মোহনা চাকমা |
Nila Chakma-নিলা চাকমা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার এক ঘনিষ্ঠ বান্ধুবী। এখানে তার নাম দেয়া হল মোহনা চাকমা। যখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল তখন থেকে এক বাঙালী ছেলের সাথে তার পরিচয়। তার নাম এখানে দিলাম নিরব। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী ছিলাম তখন থেকে নিরব এর সাথে আমার পরিচয়। আর শেষ বর্ষে এসে তা প্রগাঢ় রূপ ধারণ করে। কোন সময় ভাবিনি তাকে আমি মন দেব। কারণ, সে একজন মুসলিম এবং বাঙালী ছেলে। এতে চরম বাঁধা আছে আমাদের উপজাতি পাহাড়ি সমাজে। বার বার চেষ্টা করেছি তাকে ভুলে যেতে কিন্তু পারিনি। আমি নিজেই তার প্রতিভা, রূপ ও গুণের কাছে হার মেনেছি। কতবার তার সাথে সমুদ্র তীরে, ফয়েজ লেকে, সীতকুন্ড পাহাড়ে সময় কাটিয়েছি। কিন্তু সে কখনই আমাকে একটি বারের জন্যও বিব্রত করেনি। কখনই বন্ধুত্বের বাইরে কোন অধিকার আদায় করেনি। ইচ্ছে করলে নিরব পারত। কারণ এক সময় আমিই তার প্রতি বেশি নস্টালজিয়ায় ভোগেছি। গভীর রাতে কতবার তাকে কাছে ডেকেছি। কিন্তু সে অনড়, অবিচল, অভিষ্ট লক্ষ্য তার। বিসিএস শেষ করে তারপর প্রেম। প্রয়োজনে বিয়ে। এর আগে কেবলই ফেন্ডশীপ কিন্তু তার বন্ধুত্ব ছিল নিখাদ। ত্রুটি ছিলনা বিন্দু মাত্র।
এমনো মনে হয়েছে যে, আমার সামান্য মাথা ব্যথার কথা জানতে পারলে তার হৃদয়ে ব্যথা উঠত। দ্রুত ডাক্তার নিয়ে উপস্থিত হত। চোখ তার ছল -ছল করত। যেন তার হৃদয়ে আঘাত লেগেছে। নিজের সমস্যা আড়াল করে আমাকে সব সময় খুশি রাখতে চেষ্টা করত। কত বার গিফট কিনে পাঠিয়েছে তার কোন হিসেব নেই। এমনি করে কখন যে প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেল, কোন টেরই পেলাম না। এবার তার সমাধি হতে চলছে। তাও আবার আমার জাতি এক পাহাড়ি ছেলের অভিযোগে। সে জাতি ভাই আবার পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ করে। তার স্বার্থের জন্য বাবা মাকে সে সব কিছু রিপোর্ট আকারে জানিয়েছে। বাবা আমার ব্যপারে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। নিরব এখনো নিরবই রইল। কি করব ভেবে পাচ্ছিনা!
