বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭

পাহাড়ে কেন দোষী সেনাবাহিনী

পার্বত্য চট্টগ্রাম বর্তমান উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। ছোট বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হতে শুরু করে ক্ষুদ্র পানের দোকানীকেও নির্দিষ্ট হারে উপজাতীয় সসস্ত্র গ্রুপদের চাঁদা দিয়ে চলতে হয়। এদিকে সরকারি চাকরিজীবিদের মাসিক কিস্তি তো আছেই। সরকারি ভ্যাট যেমন কোন পন্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরনের জন্য অপরিহার্য তেমনি উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিয়ে পাহাড়ে বসবাস করাও অপরিহার্য। চাঁদা না দিলেই পরিনতি ছাদিকুল। আমাদের পার্বত্য সাধারন নাগরিকদের জন্য সরকারের বাইরেও আরেকটি সরকার রয়েছে। পার্বত্য অঞ্চল ব্যতিত সারা দেশের মানুষ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সরকার অধীন। আর পার্বত্য অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশ সরকার ছাড়াও রয়েছে উপজাতীয় সসস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক প্রনীত শাষন ব্যবস্থা। বাংলাদেশ সরকারের আইন ভংঙ্গ করলে জেল, জরিমানা, আর উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের আইন ভংঙ্গ করলে মৃত্যু। এভাবেই যখন পার্বত্য বাঙ্গালী অর্থনৈতিক ভাবে নিরুপায় হয় তখন পরিনতি হয় ছাদিকুল। এহেন পার্বত্য উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের শাষন ব্যবস্থায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের জন্য আশির্বাদ স্বরুপ। কেননা, সেনাবাহিনী পাহাড়ে আছে বলে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে অন্তত নিরাপদে বাড়িতে ঘুমাতে পারি। নচেৎ সেটাও সম্ভব ছিলো না।

যদিও সরকার উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের প্রতি নমনীয় তবুও সম্প্রতি সময়ে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস দমনে কিছুটা সোচ্চার। কেননা, পার্বত্য উপজাতীয় সসস্ত্র সংগঠনগুলো পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বাইরে সারাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গীদের একমাত্র বিশ্বস্থ অস্ত্রের যোগানদাতা। তাই অবৈধ অস্ত্রের যোগান রোধ এবং দেশের জঙ্গী নির্মূলে হাতে চুরি পরিধান করা পার্বত্য প্রশাসনকে সরকার উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের প্রতি কিছুটা নজরবন্দীতে রেখেছে। যার ফলে কয়েক মাসের মধ্যে বেশ কয়েক জন উপজাতীয় সসস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রেফতার এবং অবৈধ অস্ত্রের চালান ধরতে সক্ষম হয়েছে সেনাবাহিনী। বর্তমানে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা সহ সকল অপকর্মে ব্যঘাত ঘটাচ্ছে সেনাবাহিনী। পাহাড়ে সেনাবাহিনী থাকায় উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা নিরাপদে আগের মতো চলতে পারছে না। তাই রোমেল ইস্যু সৃষ্টি করে পাহাড়ে গুরুত্বপূর্ন সেনা অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। - অবৈধ শান্তি চুক্তি এবং উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের দাবি অনুযায়ী সরকার গুরুত্ব্যপূর্ন কিছু পয়েন্ট হতে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সেনা ও পুলিশ ক্যাম্প প্রত্যাহার করেছে। যার ফলে ঐ সমস্ত পরিত্যক্ত নিরাপত্তা ক্যাম্প সহ পাহাড়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে সৃষ্টি হয়েছে উপজাতীয় সসস্ত্র সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির পোস্ট। যেখানে দিনের বেলায়ও মালবাহী গাড়ি হতে দিব্যি চাঁদা আদায় করতে পারছে সন্ত্রাসীরা। রাস্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ক্যাম্প নেই বলে জনসাধারন নিরুপায় হয়ে আছে।

এদিকে পার্বত্য প্রশাসনও হুকুমের গোলাম হয়ে বন্দি। প্রশাসন উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের সকল অপকর্ম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকলেও কিছুই করার নেই যতক্ষন না পর্যন্ত বড় কোন অঘটন ঘটে। অর্থাৎ সেনাবাহিনী চাইলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাহাড় হতে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে পারে। কিন্তু, তা করার অনুমতি কিংবা বিধান নেই। যার ফলে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিয়ে পাহাড়ে বাঁচতে হবে এটা এখন ধ্রুব সত্য পার্বত্যবাসীর জন্য। -- তবুও বর্তমানে যখন উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের নৈরাজ্য মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌছে গেছে। যার ফলে এখানে বাঙ্গালী-উপজাতি সর্বসাধারনের চাপ এবং উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের সাথে জঙ্গীদের সম্পর্ক এই দুই মিলে প্রশাসন কিছুটা সন্ত্রাস দমনে কার্যকরী। এখানে বাস্তব অর্থে প্রশাসন বর্তমান উপজাতীয় চাঁদাবাজ নয়, জঙ্গীদের অস্ত্র সরবরাহকারীদের গ্রেফতার করতে অভিযান পরিচালনা করছে। জঙ্গীদের অস্ত্র সরবরাহকারী এবং চাঁদাবাজ একই হওয়ায় উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা বর্তমানে বিপাকে আছে। এছাড়া প্রশাসন প্রয়ই টহল দেওয়ায় চাঁদাবাজি করায় সন্ত্রাসীদের ব্যঘাত ঘটছে।

গত ছয় মাসে সেনাবাহিনীর কারনে উপজাতীয় জনপ্রতিনিধি সুপার জ্যোতি চাকমা সহ উপজাতীয় সংগঠনের নেতাদের বাস্তব অবস্থান দেশবাসীর কাছে কিছুটা পরিস্কার হচ্ছিল। দেশের প্রথম সারীর পত্রিকাগুলোও গত চার মাসে উপজাতীয় তিন সংগঠনের চাঁদাবাজির নির্মমতা তুলে ধরেছেন। বর্তমান উপজাতীয় সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কর্মকান্ড সরকারের উচ্চ পর্যায় হতে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌছে গেছে। সেই লক্ষ্যে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক শক্তিশালী বাহিনী সেনাবাহিনী পাহাড়ে থাকাটা কোন মতেই উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের জন্য নিরাপদ নয়। সরকার কখনো যদি সন্ত্রাসীদের দমনে হুকুম দেয় তবে একমাত্র সেনাবাহিনীই হুমকি হয়ে দাড়াবে সন্ত্রাসীদের জন্য। -- সেই মতে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা নিজেদের অস্তিত্ব্য রক্ষা করতে বর্তমান সেনাবাহিনী বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। পাহাড়ে সেনাবাহিনী না থাকুক এটা উপজাতীয় সন্ত্রাসী ব্যতিত সাধারণ মানুষের ভাষ্য নয়। সাধারন মানুষ চায় পাহাড়ে সেনাবাহিনী থাকুক এবং এক এক করে রোমেল চাকমারা গ্রেফতার হোক।
আবু উবাইদা
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]