকে জাতীয় ভাবে কেউ মনে রাখবে না, রাখার কথাও না।
(বিশেষ: দ্রষ্টব্য: এই লেখায় প্রকাশিত দৃষ্টিভঙ্গি হিল ব্লগারস অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরামের নিজস্ব, আর লেখা বিষয়ক সমস্ত দায়ভারও তাদের।)
সেইদিন দুপুর, আর দুদিন পরেই শুরু হবে বাঙালীদের প্রাণের উৎসব বৈশাখী নতুন বছর। তাই গ্রামের সবাই সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঘর বাড়ি সাজাচ্ছিল, বাজার সদাই করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কেউ দুপুরে খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল। হঠাৎ করে শান্তিবাহিনী (তৎকালীন সন্তু লারমার জানোয়ার) গ্রুপের সদস্যের উপস্থিতিতে বিশ্বের ভয়াংকর অস্ত্র শস্ত্র হাতে গুচ্ছগ্রামে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা তিব্বতীয়, মঙ্গোলীয়, বার্মা থেকে আগত (বৃটিশদের পুনর্বাসিত উপজাতি, যারা মূলত দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়)। মুহুর্তের মধ্যে শান্ত জনপদটি পরিণত হয় রক্তাক্ত এক জনপদে। ছেলে থেকে বুড়ো, দুধের শিশু থেকে নারী পর্যন্ত কেউ রেহাই পায়নি সে আক্রমন থেকে। কেউ কেউ ক্ষত বিক্ষত শরীর নিয়ে পালাতে পেরেছে, যারা পালাতে পারেনি তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে এবং অবশেষে উপজাতিদের দেওয়া আগুণে পুড়ে মারা গেছে।
চারদিকে লাশের স্তুপ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল হতভাগ্য মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কিংবা পোড়া হাড়গোড়। সেদিনের সেই সম্মিলিত তান্ডবলীলায় ৮৯ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ বনিতা নিরস্ত্র নিরীহ বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়েছে, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ ও পরে হত্যা, আহত করা হয়েছে আরও ২০০ জনের অধিক, অপহরণ ও গুম করা হয়েছে শত শত বাঙ্গালীকে। ২৪৮টি বাড়ি লুটতরাজ করে সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় পাঁচশতাধীক পরিবার। দূর থেকে চোখের সামনেই পিতা-মাতা, ভাইবোন, আত্মীয় স্বজনদের ভিনদেশী বহিরাগতদের রামদা, তীর ধনুক, লাঠিসোটার উপর্যুপরি আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে মরতে দেখে কোন রকম ভাবে পালিয়ে বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শীরা।
পরবর্তীতে উপজাতিদের পক্ষথেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী নাকি উপজাতীয় কোন এক জুম্মচাষীকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর নাকি এ সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। অথচ মূল কাহিনী হল, একজন বাঙালী নারী মহিলা ঘটনার দিন কয়েক আগে তার গরু চড়াতে মাঠে যায়। পথিমধ্যে সন্ত্রাসী কিছু পাহাড়ি যুবক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে সে হাতের কাছে থাকা দা দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালায়। এতে একজন গুরুতর আহত হয় এবং পরবর্তীতে সে মারা যায়। এতে করে পাহাড়িদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে এবং তারা বিনা উস্কানিতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা বাঙালীদের গ্রামে হামলা চালায়।
এর পর আহত নিহতের সংখ্যা আর আক্রমণকারী নিয়ে তৎকালীন গণমাধ্যমে চলে সর্বোচ্ছ মিথ্যাচার। এমনকি এর দায়ভার সেনাবাহিনী আর বাঙালীদের উপর পর্যন্ত চাপিয়ে দেওয়ার নগ্ন চেষ্টা চলে। আর সে সময়ে পার্বত্য অঞ্চলে গণমাধ্যমের প্রবেশ আর বস্তুনিরপেক্ষ সংবাদ ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। সেই সময়েও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংবাদে অদৃশ্য সেন্সর আরোপ করে দিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা, যেটা আজো জারি রয়েছে। শান্তি বাহিনীর অপহরণ, হত্যার হুমকির ভয়ে মিডিয়া সত্য প্রকাশ করতো না। আজো সেই সময়ে শান্তি বাহিনীতে থাকা লোকজন সেসব ঘটবার কথা অস্বীকার করতে চায়, সন্তু লারমা পর্যন্ত মিথ্যা হিসেবে প্রমাণ করতে চায়। কিন্তু পারেনা, সত্য সত্য হিসেবেই প্রকাশ পায়।
বর্তমান প্রজন্মের বাঙালীদের ভিতরে পূর্ব এই লোহাং গণহত্যাটির প্রকৃত সঠিক ইতিহাস জানা নেই। ভুলতে বসছে লোগাং গণহত্যাকে। লোগাং গণহত্যা নিয়ে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন ভাবে লিখলেও প্রকৃত সত্য কেউ উদঘাটন করতে পারেনি। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সেই বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পার্বত্য ইতিহাসে চিরদিন স্বরণীয় হয়ে থাকবে। হয়ত এই বাঙালী গণহত্যাকে জাতীয় ভাবে কেউ মনে রাখবে না, রাখার কথাও না।
- যেসকল সুপারিশ আমলে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে:
- গণহত্যাকারীদের বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ঘাতকদের শাস্তির দাবী এবং তাদের উৎখাতে এগিয়ে আসুন!
- এদের উৎখাতের জন্য সকল পাহাড়ী বাঙালী জনতা সোচ্চার হোন।
- ক্ষতিগ্রস্থদের পর্যাপ্ত জননিরাপত্তাসহ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
- বাঙালীদের ভুমিতে উপজাতি বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলারদের আগমন বন্ধ করতে হবে।
- বাঙালীদের ভুমিতে যেসব উপজাতি বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলার ইতোমধ্যে বসতি গড়েছে তাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নিতে হবে।
- জাতি বিদ্বেষী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ - নিপাত যাক! পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ - ধ্বংস হোক!
- পাহাড়ে বাঙালী জনতার পুনর্বাসন বৃদ্ধি কর! আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার সমর্থন করুন!
(বিশেষ: দ্রষ্টব্য: এই লেখায় প্রকাশিত দৃষ্টিভঙ্গি হিল ব্লগারস অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরামের নিজস্ব, আর লেখা বিষয়ক সমস্ত দায়ভারও তাদের।)
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ: