পার্বত্য চট্টগ্রাম নামটির সাথে জড়িয়ে আছে রক্তাক্ত ইতিহাস। দীর্ঘ দু’যুগ পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বশস্ত্র আন্দোলন করেছে উপজাতীয়দের একটি সংগঠন জেএসএস (জনসংহতি সমিতি) ওতাদের স্বশস্ত্র সংগঠন তথাকথিত শান্তিবাহিনী। পাহাড়ে বসবাসরত পাহাড়ী-বাঙালীদের উপর আধিপত্য বিস্তারে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি-নির্যাতনের পাশাপাশি ইদানিং সেনাবাহিনী, সীমান্ত রক্ষীবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যদেরও হত্যা করেছে। ১৯৯৮ সালে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে সরকার ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একটি সমঝোতায় পৌঁছালেও থেমে নেই পাহাড়ে সেনা-বিজিবি-পুলিশসহ সাধারণ পাহাড়ী, বাঙালী হত্যা-গুম-অপহরণ ও চাঁদাবাজীসহ নানা অত্যাচার নির্যাতন। সমানতালে চলানো হচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার- যা এখনো চলমান। বিশেষ করে দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় নিয়োজিত সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বর্তমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির কর্মকাণ্ডে বাধা প্রদান, ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে হামলা, অস্ত্র ভাংচুর, বিজিবি জওয়ানদের আহত করা, পর্যায়ক্রমে পুলিশ এবং সর্বশেষ আমাদের বাংলাদেশের গর্বের বাহিনী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর একের পর এক হামলা চলিয়ে যাওয়া এক অশুভ লক্ষণ। দেশের সার্বভৌমত্ব কতটুকু হুমকির সম্মুখীন হলে পরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে- এসব কি ভেবে দেখার এবং প্রতিকার করার সময় এখনো আসেনি।১৯৯৭ সালে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ তাঁর রচিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম : সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হিংসার ঝরণাধারা’ বইয়ে শান্তিবাহিনীর নৃশংসতা ও বর্বরতার সামান্য চিত্র তুলে ধরেছেন। হুমায়ুন আজাদ কর্তৃক প্রদত্ত এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ’৯৭ সাল পর্যন্ত এই হতাহতের সংখ্যা দাঁড়ায় নিম্নরূপ: ১৭ জন সেনা সদস্য, ৯৬ জন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি), ৪১ জন পুলিশ। আহত হয়েছে মোট ৩৭৩ জন। অপরদিকে বেসামরিক ব্যাক্তিরাই মরেছে বেশি। বাঙালি ১০৫৪ জন, উপজাতীয় ২৭৩ জন। আহত হয়েছে ৫৮৭ জন বাঙালি, ১৮১ জন পাহাড়ি। অপহৃত হয়েছে- ৪৬১ জন বাঙালি আর ২৮০ জন উপজাতীয়।
পার্বত্য চুক্তির দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ থেমে থাকেনি এ হত্যাযজ্ঞসহ নানামুখী নির্যাতন। বরং থেমে থেমে চলছে হত্যা-গুম-অপহরণ ও চাঁদাবাজীসহ অত্যাচার-নির্যাতন। আর সম্প্রতি এ ঘটনা আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে মহান স্বাধীনতার মাসে খাগড়াছড়িতে সেনা বাহিনী ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে গত বছরের জুনে একই জেলায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নবগঠিত একটি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে হামলার ঘটনা ঘটে। এসব সেনা, বিজিবি এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনার সাথে উপজাতীয়দের অপর একটি সংগঠন ইউপিডিএফ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। আর এসকল ঘটনায় পরোক্ষভাবে সমর্থন জোগাচ্ছে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে বেড়ানো সন্তু লারমার নিয়ন্ত্রণাধীন ও অনিয়ন্ত্রণাধীন জেএসএসের আলাদা দুটো গ্রুপ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অরক্ষিত সীমান্ত সুরক্ষায় দীঘিনালার বাবুছড়া এলাকায় বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-বিজিবি’র একটি ব্যাটালিয়ন স্থাপনের জন্য ১৯৯১ সালে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। গত বছরের ২২ মে বাবুছড়া বিজিবি ব্যাটালিয়নের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আনুষ্ঠানিকভাবে বাবুছড়াতেই পালন করা হয়। এরপর থেকে বিজিবির সদর দপ্তরের ভুমি নিজেদের দাবী করে বিজিবি’র সদর দপ্তর স্থাপনে বিরোধীতা করে আসছে