“বাঙালী ছেলে বন্ধু” - পর্ব: ২
জীবনের প্রথম আমি এ ধরনের পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে গিয়ে অস্থির হয়ে পড়েছি। এক দিকে বাবার চাপ, অন্য দিকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চাপ। যেন কোন মতেই আমি নিরবকে বিয়ে করতে না পারি। আর যদি করি তবে তারা আমার মা -বাবা ভাই- বোন সবাইকে মেরে ফলবে। আমি মাকে সব খুলে বললাম, মা আমার মনের কষ্ট অনুভব করতে পারল। তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। এক পর্যায়ে বললেন, তোর সুখের জন্য আমি অন্যের হাতে মরেও শান্তি পাব। কিন্তু তোর বাবা আর ছোট ভাইটির কি হবে? তাদেরকেও তো মেরে ফেলবে! আমি থমকে গেলাম। প্রচন্ড ঘৃনা হল আমাদের উপজাতি পাহাড়ি সমাজ ব্যবস্হা ও স্বজাতির নিষ্ঠুর নীতিমালার প্রতি। আমাকে তিন দিন সময় বেঁধে দেয়া হল। সব ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য। না হয় বাবা মাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আমি উপায়ান্তর না দেখে মনে মনে সব স্থির করলাম, কল করে নিরবকে বিস্তারিত জানালাম। নিরব এই প্রথম আমাকে নিয়ে উদ্ভিগ্ন হল। অস্থির হল, আবেগে তার কন্ঠ রোধ্য হল। বলল আমার বাসায় চলে আস তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে! আমি এক ঘন্টা পর তার বাসায় পৌঁছলাম। তার মমতাময়ী মা অনেক চষ্টা করে ও আমাকে কিছু খাওয়াতে পারলনা। কেবল এক কাপ কপি খেলাম। নিরবের রুমে বসে সব কিছু খুলে বললাম। নিরব বলল, মেয়েরা সুবিশাল ভাগ্য নিয়ে জন্মায়। তাদের বিয়ে করতে হয় না, বিয়ে দেয়া হয়। আমার বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ভাল রেজাল্ট হয়েছে। এখন আমি খুব টেনশনে আছি ভাইবা নিয়ে। কিন্তু তোমার কাছে সব শুনার পর তোমাদের সামাজিক নীতির উপর বড়ই ঘৃণা হচ্ছে। ইচ্ছে করছে এই মুহূর্তে তোমাকে বিয়ে করতে। আর আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে ও পারবো না। দীর্ঘ এক ঘন্টা নিরব তার এতো দিনের লুকানো সব ইচ্ছা, মনের কল্পনা, আমাকে নিয়ে তার স্বপ গুলি বলে। এক পর্যায়ে তার কথা শুনে আমি কাঁদতে লাগলাম। সে ও চোখের জল ধরে রাখতে পারল না। সে বলল, কখনো তোমাকে বলিনি ভালবাসি, না বলে ভালবাসতে পারাটাই প্রকৃত ভালবাসা। তবে তোমার ভালবাসা আমায় স্পর্শ করেছে। আমার প্রতিটি রক্ত কনা তোমাকে আমার হৃদয়ে গেঁথে ফেলেছে। এখন আর কি করা? আমরা উভয় সংকট নিয়ে দীর্ঘ যুক্তি তর্ক শেষে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছলাম, আমি ঠিক করলাম, বাবা ও আমাদের আদিবাসী নীতি মেনেই বিয়ে করব। তবে তাদের পছন্দের পাত্র কখনই আমার মন পাবেনা।নিরবই আমার হৃদয়ের রাজা হয়ে থাকবে। আমি অবিসারিণী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। তাই আমি আজকের রাতটি নিরবকে উৎস্বর্গ করার প্রস্তাব দিলাম। নিরব অনেক্ষন চুপ থেকে মাথা নেড়ে হুম জানাল।নিরব সারা রাত আমাকে অস্থির করল। আমিও জীবনের প্রথম সিহরণ ও চরম উত্তেজনার আবেশে রোমাঞ্চিত হলাম এবং নিজের জাতির নিষ্ঠুর সিদ্ধান্তের প্রতিশোধ নিতে পেরে আত্নতৃপ্তি অনুভব করলাম।
