সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

পাহাড়ে ভূমি হারাচ্ছে অসহায় বাঙ্গালীরা

খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্র করছে। উপজেলার জনগণ ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে খোঁজ খবর নিয়ে এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভিন্ন মিডিয়া সাংবাদিকদের বলেন, মূলত সংবিধান বিরোধী ও বৈষম্যমূলক ভূমি কমিশন আইন পাশ করাতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে বিশেষ মহলের ইন্ধনে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, রামগড়, মানিকছড়িতে ভূমি সমস্যা সৃষ্টি করছে। অপরদিকে, আজ ২৯জুলাই উপজাতীয় একটি মহল ছুদুয়া পাড়া মৌজায় স্থানীয় কিছু বাঙ্গালী পরিবার স্বাধীনতার পর পরই খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা থানার উল্লেখিত স্থানে বসবাস শুরু করে। কিন্তু ১৯৮৬-৮৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে তৎকালীণ সময়ে সরকার তাদেরকে গুচ্ছগ্রামে জমায়েত করার কারণে ওই সব বসত ভিটা পরিত্যক্ত হয়ে যায়। বর্তমানে তারা ভোগ দখলে থাকলে এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত থাকা উপজাতীয় একটি মহল ১৯৭৯-৮০ সালের অন্য জায়গার একটি কবুলিয়ত নিয়ে এসে জায়গা দখলের জন্য পায়তারা করছে। শুক্রবার ছুদুয়া পাড়া এলাকায় একটি জায়গা নিয়ে বিরোধ মিঠানোর নামে কিছু উপজাতীয় লোকজন নিয়ে এসে মাটিরাঙ্গা উপজেলা সার্ভিয়ার ও কানুগোকে খবর দিয়ে নিয়ে এসে বিরোধীও জমি পরিমাপের চেষ্টা করলে।

স্থানীয় সাংবাদিক মূল কাগজ পত্র ও আদালতের নির্দেশ নিয়ে নিয়ম মোতাবেক বিরোধীয় জমি পরিমাপ করার জন্য বলে হেডম্যান অক্ষয় মনি চাকমা উল্লেখিত সাংবাদিকে অনৈতিক কথা বাত্তা বলে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাঙ্গালীরা মাটিরাঙ্গা ভূমি অফিস থেকে আসা সার্ভিয়ার ও কানুগো সাংবাদিকের দেওয়া পরামর্শ যুক্তিক বলে তারা জমি পরিমাপ না করে চলে যায়। কোন প্রকার লিখিত অভিযোগ ছাড়াই ভূমি অফিস থেকে আসা লোকজন চলে যাওয়ার পর কৌশলে বিরোধকৃত কিছু জায়গার অংশিদার ছিদ্দিক,কালা মিয়া সহ তাদের তিন ভাইদের মেনেজ করে বিরোধকৃত জমির অংশিদার অসহায় তিন মহিলাকে বাদ দিয়ে উল্লেখিত ব্যক্তিদেরকে নিয়ে অত্র মৌজার হেডম্যান গোপনে অন্য জায়গার কাগজ দিয়ে বসবাসরত অসহায় তিন বাঙ্গালী মহিলাদের জমি কেড়ে নেওয়ার পায়তারা করছে। এই ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন মহল কাগজপত্র পর্যালচনা করলে আসল সহস্য বেরিয়ে আসবে।

গত ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার গুইমারা উপজেলায় উপজাতীয় রিজু মারমা থেকে মুসলিম পাড়া এলাকা থেকে প্রায় ২০ বছর পূর্বে দখল শর্ত্তে ক্রয় করা জায়গার মালিক গোলাম মোস্তফা। স্থানীদের সাথে কথা বলে জানাযায় জায়গা ক্রয় বিক্রয়ের লেনদেন নিয়ে বিরোধ রয়েছে। লেনদেন হিসাব নিঃস্পত্তি না করার কারনে একটি উপজাতীয় মহলের ইন্দনে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যাক্তির মদদতে তার ঘর দরজা ভেঙ্গে দেওয়ায় পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে অসহায়ের মত মানবেতর জীবন যাপন করছে। অসহায় বাঙ্গালীদের দেখার কেউ নেই। পরে অসহায় মোস্তফা গুইমারা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে বলে জানায়। এ বিষয় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন লেনদেনের বিরোধ নিয়ে একাধিক বার শালিশী বৈঠক হয়েছে, নিঃস্পত্তি না হওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