স্থানীয় পাহাড়ীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ইউপিডিএফ’র মদদে ১০ জুন সন্ধ্যায় কয়েকশ সংঘবদ্ধ পাহাড়ি নারী-পুরুষ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে নির্মাণাধীন বাবুছড়া ৫১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-বিজিবি’র সদর দফতরে হামলা চালায়। এতে ছয় বিজিবি ও এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২২ জন আহত হন। হামলায় বিজিবি’র দুটি রাইফেলসহ বেশকিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেসময় পুলিশ পাঁচ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও পাঁচ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংবাদ মাধ্যমের সূত্রে জানা যায়, সেই ঘটনার রেশ ধরে গত ১৫ মার্চ খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর স্থানান্তর, পাহাড়ীদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় পাহাড়ী ২১ পরিবারের বসতি স্থাপনের দাবীতে বিজিবি সদর দপ্তর অভিমুখে পদযাত্রা’ কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউনাইডেট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফ সমর্থিত দীঘিনালা ভুমি রক্ষা কমিটির নেতৃত্বাধীন পাহাড়ীদের সাথে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। এতে পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের হামলায় ১০ সেনা সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দিঘীনালা উপজেলা নোয়াপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দলের উপর অতর্কিতে পাহাড়ীরা ইটপাটকেল ও গুলতি দিয়ে আক্রমণ করে বসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী প্রায় ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু সেনাবাহিনী অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে। যার ফলশ্রতিতে এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর অন্তত ১০ সদস্য আহতে হয়েছে। দিঘীনালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সাহাদাত হোসেন টিটুও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উক্ত পদযাত্রায় যোগদানের উদ্দেশে চুক্তি বিরোধী একটি পাহাড়ী সংগঠন স্থানীয় পাহাড়ী জনগণকে পরিবার প্রতি দুইজন লোককে মিছিলে যোগ দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছে। কোনো পরিবার তা দিতে সমর্থ না হলে ১ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা নির্ধারণ করে দেয়।
বিচ্ছিন্ন ঘটনায় উপজাতীয়দের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে পুলিশওঅপরদিকে গত ১৩ মার্চ খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কমলছড়িতে একটি গ্রাম্য মেলায় জুয়াড়ী ধরতে গিয়ে পাহাড়ি গ্রামবাসীর হামলায় সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: সারোয়ার আলম ও খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মো: মিজানুর রহমানসহ আট পুলিশ সদস্য আহত এবং ওসি’র গাড়ীও ভাঙচুর করা হয়েছে। সন্ত্রাস ও অপরাধ নির্বিঘ্নে রাখতেই দিঘীনালায় বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপনের বিরোধিতা করা হচ্ছে : বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১২৯ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্তের মধ্যে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা অংশে রয়েছে ৪৭ কিলোমিটার। এই সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে বিজিবির কোনো নজরদারী না থাকায় দুই দেশের সন্ত্রাসী, পাচারকারীসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধীরা অপরাধের স্বর্গরাজ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। গহীন পাহাড় ও বন সমৃদ্ধ অত্যন্ত দূর্গম এলাকা হওয়ায় দূর থেকে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াও সম্ভব হয় না। ফলে রাষ্ট্রীয় ও নাগরিক নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক রক্ষা, সীমান্ত ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমন এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এ অঞ্চলে নতুন বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপনের কোনো বিকল্প নেই। বিজিবি সূত্র মতে, সীমান্তবর্তী নাড়াইছড়ি, টেক্কাছড়া, শিলছড়ি, উত্তর শিলছড়ি, লালতারান, দিপুছড়ি, লক্কাছড়া, উত্তর লক্কাছড়া, ধূপশীল ও আড়ানীছড়া এলাকায় সীমান্ত নিরাপত্তা চৌকিগুলো বসানো হবে। দীঘিনালার বাবুছড়ায় ৪৭ কিলোমিটার সীমান্ত সুরক্ষায় ১৯৯৫ সালে ব্যটালিয়ন স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ১৮ মে ৫১, বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-বিজিবি গঠন করা হয়।