“বাঙালী ছেলে বন্ধু” - পর্ব: ৩
আমি মায়ের কান্না আর অনুরোধে বাধ্য হলাম বাড়ি আসতে। বাবা কোন কথা বলছেননা। প্রতিবেশি উপজাতি পাহাড়ি মেয়েরা নানা কথা শুনিয়ে গেল। তবে এক যুবতি তাদের মুখের উপরই মন্তব্য করে বসল, বাঙ্গালি ছেলেরা অনেক ভদ্র এবং ভাল পরিবেশের অনেক সুন্দর ও মেধাবী। সন্ধ্যার পর পরই বাড়িতে আট দশ জন লোক এল। এরা বেশির ভাগই যুবক। এদের মধ্যে একজন আমার স্কুল জীবনের ক্লাস ম্যাট ছিল। তারা বাবা মাকে তুল কালাম আচরণ করতে লাগল। এদের সাথে অস্ত্র দেখে আমি ভয়ে কাপতে লাগলাম। একজন প্রস্তাব করল, যেহেতু মোহনা বাঙ্গালি ছেলের সাথে গিয়েছি। তাই তারা আমাকে উচিৎ শিক্ষা দিতে তাদের সেবা দাসি বানাবে। তার মানে, তারা ইচ্ছে মত আমাকে ভোগ করবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দলের কাজে লাগাবে। শুনে মা কাঁদতে শুর করল। আমি উপায় না দেখে স্কুল জীবনের ক্লাস ম্যাটকে ডাকালাম। তাকে প্রস্তাব করলাম, অনুমতি পেলে আমি সত্য কথা টুকু বলব। সে না বলে দিল। আরো বলল, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এবার আমি তার হাত চেপে ধরলাম। তাকে বশ করার জন্য কিছু কথা বললাম। ইশারা দিলাম। সে নিরব হল। এক পর্যায়ে সে আমাকে ওয়াদা করতে বলে, যদি সে আমাকে বাঁছিয়ে দেয়। তবে আমাকে তার দৌহিক চাহিদা মিটানোর সুযোগ দিতে হবে। তবে এটা হবে অতি গোপনে। যদি এদিক ওদিক হয় তবে নির্ঘাত মৃত্যু। আমি নিরুপায় হয়ে তার কথা মেনে নিলাম। সে বৈঠকে ফিরে গিয়ে বলে, বিষয়টি প্রকৃত পক্ষে ষড়যন্ত্র। আমাদের জাতি যে ছেলেটি আভিযোগ করেছে সে নিজেই মোহনাকে প্রস্তাব দিয়ে পায়নি বিধায় এমন বানোয়াট কথা লাগিয়েছে। এখানে মোহনার কোন ত্রুটি নেই বরং ঐ ছেলেটিকেই শায়েস্তা করা প্রয়োজন। অতপর সে আমাকে ডেকে বলে, তুমি নির্ভয়ে সব খুলে বল। তবে সব সত্য বলবে। আমি ভয়ে কাঁপতে -কাঁপতে অতি বিনয় ও কৌশলের আশ্রয়ে বলি, আমি জুম্ম মেয়ে আমার রক্তে জুম্ম নীতি আদর্শ ও জাতীয়তাবাদ বৃদ্ধমান। কোন কারণেই আমি বাঙ্গালি ছেলে বিয়ে করতে পারবনা। যদি আদিবাসী পাহাড়ি কোন অন্ধ ছেলেকে ও বিয়ে করতে হয় তবে আমি তা মেনে নেব। আমার বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্র করে আমার মা বাবাকে অপমানিত করেছে। আমাদের উপজাতি পাহাড়ি সমাজকে করেছে কলুসিত। প্রয়োজনে আমি আর লেখা পড়া শিখবো না। তারপরও আমাকে অপবাদ থেকে মুক্ত করুন। তারা বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ তিন- চার ঘন্টা ঘাট -ঘাটি করে স্থির করল, ঐ ছেলেটিকে পাহাড়ি নিয়মানুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে। অতপর বাবা মা খুশি হয়ে তাদেরকে জড়িয়ে ধরে, এবং দ্রুত মদ ও খাবারের ব্যবস্থা করেন, তারা রাত ১টায় বাড়ি থেকে বিদায় নেয়ার আগে আমার স্কুল জীবনের ক্লাস ম্যাট আমাকে চুপিসারি বলল দরজা খোলা রেখ আমি রাতে আসব, আমি বললাম আচ্ছা.