সম্প্রতী মানিকছড়িতে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সমস্যা দিনদিন জটিল হচ্ছে। যে কোন মুহুর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যেতে পারে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। ইতিপূর্বে গচ্ছাবিলস্থ নির্জন এলাকার মাদ্রাসায় ও দরিদ্র কৃষকের খামার বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বাঙ্গালী ওই এলাকার বাঙ্গালীরা রয়েছে আতঙ্কিত ও ক্ষুদ্ধ।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মানিকছড়ি উপজেলার গবামারা এলাকায় এক বাঙালী গৃহস্থের বাড়ির গোয়ালঘরে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। বাড়ির মালিক টের পেয়ে এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এসময় তিনি দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হলে বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান। সূত্র আরো জানায়, ঘটনাস্থলের আশেপাশের জঙ্গলে পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ৩০/৪০ জনের একটি গ্রুপ অবস্থান নিয়েছে জানতে পেরে বাঙালী পাড়ায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে নিরাপত্তাবাহিনী টহল জোরদার করেছে।

ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে নিরাপত্তাবাহিনী উপজাতীয় ৬ জনকে আটক করলেও দিন শেষে পরিস্থিতির উন্নয়নের স্বার্থে জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে ও তাদের জিম্মায় শর্ত সাপেক্ষে তাদের ছেড়ে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান উশ্যেপ্রু মারমা ও পাতাছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়াডের মেম্বার মানেন্দ্র চাকমার জিম্মায় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। যেসব শর্তে তাদের মুক্তি দেয়া হয় সেগুলো হচ্ছে, ভূমি বেদখলের প্রতিবাদে মিছিল-মিটিংযে অংশগ্রহণ করা যাবে না, ইউপিডিএফ’র সাথে সম্পর্ক রাখা যাবে না, সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজ দেখলে নিরাপত্তাবাহিনীকে খবর দিতে হবে, বাঙালিদের সাথে সহাবস্থান করতে হবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোন বক্তব্য দেওয়া যাবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বকরীপাড়ার ভুমি বিরোধ হঠাৎ করেই সংগত কারণ ব্যতিরেকে বকরীপাড়ার জমি সংক্রান্ত পাহাড়ী-বাঙ্গালী সমস্যাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ীরা ইতিমধ্যেই পাঁচটি সমাবেশ ও অবরোধ করে। এসব ঘটনায় তারা গাড়ির উপর হামলা করে ২ টি ট্রাক ভাংচুর করে ২ জন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে গুরুতর আহত করে এবং ছোট হাফছড়িতে একটি নির্মাণাধীন মাদ্রাসা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়াও সন্ত্রাসীরা পাহাড়ীদের বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে বাঙ্গালীদের দোষারোপ করার মাধ্যমে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরির নীল নকশা চালাচ্ছে বলে সুত্রে প্রকাশ।

বাঙালীদের অভিযোগ এসব ঘটনার পেছনে পাহাড়ী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ জড়িত। তাদের অভিযোগ, গত বছর হাতিমুড়ার গবামারা এলাকায় পাহাড়ীরা বাঙ্গালী শ্রমিকদের থেকে ৫ টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয় এবং যদি বাঙ্গালীরা পরবর্তীতে তাদের স্ব স্ব কবুলিয়ত জমিতে কাজ করতে আসে তবে তাদের বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় পাহাড়ীরা। এছাড়াও সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ফায়ারের আওয়াজের মাধ্যমে বাঙ্গালীর বিরুদ্ধে পাহাড়ীদের সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার ইন্ধন জোগায়।

উক্ত ঘটনায় ওইদিন রাতে উত্তর হাফছড়ির নির্জন এলাকায় বাঙ্গালীদের তৈরী একটি খামার ঘরের কিছু অংশে আগুন দেয় উপজাতি দুর্বৃত্তরা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তেই দেখা দেয় উত্তেজনা। ফলে প্রশাসন অবরোধকে ঘিরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। যার কারণে পাহাড়িদের ডাকা অবরোধে তেমন কোন সাড়া মেলেনি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ির গচ্ছাবিল, হাতিমুড়া, গবামারাসহ বিভিন্ন গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত বাঙ্গালীদের সাথে নির্জন রামগড় ও মানিকছড়ির নির্জন জনপদ বক্রিপাড়া, মনাধন পাড়া, ওয়াকছড়িপাড়া, উত্তর হাফছড়ি, দক্ষিণ হাফছড়িসহ বেশকিছু এলাকায় ১৯৮০-৮১ সালে তৎকালীণ সরকার বাঙ্গালীদের শরণার্থী হিসেবে কবুলিয়ত মূলে ৫ একর টিলা ভূমি বন্দোবস্তি দিয়ে বসবাসের সুযোগ দেয়। পরবর্তীতে পার্বত্য চট্রগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার অজুহাতে বাঙ্গালীদের গুচ্ছগ্রামে একত্রিত করে। আর বাঙ্গালীদের বসতির পাশের ৩য় শ্রেনির ভূমিতে উপজাতিরা বসবাস করত। উভয় সম্প্রদায়ের মাঘে তখন ছিল সম্প্রীতির মিলন। গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত বাঙ্গালীদের ওইসব পরিত্যক্ত ভূমিতে গিয়ে নিয়মিত চাষাবাদও করত। এক পর্যায়ে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর সম্প্রীতির বন্ধনে ফাটল ধরাতে একটি মহল ভূমি সমস্যাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ী বাঙ্গালীদের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি বক্রীপাড়াস্থ উপজাতি কর্তৃক পরিত্যক্ত টিলায় আবাদ ও মন্দির নির্মাণকে ঘিরে উভয়ের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই সময় উপজাতিদের পক্ষে মানববন্ধন ও অবরোধ, প্রতিবাদে সক্রিয় হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠনগুলো।