খাগড়াছড়ি সেক্টরের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার মেইন পিলার ২২৭০/৩ এস হতে ২২৮৪/৩ এস পর্যন্ত ৪৭ কি.মি. অরক্ষিত সীমান্তের সুরক্ষা, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ চোরাচালান প্রতিরোধ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী তৎপরতা দমন কল্পে দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ায় একটি স্থায়ী বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর স্থাপনের জন্য ২০০৪ সালে এল এ মামলা নং ০২ (ডি)/২০০৫ মূলে ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৩.৯০ একর এবং খাস ৩১.১০ একরসহ সর্বমোট ৪৫.০০ একর ভূমি হুকুম দখল করা হয় এবং সে অনুযায়ী ২০০৪ সালে ৪৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব প্রেরণ করা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২৯ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখ প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করা হয়। কিন্তু, সরেজমিনে ভূমি পরিদর্শনে গেলে স্থানীয় কতিপয় উপজাতি নারী-পুরুষ ঐ জমির মালিকানা দাবি করে। সর্বশেষ খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ৪৫ একরের মধ্যে ব্যক্তি মালিকানা জমি বাদ দিয়ে ২৯.৮১ একর জমি বিজিবি‘র অনুকূলে অধিগ্রহণ করার জন্য ১৬ জুলাই ২০১৩ কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ভূমি অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী এর মধ্যে ২.২০ একর ব্যক্তি মালিকানা জমি রয়েছে। মালিক তিন ব্যক্তি হচ্ছেন বীর সেন চাকমা (১.৫০ একর), পিদিয়া চাকমা (০.৭০ একর) ও রবিজর চাকমা (০.৭০ একর)। সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে তাদের মালিকানাধীন জমির অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণের টাকা বিজিবি থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর ছাড় কারানো হয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা (এলএ শাখা) বরাবর অধিগ্রহণকৃত ২৯.৮১ একর ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ পনের লাখ আটত্রিশ হাজার দুই শ’ আটষট্টি টাকা সেক্টর সদর দফতর থেকে খাগড়াছড়িতে প্রেরণ করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন এই টাকা গ্রহণের জন্য উক্ত তিন ব্যক্তিকে নোটিশ দিলেও একটি বিশেষ মহলের চাপে তারা টাকা নিতে আসছেন না।
এদিকে প্রস্তাবিত ভূমির ২৭.৬১ একর জায়গার কিছু অংশের মধ্যে একটি পাহাড়ে সেনাবাহিনী ও আনসার ক্যাম্প, একটি পাহাড়ে সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাড, একটি পাহাড় পতিত অবস্থায় রয়েছে। অবশিষ্ট কিছু অংশে ৯৩৪, ৯৩৫, ৯৩৬ দাগে অধিগ্রহণের পর রহস্যজনকভাবে ৭টি পরিবার টিনের চালযুক্ত বেড়ার ঘড় নির্মঠু করে বসবাস করছে। অধিগ্রহণের সময়ে বা আগে তাদের এখানে কোনো অবস্থান ছিল না। বসবাসকারী পরিবার প্রধানগণ হচ্ছেন নতুন চন্দ্র কার্বারী, প্রদীপ চাকমা, সুকুমার চাকমা, প্রিয় রঞ্জন চাকমা, বাবুল চাকমা, বিনয় চাকমা ও জ্ঞানেন্দ্র চাকমা। গত ১৫ মে ২০১৪ তারিখে বাবুছড়ায় অধিগ্রহণকৃত জমি গ্রহণ করে ৫১, বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-বিজিবি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বিজিবি‘র কার্যক্রম শুরুর প্রথম থেকেই স্থানীয় পাহাড়িরা একটি বিশেষ আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের মদদে পার্বত্য খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ায় ৫১, বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-বিজিবি সদর দপ্তর স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছে। বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, মূলত ৫টি কারণে এই নতুন ব্যাটালিয়ন সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রথমতঃ দীঘিনালা অংশের এই ৪৭ কি.