বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৯

বাঙ্গালীরা কেন শান্তি চুক্তি বিরোধীতা করছে?

শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর হতে এই অঞ্চলের বাঙ্গালীরা এই চুক্তিকে কালো চুক্তি আখ্যায়িত করে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। যেহেতু চুক্তিটা শান্তির জন্য সেহেতু পার্বত্য বাঙ্গালীদের চুক্তির বিরোধীতা করার কোন যৌক্তিকতা থাকার কথা নয়। তার পরেও কেন বাঙ্গালীরা এর বিরোধীতা করে আসছে? এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় যদি বলি তবে বলতে হয়, "পার্বত্য শান্তি চুক্তি অসাংবিধানিক, যেখানে পার্বত্য বাঙ্গালীদের নাগরিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে।" এক সময় পার্বত্য বাঙ্গালীরা চুক্তির সম্পুর্ণ বিরোধীতা করলেও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও পাহাড়ে শান্তির আশায় এখন আর করেন না। পার্বত্য বাঙ্গালীদের বর্তমান দাবি শান্তি চুক্তিতে সংযুক্ত অসাংবিধানিক ধারাসমূহ সংশোধন করা, চুক্তিকে যুগ উপযোগী করে পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের সমান অধিকার নিশ্চিত করা। অর্থাৎ পার্বত্য বাঙ্গালীদের বর্তমান দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। তবে তাদের দাবি চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধক নয়, বরং সহায়ক।

বিশেষ কারনে আজকে এই বিষয়টা নিয়ে লিখতে আগ্রহী হলাম। কারন, পার্বত্য সমস্যা নিয়ে সমতলের বন্ধুরা আলোচনা সমালোচনা করতে গেলেই এই বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে থাকেন। সমতলের মানুষের ধারনা, পার্বত্য বাঙ্গালীরা শান্তি চুক্তির বিপক্ষে। তাদের কারনে এই চুক্তির পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। মূলতঃ পার্বত্য বাঙ্গালীদের চুক্তি বিরোধী মনোভাব চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধক। আর এই কারনেই পার্বত্য সমস্যার সৃষ্টি। তাছাড়া, জনশ্রুতি আছে যে, শান্তি চুক্তি পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলেই পার্বত্য সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। সঙ্গতঃ কারনে সমতলের মানুষ পাহাড়ের যে কোন সংঘাতে চুক্তি পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ার কারন হিসেবে পার্বত্য বাঙ্গালীদের দায়ি করে থাকেন। পাহাড়ের বাস্তব পরিবেশ পর্যালোচনায় তা কিন্তু নয়। চুক্তি বাস্তবায়নে পার্বত্য বাঙ্গালী প্রতিবন্ধক না। তাছাড়া, চুক্তির সাথে বর্তমান পার্বত্য সমস্যার কোন সম্পর্ক নাই।

সুতরাং যে যেভাবে পার্বত্য বিষয় ভাবুন আর মূল্যায়ন করুন পার্বত্য সমস্যার সমাধান সহজে খুঁজে পাবেন না। কারন, আপনি আমি যেভাবে এই সমস্যাটা মূল্যায়ন করছি তাতে মূল বিষয়টা কখনোই আসছে না। আমাদের চিন্তা চেতনা উদার। আমরা বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করি সেই উদার মানসিকতা দিয়ে। কার্যতঃ এই কারনেই পার্বত্য সমস্যা সমাধানের পথ পাচ্ছে না।

"পাহাড় বাংলাদেশের অংশ"— এটাই পার্বত্য মূল সমস্যা। যতোদিন পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অংশ হিসেবে থাকবে ততোদিন এই সমস্যা থেকেই যাবে। সরকার রাজাকারের বিচার করেছে। কিন্তু, পার্বত্য রাজাকারদের নয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও সেদিন যারা বাংলার মাটিতে বিদেশী পতাকা উত্তোলন করেছিলো তারাই পার্বত্য সমস্যার রুপকার। রাষ্ট্র যদি সত্যিকারার্থে পার্বত্য সমস্যার সমাধান চায় তবে অবশ্যই এই সমস্ত দেশ বিরোধীদের দমন করতে হবে। গুটি কয়েক দেশ বিরোধী চক্র ক্রমে ক্রমে দল ভারী করছে, পাহাড় পরিনত হচ্ছে তাদের অপকর্মের অভয়ারণ্যে। রাষ্ট্রের পার্বত্য বিষয়ে নীতিগত ভুল বরাবরই দেশ বিরোধী চক্রদের বেপরোয়া হিসেবে গড়ে তুলছে। সদ্য ঘটে যাওয়া বাঘাইছড়ি ট্রাজেডী এবং সর্বশেষ সৈনিক নাসিম হত্যায় কি রাষ্ট্রের পার্বত্য নীতি দায়ী নয়? অবশ্যই রাষ্ট্র দায়ী। দেশদ্রোহীকে রাষ্ট্র বন্ধু মনে করে আগলে রাখছে। সেই বন্ধু সুযোগ বুঝে এক এক করে বিসের তীর ঢুকিয়ে দিচ্ছে রাষ্ট্রের মানচিত্রে। এভাবে আর কতো দিন?

সুতরাং পার্বত্য সমস্যা পার্বত্য বাঙ্গালী কিংবা ভূমি সংকট নিয়ে নয়। যতোদিন রাষ্ট্র দেশদ্রোহী খুনীদের দমন না করবে ততোদিন এই সমস্যা সমাধান হবে না। আর দেশ বিভক্ত না করা পর্যন্ত এই খুনী চক্রও ক্ষান্ত হবেনা.... হবেনা..... হবে না।

লেখক :  আবু উবাইদা


পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]