সোহেল রিগ্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম: পার্বত্য অঞ্চলে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অস্ত্র হাতে নিয়ে স্বজাতি সহ বাঙালীকে খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, অস্ত্রপ্রয়োগ করে আসছে সন্ত্রাসীরা। সরকার প্রশাসন উপজাতী সন্ত্রাসী দমনে আন্তরিক নয়। প্রশাসনের নাগের ডগায় এসে রাষ্ট্র বিরোধী স্লোগান দেয়-প্রশাসন নীরব ভুমিকায়। ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) প্রকাশ শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের একটি অংশের নেতা-৪০ হাজার বাঙালী খুনি ও মানবজাতির রক্তপিপাসু সন্তু লারমার সাথে তথাকথিত পার্বত্য শান্তিচুক্তি সাক্ষর করে। উদ্দৈশ্যে ছিলো পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি সাক্ষের ফলে উক্ত অঞ্চলে বিবদমান সমস্যা ও মতপার্থক্য সহ অস্থিতিশীলতা বন্ধ হবে। কিন্তু তথাকথিত পার্বত্য শান্তিচুক্তি বিবদমান সমস্যা নিরসন হয়নি- বরং আরো জটিলতা বৃদ্ধি করেছে।
সন্ত্রাসীরা সক্রিয় হয়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে দেশবিরোধী সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে প্রতিনিয়ত। তাদের হাতে জিম্মি পার্বত্য অঞ্চলের ১৮ লাখ পাহাড়ি-বাঙালী শান্তিপ্রিয় জনতা। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে যাচ্ছে উপজাতী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ।
৪টি সশস্ত্র গ্রুপের ভিতরে সংকট আন্তকোন্দল, চাঁদাবাজি, আধিপদ্য বিস্তার ইস্যুতে জামেলা থাকলেও নিজের স্বার্থ ও পার্বত্য অঞ্চল বিভক্তি ইস্যুতে তারা বরাবরই ঐক্যবদ্ধ। বাংলাদেশের আয়োতনের দশমাংশ পার্বত্য স্বর্গভূমি বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে ১৯৭২ সালের পর থেকে সক্রিয় রয়েছে দেশদ্রোহী উপজাতীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তাদের দমনে বাংলাদেশের কোন সরকার আন্তরিক ছিলেন না। পার্বত্য বাঙালীকে ঠকিয়ে উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর একটি অংশকে বাড়তি সুযোগ-সুবিধি প্রদানকরে রাষ্ট্রের বৃহত্তর জনগণ বাঙালীর সাথে প্রতারণা করেছে সরকার। সরকারের এমন নীতির কারণে পার্বত্য অঞ্চল সন্ত্রাসীদের গ্রাসের পরিণত হয়েছে। উক্ত অঞ্চলে শুধু বাঙালী নিপীড়িত নয়-স্বজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক উপজাতীয়রাও নিপীড়নের শিকার।
তথাকথিত পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাহানা করে সরকার মানবজাতির রক্তপিপাসু খুনি সন্তু লারমার গ্রুপের একটি অংশকে পুলিশ, সহ বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দিয়েছেন- এবং বিশাল একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপকে সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। ১৯৯৭ -২রা ডিসেম্বরের পর থেকে শান্তিবাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশ সরকার থেকে রেশনব্যবস্থা করে নিয়েছেন আজীবনের জন্য। সরকার’কে কিছু ভাঙা মচকানো অস্ত্র খাগড়াছড়ি স্টুডিয়ামে হাতে ধরিয়ে দিয়ে চুক্তি সাক্ষর করেছে সন্তু লারমা গংরা।
সরকারের শান্তিস্থাপনের চুক্তিতে কি পাহাড়ের শান্তি ফিরে এসেছে? বরং শান্তি ফিরে আসেনি। বেড়েছে উত্তেজনা হিংসা প্রতিহিংসা ও বাঙালী দমননীতি এবং পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার কঠিন চক্রান্ত। সদুরে পার্বত্য অঞ্চলে স্বাধীন বাংলার মাটি থেকে আলাদা হয়ে জুমল্যান্ড নামক রাষ্ট্র সৃষ্টি হবে। উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের একাদিক বাচ্চাকাচ্চা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জুমল্যান্ড গঠনের জন্য প্রচার করে আসছে। তৈরি করেছে জুমল্যান্ড নামক রাষ্ট্রে পতাকা ও মুদ্রা।
সরকারের পক্ষ থেকে উপজাতী দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী দমনের কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সন্ত্রাসীরা স্বাধীন ভাবে কোন বাধা বিপত্তি ছাড়া গহীন পাহাড় ও ভারত মায়ানমার থেকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। রয়েছে আধুনিক অস্ত্রসস্ত্রসহ যাবতীয় সামরিক সকল ব্যবস্থা। চুক্তিসাক্ষের পরেও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর অস্ত্রসজ্জিত হয়ে হামলা করেছে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। শান্তিচুক্তি সাক্ষর ছিলো কেবল সরকারের দৃষ্টি গোচর থেকে নিজের সন্ত্রাসী কার্যক্রম আড়াল করা। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার পাঁয়তারা। সরকার সন্ত্রাসীদের মারপ্যাঁচ পড়ে শান্তিচুক্তি সাক্ষর করে দেশভাগের ষড়যন্ত্রকে পাকাপোক্ত করলেন। প্রসারিত করলেন সন্ত্রাসীদের সাংগঠনিক কাঠামোকে। আগে ছিলো একগ্রুপ- চুক্তি সাক্ষরের পরে দাপে দাপে হয়েছে মোট ৪গ্রুপ। সকলের উদ্দৈশ্য এক বাঙালী থেকে চাঁদাবাজি করা আর নিজেদের লক্ষ মাত্রাদি বাস্তবায়ন করা।
