নিজস্ব প্রতিবেদক, পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী
সম্প্রতি পাহাড় ধ্বসে শতাধিক নীরিহ মানুষ মারা গেলেন। আছে কোন হাহাকার? নেই! পাহাড়ে যখন প্রাকৃতিক দূর্যোগে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়, অকল্পনীয় ভাবে মারা যায় বহু মানুষ, তখন এটা কোন বিষয় নয়। যখন সেখানে সাম্প্রদায়িক অশান্তি হয়! অন্তত একটা উপজাতি মারা যায়, তখন জাতীয় প্রেসক্লাব, জাতীয় জাদুঘর, টিএসসি মুখর হয়। মুখর হয় এনজিও, নারীবাদী, সাম্রাজ্যবাদীরা! দুঃখ হয়! যখন আমাদের দেশ সাম্রাজ্যবাদের থাবায় প্রায় খন্ড হবার পথে! ঠিক তখনও আমরা অঘোরে ঘুমাই! আমরা প্রশ্ন শুনে আতকে উঠি!
প্রশ্ন এমন-
উপজাতিরা কেন অসন্তুষ্ট হবে?
কেন তাদের সন্তুষ্ট করতে পারছে না রাষ্ট্র?
তাদেরকে সাধারনের মত সুযোগ দেয়া হয়নি নিশ্চয়?
তাদেরও দেশের অনযান্য সাধারনের মত সুযোগ পাবার অধিকার আছে! আছে ভালোবাসা পাবার অধিকার!
ভাবা যায়?
কোথায় পার্বত্য বাস্তবতা? আর কোথায় আমাদের রাষ্ট্রনাশী অসচেতনতা? কোথায় মিডিয়া আগ্রাসন? আর কোথায় আমাদের দেশাত্মবোধ? উপজাতিদের মাঝে সবচেয়ে বড় ও লিডিং উপজাতি চাকমাদের শিক্ষার হার এখন ৭২ পার্সেন্ট। পার্বত্য বাঙ্গালীদের শিক্ষার হার সেখানে ২৮ পার্সেন্ট। পুরো বাংলাদেশের গড় শিক্ষার হার ৬৫ পার্সেন্ট।
উপজাতিদের দারিদ্রের হার পুরো বাংলাদেশের সাপেক্ষে অনেক কম!
উপজাতিদের যেকোন দূর্যোগে বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী, এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার যে বাড়াবাড়ি রকমের কর্মততপরতা শুরু হয়, সে সাপেক্ষে পার্বত্য বাঙ্গালীরা কোন গুরুত্ব পায়না।
সাম্প্রতিক নয়ন হত্যাকান্ড নিয়েই দেখুন।
নয়ন মারা গেলো। কোন নিউজ হয়নি। কারন পাহাড়ে বাঙ্গালীরা নিয়মিতই অপহরন হয়। খুন হয়। নিউজও হয়না। কিন্তু এবার নয়নের নামটা জানা গেলো উপজাতিদের ঘরে আগুনের ঘটনার পর। এই ঘটনা নিয়ে খোদ উপজাতিরাই নিজেদের নেতাদের নাম বলছে। কারা আগুন দিয়েছে তা বলছে। আগুন দেয়া ঘরে কোন মালামালের ছাই ছিলো না। শূণ্য ঘরে আগুন দেয়া।
ফলে মিডিয়া ও আন্তর্জাতিক অংগনে তোলপাড় শুরু হল। ফলে নয়নের খবরও হল!
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষফোড়া হল শান্তিচুক্তি। যা দেশের ভেতর আলাদা প্রশাসন তৈরি করেছে। সংবিধানের বাইরে আলাদা শক্তিমত্তা দিয়েছে। এর সুযোগ নিয়েই আন্তর্জাতিক শক্তি এ অঞ্চলকে আলাদা রাষ্ট্র করতে চায়। ফলে উপজাতিদের চোখের কান্না নিশ্চিত ভাবে পশ্চিমা নাটকের কান্না।
আপনিই বলুন, একটা দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ২০ কোটি। এই বিপুল জনসংখ্যার ১ ভাগেরও কম জনসংখ্যা হল বার্মা থেকে আসা উপজাতিদের। পুরো পুরো ১ পারসেন্ট জনসংখ্যাও যদি ধরি। তাদের জন্য দেশের ৫ পার্সেন্ট সরকারী চাকরি ও শিক্ষার কোটা। এরা কত দ্রুত সরকারী চাকরি ও শিক্ষায় সয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছে, ভাবতে পারেন?
হ্যা। তবুও এরা সন্তুষ্ট নয়। আপনি কি তাদেরকে সন্তুষ্ট করার কথা ভাবছেন?
- তাহলে সিম্পলি পার্বত্য চট্টগ্রাম ছেড়ে দিন। এরা এরপর বার্মার মত ফকির ও আন্তঃকলহে বিলীন হলেও আর আপনার প্রতি অসন্তুষ্ট হবে না।
অন্তত নিজ ভুখন্ড ছেড়ে দেয়ার মত উদার হতে হবে আপনাকে।
আপনার বলা- 'ভালোবাসা' শব্দটি একমাত্র দশ ভাগ ভূখন্ড ছেড়ে দেয়ার মাঝেই সঠিক অর্থ পাবে। নচেত নয়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এত কিছু দেয়ার পরও পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি ভাবনায় অবশ্যই সঠিক কান্নার সাথে সাম্রাজ্যবাদীদের 'রচনা করা'- কান্নার পার্থক্য করতে হবে। নচেত পাহাড় সম্পর্কে সঠিক স্টাডি যাদের নেই, তারা সহজ পশ্চিমা চক্রান্তে পড়ে যাবে।
আজ যখন ভূমিধ্বসে আজন্ম নীপিড়িত পার্বত্যবাসী মারা যাচ্ছেন! লাশের ওপর লাশ! যেখানে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি ট্যাকেল দিতে গিয়ে এই রমজান মাসে প্রচন্ড গরমে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে! যেখানে এতটুকু শান্তনার বাণী নেই সাম্রাজ্যবাদের টাকায় কেনা মিডিয়া কিংবা সিশীল সমাজে!
ঠিক সেখানে পার্বত্যের বিষফোড়া বার্মিজ স্যাটেলার উপজাতিরা অট্টহাসি দিয়ে মানুষের জীবনের সাথে, আশ্রয়প্রাপ্ত দেশ ও সেনা বাহিনীর সাথে মশকরা শুরু করেছে!
-তেমন একটি প্রেক্ষাপটে আমরা পার্বত্য্য সাম্রাজ্যবাদী পরিস্থিতি না জেনে, না বুঝে কিবোর্ডের ক্লিকে দেশ ও জাতিকেই আরো ভারাক্রান্ত করছি! গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে 'দ্বায়িত্ববোধ' শেখাচ্ছি!! হায়! যখন অহজ্ঞতাই সবচেয়ে বড় জুলুম!
রোম যখন পুড়ছিলো নিরোই কি বাঁশি বাজাচ্ছিলো? নাকি অজ্ঞ বাঙ্গালীর অপর নামই নিরো?