সাইফুল ইসলাম সিএইচটি “যার জন্য চুরি করে, সে ই বলে চোর” কথাটির মর্মার্থ একটু পরেই বুঝতে পারবেন। আচ্ছা, আগে একটা কথা ভেবে দেখুন তো! রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে আঙ্গুল তোলা আর স্বয়ং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তোলা এক নয় কি? এবার আসি মূল কথায়; পার্বত্য চট্টগ্রামের অবস্থান ভৌগোলিক ভাবেই প্রতিকূল। এখানে আপনি-আমি হাজার চেষ্টা করলেও যা ইচ্ছা তা করতে পারি না, এমনকি পর্যটন স্পট গুলোতেও ঘুরতে গেলে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহায়তা লাগবে, যেমন ধরেন সাজেক। যারা সাজেক ভ্রমনে এসেছেন তারা নিশ্চই সমতলে চিড়িয়াখানা,কক্সবাজার কিংবা সাফারি পার্কেও গিয়েছেন? বলুনতো সাজেক যাবার পথে পথে যে প্রতিবন্ধকতা দেখলেন তা কি সমতলের অন্যান্য পর্যটনে দেখেছেন? নিজেকে একবার প্রশ্ন করে দেখুন তো! একই ভুখন্ডে কেন দুরকম আচরণ? পার্বত্য চট্টগ্রাম একটা সময় বিশ্বে পিছিয়ে পড়া জনপদগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিলো। কিন্তু বর্তমানে এটি অতিদ্রুত এগিয়ে আসা জনপদগুলোর একটি। এর পেছনেরর অদৃশ্য মঙ্গলশক্তি গুলোর নাম বলতে গেলে সবার আগে বলতে হবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কথা। প্রথম উদাহরণ হলো, আজকের সাজেক!
একটা জনবিচ্ছিন্ন,রাষ্তাঘাট বিহীন পাহাড়কে দেশের অন্যতম পর্যটন স্পটে পরিনত করার পেছনের মূল চালিকা শক্তি কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর নজরে আসার পর সাজেক নিয়ে আর পেছনে তাকাতে হয়নি, এরপর একে একে দেশের সর্বোচ্চ সড়ক, রিসোর্ট, স্কুল আরো কত কি, আর বর্তমানে সাজেককে কেউ কেউ বাংলার দার্জিলিং ও বলে থাকেন।
শিক্ষা ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর অবদান অতুলনীয়। দূর্গম পাহাড়ে যেখানে সরকারী কোন স্কুল-কলেজ নেই সেখানে সেনাবাহিনীই একমাত্র ভরসা। প্রতিবছর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে আসবাবপত্র প্রদান, বিনামূল্য বই বিতরণ, স্কুল-কলেজ নির্মান সহ শিক্ষক্ষেত্রে সেনাবাহিনী ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
যার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ খাগড়াছড়ির গুইমারা কলেজ।
তৎকালীন গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল আহমেদ এর একান্ত প্রচেষ্টায় আজকের এই কলেজ।
চিকিৎসা ক্ষেত্রেও থেমে নেই সেনাবাহিনী, তিন পার্বত্য জেলায় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন জোন কতৃক কিছুদিন পরপর দুর্গম পাহাড়ী এলাকাগুলোতে দিনব্যাপী চিকিৎসা ক্যাম্প, চক্ষু চিকিৎসা শিবির, ঠোট-তালু কাটা রোগীদের নিয়ে স্পেশাল চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালনা করে হয়।
আর এতে শিশু থেকে বয়স্ক কিংবা জটিল রোগীদেরও রোগ নিরাময়ে সুচিকিৎসার পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম নিয়ে গিয়ে সুস্থ করিয়ে আনার নজিরও কম নয়।
এছাড়া প্রতিটি সেনা জোন ও সেনা ক্যাম্পে সপ্তাহে দুদিন নিয়ম করে রোগী দেখে স্থানীয় রোগীদের ঔষুধ দিয়ে থাকেন সেনাবাহিনীর স্পেশালিষ্ট ডাক্তাররা। এতে করে পার্বত্য চট্টগ্রামের দূর্গম অঞ্চলে বসবাসরত জনগোষ্ঠীরা ও সেনাবাহিনীর চিকিৎসা পেয়ে আনন্দিত। এছাড়া শীতকালে নিয়মকরে এখানকার হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করাও নিয়মিত কাজ।
আর এসব উন্নয়নের ভাগীদার সবার আগেই এখানকার উপজাতিয় জনগোষ্ঠীরা।
আর পাহাড়ী তিন জেলায় অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন এসব নতুন কথা নয়। এসব ঠেকাতে সরকার কতৃক একটি শান্তিচুক্তি করলেও আদৌতে পুরোপুরি শান্তি আসেনি এখানে। চুক্তির পর্বে একটা সন্ত্রাসী গ্রুপ থাকলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৪টি। এসবে এখানকার জনগন এখন অতিষ্ট।
সর্বশেষ সেনাবাহিনীই এ অঞ্চলের নিপিড়ীত জনগোষ্ঠীর একমাত্র ভরসা, এতেও পিছিয়ে নেই সেনাবাহিনী, প্রতিদিন তিন জেলার কোথাও না কোথাও এসব অস্ত্রও চাঁদাবাজদের অস্ত্রসহ আটক করছে সেনাবাহিনী।
আটককৃতদের মধ্যে সকলেই এসব সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলোর ধরণও ভারী।
মূলত সূচনা লগ্ন থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত পরিহার করে বিবাদমান গোষ্ঠীগুলোকে এক কাতারে দাড় করিয়ে দেশের উন্নতি সাধন ও এখানকার সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনির্মানে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় এ অঞ্চলের মানুষের বিপদে আপদে সর্বদাই এগিয়ে আসছে সেনাবাহিনী।
কিন্তু…….
পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর শান্তি,শৃংখলা ও উন্নয়নের এসব চিত্রে ঘাত্রদাহ শুরু হয়েছে এখানকার কয়েকটি সশস্ত্র আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের গায়ে।
যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে কলুষিত করতে বারবার গভীর থেকে সুগভীর চক্রান্তে লিপ্ত হচ্ছে তারা। এমনকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে এসব সন্ত্রাসীরা।
যার সর্বশেষ চেষ্টা সেনাবাহিনী কতৃক রাঙ্গামাটির দুই মারমা কিশোরী ধর্ষন নাটক ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতে উস্তানী সৃষ্টিকারী চাকমা রানী ইয়ে ইয়েন কে হেনস্থা করার মিথ্যা প্রচারনা।
রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির ফাসিয়াখালীর দুই মারমা কিশোরীকে সেনা সদস্যরা ধর্ষন করেছে মর্মে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে চোরাগোপ্তা মিছিল ও হরতাল অবরোধের হুমকি দিয়েছে পাহাড়ের কয়েকটি সন্ত্রাসী আঞ্চলিক সংগঠন।
কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেলো কথিত ধর্ষিতার দুই কিশোরীর বাবা-মা,ভাইও স্বজনরা মিলে রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে ধর্ষন নাটকটি সম্পূর্ন মিথ্যা।
এতেও ক্ষান্ত হয়নি বর্বর সন্ত্রাসীরা।
এরপর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই কিশোরীকে মেডিকেল চেক-আপ করেও ধর্ষনের কোন আলামত পায়নি কতৃপক্ষ।
যার পরিপ্রেক্ষিতে দুই বোনকে আদালত কতৃক তাদের মা-বাবার হেফাজতে পাঠানো হলেও এর আগে চাকমা রানী ইয়েন ইয়েন আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের ইচ্ছার প্রকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে দুই কিশোরিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে ইচ্ছেমতো স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করতে গেলে প্রশাসন বাধাঁ দেয় এবং দুই কিশোরীকে মা-বাবার কাছেই হস্তান্তর করে।
পরে চাকমা রানী তার কাজে ব্যর্থ হয়ে স্থানীয় হোটেলে গিয়ে মদ পান করে আরেক উপজাতীয় সন্ত্রাসীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয় আর এদিকে তাকে খুঁজে না পেয়ে চাকমা রাজ পরিবার দাবি করেরে তাকে সেনাবাহিনী অপহরণ করেছে পরে অবশ্য রানী বাসায় ফিরলে তারা তাদের দাবি থেকে সরে এসে নতুন নাটক সাজায়।
এবার তাদের নাটকের নতুন নাম “রানীকে হেনস্তা করা হয়েছে”
এখানেই শেষ নয়!
রানী হেনস্থা করার অভিযোগ এনে তারা সংহতি সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। এমনকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সেনাবাহিনীকে কলুষিত করছে তারা।
এসব প্রপাগান্ডায় রং লাগিয়ে দেশী ও বিদেশী সংস্থা এবং মিডিয়াও কোন তথ্য প্রমান ছাড়াই সন্ত্রাসীদের মিথ্যা তথ্যকে লুফে নিয়ে সেনাবাহিনীকে সাজাচ্ছে ধর্ষক।
এবার প্রশ্ন উঠতেই পারে শুধু শুধু কেন কেউ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলবে?
ভেবে দেখুনতো আপনি যদি কারো খুন-খারাবি,চাঁদাবাজিতে বাধাঁ দেন সে কি আপনাকে ছেড়ে দেবে?
এবার নিশ্চই শুরুর নীতি বাক্যটার মর্মার্থ বুঝতে পেরেছেন!!!
লেখক: তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক, জেলা কমিটি। আহবায়ক, রামগড় উপজেলা কমিটি। পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ।
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]