প্রতিরোধে বাঙ্গালীরাও ধীরে ধীরে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। উপজাতীদের দখলে বাধা দিতে গেলে উপজাতি সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে গুলি করে আতংক সৃষ্টি করে। ফলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় উপজেলা প্রশাসন বিতর্কিত ভূমিতে স্থিতবস্থা জারি করে এবং ৫ উপজাতি ব্যক্তির আবেদনের ওপর শুনানীর উদ্যোগ নেন। কিন্তু শুনানীর প্রথম তারিখে উপজাতিরা অনুপস্থিত থাকায় পুনরায় দ্বিতীয় বার শুনানীর তারিখ নির্ধারিত হয়। ফলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুল রহমান উপজেলা পরিষদ হল রুমে শুনানী গ্রহন করেন। এ সময় শুনানীতে উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারাম, ইউএনও যুথিকা সরকার, সাব জোন কমান্ডার জিয়াউল হক, ও.সি মো. শফিকুল ইসলাম, কার্বারী উদ্রাসাই মারমা. যুগেশ চাকমা (কার্বারী) নিয়ং মারমা (কার্বারী),ইউপি সদস্য মো. মোশারফ হোসেনসহ ৫জন অভিযোগকারী (উপজাতি)ও ৫ জন বিবাদী (বাঙ্গালী)উপস্থিত ছিলেন।

শুনানীর শুরুতে উপজাতিদের বক্তব্য নেয়া হয়। তারা বলেন, অর্ধশত বছরের অধিক সময় ধরে ১ম শ্রেণি ভূমির খতিয়ান সূত্রে মালিক হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। তবে টিলা ভূমি (বসত) খাস দখল সূত্রে আবাদ (জুম চাষ) করত বলে দাবী করেন। অন্যদিকে বাঙ্গালী ১৯৮৩-৮৪ সনের কবুলিয়ত মূলে (শরনার্থী) সরকার কর্তৃক ভূমি বন্দোবস্তী পেয়ে বসবাস করছে তারা। কিন্তু ১৯৮৭-৮৮ সালে পার্বত্য চট্রগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে তৎকালীণ সময়ে সরকার বাঙ্গালীদেরকে গুচ্ছগ্রামে জমায়েত করার কারণে ওই সব বসত ভিটা পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

সম্প্রতি সময়ে সেখানে উপজাতিরা মন্দির নির্মাণের নামে এবং বাঙ্গালীরা সৃজিত ফল-ফলাদি রক্ষণা-বেক্ষণে গেলে উভয়ের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। প্রশাসন শুনানীর উদ্যোগ গ্রহন করেন। শুনানীকালে উভয়ে উপস্থাপিত রেকর্ডপত্র যাচাই-বাচাইয়ে বৈধ মালিকদের মাঝে ভূমি বন্টন হলে কারো আপত্তি থাকবে না মর্মে একমত পোষণ করে সকলে এবং ওই সময় পর্যন্ত স্থিতবস্থা বহাল থাকবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কিন্তু ২ দিন যেতে না যেতে শুনানীতে মতামত পেশ করা এবং সিদ্ধান্তে ঐক্যমত পোষণকারী কার্বারীরা সমঝোতার দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে এসে অবরোধ আহ্বান করায় বিভ্রান্তি নেমে আসে জনমনে! নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক কার্বারী জানান, তৃণমূলে বসবাসকারী উপজাতিদেরকে কর্মসূচীতে আসতে বাধ্য করছে সশস্ত্র আঞ্চলিক সংগঠনগুলো। অবরোধকে ঘিরে প্রশাসন অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করায় অবরোধ সমর্থনে কেউই মাঠে আসেনি। এদিকে অবরোধ চলাকালে অতিরিক্ত পুলিশের পাশা-পাশি ব্যাটালিয়ন আনসার ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার ছিল।

