সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

আয়না চাকমাকে ‘যৌন নির্যাতন’ করেছে জেএসএস কর্মীরা


এ এইচ এম ফারুক : সন্তু লারমার জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কয়েককর্মীর হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক কিশোরী। এ বিষয়ে ওই কিশোরী থানায় মামলা করেছেন। মামলা হওয়ার পর সন্ত্রাসীরা কিশোরীর পরিবারকে হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন যৌন নির্যাতনের শিকার কিশোরী আয়না চাকমা। এদিকে ঘটনার একমাসের ধরা পড়েনি সব আসামি। নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর লিখিত জবানবন্দি ও অডিও টেপ পরিবর্তন ডটকমের হাতে এসেছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার (সন্তু লারমা) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভি করেননি। সরেজমিনে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায়, আয়না চাকমা এবার এসএসসি পাশ করেছেন। গত ২৯ মে সে কলেজে ভর্তির জন্য স্কুলে সনদ আনতে যান। এ সময় স্কুলের পাশের এক দোকানে মোবাইল রিচার্জ করতে ঢোকেন আয়না। এর ৫/৭ মিনিট পরে বিলাইছড়ি উপজেলা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) অর্থ সম্পাদক সুনীতিময় চাকমা (৩০) এর নেতৃত্বে প্রায় ২০ জনের একটি দল ওই দোকানে ঢুকে আয়না চাকমাকে অপহরণ করেন।

এরপর গহিন জঙ্গলে নিয়ে আয়নাকে যৌন নির্যাতন করে সুনীতিময় চাকমা (৩০), কৃষ্ণসুর চাকমা (২৫), পুলক চাকমা (২৮), সুজয় চাকমা (৩০), মানিক চাকমা (৩৫), বীর উত্তম চাকমা (২৭), নেলসন চাকমা (২৮)সহ ১৫ থেকে ২০ জন যুবক। পরে পরিবারের সহায়তায় উদ্ধার হন আয়না। পরে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বিলাইছড়ি থানায় মামলা করেন আয়না। থানায় মামলা হওয়ার পর সন্ত্রাসীরা আয়নার পরিবারকে হুমকি দিতে শুরু করেন। বিলাইছড়ি থানার ওফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঞ্জুরুল আলম জানান, ২৯ মে এ ঘটনাটি ঘটেছে। ওইদিনই মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলা নং ১। পরে ১৪ জুন মামলার ১ নং আসামি সুনীতিময় চাকমা (৩০) ও নয়নগোতি চাকমাকে (৩২) আটক করা হয়।

আয়না শনাক্ত করার পর সুনীতিময়কে আদালতে পাঠানো হয়। তিনি জেএসএস (সন্তু লারমা) সমর্থিত বিলাইছড়ি উপজেলা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) অর্থ সম্পাদক। আয়নার বাবা সুনীল কান্তি চাকমা পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, তারা আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। আমি এর বিচার চাই। তিনি জানান, আয়না চাকমা সন্ত্রাসীদের ভয়ে লুকিয়ে রয়েছে। মামলা তুলে নিতে সন্ত্রাসীরা চাপ দিয়ে যাচ্ছে। বিলাইছড়ি উপজেলা কার্বারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অংসা খই মারমা মারমা কার্বারি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, স্থানীয়দের কাছে ঘটনাটি শুনেছি। এটা খুব খারাপ ও মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) নেতাকর্মীরা জঘন্য এই কাজটি করেছে।

বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রহর কান্তি চাকমা পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, আমরা পাহাড়ি-বাঙালি মিলে মিশে থাকতে চাই। কিন্তু আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস ও তাদের ছাত্র সংগঠন পিসিপি সে সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করে চলেছে। তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে। থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম জানান, এখনো বাকি আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। থানা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলেও আটক সুনীতিময় চাকমা এখনো পর্যন্ত স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়নি।

রিমান্ড আবেদন করেছেন কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, এখনো আবেদন করা হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে।

আয়না চাকমার শ্লীলতাহানী ও দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়ে পার্বত্য পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল পাল পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, বিলাইছড়ির কিশোরীর ওপর নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও একটি মহল ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, আয়না চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের সাহসী কন্যা। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শত শত মেয়ে কতিপয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের জেএসএস ও ইউপিডিএফ নামক সংগঠনের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিন্তু অস্ত্রের মুখে কখনো প্রতিবাদের বা প্রতিকার চাওয়ার সাহস পায় না। আয়না চাকমা সে বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে।

অভিযোগের বিষয়ে বিলাইছড়ি উপজেলা জেএসএস সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুভমঙ্গল চাকমার মোবাইল একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে সাধারণ সম্পাদক বীর উত্তম ফোন রিসিভ করলেও সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।


পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]