মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

পার্বত্য বাঙালী কোন পথে আগামীর প্রজন্মকে দেখবে?

সর্বপ্রথম শ্রদ্ধা জানাচ্ছি বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে (খাগড়াছড়ি,রাঙামাটি,বান্দরবান) উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক নির্যাতিতনিহত হাজার হাজার বাঙালী ভাই-বোনদের বিদ্রোহী আত্নার প্রতি আমার এই লেখায় হয়তো অনেকেরই মনে বিষেদাগার তৈরী হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এতে কিছুই করার নেই কারণ যেটা সত্য সেটা প্রকাশ করা এখন দ্বায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে এবার আসি মূল কথায়; পার্বত্য চট্টগ্রামের পথচলার শুরুর পর থেকেই উপজাতীয় সন্ত্রাসীসরকার (বিএনপি,জাতীয় পার্টি,.লীগ), সেনাবাহিনী এই তিনদিক থেকে সর্বদাই নির্যাতিতনিগৃহীত হয়ে আসছে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সর্ববৃহৎ বাঙালী জনগোষ্ঠী 

বুঝ হবার পরে কিছু না দেখলেও দাদা-নানার মুখে যখনি পাহাড়ে বাঙালীদের উপর সেনাবাহিনীর অত্যাচারের কথা শুনেছি তখনি শরীরের পশম দাড়িয়ে গিয়েছেকতটা নির্মম ছিল সেই অত্যাচার তা বলে বুঝানো যাবেনানানার কথা অনুযায়ী পাহাড়ে তৎকালীন সেনাবাহিনীর বন্ধুকের নলের গুতা আর বুটের লাথি খায়নি এমন একজন বাঙালীও তখন ছিলোনা,হোক সে তরুন কিংবা বয়োবৃদ্ধসারাদিন খেয়ে না খেয়ে বিশাল বনভূমিতে সেনাকতৃক নির্যাতিত হয়ে জঙ্গল কেটে রাস্তা তৈরী করা ছিল তখন বাঙালী জনগোষ্ঠীর প্রধান কাজআর তার সাথে রাত হলেই শান্তি বাহিনী নামক উপজাতী সন্ত্রাসী বাহিনীর গ্রাম থেকে গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া,নির্বিচারে বাঙালী গনহত্যা,অপহরন আর বাঙালী নারীদের গনধর্ষন ছিলো নিত্যনৈমত্তিক ঘটনাআর সর্বশেষ ছিলো তৎকালীর সরকার প্রধানদের গুচ্ছগ্রামের নামে বাঙালীদের কোনঠাসা করার সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনা,মূলত তখন সরকারের চিন্তায় ছিলো অনিয়ন্ত্রিত পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালী বসতি স্থাপন করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা কিন্তু তার বলি হতে হয়েছে নিরীহ বাঙালী জনগোষ্ঠী

আর গুচ্ছগ্রামে আবদ্ধ থাকার ফলে না খেয়ে মরতে হয়েছে হাজারো শরনার্থী বাঙালীদেরসরকার বিদেশী চাপ থেকে বাচঁতে গুটি কয়েক বাঙালী পরিবারকে ৫একর করে সরকারী খাস টিলাভূমি বন্দোবস্তি দিলো এর পরবর্তী ঘটনা আমার চোখেই ধারন করা ভিডিও রেকর্ডারের মতো ধীরে ধীরে বাঙালী জনগোষ্ঠী বাড়তে থাকলো আর গুচ্ছগ্রামের রেশন বাড়লো না দিকে ধীরে ধীরে বাঙালীদের হাত ধরেই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করলো পাহাড়ে এদিকে উপজাতী সন্ত্রাসীদের নির্যাতন বিন্দুমাত্র কমলো না বরং বাড়তে থাকলো নির্যাতনের ষ্টীমরোলারসন্ত্রাসী সংগঠন একটা থেকে ধীরে ধীরে ৩টি হলো বাড়লো চাদাঁবাজি,খুন,অপহরণ আর সন্ত্রাসের নৈরাজ্য,ঠিক যেন অপরাধের স্বর্গরাজ্য সরকার বাঙালীদের একপাশে রেখেই শুরু করলো উপজাতী সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানএই দৈতনীতি,সেনা শাসন আর উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের কবল থেকে বাঙালী জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত হলো একাধিক বাঙালী ছাত্র সংগঠন যখনি কোন বাঙালীর ওপর অত্রাচার হচ্ছে তখনি হরতাল ,অবরোধ আর তীব্র আন্দোলন করে যাচ্ছে সংগঠনগুলো