“বাঙালী ছেলে বন্ধু” - পর্ব: ৪
এখন আমার লিখা পড়া বন্ধ। বাবা পাত্র দেখছে। পাড়ার স্কুল জীবনের ক্লাস ম্যাট প্রকাশ চোখে চোখে রাখে। মাঝে মাঝে দমক দেয়। কেউ কেউ আবার করুণার চোখে দেখে। প্রকাশ গোপনে আমার বিয়ের বিরোধীতা করে। তাই বাবা সহজে বর মিলাতে পারছেনা। মা বাবাকে মুখ ফুটে বলেই ফেলে, প্রকাশের সাথে বিয়ে হলে কেমন হয়? সে তো মোহনাকে ভালবাসে। যদিও মোহনার ইচ্ছার বাইরে এসব। বাবা চিন্তিত হলেন আর মাকে বলেন এরা সন্ত্রাসী। ভয়ংকর কাজে পারদর্শি। তাই বলে এতটা মেনে নেয়া যায় না। নিরব বিসিএস (প্রশাসন) উত্তীর্ণ হয়ে মোহনাকে কল করলো। মোহনা আনন্দে আত্নহারা হল। দিশেহারা মোহনা, আকুতির সূরে নিরবকে আবেদন জানাল, তুমি এখন অনেক বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছ। যদি আমি তোমার বাড়ির কাজের লোক হিসেবে ও নিয়োগ পাই তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করব। নিরব মোহনার অসহায়েত্ন অনুমান করে বলল, তোমাকে ছয় মাসের মধ্যেই আমি নিয়ে আসব। এদিকে বাবা পাত্র ঠিক করে ফেলেছেন, ছেলে এনজিও তে চাকরি করে। দেখতে শুনতে ভাল। তারিখ ও ঠিক হল। এ খবর শুনে প্রকাশ ও বিক্ষুদ্ধ! চার পাশে শুধু ভয় আর ভয়,। প্রকাশের ফোন এলেই বেশি ভয় হয়। সে আজ কল করে জানালো গভীর রাতে আসবে, আমি কি বলব? প্রকাশ দমক দিয়ে বলল, তোর সাথে আজ গুরুত্ব পূর্ণ কথা আছে, দরজা খোলা রাখবি! আমি বললাম আচ্ছা! আপনারা কি খেয়াল করছেন? আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাদের নিরীহ উপজাতি পাহাড়ি মেয়েদের কিভাবে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষন করছে।
“বাঙালী ছেলে বন্ধু” - পর্ব: ৫
এ সময়টা আমার (মোহনা চাকমা) সব চেয়ে বিপদ সঙ্কুল সময়। বাবা বিয়ে ঠিক করেছে এক জনের সাথে। অপেক্ষা করছে আরো দু'জন। তাদের একজন নিরব অপর জন প্রকাশ চাকমা। এ মুহুর্তে প্রকাশকেই ভয় হয় বেশি। কারন সে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের অস্ত্রধারী, সাহসি ও ক্ষমতাধর, কিন্তু নিরব ছাড়া আমার মন প্রাণ আর কাউকেই চায়না। মাঝখানে বিপদে ফেলে প্রকাশ আমার অনিচ্ছা সত্বেও সুবিধা নিচ্ছে বটে। তবে এটা আমি চাইনা। তার পর প্রায় রাতে প্রকাশের সাথে মোহনার রাত কাটাতে হয়। গত রাতে প্রকাশ এগারোটার পরই এসে হাজির। মাতালাবস্তায় আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে, তোমার বিয়ে কারুর সাথে হতে পারবেনা। অই শালাকে আমি গুলি করে বুক ঝাজড়া করে দিব। তুমি কেবল আমার, আমি তোমাকে ছাড়া একটি রাত ও কাটাতে পারব না! আমি সে রাতে প্রাকাশের মধ্যে উগ্রতার