আওয়ামীলীগ-বিএনপি পার্বত্য ইস্যু নিয়ে পরস্পরা বিরোধী ও নানানরকম বিভিন্ন ধরণের বক্তব্য দিলেও তারা উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের স্বার্থে কাজ করেছেন। বাঙালী মারার শক্ত হাতিয়ার হিসেবে সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী করেছেন। সেনাবাহিনীকে পার্বত্য অঞ্চলে দূর্বল করে রেখেন দীর্ঘদিন। সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলোকে নিজেদের রাজনৈতিক দল ভেবে দেশের বড় ক্ষতিসাধন করে দিয়েছেন যথেষ্ট পরিমাণ। দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলকে বোকার স্বর্গে রেখে তাদের স্বার্থপরায়ণ মূলক সকল কাজ সেরেছে সন্ত্রাসীরা। প্রশাসনিক কাঠামো দখল করতে উপজাতীয়দের বিস্তার চেষ্টা সক্ষম হয়েছে। সরকার থেকে সবধরনের নাগরিক সুবিধা ও বিলাসীতা আদায় করে নিজেরা সমৃদ্ধশালী হয়েছে।
পার্বত্য অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনীর বিশাল অংশ প্রত্যাহার করেছে তথাকথিত শান্তিচুক্তির শর্ত অনুসারে। সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের ফলে পাহাড়ের পরিস্থিতি বেমালুম হয়েছে। সন্ত্রাসীরা সক্রিয় হয়ে বাঙালীর উপর হামলা, খুন, অপহরণ, নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণ শুরু করেছে। সামান্য পরিমাণ সেনাবাহিনী এ অঞ্চলে থাকলেও তারা নীরব ভুমিকায় রয়েছে। অবৈধ অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে অভিযানের অনুমতি নেই তাদের। সরকার তাদের সকল অপারেশন বন্ধ রেখেছে। শুধু লোক দেখানোর চিত্র ব্যবহার করতে সেনাবাহিনী রেখেছে সরকার। সেসকল স্থান থেকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে সেসব স্থানে সন্ত্রাসীদের আবাসন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। জায়গা দখলের জন্য চলেছে ধর্মীস্থান নির্মাণ।
বাঙালী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সর্বত্র। পুলিশ নির্বিকার রুপে, তাদের করার কিছু নেই এমনটা সহজ ভাবে অনুমান করা যাচ্ছে। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সংবিধান পরিপন্থী অাঞ্চলিক পরিষদের মাধ্যমে আদেশ মোতাবেক চলছে। সন্তু লারমাকে অাঞ্চলিক পরিষদের আজীবনের জন্য চেয়ারম্যান করে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা দিয়ে লাইসেন্স ধারী সন্ত্রাসী হিসেবে গড়েছে সরকার। পাহাড়ে চলছে সন্তু লারমার আইন। এই রাজ্যের রাজা সন্তু লারমা।
বাস্তবিক বলতে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা চাই পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হউক। তাদের এই অগ্রযাত্রার সহযোগি হয়ে সরকার, প্রশাসন যেমনি প্রশংসনীয় ভুমিকা রাখছেন ঠিক তেমনি এদেশের জ্ঞানপাপী বুদ্ধিজীবী শরিক হয়েছেন এই অগ্রযাত্রায়।
পার্বত্য বাঙালীরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মত পরবাসী হবেন নিজদেশের পার্বত্য ভূ-খন্ডে। লক্ষ শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীন বাংলার ভূ-খন্ড দেশদ্রোহী সন্ত্রাসীরা করবে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন। আমাদের দেশের রাষ্ট্র পরিচালকগণ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য সব ভুলে গিয়েছেন। পার্বত্য অঞ্চলে কি চলছে সরকার-রাজনৈতিক দলগুলো জানতেও ইচ্ছুক নয়। প্রশাসন সন্ত্রাসীদের পাচাটা গোলাম হয়ে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বাঙালীর সাথে বেইমানি মূলক আচারণ করে যাচ্ছেন। তিন জেলার ডিসি-এসপি পার্বত্য অঞ্চলের প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা প্রাপ্ত মানবজাতির রক্তপিপাসু সন্তু লারমার কথার বাহিরে চুল পরিমাণ ও যাচ্ছেন না। সবদিকে বাঙালীর মরণদশা তৈরি হয়েছে। বাঙালীর পক্ষে কথা বলার মত এই অঞ্চলে কোন বাঙালী নেতা তৈরি হয়নি। যারা বাঙালীর পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করে তাদের চিরতরে দমন করে একটি সুবিধাবাদী গ্রুপ। দলকানা, চামচা, ছ্যাঁচড়া, পাতি নেতা- জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু নেতা পরোক্ষভাবে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের গোলামী করে যাচ্ছে।
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি
সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]