রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৯

রাজাকার পুত্রের কাছে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইন অকার্যকর হতে দেয়া হবে না

ছোটবেলা থেকেই জেনে এসেছি আর বই পুস্তকে পড়ে এসেছি যে, বাংলাদেশে চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, গারো, খাসিয়া, ত্রিপুরা, মুরং, তঞ্চংগ্যা, খুমি, খেয়াং, লুসাই, মনিপুরী ইত্যাদি নামের উপজাতি বসবাস করে। কিন্তু হঠাৎ করে এখন শুনছি এরা নাকি উপজাতি নয়, এরা আদিবাসী। বিষয়টা নিয়ে পড়াশুনা করা শুরু করলাম। সকল তথ্য-উপাত্ত আর ইতিহাস থেকে যা জানলাম তাতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ পেলাম যে, ওরা আসলেই উপজাতি। আদিবাসী নয়। বর্তমানে এই ‘আদিবাসী’ বিষয়টিকে পুঁজি করে প্রাক্তন চাকমা সার্কেল চিফ রাজাকার ত্রিদিব রায়ের পুত্র ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় তাঁর গোপন স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। আমার মত অনেক মানুষের মাথার মধ্যেই এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায় যে “উপজাতিদেরকে আদিবাসী স্বীকৃতি দিলে সমস্যা কোথায়?’’। তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেলে বাংলাদেশের ভেতর সকল উপজাতীয়রা স্বায়ত্তশাসিত বা স্বশাসিত অঞ্চল ও সরকার ব্যবস্থার বৈধতা পাবে। ফলে বাংলাদেশকে বিভক্ত করে তাঁরা নতুন রাষ্ট্র গঠনের বৈধতা পাবে। এসব অঞ্চলে সরকার পরিচালনায় তারা নিজস্ব রাজনৈতিক কাঠামো, জাতীয়তা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, আইনপ্রণয়ন ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার পাবে এবং এসব অঞ্চলের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের অধিকার ও কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন হবে। এ জন্যই চাকমারা পার্বত্য জেলাগুলোকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ গঠনের স্বপ্নে বিভোর। আর এই স্বাধীন জুম্মল্যান্ডের স্বপ্নদ্রষ্টা বর্তমান চাকমা সার্কেল চীফ ব্যরিস্টার দেবাশীষ রায়। 

আপনি জানেন কি? বর্তমান চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের পিতা ত্রিদিব রায় ছিলো একজন কুখ্যাত রাজাকার। তার অনুসারীরা এখনো সেই আদর্শ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আর সুযোগ সন্ধানী সন্তু লারমার সাহস কোন স্তরে থাকলে ভাবুন তো, আজো সে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেনি!!! স্বাধীন জুম্মল্যান্ড গঠনের অভিপ্রায়ে তারা নিজস্ব পতাকা, মানচিত্র, মুদ্রা, আইডি কার্ড থেকে শুরু করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার জন্য যত কিছু প্রয়োজন সব কিছুর প্রাথমিক যোগান তারা করে রেখেছে। তারা দাবি করে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন করার মতো পর্যাপ্ত অস্ত্র তাদের হাতে রয়েছে। কাজেই বাংলাদেশের উপজাতিদের আদিবাসী স্বীকৃতি কোনো ছেলের হাতের মোয়া নয়। এর সাথে জড়িত রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, অস্তিত্ব, কর্তৃত্ব, ইতিহাস ও মর্যাদার প্রশ্ন। আসুন পাঠক ইতিহাসের পাতায় একটু পিছন ফিরে তাকাই।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে কতিপয় উপজাতীয় লোকজন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকলেও বেশিরভাগ উপজাতীয়রা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করে। বর্তমান চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের পিতা ত্রিদিব রায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি রাংগামাটি জেলার রিজার্ভ বাজার এবং তবলছড়ি বাজারে জনসভায় ভাষণ দেন। এসব জনসভায় তিনি ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানের মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করেন। ত্রিদিব রায় বাংলাদেশের একমাত্র যুদ্ধপরাধী যার লাশ পাকিস্তানে সমাহিত করা হয়েছে। যদিও তার ইচ্ছা ছিল যাতে তার শেষকৃত্য বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি জনতার প্রবল প্রতিরোধের মুখে তা সম্ভব হয়নি। মৃত্যুর দশদিন পর পাকিস্তানের ইসলামাবাদে তাকে দাহ করা হয়। রাজাকার ত্রিদিব রায়ের উত্তরসূরীরা বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা স্বাধীন ‘জুম্মল্যান্ড’ নামক দেশ গঠনের জন্য গোপনে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। তারা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন উগ্রপন্থী সংগঠনসহ নানান সংস্থার সাথে এ ব্যাপারে লবিং করছে। পাশাপাশি তারা নিজেদের সশস্ত্র সংগঠনের জন্য ব্যাপক অস্ত্র ক্রয় করছে। 