কিন্তু বাঙালীদের যোক্তিক আন্দোলনগুলো কখনোই তেমন সফলতার মুখ দেখেনিআর পক্ষান্তরে উপজাতীয় সন্ত্রাসী নেতারা যখনই তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ কিংবা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তখনি সরকার(স্বস্ব) তাদের দাবি মেনে নিয়েছে সাম্প্রতিককালের পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন আর আলুটিলা পর্যটন সম্প্রসারণ তার জলন্ত উদাহরণ দেখা গেছে,ভূমি কমিশন আইন বাতিলের দাবিতে তিন পার্বত্য জেলার বাঙালী ৫টি সংগঠনের ডাকে প্রায় সকল বাঙালীরা রাস্তায় নেমে এলো,হরতাল,অবরোধ,সমাবেশ এমনকি রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ হলো কিন্তু কারো কোন টনক নড়লো না অপরদিকে সরকার যখন খাগড়াছড়ি জেলার আলুটিলায় প্রায় ৭৫০একর জমি নিয়ে আলুটিলা পর্যটন কে আরো সম্প্রসারণ করার উদ্যেগ নিয়েছে(বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পর্যটনের ঠিকানা হতে চলেছিল) ঠিক তখনি উপজাতী সন্ত্রাসীরা রাঙামাটিতে ১দিন বিক্ষোভ মিছিল আর গুটিকয়েক জায়গায় পর্যটন বিরোধী লিফলেট বিতরন করার পরেই পার্বত্য মন্ত্রনালয় পর্যটন প্রকল্প বাতিল করে দিলোএতে তারা তাদের তাদের যুক্তি হিসেবে দেখালো যে তারা পর্যটন সম্প্রসারণের ফলে গৃহহীন হয়ে পড়বে কিন্তু আমরা সাজেকের দিকে তাকালেই দেখতে পাই যে,সাজেকে পর্যটন কেন্দ্রকরতে গিয়ে যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের ঘরবাড়ি তৈরী করে দিয়েছে সুতরাং এখানে তাদের বিরোধীতার কোন যুক্তি নেই তারপরেও সরকার তাদের অস্ত্রের ভয়ে আলুটিলায় পর্যটন সম্প্রসারণ থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে

এবার আপনি লক্ষ্য করুনঃ
শান্তিচুক্তি তে ব্যাপক গড়মিল থাকা সত্বেও সরকার তাদের সাথে চুক্তি করলো কিন্তু সে চুক্তিতে বাঙালীদের স্বার্থ তো দূরে থাকা কোন নাম পর্যন্ত নেই
সরকার,সেনাবাহিনী,বিদেশী সংস্থাগুলো এত এত সুযোগ-সুবিধা দেবার পরেও কোন সাহসে সন্তু লারমারা আজো সরকার বিরোধী বক্তব্যে দেয়?
বাঙালীরা বারবার তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন করে যদি কোন সুরাহা না পায় তবে সন্ত্রাসীরা কেমন করে তাদের অযৌক্তিক আন্দোলনে সাড়া পায়?
ধীরে পার্বত্য সমস্যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত গড়াচ্ছে এতে করে লাভ কার?
এই সংকট উত্তোরনের কি কোন পথ খোলা নেই?
তবে এই সংকটের মাঝে আগামী প্রজন্মের নিরাপত্তা কোথায়?
সরকার এবং আইনশৃংখলা বাহিনী যদি এই সংকট সমাধান করতে না পারে তবে এর সমাধান দেবে কে?

জানি আমার এই লেখাটায় কারো কিছু আসে যায়না তবুও একটিবার আগামী প্রজন্মের কথা চিন্তা করুন প্লিজ

লেখক: সাইফুল ইসলাম সিএইচটি

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]