মি. সীমান্ত সম্পূর্ণ অরক্ষিত। একটি রাষ্ট্রের সীমানা কখনো অরক্ষিত থাকতে পারে না। তাই এই সীমান্তের সুরক্ষা প্রদানে এই ব্যাটালিয়ন স্থাপন জরুরী, দ্বিতীয়ত: এই ৪৭ কি.মি সীমান্ত অত্যন্ত দূর্গম হওয়ায় বাংলাদেশ-ভারত আন্ত:সীমান্ত অপরাধীরা এই সীমান্ত দিয়ে তাদের নির্ভয়ে তাদের অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অস্ত্র, মানব, মাদক পাচারসহ সব ধরনের পাচারকাজ এবং অবৈধ যেকোনো ধরনের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ এ ব্যাটালিয়নের কাজ। তৃতীয়ত: উত্তরপূর্ব ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা প্রায়শ: তাদের নানাবিধ অপরাধ কাজে এই মুক্ত সীমান্ত ব্যবহার করে বাংলাদেশের ভেতরে অনুপ্রবেশ করে থাকে। ফলে বিএসএফ’র তরফ থেকে তা নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েনের অনুরোধ আসতে থাকে। বাংলাদেশ অন্যদেশের অপরাধীদের নিজ সীমান্তে প্রশ্রয় না দিতে বদ্ধ পরিকর। চতুর্থত: বাংলাদেশের বিভিন্ন পাহাড়ী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এই দূর্গম সীমান্তে তাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প, আশ্রয়স্থল ও ঘাঁটি নিমার্ণ করেছে। তারা অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে এই অঞ্চলে আশ্রয়গ্রহণ করে থাকে। পঞ্চমত: দূর্গম এই সীমান্ত মূল্যবান বনজ ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। এই সম্পদের সুরক্ষা প্রদান এবং ব্যবসায়ী ও নাগরিকদের চাঁদাবাজদের হাত থেকে রক্ষা করা। বিশেষ করে এখানে কোনো বাঙালী বসতি নেই। কিন্তু নিরীহ পাহাড়ী জনগণের উপর স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া চাঁদাবাজিসহ নানাপ্রকার নির্যাতন চালায় তা বন্ধ করতে এই ব্যাটালিয়ন স্থাপন জরুরী। মুলত: নতুন বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপন হলে জনগণের সুবিধা হলেও অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের অসুবিধা হবে। তাই স্থানীয়ভাবে যারা এই ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা করছে তারা ঐ সকল অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষক এবং প্রশ্রয়দাতা। তারা স্থানীয় পাহাড়ী নিরীহ জনগণকে জিম্মি করে ইস্যুটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের পাঁয়তারা করছে। সূত্র আরো জানায়, একটি রাষ্ট্রের সীমান্তে কোথায় নিরাপত্তা ক্যাম্প বসবে এটা রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তা সংস্থার ভাবনা। এ নিয়ে নাগরিকের চাহিদা বাঁধা থাকতে পারে না। কারণ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারমূলক বিষয়। সেখানে কারো ব্যক্তিগত জমি বা সম্পদ অধিগৃহীত হলে সে উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ দাবী করতেই পারে, কিন্তু বাঁধা দিতে পারে না। যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজেই আমরা এ ধরনের অধিগ্রহণ সারা দেশেই দেখছি।
এদিকে সরকার যখন খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ায় বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপনের মাধ্যমে ৪৭ কি.মি. অরক্ষিত সীমান্ত সুরক্ষার মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ চোরাচালান প্রতিরোধ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের অনিবন্ধিত আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ’র মদদে বাবুছড়ায় বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-বিজিবি সদর দপ্তর স্থাপনের বিরোধিতা, বিজিবির সদর দপ্তরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা দেশের অখ-তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন পাহাড়ের রাজনীতি সচেতন মহল। তারা এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলারও অভিমত প্রদান করেন।
সূত্র: পার্বত্যনিউজ, লেখক : এ. এইচ. এম. ফারুক, নির্বাহী সম্পাদক, মানবাধিকার খবর।
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক
বাঙ্গালী গণহত্যা
সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]