পার্বত্য এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যে সংগঠনটি সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটির নাম ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফ। সাম্প্রতিক সময়ে ইউপিডিএফ নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, সোমবার খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর সাথে 'গোলাগুলিতে' ইউপিডিএফ এর 'তিনজন সন্ত্রাসী' নিহত হয়েছে। ইউপিডিএফ-এর জন্ম : পার্বত্য শান্তিচুক্তির বিরোধিতার মাধ্যমে ১৯৯৮ সালের ২৬ জুন ঢাকায় এক কনফারেন্সের মাধ্যমে ইউপিডিএফ-এর জন্ম হয়। পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পাদনকারী জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বা সন্তু লারমাকে কোণঠাসা করতে ইউপিডিএফ-এর জন্ম হয়। সন্তু লারমার দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতির সমিতি বা জেএসএস থেকে তরুণদের একটি অংশ বের হয়ে ইউপিডিএফ গঠন করে। ইউপিডিএফ যত বিস্তৃত হতে থাকে মি. লারমার প্রভাব-প্রতিপত্তি ততই কমতে থাকে।
ইউপিডিএফ আত্মপ্রকাশের পর কুড়ি ২০ বছর পর্যন্ত একসাথে ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে ইউপিডিএফ ভেঙ্গে যায়। তখন ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) আত্মপ্রকাশ করে। নতুন সংগঠন গঠনকারীরা বলছেন, ইউপিডিএফ-এ গণতন্ত্রের চর্চা নেই বলে তারা নতুন সংগঠন গড়ে তুলেছেন। নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সূত্র বলছে, পার্বত্য এলাকায় ইউপিডিএফ-এর শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছিল। শান্তিচুক্তির পরে পাহাড়িদের তরুণ প্রজন্মের উপর বেশ প্রভাব সৃষ্টি করে ইউপিডিএফ। এর ফলে পার্বত্য এলাকার প্রত্যন্ত জায়গায় সংগঠনটির শক্ত অবস্থান গড়ে উঠে।
এই সংগঠনটি নিজেদেরকে বাম ধারায় উদ্বুদ্ধ রাজনৈতিক দল হিসেবে দাবি করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পার্বত্য এলাকার যেসব শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে তাদের মধ্যেও ইউপিডিএফ-এর সমর্থক রয়েছে বলে জানা যায়। পার্বত্য এলাকার পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০ বছর আগে ইউপিডিএফ সংগঠনটি যেরকম শক্তিশালী ছিল, এখন তারা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, নিরাপত্তা বাহিনী শুধু অপরাধ দমনের জন্য কাজ করছে। সোমবার সেনাবাহিনীর সাথে 'গোলাগুলিতে' যে তিনজন নিহত হয়েছে তারা ইউপিডিএফ-এর পুরনো অংশ, অর্থাৎ প্রসীত বিকাশ খিসার অনুসারী। পার্বত্য এলাকার তিনটি জেলা - রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবনে ইউপিডিএফ-এর জোরালো অবস্থান রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এর মধ্যে খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ-এর অবস্থান সবচেয়ে শক্তিশালী।অন্যদিকে বান্দরবানে সন্তু লারমার জেএসএস শক্ত অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া রাঙামাটিতে উভয় পক্ষের সমান-সমান অবস্থান।
বান্দরবানের সাংবাদিক সঞ্জয় কুমার বড়ুয়া বলেন, পাহাড়ে যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে সাধারণত সেগুলোর বিচার হতে দেখা যায়না। "শান্তিচুক্তির পরে পাহাড়ে প্রায় ৬০০'র মতো হত্যাকাণ্ড হয়েছে। একটা মার্ডার হলে এরপর আরেকটা মার্ডার হয়," বলছিলেন মি: বড়ুয়া।
নিরাপত্তা বাহিনীগুলো মনে করে, প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর থেকেই ইউপিডিএফ-এর কিছু নেতা-কর্মী রাজনৈতিক আদর্শ থেকে সরে এসে অপরাধ প্রবণতায় জড়িয়ে পরে। দিনকে দিন শক্তিশালী হয়ে উঠে সংগঠনটি। ইউপিডিএফ-এর একটি অংশের হাতে অস্ত্র মজুদ রয়েছে। ফলে তারা পাহাড়ে একটি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করেছে। এই অংশটির হাত থেকে অস্ত্র উদ্ধার সম্ভব না হলে পার্বত্য এলাকায় বড় ধরণের অস্থিরতা তৈরি হবে বলে মনে করেন বাহিনীর কোন কোন কর্মকর্তা। সেজন্য সাম্প্রতিক সময়ে ইউপিডিএফ-এর বিরুদ্ধে বেশ শক্ত অবস্থান নেয়া হয়েছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার চায় ইউপিডিএফ যেন স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
আকবর হোসেন, বিবিসি বাংলা, ঢাকা
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]