সময়ের প্রেক্ষাপটে পার্বত্য শান্তি চুক্তি করাটা উচিত ছিলো। কিন্তু, সেই চুক্তি যথাযথ ভাবে করা হয়নি বলে তা ব্যর্থ চুক্তিতে পরিনত হয়েছে। সরকারের পক্ষে যারা পাহাড় নিয়ে কাজ করেছে এবং শান্তি চুক্তির বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছে তাদের অদক্ষতার চিত্রই বর্তমান উদ্ভব পার্বত্য পরিস্থিতি। শান্তি চুক্তি প্রনেতারা পার্বত্য সমস্যা চিহ্নিত করণে সম্পুর্ন ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রনীত চুক্তি পাহাড়ে শান্তির বদলে ক্রমাগত অশান্তি বৃদ্ধি করেছে।আপাতঃ দৃষ্টিতে আমরা সবাই বুঝি যে, পাহাড়ে প্রধান সমস্যা হলো বাঙ্গালী পূনর্বাসন। সরকার ১৯৭৯ সালে পাহাড়ে বাঙ্গালী পূনর্বাসন করেছিলো বলে শন্তু লারমারা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলো। বস্তুতঃ তা কিন্তু নয়। পাহাড়ে বাঙ্গালী পূনর্বাসনের পূর্বেই শন্তু লারমারা পাহাড়ে নিরীহ বাঙ্গালী এবং সামরিক বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে।
১৯৭৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) নামক সংগঠন সৃষ্টি হয়। এর পরেই সৃষ্টি হয় শন্তু লারমাকে প্রধান করে জেএসএস এর সামরিক শাখা "শান্তি বাহিনী"। শান্তি বাহিনী সর্ব প্রথম পাহাড়ে সামরিক বাহিনীর উপর সসস্ত্র আক্রমন করে ১৯৭৭ সালে এবং এই হামলা তারা অব্যাহত রাখে। অতপর রাষ্ট্রের অখন্ডতা রক্ষার প্রয়োজনে সরকার পাহাড়ে বাঙ্গালী পূনর্বাসন শুরু করে ১৯৭৯ সাল হতে। সুতরাং এটা প্রমানিত যে পাহাড়ে সমস্যা সৃষ্টিতে পার্বত্য বাঙ্গালী কোন কারন নয়, কারনটা বাঙ্গালী পূনর্বাসনের অনেক পূর্বের। তাছাড়া, সময়ের পরিক্রমায় পার্বত্য বিষয়ে সরকারের সকল গৃহীত পদক্ষেপের মধ্যে সবচেয়ে সফল পদক্ষেপ ছিলো পাহাড়ে বাঙ্গালী পূনর্বাসন এটা এখন আমরা হারে হারে অনুধাবন করছি।
এখন আসুন পার্বত্য সমস্যাটা আসলেই কি? সে বিষয়ে বলতে গেলে বলতে হয় পার্বত্য সমস্যা হলো পাহাড়ের আঞ্চলিক অপশক্তি। যারা পাহাড়ে চায় স্বায়ত্ব্যশাষণ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে উপজাতিদের একটি পক্ষ এদেশে জাতীয় রাজনীতির স্রোতে নিজেকে ভাসিয়ে নিয়েছে। মূলত জাতীয় রাজনীতিকে আপন করে নেওয়া এই উপজাতিরাই ছিলো ৭১এ স্বাধীনতার স্বপক্ষে অবস্থানকারী। আর যারা এদেশের স্বাধিনতাকে স্বীকার করেনি, স্বীকার করেনি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে তারাই হলেন পার্বত্য আঞ্চলিক অপশক্তি এবং বর্তমান জেএসএস/ইউপিডিএফ। শান্তি চুক্তির পূর্বে ছিলো শুধু জেএসএস এবং শান্তি চুক্তির পরে এসেছে বর্ধিত গ্রুপ ইউপিডিএফ। যাদের প্রধান দাবি পাহাড়ে স্বায়ত্ব্যশাষন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রের কাঠামো গঠনে ব্যস্ত। তাছাড়া সদ্য স্বাধীন দেশ নানাবিধ সমস্যা বিদ্যমান। সেই মূহুর্তে ১৯৭২ সালের ২৯ জানুয়ারি স্বায়ত্বশাষনের দাবিতে চারু বিকাশ চাকমার নেতৃত্ব্যে একদল উপজাতীয় প্রতিনিধি শেখ মুজিবের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সদ্য শেষ হওয়া মুক্তিযুদ্ধে যারা পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো, তাদের স্বয়ত্বশাষনের দাবি একজন রাষ্ট্র নায়ক কিভাবে মেনে নিতে পারে?? তবুও সেদিন মহানুভবতা দেখিয়ে শেখ মুজিব তাদের রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে গ্রেফতার না করে বরংচ বাঙ্গালী হয়ে বাংলাদেশে বসবাস করতে বলেন। উপজাতীয় নেতারা সেদিন জাতির পিতার নিকট হতে ফিরে এসেই জেএসএস নামক সংগঠন সৃষ্টি করেছিলো।
শান্তি চুক্তির পর হতে জেএসএস পার্বত্য প্রশাসনিক দায়িত্ব অধ্যবধি পালন করে আসছে। কিন্তু, চুক্তি স্বাক্ষরের পর তার বিরোধীতা করে সৃষ্ট আঞ্চলিক সসস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ এখনো পাহাড়ে স্বায়ত্ব্যশাষনের স্লোগান নিয়ে তাদের সসস্ত্র কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদিকে শান্তি চুক্তি বলে ক্ষমতাসীন জেএসএস পাহাড়ে প্রশাসিক ক্ষমতা পেলেও পায়নি পাহাড়ে পূর্নাঙ্গ শাষনভার। রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু একটা প্রভাব এখনো পাহাড়ে রয়ে গেছে, রয়ে গেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম এখনো বাংলাদেশের অংশ। আর সেটাই এখনো পার্বত্য আঞ্চলিক অপশক্তির সমস্যা।
সুতরাং যতোদিন শন্তু লারমারা থাকবে ততোদিন পার্বত্য সমস্যা সমাধান হতে এটা কল্পনা করা নিতান্তই বোকামী। তবে হাঁ, সরকার যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের আশা ছেড়ে দেন নতুবা পাহাড়ে উপজাতীয় আঞ্চলিক নেতাদের হাতে স্বায়ত্ব্যশাষন তুলে দেন তবে সকল সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে এটা নিশ্চিত। এতে শান্তি চুক্তি হাজারটা করলেও কোন সুফল আসবে না। আর এটাই চুক্তি স্বাক্ষরের সময় আমাদের রাষ্ট্রের লোকদের উপলব্দি করা প্রয়োজন ছিলো। উচিত ছিলো বিস দাঁতের প্রভাব বিস্তার করতে না দিয়ে তা উপরে ফেলা। এই বিস দাঁতের সাথে করা শান্তি চুক্তি সময়ের পরিক্রমায় ব্যর্থ চুক্তি হিসেবে পরিগনিত হয়েছে।
লেখক: আবু উবাইদা
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]