পাশে চরম আবেগ আর মমতা ও লক্ষ্য করলাম। সে শেষ রাতে যাবার আগে বলে গেল কোন একটা মন্দিরে নিয়ে বিয়ে করে ফেলবে। কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। কেবল চুপ করে রইলাম। আমি সত্যিকারের একজন হতভাগী ও অবলা নারী। আমাদের আদিবাসী পাহাড়ি মেয়েরা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দলীয় লোকজনের কাছে খেলার পুতুল ছাড়া আর কিছু নয়। সব কূলেই বাঘ - কুমির উৎপেতে আছে, আমি আছি চরম উৎকন্ঠায়। নিরব সতর্ক মিস কল দিল। আমি এবার তাকে বিয়ের তারিখ জানিয়ে নিমন্ত্রন করলাম। সে হতবাক। চুপ করে আছে। দীর্ঘক্ষণ পর সে বলে উঠল। তারিখ ও বিয়ের অনুষ্ঠান ঠিক থাকবে। কেবল পরিবর্তন হবে বর বা পাত্র। তুমি রেডি হও! আমি সিঁধ কাঠি নিয়েই আসছি!
“বাঙালী ছেলে বন্ধু” - পর্ব: ৬
আগামী কাল নিরব আমাকে নিতে আসবে। তার সাথে চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমার মনে নানা প্রকার জল্পনা - কল্পনা। ভয় হচ্ছে যদি প্রকাশ টের পেয়ে যায় তবে রক্ষা নেই, নির্ঘাত মৃত্যু! মা, বাবা আর ছোট ভাইটির কথা ভাবতেই চোখে জল এসে গেল। ছোট ভাইটিকে ডেকে এনে আদর করলাম। মুখখানা ভাল করে দেখলাম। কিছুক্ষনের জন্য চিন্তা আর কল্পনার মাঝে হারিয়ে গেলাম। প্রকাশের কলে আমার সম্বিত ফিরলো, "তুই কুদু" ঘরৎ" মানে তুই কোথায়? আমি বলি, ঘরে। প্রকাল বলে, রাতে দরজা খোলা রাখিস। আমি একটু নিরব থেকে বল্লাম, আজ না আসলে হয়না? না না তোর সাথে গুরুত্ব পূর্ণ কথা আছে। দরজা খোজা রাখিস, আমি একটু চিন্তা করে বললাম, আচ্ছা! আজ রাতে সে না আসলে ভাল হত, নিরবের সাথে একটু কথা বলা যেত। এটা প্রস্তুতির জন্য সুবিধা হত। কিন্তু কি আর করা। তাকে ত বাঁধা দেয়া যায় না। এতে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। প্রকাশ রাত ১২টার সময় আসল, হাতে কিছু ফুল আর কিছু ফ্রুট।বলল, আগামী কাল তোর আর আমার বিয়ে! এই নে ফুল! আমি চমকে গেলাম। আমি কেবল কি কি কী ই ই ! করতে লাগলাম। সে আমার হাত ধরে খাটে বসাল। শান্ত গলায় বলল, তুই আমার ক্লাস ম্যাট। ১০ম শ্রণিতে পড়ার সময় তোকে আমি "কুচ পাং" অর্থাৎ ভাল বেসে ফেলেছি। কিন্তু তখন লজ্জা আর ভয়ে বলতে পারিনি। , ভেবে রেখেছি তুই পড়া শেষ করে ফিরে আসার আগেই আমি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দলীয় ভাবে একটা ভাল অবস্থানে আসবো। তারপর ঠেকায় কে? কিন্তু ঘটনার জন্য সময় কম পেলাম। তোর বিয়ের তারিখ পরেছে। তাই কাল ঐ আমরা বিয়ে করে ফেলবো। কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। চুপ করে ক্যায়াং এ গিয়ে বিয়ে করে আসব। নেতার সাথে