১৫। লংগদু গনহত্যা, ১৯৮৯: পার্বত্য চট্টগ্রামে চরমভাবে অবহেলিত, সরকারি সুযোগ- সুবিধা বঞ্চিত, নিপিড়িত, নির্যাতিত, অধিকার বঞ্চিত, বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়ের শিকার, নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালীদের খুন করা, তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, তাদের সম্পত্তি লুঠপাট করার জন্য উপজাতি জঙ্গিরা, যারা বেশিরভাগে ক্ষেত্রে মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী উগ্র উপজাতি জঙ্গি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সংগঠক ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার জঙ্গি শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা, উগ্র উপজাতি সন্ত্রাসীরা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের হায়নারা নিরীহ বাঙালীদের আক্রমণ করা, লুঠপাট করা এবং হত্যা করার অসংখ্য নজির বাংলাদেশ আমলের বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি। আবার কোনো কোনো সময় উগ্র উপজাতিরাই অজুহাত তৈরি করে। তারপর শুরু হয় তাণ্ডবলীলা। ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া, ঘরবাড়ি লুঠপাট করা, সুযোগ পেলে হত্যা করা– এসবই নিয়মিত ঘটনা।
লংগদু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অনিল বিকাশ চাকমাকে বলা যায় মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী উগ্র উপজাতিদের গডফাদার। ১৯৮৯ সালের ৪ঠা মে লংগদু’র গডফাদার অনিল বিকাশ চাকমার নির্দেশে তৎকালীন (চলমান) চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ সহ তার স্ত্রী, সন্তান ও নাতিকে খুন করে মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী উগ্র উপজাতি জঙ্গি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সংগঠক ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার জঙ্গি শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা, উগ্র উপজাতি সন্ত্রাসীরা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের হায়নারা। আবদুর রশিদ চেয়ারম্যান সহ তার স্ত্রী, সন্তান ও নাতিকে হত্যার ন্যায়সঙ্গত দাবিতে বাঙালীদের একমাত্র প্রানের সংগঠন পার্বত্য গণপরিষদের তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করলে উগ্র উপজাতি পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও খুনি সন্তু লারমার জেএসএস এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা সমাবেশকে প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়ে এস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে।
গডফাদার অনিল বিকাশ চাকমার নির্দেশে শান্তি বাহিনী নিরীহ বাঙালীদের উপর গুলি চালায়, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সদস্যরা বেয়নেট দিয়ে কুপায় আর দাঙ্গায় মারা গেছে দেখানোর জন্য লেলিয়ে দেয়া উগ্র উপজাতিরা নৃশংসভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে দা, বর্শা, বল্লম মেরে, সেই আহতদেরকে আহত অবস্থায়ই কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে জবাই করে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে, বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খোঁচিয়ে খোঁচিয়ে নানা ভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল এই অসহায় মানুষ গুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তারা। পুড়িয়ে দেয়া হয় মসজিদ। জনসংহতি সমিতির শান্তিবাহিনী ও উগ্র পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ নামক হায়নার নির্মমতার হাত থেকে রক্ষা পায়নি নিরীহ নিরস্ত্র বাঙ্গালীরা।
১৯৮৯ সালের ৪মে রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার ছয়টি গ্রামে এক বিরাট হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল, যা নৃশংসতার বিচারে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম। শত শত ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। লুটপাট করা হয়েছিল পার্বত্য বাঙালীদের ঘর বাড়ি। গুলি করে পশুপাখির মতো খুন করা হয়েছি বাঙালী আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। ‘তৎকালীন রিপোর্ট অনুযায়ী ৪০ জন নারী, পুরুষ, শিশু, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ ও পরে হত্যা করা হয়। ছাত্র জনতা, নারী, শিশু, বৃদ্ধ আহত হয় শতাধিক, গুম করে শত শত বাঙালীকে। বাঙালীদের দাবি অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি এবং আহত শতাধীক। পরিবারের লোকজন যাতে নিহতদের যথাযথভাবে কবর দিতে না পারে সেজন্য গুম করা হয়েছিলেন হাজার হাজার বাঙালীকে। এরা লাশগুলোকে গুম করে আত্মীয়-স্বজনকে ফেরত না দিয়ে বা কবর দেয়ার সুযোগ না দিয়ে একত্রে পুড়িয়ে ফেলে মুসলিম ধর্মীয় রীতিকে অবমাননা করে। এ ঘটনায় ধ্বংস হয় অসংখ্য মসজিদ। জেএসএস এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উগ্র উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা আজো চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ এর সমস্ত জমি দখল করে রেখেছে। ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখা এবং বেচে যাওয়া কিছু কিছু সাক্ষী আজো আছে কিন্তু ঘটনার কথা মনে পড়লে আজও তাদের গায়ের পশম খাড়া হয়ে যায়। ৪ঠা মে তারিখে শান্তি বাহিনী ও উগ্র পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ নামক হায়নার কতৃক রচিত হয়েছিলো এক কালো গনহত্যার ইতিহাস যা বাঙ্গালী জনগন কখনোই ক্ষমা করবে না।