জানা যায় যে, পার্বত্য চট্রগ্রামের উপজাতি সন্ত্রাসীদের কাছে মায়ানমার থেকে সব অস্ত্রের চালান আসতো আরাকান আর্মির নেতা ডা. রেনিন সোয়ের মাধ্যমে। সেই ডা. রেনিন সোয়ের সাথে রাজাকার ত্রিদিব রায়ের পুত্র দেবাশীষ রায়ের সখ্যতার কথা আমাদের সবারই জানা। পর্দার অন্তরালে থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করতে ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় যে সর্বদাই সচেষ্ট তার প্রমাণ এর আগেও আমরা জেনেছি। এমনকি নেপালের কাঠমাণ্ডুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী সেমিনার আয়োজন করেছিলেন এই ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। (পার্বত্যনিউজ ডট কম, ৩১ মার্চ ২০১৮)। 

যারা ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো তারা কিংবা তাদের উত্তরসূরীরা আবারও আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির ভৌগলিক অখন্ডতা খর্ব করার ধৃষ্টতা প্রদর্শন করলে বাংলাদেশের জনগণ তা কখনোই মেনে নিবে না। বর্তমানে, ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথাগত আইনের কথা বলে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইনকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে তা অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে রাজাকার পুত্র দেবাশীষ রায়ের কথায় স্থানীয় আইনের কাছে রাষ্ট্রীয় আইন অকার্যকর হতে দেয়া হবে না। 

“এক দেশে এক আইন”- এই নিয়মেই সব কিছু চলবে। বাংলাদেশের সমতলের জেলাগুলোর মত একই আইন এই পাহাড়ের জেলাগুলোতেও চলবে। সুযোগ সন্ধানী আর স্বার্থপর দেবাশীষ রায় প্রথাগত আইনের কথা বললেও সে শুধু তার সার্থসিদ্ধি হয় এমন আইনের কথাগুলোই বলে। অথচ এই প্রথাগত আইনের বেড়াজালে যে তার সমাজের নারীরা পিষ্ট সে কথা কখনো সে বলে না। কিছু উদাহরণ দিয়ে আমার লেখা শেষ করতে চাই... সার্বজনীনভাবে যেখানে নারীদেরকে সমঅধিকার দেয়ার পাশাপাশি তাদেরকে বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে কাজ করছে সবাই, ঠিক সেখানেই উপজাতি পুরুষরা তাদের নারীদেরকে প্রচলিত আইন আর প্রথাগত নিয়ম- এই দুইদ্বন্দ্বের যাঁতাকলে পিষ্ট করছেন। কিন্তু উপজাতি জনগোষ্ঠীর সমাজ ব্যবস্থা এবং তাদের রীতিনীতি অনুযায়ী পুরুষতান্ত্রিকতার বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। 

উপজাতিদের প্রথাগত রীতিনীতি এবং পদ্ধতিগত ঐতিহ্য নারীদের আরো পিছিয়ে দিচ্ছে। প্রচলিত আইন আর প্রথাগত নিয়মের বুলি আওড়ানো রাজাকারপুত্র দেবাশীষ এখানে নীরব কেন? কিছু উদাহরণ তুলে ধরছিঃ উপজাতি নারীদের অধিকার ও বঞ্চনা নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশিরভাগ উপজাতীয় সম্প্রদায়ের প্রথা অনুযায়ী নারীদের পিতা-মাতা ও স্বামীর সম্পদের মালিকানায় উত্তরাধিকারের কোনো পদ্ধতি নেই। এ কারণে উপজাতী নারীরা সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

যার প্রকৃত উদাহরণ অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সেনা সার্জেন্ট মুকুল চাকমা। গত ৩০ মে ২০১৬ তারিখে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থেকে আঞ্চলিক সংগঠণ জেএসএস’এর হাতে অপহৃত হন অবসর প্রাপ্ত সার্জেন্ট মুকুল চাকমা। যিনি এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ। ঘটনার পর বিভিন্ন চড়াই উৎরাই পেরিয়ে থানায় মামলা দায়ের করার পর থেকে স্থানীয় সন্ত্রাসী কর্তৃক নানান রকম হুমকির সম্মুখীন হয়েছে মুকুল চাকমার স্ত্রী এবং কন্যা নমিসা চাকমা। চট্টগ্রাম নাসিরাবাদ মহিলা কলেজের অনার্সের ছাত্রী নমিসা চাকমা নিরাপত্তাহীনতার কারণে পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে এখন তারা সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে নিজ ভিটেমাটি ছেড়ে আত্নগোপনে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

 তার মা এবং তারা দুই বোন এখন আর পৈতৃক ভিটায় যেতে পারছেন না। যেহেতু সার্জেন্ট মুকুল চাকমার কোন পুত্র সন্তান নেই তাই এই সুযোগে প্রথাগত রীতিনীতি এবং পদ্ধতিগত ঐতিহ্যের দোহাই দিয়ে সার্জেন্ট মুকুল চাকমার সমস্ত সম্পত্তি গ্রাস করছে তার আত্মীয় স্বজনরা। অথচ সম্পত্তি পাওয়া তো দূরের কথা, প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে, সার্জেন্ট মুকুল চাকমার অসহায় পরিবারকে। 

