সহায়তায় করনীয় নির্ধারনে বগাছড়িতে দাতা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ: ইউএনও’র পর এবার সেনা মেজরের উপর তেড়ে গেলেন কাজলী ত্রিপুরা :রাঙামাটির বগাছড়িতে ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের মাঝে সহায়তা বিতরনের ইউএনডিপিসহ সরকারি প্রতিনিধি দলের সাথে গিয়ে আবারো সেই ইউপি মেম্বার কাজলী ত্রিপুরার হাতে নাজেহালের শিকার হয়েছেন সেনাবাহিনীর একজন উদ্বর্তন অফিসার। এরআগেও সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডের এই মহিলা মেম্বারের হাতে লাঞ্চিত হয়েছিলেন নানিয়ারচরের সাবেক ইউএনও নুরুজ্জামান। তৎকালীন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারসহ সরকারি সরকারী উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সদস্যরাও এই কাজলী ত্রিপুরার প্রবল বিরোধিতার মুখেই বিতরণকৃত ত্রাণ ফেরত নিয়ে চলে এসেছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত বছরের ১৬ ই ডিসেম্বর বগাছড়িতে বাঙ্গালীদের আনারস বাগান ধ্বংস নিয়ে পাহাড়ি পল্লীতে অগ্নি সংযোগের ঘটনায় সংগঠিত পাহাড়ি-বাঙ্গালী সংঘর্ষ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে পাহাড়ি ৭০টি পরিবারকে ঘর তোলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পরিবার প্রতি ৫৭ হাজার টাকা করে বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছিলো।
প্রার্ন্তিক জনগোষ্ঠির ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবার গুলোর জন্য এই সহায়তা অপ্রতুল হওয়ায় এসব পরিবারবর্গের সহায়তা এগিয়ে এসেছে বিদেশী বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি ও ওয়ার্ল্ড ফুড সংস্থা “ফাও”। ইউএনডিপি’র পক্ষ থেকে অন্তত ৫৫ হাজার ডলার ও ফাও এর পক্ষ থেকে পরিবার প্রতি একটি ছাগল ও একটি শূকর (অথচ বাঙ্গালীদের জন্য ৪টি মুরগী) প্রদানের কর্মসূচি নিয়ে এলাকাটি পরিদর্শনে যান সংস্থা দুইটির একটি প্রতিনিধি দল।
এসময় তাদের আহবানে এবং প্রতিনিধি দলের সহযোগিতায় নানিয়ারচর জোনের সেনা কর্মকর্তা মেজর জুলকার নাইন ও নানিয়ারচর উপজেলার ইউএনও মোঃ আবু ইউছুপও ঘটনাস্থল ১৪ মাইল এলাকায় যান। এসময় উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণের উপস্থিতি সহায়তার ব্যাপারে করনীয় নির্ধারনে পরামর্শ কামনা করেন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা। এসময় সেনা কর্মকর্তা মেজর জুলকারনাইন স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থদেরকে কোনো প্রকার সংকোচ নাকরেই নিজেদের অভাব-অভিযোগ সম্পর্কে মতামত তুলে ধরার আহবান জানান।
এসময় হঠাৎ করেই বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার কাজলী ত্রিপুরা সভাস্থলে উপস্থিত হয়েই সেনা কর্মকর্তার উপর ক্ষেপে যান এবং অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকেন। বারংবার মারমুখী অবয়বে আর্মি মেজরের উপর তেড়ে আসেন কাজলী ত্রিপুরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইউএনডিপি প্রতিনিধিবৃন্দসহ উপস্থিত সকলেই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যান। পরে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের হস্থক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এসময় কাজলী ত্রিপুরার হুমকির মুখে সাধারন পাহাড়িরা তাদের কোনো মতামত তুলে ধরতে পারেনি। পরে তারই সহযোগি কয়েকজন উপস্থিত সকলকে জানান যে, আমরা কিছুই বলবো না, আপনারা কি দেবেন সেটা আমাদের মেম্বারদের সাথে আলাপ করে নেন। আমাদের কিছু বলার নাই, তারা যেটা ভালো বুঝবেন সেটাই করবেন আমাদের জন্য।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে ৩নং বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমোদ খীসা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিএইচটি টাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, উক্ত মহিলাটি আসলেই ঝগরাটে টাইপের। কোনো কিছু না বুঝেই তিনি একজন সেনা অফিসারের উপর ক্ষেপে গিয়ে আবোল-তাবোল বকেছে। বিষয়টি আমার কাছেও খুবই খারাপ লেগেছে। পরে আমি বিষয়টি নিয়ে কাজলিকে গালমন্দ করে, তার হয়ে আমি নিজেই মেজর সাহেবের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। ভবিষ্যতে কাজলী ত্রিপুরা এই ধরনের আচরন করলে তার বিরুদ্ধে আমি অফিসিয়ালী ব্যবস্থা নিবো বলেও তাকে জানিয়ে দিয়েছি।
