মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০১৭

রামগড়ে সন্ত্রাসী হামলার উস্কানী দাতা ইমতিয়াজ মাহমুদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে জিডি

 খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ের কালাডেবায় গত ৩০ জুন চাঁদার দাবিতে রাতের আধাঁরে ঘটে যাওয়া উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হামলা, ফাঁকাগুলি ও গ্রামবাসীদের পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ফেসবুকের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টাকারী ইমতিয়াজ মাহমুদের বিরুদ্ধে রামগড় থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রপরিষদ রামগড় শাখার আহবায়ক মো. সাইফুল ইসলাম।  শনিবার সকালে রামগড় থানায় এসে উস্কানীদাতা ইমতিয়াজ মাহমুদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরীটি করেন তিনি। রামগড় থানার জিডি নং- ৩৩৮/১৭।
জিডি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিগত ৩০ জুন রাত আনুমানিক ১০টার দিকে চাঁদার দাবিতে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা কালাডেবার স্লুইচ গেট এলাকায় এসে এলাকায় আতংক সৃষ্টির লক্ষ্যে ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। গুলির শব্দে স্থানীয় কালাডেবা বাজারের ব্যবসায়ী ও উপস্থিত পাহাড়ী-বাঙ্গালী জনতা সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দেয়, এতে সন্ত্রাসীরা পালানোর সময়ও ১ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।

এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক রামগড় ৪৩-বিজিবি ব্যাটলিয়নের উপ-অধিনায়ক হুমায়ুন কবির ও জোন এনসিও আমিরুলের নেতৃত্বে একটি দল, ও রামগড় থানার অফিসার ইসচার্জ শরীফুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশের আর একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এই ঘটনায় কোন হতাহত কিংবা কারো বাড়ি ঘরে হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে জানা যায়।

এই ঘটনার কিছুক্ষন পরেই রাত ১২:২৫, ২:৩০, ৫:২২ মিনিটে ইমতিয়াজ মাহমুদ নামের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একাধিক উস্কানী মূলক ও মিথ্যা তথ্য পোষ্ট করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে রামগড়ের কালাডেবা, সোনাইআগা, ব্রতচন্দ্র পাড়ায় রাতের আধাঁরে শতাধিক সেটেলার বাঙ্গালী ও প্বার্শবর্তী তৈচালা বিজিবি ক্যাম্প হতে বিজিবি সদস্যরা মিলে পুরো গ্রামে ধর্ষন, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

এসময় পাহাড়ে অবস্থানরত উপজাতীয় সদস্যদের "আদিবাসী" বলে উল্লেখ করেন। যা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন উক্ত গ্রামগুলোতে আধিবাসিদের বসবাস। আদিবাসীরা প্রান ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রপরিষদের রামগড় শাখার আহবায়ক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইমতিয়াজ মাহমুদের এমন মিথ্যা, কাল্পনিক, বানোয়াট পোষ্ট রামগড়ে পাহাড়ী-বাঙ্গালী সাধারণ জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের সম্প্রীতির মেলবন্ধনে ফাটলের কারণ, পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি, আতংক ও আইনশৃংখা অবনতির কারণ, যদি প্রশাসন ও জনগন সচেষ্ট না থাকতো তাহলে তার এরকম পোষ্টের কারণে রামগড়ে আরেকটি লংগদুর জন্ম হতো বলে আমি মনে করি, ইমতিয়াজ মাহমুদের এমন পোষ্ট তথ্য-প্রযুক্তি আইনের অপরাধের শামিল।

এদিকে কালাডেবার বাসিন্দা মো. আক্কাস জানান, এহেন ঘটনায় মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে যারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করে মাছ শিকারের চেষ্টা চালিয়েছেন তাদের যথাযথ আইনের আওতায় আনলেই তবে পাহাড়ী-বাঙ্গালী সম্প্রীতি আবারও আগের মতো দৃঢ হবে। এছাড়া স্থানীয়দের দাবি, ইমতিয়াজ মাহমুদের মতো উস্কানীদাতারাই পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার মূল কারিগর। এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত পূর্বক আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ শরীফুল ইসলাম।