শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯

পার্বত্য ভূমি কমিশন বাস্তবায়ন, পাহাড়ে যুদ্ধের দামামা

বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র ৩০ লক্ষ শহীদ এবং দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে কেনা এই বাংলাদেশ।সেই স্বাধীন বাংলাদেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম। ভুমিকমিশন ব্যাবস্হা বর্তমানে দেশি-বিদেশি অনেক মহল কে ভাবিয়ে তুলেছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে প্রতিনিয়ত দেশের কতিপয় বুদ্ধিজীবীদের কল্পনা জল্পনার শেষ নাই যার ফলে পার্বত্য অঞ্চলের শান্তির সুবাতাসে অশান্তির পরিলক্ষিত হচ্ছে। সম্প্রতি পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন নিয়ে বারবার আলোচনা পর সর্বশেষ আগামী ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ইং এই কমিশন লিখিত প্রস্তাব উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে, এই কমিশন বাস্তবায়িত হলে পার্বত্য অঞ্চলে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে বলে বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, ধারণা করা হচ্ছে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে ব্যাপক বিরোধ হানাহানি সৃষ্টি করতে বাধ্য। পাশাপাশি এই কমিশন এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন হলে একটি মহল বিশেষ সুবিধা ভোগ করে অপর একটি জাতিগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণভাবে রসাতলে ডুবানো হচ্ছে, সম্প্রতি পার্বত্য জেলা পরিষদে প্রায় ৯৩০০০ ভুমি মালিকের আবেদন জমা পড়েছে, এই কমিশনের প্রেক্ষিতে এখানে কমিশন বাস্তবায়িত হলে পুরো বাঙালি জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাছাড়া এই কমিশন একটি প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত কমিশন কেননা এই কমিশনে কোন বাঙালি প্রতিনিধি রাখা হয় নাই, এই কমিশনের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না, এই কমিশন যার পক্ষে রায় দিবে তার কাছে যতই বৈধ কাগজপত্র থাকুক না কেন জমি তাকে ছেড়ে দিতেই হবে এবং এই কমিশনের দ্বারা কোন ব্যক্তি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাবে না যার ফলে পার্বত্য অঞ্চলে ৫৬% বাঙালি জনগোষ্ঠী বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় পাহাড়ে শান্তির বিনিময় বেজে উঠবে যুদ্ধের দামামা।

যেহেতু সম্প্রতিকালে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন ভূমি জরিপ হয় নাই তাই এই অঞ্চলের মোট ভূমির পরিমাণ নিরূপণ কষ্টসাধ্য ব্যাপার, বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় পার্বত্য এলাকায় মোট জমির পরিমাণ ৫০৯৩ বর্গমাইল সংরক্ষিত বনাঞ্চল ৭৭৫.৬৩বর্গমাইল ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি ১৪১৩বর্গমাইল এবং অশ্রেণীভূক্ত রাষ্ট্রীয় বন ২৮৯৪.৩৭বর্গমাইল উল্লেখ্য সংরক্ষিত বনাঞ্চল কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, উপগ্রহ কেন্দ্র, কর্ণফুলী পেপার মিল এবং সরকারি অধিভুক্ত জমি শান্তিচুক্তির আওতাধীন নয়, ৩জেলার ব্যক্তিমালিকানাধীন সর্ব মোট জমির পরিমাণ হচ্ছে ১৪২৩বর্গমাইল, বাকি ৩৬৭০বর্গমাইল এলাকা সরকার নিয়ন্ত্রিত সম্পত্তি।

শান্তি চুক্তির ধারা অনুযায়ী আঞ্চলিক পরিষদের জমি লিজ ক্রয়-বিক্রয় পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যা মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কার্যবিধি চূড়ান্তকরণের বিলম্ব এবং চেয়ারম্যান এর অনাগ্রহের কারণে এই অঞ্চলের উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, বর্তমানে একসঙ্গে জেলা প্রশাসন পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং সার্কেল প্রদান নিয়ন্ত্রিত প্রচলিত পদ্ধতি দ্বারা ভূমি ব্যবস্থাপনা চলছে। জেলা প্রশাসক সার্কেল প্রদানে পরামর্শক্রমে হেডম্যান নিয়োগ দেন, সার্কেল প্রধানের অধীনে থেকে হেডম্যান তার মৌজার ভূমি এবং জুম চাষ থেকে রাজস্ব আদায় করে। ভূমি প্রশাসন বিশেষত ভূমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া যথেষ্ট সময় সাপেক্ষে ব্যাপার, যার ফলে দেখা যায় সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই অনেকে মৃত্যুবরণ করে বা ক্ষেত্রবিশেষে আবেদন পত্র প্রত্যাহার করে নেন ফলে অনেকেই অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়সহ অনুমোদিত ভাবে ভূমির মালিক হয়ে থাকে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু স্বার্থন্বেষী প্রতারক নিজ নামে ভূমি নিবন্ধন করে নিরীহ জনগোষ্ঠীকে প্রতারিত করছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত দাঙ্গা জন্ম নিচ্ছে অবৈধভাবে ভূমি দখল না করলে জমির মালিক হওয়া কঠিন এমন বাস্তবতা পার্বত্য অঞ্চলে বিতর্ক এবং সংঘর্ষের জন্ম দিচ্ছে, এ ধরনের জটিল প্রক্রিয়ার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জটিলতা দীর্ঘসূত্রতা লাভ করেছে। যার ফলে পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালি জনগোষ্ঠী এক কঠিন বিপদের মুখোমুখি হচ্ছে।

সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলে সংগঠনগুলি এই ভূমি কমিশন সংস্কার পূর্ব বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সেই লক্ষ্যে বান্দরবান জেলা আগামী ২০/১২/১৯ইং উপজেলা সদরে উঠান বৈঠক মতবিনিময় সভা এবং জেলা সদরে ২১/১২/১৯ইং মানববন্ধনে ঘোষণা দেয়া হয়েছে এই ভূমি কমিশন সংস্কারে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হলে তিন পার্বত্য জেলায় হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সংগঠন গুলো।

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আখন্দ, আহবায়ক, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, বান্দরবান জেলা

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]