ভারত না আমাদের কে মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছিলো? তাহলে জেনে নিন আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে ভারতের আর্থিক কামাই কত হয়েছিলো। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক সাহায্য আসে। এই সাহায্য বাংলাদেশ সরকারের কাছেও আসে, এসেছে ভারত সরকারের কাছেও। ভারত সরকারের কাছে সরাসরি যে সাহায্য এসেছে তাঁর একটা লিস্ট এখানে দেয়া হল। তখনকার হিসেবে ভারত জাতিসংঘের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের যুদ্ধ বাবধ সাহায্য পায় ১৬ কোটি ৮১ লক্ষ ৩ হাজার ৭শত ২৭ ডলার। (i) সে সময় ১ ডলার= ৭.৮৬ টাকা ছিল। সেই হিসেবে অর্থের পরিমাণ ততকালীন হিসেবে দাঁড়িয়েছিল ১৩২ কোটি ১২ লক্ষ ৯৫ হাজার ২শত ৯৪ টাকা মাত্র। এই অর্থের পাশাপাশি যুদ্ধ শেষে ভারত পাকিস্তান থেকেও ক্ষতিপূরণ আদায় করে। ভারতীয় অফিসিয়াল হিসেবে সেই অর্থের পরিমাণ ছিল ততকালীন ভারতীয় রুপিতে ৫৪৩ কোটি ৫১ লক্ষ ১৪ হাজার ২ শত ৯৪ রুপি।(ii)
ততকালীন ডলারের যে মান ছিল সেটা এখন পরিবর্তন হয়েছে। তখন ১ ডলার দিয়ে যে পরিমাণ খাদ্য কেনা যেত এখন সেই পরিমাণ খাদ্য কিনতে খরচ হয় ৬ ডলারের একটু বেশি। এটাকে অর্থনীতির ভাষায় ইনফ্লেশান বলে। অর্থাৎ, তখনকার ১ ডলার= এখনকার ৬ ডলার। তখনকার ১ ডলার= ৭.৮৬ টাকা থাকলেও, বর্তমানে ১ ডলার= ৮২ টাকা। অর্থাৎ টাকার মান নুন্যতম ১০ গুণ কমেছে। সহজ করে বললে ভারতীয়দের প্রাপ্য সাহায্যকে এখনকার টাকায় হিসেবে করতে চাইলে ১৩২ কোটি ১২ লক্ষ ৯৫ হাজার ২শত ৯৪ টাকাকে নুন্যতম ১০ দিয়ে গুণ দিতে হবে।
স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাপ্ত গণিমত থেকে ভারতীয়দের লুটপাট
স্বাধীনতার পর ভারতীয় বাহিনী ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে মার্চ ১৯৭২ পর্যন্ত সময় বাংলাদেশে অবস্থান করে। এই সময়ে কি পরিমাণ লুটপাট তাঁরা করে তা বর্ণনাতীত। তাঁদের লুটপাট মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষদেরকে হতবাক করে দেয়। ২১ শে জানুয়ারি ১৯৭২ সালে ব্রিটেনের বিখ্যাত গার্ডিয়ান পত্রিকায় সাংবাদিক মার্টিন ঊলাকট (Martin Woollacott) Indians ‘loot whole factory ‘শিরোনামে লেখায় লিখেন ; “Systematic Indian army looting of mills, factories and offices in Khulna area has angered and enraged Bangladesh civil officials here. The looting took place in the first few days after the Indian troops arrived in the city on December 17”.
সে সময় খুলনার ডিসি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের ক্যাবিনেট সচিব ডক্টর কামাল সিদ্দিকী। তিনি সে সময় ভারতীয় বাহিনীর এই লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে চিঠি লিখেন। কামাল সিদ্দিকী পরবর্তীতে লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে করা তার পিএইচডি থিসিসে বাংলাদেশের দরিদ্রতার কারণ হিসেবে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তার থিসিসটি পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান থেকে বই আকারে বের হয়,সেই হিসেবে এটি সরকারী ভাষ্য হিসেবেও বিবেচনা করা যায়।
কামাল সিদ্দিকি নিজে সরকারী কর্মকর্তা হওয়ায় বিভিন্ন জেলার ডিসিদের সাথেও কথা বলে জানতে পারেন অন্যান্য জেলাতেও ভারতীয় বাহিনী একই ধরণের লুটপাট করে। ভারতীয় সৈন্যরা পাকিস্তানীদের ফেলে যাওয়া সকল অস্ত্র এবং ৮৭ টি ট্যাংক নিয়ে যায় যার মূল্য ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অনিক নামের একটি ভারতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকার বরাতে কামাল সিদ্দিকি আরো লিখেন ভারতীয় সৈন্যদের লুটপাটের মধ্যে অস্ত্র ছাড়াও ছিল মজুদকৃত খাদ্য শস্য, কাঁচা পাট,সুতা, গাড়ি, জাহাজ,শিল্প প্রতিষ্ঠানের মেশিন ও যন্ত্রাংশ এবং অন্যান্য খাদ্য দ্রব্য। কামাল সিদ্দিকীর মতে সব মিলিয়ে কম করে ধরলেও এই লুটপাটের পরিমাণ ছিল তৎকালীন হিসেবে ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার! সে সময়ে সারা বাংলাদেশের ১৯টি জেলা থেকে লুটপাটের পরিমাণ কেমন হতে পারে সেটা অনুমান অসম্ভব নয়।
রেফারেন্সঃ
(i) এ এস এম সামছুল আরেফিন, মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান, সময় প্রকাশন, ২০১২, পৃ. ৪৫২
(ii) Official 1971 War history, History Division, Ministry of Defence, Government of India, copy right BHARAT RAKSHAK, 1992
মূলধারা বাংলাদেশ
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]