অপরদিকে নানিয়ারচর উপজেলায় কিছুদিন আগে যোগদানকৃত ইউএনও মোঃ আবু ইউছুপ জানিয়েছেন, মহিলাটি কোনো কিছু নাবুঝেই এই ধরনের আচরনটি করেছে। তিনি বলেন, সেনাকর্মকর্তা নিজেই পাহাড়িদেরকে তাদের অভাব-অভিযোগগুলো নির্ভয়ে দাতা সংস্থার প্রতিনিধি দলের সামনে তুলে ধরার আহবান জানানোর সাথে সাথেই ক্ষেপে যান কাজলী ত্রিপুরা।
এদিকে সভায় উপস্থিত বগাছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রজ্জব হোসেন জানিয়েছেন, কাজলী ত্রিপুরা কোনো কিছু নাবুঝেই মেজর জুলকারনাইনের উপর মারাত্মকভাবে ক্ষেপে যান। তিনি বলেন, ভাই আমি নিজেই অভাক হয়েগেছি যে, তাদেরই পক্ষে কথা বলার পরেও পোশাক পরিহিত একজন মেজরের উপর এই ধরনের আচরন কাজলী কিভাবে করতে পারলেন। দাতা সংস্থা প্রতিনিধিদলের সামনে এই ধরনের আচরন খুবই দুঃখজনক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত স্থানীয় বেশ কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়ি জানিয়েছেন, ভাই সরকার আমাদের জন্য ক্ষতিপূরন হিসেবে পরিবার প্রতি ৫৭ হাজার টাকা প্রদান করলেও আমরা একটাকাও পাইনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের টাকাগুলো নিয়ে ঘর তৈরি করে দিয়েছে। যেগুলোতে আপনারা শহরের লোকেরা গরু-ছাগলও রাখবেন না। অথচ কাজলী ত্রিপুরার ঘরটি সেরকমভাবে বানানো হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে একজন বয়োবৃদ্ধ জানিয়েছেন, আমাদের যে কয়টি ঘর বানানো হয়েছে তার মধ্যে কাজলী ত্রিপুরা ঘরটি খুবই উন্নত মানের। এছাড়াও উপজেলা অফিস থেকে ক্ষতিগ্রস্থ সকল পাহাড়িদেরকে টাকা দেওয়ার সময় ১৭ হাজার টাকা করে কেটে রাখলেও কাজলী ত্রিপুরাকে পুরো ৫৭ হাজার টাকাই দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু আমরা সাধারন পাহাড়িরা এর কিছুই পাইনি।
এদিকে এসব বিষয়ে সিএইচটি টাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম এর পক্ষ থেকে কাজলী ত্রিপুরার মন্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৫ই ডিসেম্বর রাতে বাঙ্গালীদের আনারস বাগান কেটে দেওয়ার প্রেক্ষিতে উত্তেজিত কিছু বাঙ্গালী ১৪ মাইল এলাকার পাহাড়ি গ্রামে হামলা চালিয়ে অগ্নি সংযোগ করে এবং বাড়িঘর ভাংচুর করে। এই ঘটনার পরবর্তী সময়েও ইউপি মেম্বার কাজলী ত্রিপুরার নেতৃত্বে একদল নারী ত্রান দিতে যাওয়া সরকারি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সাবেক প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অন্তত আধাঘন্টা রাস্তায় দাড় করিয়ে রেখে বিতরনকৃত ত্রাণ সামগ্রী ফেরত নিয়ে আসতে বাধ্য করেছিলো।
এরআগে ক্ষতিগ্রস্থদের অবস্থা করতে গেলে এই কাজলী ত্রিপুরার হাতেই লাঞ্চিত হয়েছিলেন সেই সময়কার নানিয়ারচর উপজেলার ইউএনও নুরুজ্জামান। এরপর ইউএনও নুরুজ্জামানকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছিলো মোবাইলে প্রদত্ত ম্যাসেজের মাধ্যমে। সেই সময়ে এই ঘটনাটি নিয়ে প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠলেও অজ্ঞাত কারনে কাজরী ত্রিপুরার ব্যাপারে কোনো পদক্ষে নেয়নি প্রশাসন।
এই ঘটনার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই আবারো বিদেশী দাতা সংস্থার প্রতিনিধিসহ সরকারি কর্মকর্তাদের সামনেই প্রকাশ্যে একজন সেনা মেজরকে হেনস্থা করার চেষ্ঠা চালালো কাজলী ত্রিপুরা।সূত্র: সিএইচটি টাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক
বাঙ্গালী গণহত্যা
সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]