নিজস্ব প্রতিবেদক, পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালীশুরি ইউনিয়নের সিংহেরা কাঠি গ্রামের মো. সালাম মোল্লার একমাত্র ছেলে ক্যাপ্টেন তানভীর সালাম শান্ত। সদ্য ঘর বাঁধা ক্যাপ্টেন তানভীরের স্বপ্ন এখন শুধুই স্মৃতি। দশ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন জয়পুরহাটের মেয়ে নাজিয়া সুলতানাকে। তাদের দাম্পত্য জীবনে স্বপ্ন ছিল অনেক, কিন্তু সব স্বপ্ন ভেঙে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সেনাবাহিনীর এই অকুতোভয় সদস্য। ক্যাপ্টেন তানভীরের ফেসবুক ওয়ালে গিয়ে দেখা যায় কাভারপেজে পাহাড়ের ছবি। সেই ছবির ওপর লেখা রয়েছে- "যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের ওপর অবতীর্ন করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ্ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্য বর্ণনা করি যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।" সুরা আল হাশর- আয়াত ২১।
তানভীরের প্রোফাইলে পিকচারে শোভা পাচ্ছে বিয়ের সময়ের দুই জনের একটি ছবি। তানভীরের চাচা মোজাম্মেল মোল্লা বলেন, তানভীরের বাবা সালাম মোল্লার চাকরির সুবাধে পরিবারের অন্যন্য সদস্যদের সাথে তানভীরও দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার টঙ্গী এলাকায় থাকতেন। তানভীরের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার। পরিবারের একমাত্র গর্বের ধন তানভীরকে হারিয়ে সকলেই নির্বাক।
এদিকে তানভীরের মরদেহ বাউফলে আনার কথা থাকলেও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে আনতে না পেরে ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড়ধসে বন্ধ হয়ে যায় রাঙামাটির রাস্তাঘাট। আটকা পড়েন শতশত মানুষ। তাদের উদ্ধার করতে এসে মাটির নিচে চাপা পড়েন পাশের ক্যাম্প থেকে আসা সেনাসদস্যরা। আর এতে প্রাণ হারান মেজর মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, ক্যাপ্টেন তানভীরসহ চার সেনাসদস্য। এরা হলেন- করপোরাল মোহাম্মদ আজিজুল হক ও সৈনিক মো. শাহিন আলম। নিখোঁজ রয়েছেন সৈনিক মো. আজিজুর রহমান।
তানভীর ২০০৯ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীতে যোগদান করেন। ৬৪তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের মাধ্যমে কমিশন লাভ করেন তিনি। পরে ক্যাপ্টেন পদ মর্যাদায় পদোন্নতি পান। ২০১৬ সালে ২ সেপ্টম্বর জয়পুরহাট জেলার নাজিয়া সুলতানাকে বিয়ে করেন।