কথা হয়েছে তোকে এক বছরের মধ্যে সরকারি চাকরি দিয়ে দেবে। সে আমার চুল গুলি খুলে বুকের উপর রেখে.... করতে লাগল। অনেক্ষন পর আমি ও বেমালুম সব ভুলে গিয়ে নিরবকে কল্পনায় বাসর দিতে লাগলাম। সত্যি বলতে কি প্রকাশের দেয়া রাত গুলির মধ্যে আজকের রাতটিই মনে রাখার মত হয়েছে! আমার মনে হচ্ছিল, প্রকাশ নয় নিরবই আমাকে দিচ্ছে। আমি মনের আনন্দে নিরব মনে করে সারা রাত প্রকাশকে সুখ সিহরণে ভাসিয়ে দিলাম। আমি ও মনের অজান্তে নিয়ে নিলাম ক্লাস ম্যাট প্রকাশের দেয়া সুধা। মধু চঁন্দ্রীমার ফুল সয্যা। শেষ রাতে শেষ বারের সময় আমার টনক নড়ল, আমি প্রকাশকে বষে আনতে তার চুল গুলি খামছে ধরে বলাম, বিশ্বস কর, আমি তোকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবনা। তবে তোকে প্রথমত সন্ত্রাস ও মদ ছাড়তে হবে। দ্বিতীয়ত আমাকে ৩ দিন সময় দিতে হবে।এ ৩ দিন আমাকে আমার মত চলতে সুযোগ দিতে হবে। কোন কল করা চলবে না। তাছাড়া আমার সব কথা মেনে চলতে হবে? "মা... রে.. এত "কথিন ছর্থ", যাই হউক সে সব মেনে নিল। তবে আরেক বারের জন্য রিকুয়েস্ট করল, আমি বাঁধা দিলে ও সে তা মানলোনা। প্রভাতে ঘুম থেকে জাগতে আমার খুব অলস লাগল। খুব ক্লান্ত লাগছিলো। তারপরো উঠে স্নান সেড়ে কেউ টের না পায় মত তৈরি হলাম। নিরব কল করে বলল নির্দিষ্ট জায়গায় থেকো। আমি ওকে জানালাম। অল্প সময় ক্ষেপনের পর হঠাৎ একটি মাইক্রো বাস এসে থামলো। নিরব গাড়ির দরজা খুলে নেমে বলল, কই তুমি? আমি জঙ্গলের আড়াল থেকে বললাম, এই তো আমি। নিরব আমাকে দ্রুত গাড়িতে তুলে নিয়ে বলল, এই বোরকাটা পরে নাও। নিরাপদ হবে। আমি তাই করলাম এবং মোবাইলটি বন্ধ করে দিলাম। নিরব জিঞ্জেস করল, এত দিন তুমি কেমন ছিলে? আমি তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলাম। বললাম, জাহান্নামে ছিলাম। আজ আমার জাহান্নাম থেকে বিদায় হলো। তুমি যদি তোমার বুকের স্বর্গে আমায় স্থান দাও? তবেই আমার ভালবাসা, আমার বিশ্বাস সত্যি হবে। নিরব আমাকে তার বুকে জড়িয়ে নিল, আজো আমি তার বুকের উষ্ণতায় আর হৃদয়ের টানে মমতাজ (নতুন নাম) হয়ে স্বর্গ সুখ আর নিরাপদে আছি।
(কেবল মাঝ খানের জীবন টুকু দুুঃস্বপ্ন হয়ে বিবেককে তাড়িয়ে বেড়ায়, কেন? কেন? কেন?
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সন্ত্রাসীরা আমাদের নিরীহ উপজাতি পাহাড়ি তরুনীদের এভাবে যৌন নির্যাতন করে উল্টো বাঙালীদের উপর এর দায় চাপিয়ে দেয়।
উৎস: Nila Chakma-নিলা চাকমা ফেইজ বুক পেইজ
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি
সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]