বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের রহস্যজনক নয়-ছয়: চোরাই খুঁটি দিয়ে ১১ কেভি লাইনে সংস্কার

রাঙামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে সকলের অগোচরে বিদ্যুতের ১১ হাজার কেভি’ লাইনের খুঁটি রহস্যজনকভাবে স্থানান্তর প্রচেষ্ঠায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই খুটি অপসারনের পেছনে বড় একটি চক্রের লক্ষ লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। দিনে-দুপুরে প্রধান সড়কের উপর কয়েক ঘন্টা সময় ধরে গুরুত্বপূর্ন ১১ হাজার কেভি লাইন সম্প্রসারনের একটি খুটি বুধবার সকালে শহরের আঞ্চলিক পরিষদের রেষ্ট হাউস সংলগ্ন রাস্তার ওপাশে বসানো হলো, অথচ বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট্য কেউই বিষয়টি জানেনা বলে জানিয়েছেন প্রতিবেদককে। বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি বিদ্যুত অফিসে রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শহরের উক্ত এলাকার দায়িত্বে থাকা বিদ্যুত বিভাবের উপ-সহকারি প্রকৌশলী নেপচুন খীসা নিজেও অবাক হয়েছেন উল্লেখ করে প্রতিবেদককে বলেন, বুধবার সকালে আমি খবর পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনকে ধাওয়া করি। এসময় খুটিটি লাগানোর কাজে নিয়োজিত লোকজন পালিয়ে যায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি নিজেই বিষয়টি বুঝতে পারছিনা এই খুটিটি কোথা থেকে কিভাবে এবং কারা এখানে নিয়ে আসলো এবং মাটিতে গাড়লো।
অপরদিকে রাঙামাটি বিদ্যুত বিভাগের ষ্টোর কিপার এর দায়িত্বে থাকা হুয়ামন কবির রতন জানিয়েছেন, আমার ষ্টোর থেকে কোনো ধরনের খুঁটি ছাড় দেওয়া হয়নি। তাহলে এই খুটি কোত্থেকে এলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান প্রতিবেদককে। বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি বিদ্যুত বিভাগের সর্বোচ্চ ব্যক্তি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দুলাল হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, খুঁটি স্থাপনের ব্যাপারে আমার কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি এবং কোনো নোটশিটও অদ্যবদি আমার কাছে পাঠানো হয়নি।

নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানিয়েছেন, জনস্বার্থে পুরাতন খুঁটি থেকে তার সরিয়ে নিতেই উক্ত নতুন খুঁটিটি বসানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমাকে পৌরসভা বা কোনো প্রতিষ্ঠান জনস্বার্থে কোনো চিঠি বা পত্র দেয়নি। তাহলে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির আবেদনে আপনি খুঁটিটি সরিয়ে নিয়ে পক্ষান্তরে অপরাধীকেই পুরস্কৃত করলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী কোনো সুদুত্তর নাদিয়ে এই ধরনের অনেক কাজই আমরা করে আসছি বলে জানান প্রতিবেদককে। এদিকে, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে একটি বিল্ডিংয়ের সাথে লাগোয়া ১১ হাজার কেভির লাইন বহনকারি পুরাতন খুঁটিটি সরিয়ে নিতেই এতো বড় দূর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে একটি চক্র। বিষয়টি নিয়ে উক্ত ভবনের মালিকের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে তারা কোনো অভিযোগ বিদ্যুত অফিসে দেয়নি। নিয়মানুসারে গুরুত্বপূর্ন ১১ হাজার কেভি লাইনের তার সরিয়ে নিতে বা খুঁটি পুততে হলে (বিশেষ করে পৌর এলাকায় এবং সড়ক বিভাগের আওতাধীন রাস্তার পাশে) নিয়মানুসারে পৌর কর্তৃপক্ষ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগকে চিঠি দিয়ে তাদের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে তার কোনটিই করেননি নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার। পুরো বিদ্যুত অফিসের একমাত্র নির্বাহী প্রকৌশলী ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি-বা প্রতিষ্ঠানই জানে না সড়কের উপর গুরুত্বপূর্ন ১১ হাজার কেভি লাইনের খুঁটি স্থাপনের বিষয়ে।

বিষয়টি নজরে আনলে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন জানিয়েছেন, ফুটপাত ভেঙ্গে খুঁটি বসানোর ক্ষেত্রে আমাকে কেউই কিছুই জানায়নি। আমি বিষয়টি নিয়ে চিঠি লিখবো সংশ্লিষ্ট্য উদ্বর্তন কর্তপক্ষের কাছে। অপরদিকে রাঙামাটিস্থ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন জানিয়েছেন নিয়মানুসারে তার কাছে পত্র প্রেরণের দরকার ছিলো। এই ক্ষেত্রে সেরকম কোনো চিঠি তিনি পাননি বা তার কোনো ধরনের অনুমোদনও নেয়নি বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুত বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, উক্ত খুঁটিটি বসানোর ক্ষেত্রে তিনজনের একটি চক্র কাজটি করেছে। বিদ্যুতের ঠিকাদারী কাজের সাথে জড়িত এমন একজন ঠিকাদার যার নামের একটি অক্ষর “জী” রয়েছে। সেই ঠিকাদারকে একলাখ পঁচিশ হাজার টাকা খুটিটি বসানোর কাজে নিয়োগ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগের সেই তিনজনীয় সিন্ডিকেট। কিন্তু বিষয়টি সবার নজরে চলে আসলে নির্বাহী প্রকৌশলী নিজেই তার অধীনস্থ উপসহকারি প্রকৌশলীকে সাথে নিয়ে উক্ত স্থানে গিয়ে খুঁটি স্থাপন কাজ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সকালের এই নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ বিকেলেই বাতিল হয়ে জনস্বার্থে খুঁটি স্থাপনের অনুমোদন দিলেন সেই একই কর্মকর্তা নিজেই। বিষয়টি মুঠোফোনে এই প্রতিবেদকের কাছে আংশিক স্বীকারও করেছেন উপসহকারি প্রকৌশলী নেপচুন খীসা।

বিদ্যুত বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ নাকরার শর্তে জানান, সম্পূর্ন বেআইনীভাবে এবং চোরাইভাবে সংগ্রহ করা প্রায় ৫৬ হাজার টাকা মূল্যের এই খুঁটি স্থাপন পরবর্তী পুরাতন খুঁটি থেকে সঞ্চালন লাইনের তার খুলে উক্ত নতুন খুঁটিতে লাগাতে অন্তত ২ থেকে তিন ঘন্টা সময় বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে কয়েক হাজার গ্রাহক। সেসময় এই অবস্থার দায় কে নেবে? আর এইভাবেই এই চক্রের কারনেই শহরে প্রায় সময় কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয় এটা মোটেও সিস্টেম লস এর মতো নয় উল্লেখ করে সুত্রটির দাবি এসকল ঘটনা সম্পূর্ণই কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা হয়।

আলমগীর মানিক

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]