লংগদুর ঘটনা নতুন কিছু নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে সারা বছর ধরে বাঙালীদের উপর হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুঠপাঠ এবং অকারণ গ্রেপ্তারের ঘটনা নিয়মিতভাবেই ঘটে। তার কিছু কিছু মিডিয়ার সুবাদে আমাদের কানে আসে এবং আমরা কিছুটা মৌসুমি কানাকানি করি। আমাদের নির্বিকার চৈতন্যে কিঞ্চিত বিকার আসে এবং সে বিকারের ঠেলায় কিছুটা ফেসবুকিং করি, সম্ভব হলে গো-বেচারা মানববন্ধন করি এবং টুকটাক বিবৃতি দিই। যার মধ্য দিয়ে মূলত ‘বাঙালী বান্ধব’ আর ‘স্ব-দাবিকৃত মানবাধিকার কর্মী’ হওয়ার আইডেনটিটি ঝালাই করে নিই! কিন্তু বেশিরভাগ ঘটনাই আমাদের জানাজানির ও কানাকানি বাইরে পাহাড়েই নীরবে-নিভৃতে বাতাসের সঙ্গে হাওয়া হয়ে যায়।
মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী উগ্র উপজাতি জঙ্গি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সংগঠক ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার জঙ্গি শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা, উগ্র উপজাতি সন্ত্রাসীরা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের হায়নারা নতুন অজুহাতের অপেক্ষায় থাকবে, যাতে করে নতুন করে অন্য কোনো গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া যায়, নতুন কোনো গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া যায় এবং নতুন করে বাঙালীদের সর্বস্বান্ত করা যায়। কিন্তু এভাবে আর কত? পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালীদের বলা হয় অ-উপজাতি। বাঙালীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি পায় না, জীবনের কোনো নিরাপত্ত পায় না, নিজের সহায়-সম্বলটুকু আগলে রাখার অধিকার পায় না। এভাবে আর কত? অর্থনৈতিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নৈতিক বিকাশও যে জরুরি সেটা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।
যতই আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করি না কেন, যতই আমরা গণতন্ত্রের জিগির করি না কেন, যতদিন পাহাড়ে উপজাতি- বাঙালীদের সুযোগ ও অধিকারের সাম্যতা নিশ্চিত না হবে, ততদিন এদেশ একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দাবি করতে পারবে না। তাই লংগদু ঘটনা এবং লংগদুর মতো সব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালী মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতি, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার চাই। রাষ্ট্রের সত্যিকার গণতন্ত্রায়ণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে সবার সুযোগ এবং অধিকারের সাম্যতা অধিকতর জরুরি।
১৯৮৯ এর ৪ঠা মে লংগদু গণহত্যা হয়েছিল। এর কযেকজন প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকজনের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনলে গা শিউরে উঠে। যাকে যখন যেভাবে পেয়েছে সেখানে হত্যা করেছিল। প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকের সামনে থেকে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করা হয় নিস্পাপ শিশু আর শিশুটির মাকে করেছিল ধর্ষণ। এভাবে কতজন নিরপরাধ বাঙালী হত্যা করেছিল তার প্রকৃত হিসাব এখনো পায়নি।
এই ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী কিছু মিয়ানমার ও ভারতের রিফিউজি বা অনুপ্রবেশকারী উগ্র উপজাতি জঙ্গিদের সনাক্ত করেছিল। যারা ঘর বাড়ি লুট করে আজ সেই সব সম্পত্তি নিয়ে সচ্চল ভাবে জীবন চালিয়ে যাচ্ছে। আর ওরা প্রকাশ্য ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আবার তাদের কেউ কেউ সরকারি, আধা-সরকারি চাকুরিতে বর্তমানে নিযুক্ত রয়েছে। যারা সংগঠনে জড়িয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হয়ে জবর দখল করে নিয়ে যাচ্ছে বাঙালীদের পূর্ব পুরুষের ভিটে মাটি। তিন পার্বত্য জেলায় চলছে ঐসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। আর গণহত্যার পৃষ্টপোষকতায় যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া বর্তমান সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।
প্রথম শর্ত হওয়ার দরকার ছিল, নিরীহ নিরাপরাধ বাঙালীদের নিরাপত্তার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম আরো সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা, প্রতিবিপ্লবী উগ্র পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও শান্তিবাহিনী বা খুনী বাহিনীকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ করা। সেটা না করে বরং সরকার উগ্র উপজাতিদেরকে স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন দিয়ে একতরফা সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে তাদের নির্বাচিত করেছে।
- যেসকল সুপারিশ আমলে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে:
- গণহত্যাকারীদের বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ঘাতকদের শাস্তির দাবী এবং তাদের উৎখাতে এগিয়ে আসুন!
- এদের উৎখাতের জন্য সকল পাহাড়ী বাঙালী জনতা সোচ্চার হোন।
- ক্ষতিগ্রস্থদের পর্যাপ্ত জননিরাপত্তাসহ পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
- বাঙালীদের ভুমিতে উপজাতি বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলারদের আগমন বন্ধ করতে হবে।
- বাঙালীদের ভুমিতে যেসব উপজাতি বসতিস্থাপনকারী বা সেটেলার ইতোমধ্যে বসতি গড়েছে তাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নিতে হবে।
- জাতি বিদ্বেষী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ - নিপাত যাক! পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ - ধ্বংস হোক!
- পাহাড়ে বাঙালী জনতার পুনর্বাসন বৃদ্ধি কর! আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার সমর্থন করুন!
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]