খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার বাঙালী গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারী হাজার হাজার জনগণ দীর্ঘকাল থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলার পূর্ব দক্ষিণ কোণে এক দশমাংশ এলাকা জুড়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বনজ সম্পদে ভরপুর দেশের সীমান্ত এলাকা পানছড়ির অবস্থান। যুগ যুগ ধরে এই পানছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালি বসবাস করে আসছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সেক্টর কমান্ডের দায়িত্ব থাকাকালে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময়, পার্বত্য চট্টগ্রামকে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করার জন্য পাকবাহিনীর সঙ্গে একাধিকবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়। পরবর্তিতে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় জনসাধারণ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে পার্বত্য এলাকায় সমতল এলাকা থেকে ১৯৮০-৮১ সালে বাঙালি এনে পুনর্বাসন করেন।
পুনর্রবাসিতদেরকে নামকাওয়াস্তে ৫ একর জমি বন্দবস্ত দেয়া হয়। তার মধ্যে বসত করা জন্য ০.২৩ একর এবং আবাদ করার জন্য ৪.৭৭ শতক পাহাড়ি জমি। উভয় জমিই ৩য় শ্রেণিভুক্ত যা আবাদ করে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। তারপরও জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য ৪.৭৭ শতক জমিতে বাঙালিরা ফলদ, বনজ বাগান সাজিয়ে তাদের জীবন সুন্দর করে সাজিয়ে ছিল। কিন্তু ১৯৮৬ সালে শুরু হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)কর্তৃক বাঙালীদের অপহরণ, হত্যা, খুন, জ্বালাও-পুড়াও। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিবেশ সংঘাতময় হয়ে উঠে। এই পরিস্থিতিতে জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য বাঙালিদের রাখা হয় গুচ্ছগ্রাম নামক বন্দিশালায়। আর পাহাড়িরা আশ্রয় নেয় ভারতে। নিরাপত্তার অভাবে সাজানো বাগান বাড়িতে যেতে পারেনি বাঙালী বাগান মালিকরা।
বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে ৪.৭৭ একর জমিতে সাজানো ফলদ, বনজ বৃক্ষ বাগান অযত্নে নষ্ট হয়ে যায়। নেমে আসে তাদের জীবণে দুঃখ, যন্ত্রণা। অর্ধাহারে-অনাহারে, পুষ্টিহীনতায় কাটছে এই গুচ্ছগ্রামবাসীর জীবন। তাদের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে কৃষক শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ নামে একটি সংগঠন এই গুচ্ছগ্রামবাসীদের জন্য মানবতার পক্ষে সরকারের সঙ্গে দেন দরবার শুরু করে। এক পর্যায়ে ১৯৮৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ খাগড়াছড়িতে সফরে এলে খাগড়াছড়ি টাউন হলের এক আলোচনা সভায় কল্যাণ পরিষদের সভাপতি রেজাউল করিম হেলাল এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি একেএম শহিদুল ইসলাম গুচ্ছগ্রাম নামক বন্দি শালায় বসবাসকারীদের দুঃখের কথা তার কাছে তুলে ধরেন।
উভয়ের এই বক্তব্য শুনার পর ওই সময়ে গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত প্রতি পরিবারকে মাসে কার্ডপ্রতি ৮৪ কেজি চাল যত দিন গুচ্ছগ্রামবাসীদের কর্মসংস্থান সরকার করে দিতে পারবেনা ঠিক তত দিন পর্যন্ত বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই পরিস্থিতিতে ৮-১০ জনের সংসারে বর্তমানে বিরাজ করছে চরম দুঃখ আর হতাশা। তারপরও অর্ধাহারে অনাহারে গুচ্ছগ্রাম নামক বন্দিশালায় কোনো প্রকার আন্দোলন, সংগ্রাম, দাবি দাওয়া সরকারের নিকট পেশ না করে বসবাস করছেন বাঙালিরা। এখানে কষ্টের যন্ত্রণা এতই তীব্র যে, একজনকে কবর দিয়ে আসতে না আসতেই খবর আসতো অন্য জনের মৃত্যুর। এমন ভয়াবহ পরিবেশের মাঝে অনেকেই তাদের সন্তান হারিয়েছে পিতা, পিতা হায়িছে সন্তান, ভাই হারিয়েছে বোন, বোন হারিয়েছে ভাই, মা হারিয়েছে মেয়ে, মেয়ে হারিয়েছে মা। এছাড়াও শুরু থেকেই পুনর্বাসিত পরিবারগুলো অর্ধাহারে অনাহারে বসবাস করার পাশাপাশি মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
লেখক: নুরুল আলম, খাগড়াছড়ি
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]