ওইদিন সকাল ১০টায় ওয়াকছড়ি এলাকায় পরিদর্শনে আসেন সিন্দুকছড়ি জোন অধিনায়ক লে.কর্ণেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য এম.এ.জব্বার, ইউএনও, রামগড় সার্কেল, সহকারি কমিশনার (ভূমি),ও.সি ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক।

তারা ঘটনাস্থ উত্তর হাফছড়ির নির্জন অরণ্যে যান এবং পঙ্গু বাঙ্গালী আবদুস সালামের আংশিক পুড়ে যাওয়া খামারটি দেখেন। এ সময় উপস্থিত পাহাড়ী-বাঙ্গালীদেরকে সর্তক করে জোন অধিনায়ক লে.কর্ণেল বলেন, দুর্বৃত্তরা যে দলেরই হোক না কেন তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না। পাহাড়ে সকলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে প্রথমে প্রতিবেশিদের মাঝে সম্প্রীতি গড়ে তোলতে হবে। সশস্ত্র কিংবা সুবিধাভোগী গোষ্ঠির ডাকে সাড়া রাস্তায় এসে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ঘোলাটে করা যাবে না। এতে নিজেদের মধ্যে মতপ্রার্থক্য, দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বাড়বে। আঞ্চলিক রাজনীতির নামে সাধারণ মানুষকে অহেতুক ভূল বুঝিয়ে প্রশাসনের মুখোমুখি করাই সন্ত্রাসীদের কাজ। তাই সকলকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানান, খামার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া স্থানটি পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে আদৌ কোন মাদ্রাসা ছিল কিনা তা নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। থানার ওসি বলেন, উপজাতিদের পক্ষ অবলম্বন করে আঞ্চলিক সংগঠনগুলো প্রশাসনকে অবজ্ঞা করে অহেতুক শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। পুলিশ আইন-শৃংখলা রক্ষায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

এসকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে, ২ জন পাহাড়ী সন্ত্রাসী ইন্ধনদাতাকে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক আটক করা হয়। পরবর্তীতে মানিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ম্র্যাগ্য মারমা ও হাফছড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান উশেপ্রু মারমার সম্মানার্থে এবং অনুরোধে পরবর্তীতে আর কোন সমস্যা না করার শর্তে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ সমস্যা সমাধানে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পাহাড়ীরা বিশেষ করে ইউপিডিএফ/সন্ত্রাসী এতে কোন গ্রাহ্যই করছে না।

এদিকে সন্ত্রাসীদের প্রত্যক্ষ মদদে এবং উদ্ধত কার্যক্রমে সিন্দুকছড়ি জোনের জোন কমান্ডার হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান উশেপ্র মারমা, মানিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম, পাতাছড়া ইউপি মেম্বার মানেন্দ্র চাকমা, মানিকছড়ির ১নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার শিউলি বেগম ও জালিয়াপাড়ার প্রাক্তন মেম্বার আইয়ুব আলীর সাথে বকরীপাড়ার ভুমি বিরোধ সম্পর্কে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি পরিস্কারভাষায় সতর্কবাণী করেন, যেসকল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ভুমি বিরোধে প্ররোচনা জোগাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইন্ধনদাতা ইউপিডিএফ এর এরিয়া কমান্ডার, সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজদের যেকোন মুল্যে আটক করা হবে। প্রয়োজনে দীর্ঘ দিন ধরে সম্ভাব্য এলাকায় চিরুনী অভিযান পরিচালনা করা হবে। জোন কমান্ডার সতর্ক করে বলেন, আরেকটি তাইন্দং এবং বড়পিলাক এর মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রশাসন যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করবে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাহাড়ী অস্ত্রধারী দলের দলনেতা চিনু এবং দবন এলাকার সহজ সরল পাহাড়ীদের বাধ্য করছে ভুমি বিরোধ নিয়ে সমস্যা তৈরী সচল রাখতে। যদি কোন পাহাড়ী ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের কথা না মেনে এবং রাস্তায় না আসে তবে তাদের ৩০০ টাকা ও ১০ কেজি চাল জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। যখন প্রশাসন সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা সভায় অংশগ্রহনের আহ্বান করে তখন ইউপিডিএফ পাহাড়ীদের বাধা দেয়। এমনকি বাধা না শুনলে পাহাড়ীদের ৫০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। তাই সাধারণ পাহাড়ীরাও সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি।

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]