তিন পার্বত্য জেলার নতুন আতঙ্কের নাম ৯৬৯। বাংলাদেশ সংলগ্ন মিয়ানমার সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ে তাদের ঘাঁটি। সমপ্রতি সংগঠনটি তত্পরতা শুরু করেছে বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে। সেখানকার গরিব, অসহায় ও মামলায় পালিয়ে থাকা মানুষদের টার্গেট করে নিজেদের দলে টানছে। কারও কারও অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অর্থের বিনিময়ে নিজেদের পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করছে। ধর্মীয় উগ্রপন্থি হিসেবে ৯৬৯ পরিচিত হলেও তাদের রয়েছে সশস্ত্র গ্রুপ। সংগঠনটির ভাণ্ডারে রয়েছে হালকা থেকে ভারি অস্ত্রের বিশাল মজুত। একজন সন্ন্যাসী এই সংগঠন বর্তমানে পরিচালনা করেন। আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের নামানুসারে তিনি ‘বার্মিজ বিন লাদেন’ নামে পরিচিত। ২০১২ সালে রাখাইন প্রদেশে বৌদ্ধ-মুসলিম সামপ্রদায়িক দাঙ্গার মাধ্যমে ‘৯৬৯ মুভমেন্ট’ ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। ‘৯৬৯ সংগঠন’ ঐতিহ্যমন্ডিত বৌদ্ধ ধর্মের শান্তির বাণী প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও উগ্রপন্থী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবের কারণে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
তবে শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধরা এই সংগঠনের কার্যক্রম পছন্দ করছেন না।
তবে শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধরা এই সংগঠনের কার্যক্রম পছন্দ করছেন না।
এছাড়া মিয়ানমারের বর্তমান সরকার এবং সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা কৃর্তক ৯৬৯ মুভমেন্ট ও তার নেতৃবৃন্দকে বিভিন্নভাবে আর্থিক ও সামাজিক সমর্থন দেওয়া হয়। রাখাইনরা এই সংগঠনকে মাসিক চাঁদা প্রদান করে থাকে বলে জানা যায়। বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে ৯৬৯ সংগঠনের সদস্যরা টহল প্রদানসহ সার্বিক প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং রোহিঙ্গা মুসলমানদের উচ্ছেদের বিভিন্ন পরিকল্পনা করে থাকে।
বান্দরবান সীমান্তের বিপরীতে মংডু জেলাসহ রাখাইন প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ৯৬৯ এলাকাভিত্তিক কমিটি গঠন করে স্থানীয়ভাবে মুসলমানদের নির্যাতনসহ জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল করে। সংগঠনের নেতা ২০১৫ সালের ১৩ মার্চ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা মংডু সফর করেন। এসময় তিনি বৌদ্ধ ভান্তে ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন।
এসবের মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নজরদারি বৃদ্ধি, প্রতি পাড়ায় ৯৬৯ গ্রুপের ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন ও সংগঠনের সদস্য বাড়াতে নতুন রিক্রুট ব্যবস্থা তৈরি করা। এছাড়া রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সাগর পথে কৌশলে পাচারে সহযোগিতা করে রাখাইন প্রদেশকে মুসলিম শূন্য করাও তাদের একটি প্রকল্প।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কক্সবাজার, বান্দরবান এবং রাঙ্গামাটি জেলা থেকে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং তাদের অনুসারীগণ কৌশলে মিয়ানমার সফর করে ৯৬৯ মুভমেন্টের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে থাকে।
একজন শীর্ষ পর্যায়ের বৌদ্ধধর্মীয় গুরু ৯৬৯ এর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন বলে জানা যায়। তাকে বাংলাদেশে ৯৬৯ এর প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে ধারণা করা হয়। তার প্রতিষ্ঠিত বান্দরবান এলাকায় একটি মন্দিরের নাম ফলকে ৯৬৯ লেখা ব্যবহার করে থাকেন। এটি ৯৬৯ এর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে।
ইয়ানা ভাসা মার্মা-বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ববর্তী হেডম্যান কারবারী পাড়ার কিয়াংঘরের প্রধান ভান্তে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় ৯৬৯ সদস্যদের যাতায়াতকালে তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করে থাকেন। গত বছর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় আটককৃত অং কেং চাকমা এবং প্রকাশ চাকমা আটক পরবর্তী পরিচিতি প্রদানের জন্য তার কথা উল্লেখ করেন। তিনিও নিয়মিত মিয়ানমারে আসা যাওয়া করেন বলে জানা যায়।
৯৬৯ সংগঠনটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী আগ্রহীদের মধ্য থেকে বাছাই করা ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ এবং সংগঠনের দীক্ষা প্রদানের মাধ্যমে আদর্শে অনুপ্রাণিত করে পুনরায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। এক্ষেত্রে বৌদ্ধ ধর্মগুরু/ভিক্ষু এবং ভান্তে শ্রেণির লোকজনই প্রথম পছন্দ বলে জানা যায়।
সীমান্ত সূত্রে জানা যায়, প্রতিমাসে অন্তত ২০-২৫ জন বাংলাদেশি নাইক্ষ্যংছড়ি, আলীকদম ও থানচি উপজেলার অরক্ষিত সীমানা ব্যবহার করে মিয়ানমারে প্রবেশ করে থাকে। এছাড়াও কিছু কিছু বাংলাদেশি টেকনাফ ইমিগ্রেশন পয়েন্ট ব্যবহার করে মিয়ানমারে যাতায়াত করে থাকে। অন্য একটি সূত্র জানায়, মিয়ানমার গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যক্ষ সহায়তায় ৯৬৯ সংগঠনের আদলে বাংলাদেশেও এ ধরনের একটি উগ্রপন্থী সংগঠন গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
পার্বত্য অঞ্চলের স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, উগ্রপন্থী সংগঠন ৯৬৯ এর বিষয়ে তারা অবহিত আছেন। অধিকাংশ উপাসনালয়ে তারা নানা অপতত্পরতায় জড়িত। বিষয়টি শীর্ষ প্রশাসনকে নানা কায়দায় জানানো হয়েছে। একাধিকবার গোয়েন্দা সংস্থা ৯৬৯ ধর্মীয় উগ্রপন্থী সংগঠনের পার্বত্য অঞ্চলে তাদের অপতত্পরতা বৃদ্ধি, ধর্মীয় উপাসনালয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও নানা অপতত্পরতা সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করে সরকারের শীর্ষ প্রশাসনকে জানিয়েছে।
আবুল খায়ের, পার্বত্য অঞ্চল থেকে ফিরে, সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭ ইং
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]