উপজাতীরা তাদের সম্প্রদায়ের বিবাহ বন্ধনের ক্ষেত্রে নারীদের মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে শুধুমাত্র অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতে পাত্রস্থ করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে অন্য সম্প্রদায়ের যুবকের সঙ্গে কোন মেয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তাকে পরিবার ও সমাজচ্যুত করা হয়। এমনকি সমাজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি শূকর অথবা এর মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করে, ছেলে এবং মেয়েকে জুতার মালা পরিয়ে জনসম্মুখে ঘুরানো হয়। যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে সচেতন সমাজে কোনো ক্রমেই কাম্য নয়। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি তরুণীরা প্রেমিক বা স্বামী হিসেবে বাঙালি যুবকদের সাথে সম্পর্ক করলে পাহাড়ি সংগঠনগুলো এসব বিয়ে বা সম্পর্ক মেনে না নিয়ে ওই উপজাতি মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে ধর্ষণ, নির্যাতনসহ চরমভাবে লাঞ্ছিত করে এবং পরিবারের উপর মোটা অংকের চাঁদা ধার্য করে।

 এ ব্যাপারে রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার কেরণছড়ি মৌজা কার্বারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অংচাখই কার্বারী একটি পত্রিকাকে জানান, কোনো পাহাড়ি মেয়ে বাঙালি ছেলেকে বিয়ে করলে উপজাতিদের সামাজিক নিয়মে কোনো শাস্তির বিধান নেই। তবে আমরা এ ক্ষেত্রে কার্বারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সাধারণত ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে থাকি। এরপর তাদের একত্রে বসবাসে সমস্যা নেই। কিন্তু বাস্তবতা তা বলে না। কেননা, উপজাতীয় ওই সব নারীর উপর সামাজিক ও আঞ্চলিক সংগঠনগুলো বিচারের নামে ভয়াবহ নির্যাতন করে থাকে। এমনকি নিলামে পর্যন্ত তোলা হয় ওই নারীকে। 

খাগড়াছড়ির রেটিনা চাকমা তার প্রমাণ। এরকম ভূক্তভোগীর সংখ্যা অনেক আছে। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে ভালবেসে এক বাঙালী ছেলেকে বিয়ে করার অপরাধে খাগড়াছড়ির গুইমারার উমাচিং মারমা (১৮) নামে এক তরুণী ও তার পরিবারকে নির্যাতন ভোগসহ মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে হয়। এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালী মুসলিম ছেলেকে ভালোবেসে মাটিরাঙার সোনাবি চাকমা, রাঙামাটির কুতুকছড়িতে রিনা ত্রিপুরা, রামগড়ের মণিকা ত্রিপুরা, নানিয়ারচরের জ্যোৎস্না চাকমা ও আয়েশা সিদ্দিকা ওরফে মিনুরওজা মারমাসহ অসংখ্য পাহাড়ী মেয়েকে অপহরণ, গণধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন নারকীয় অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়েছে। 

পার্বত্য এলাকায় অপসংস্কৃতির বেড়াজালে বন্দি উপজাতী পুরুষদের ভোগ্য পণ্যের শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ উপজাতি নারীদেরকেও। নানান রকম ভয়-ভীতি দেখিয়ে তারা নিজ সম্প্রদায়ের নারীদেরকে ধর্ষণ করতেও পিছপা হচ্ছে না। সম্প্রতি, রাংগামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের (সিএইচটিডিবি) এক চাকমা নারী কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুতির ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে ওই প্রতিষ্ঠানেরই এক চাকমা উপ-সহকারী প্রকৌশলী। বেকার স্বামী, ছেলে-মেয়ের আহার ও পড়ালেখার খরচের দিকে তাকিয়ে নীরবে সব এতদিন সব সহ্য করে গিয়েছিলেন এই অসহায় চাকমা নারী। অতঃপর নীরবতা ভেংগে এক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস-চেয়ারম্যানের নিকট প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই চাকমা নারী। কিন্তু ধর্ষিতার এই অভিযোগ পেয়েও কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি পাহাড়ের কোন নারী সংগঠনও এর বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করেনি। 

এ ঘটনা স্পষ্টতই প্রমাণ করে যে পাহাড়ের উপজাতি নারীরা আসলে কতটা অসহায়। বিবাহের নিবন্ধন না থাকায় বর্তমান শিক্ষিত উপজাতি যুব সমাজের মধ্যে একাধিক বিবাহ করার প্রবণতার পাশাপাশি পূর্বের স্ত্রীকে অস্বীকার ও ভরণপোষণ সঠিকভাবে প্রদান না করার ঘটনা ঘটছে অহরহ। উপজাতী নারীরা চরমভাবে অবমূল্যায়িত হলেও বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের আশ্রয় নিতে তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাহস পান না। সমাজ তাদের একেবারেই সহযোগিতা করে না। তাই বাধ্য হয়ে তাদের সাম্প্রদায়িক প্রথা এবং সামাজিক রীতিনীতি অনুযায়ী স্থানীয় হেডম্যান ও কারবারির করা বিচারের রায় মাথা পেতে মেনে নিতে হয়। 

পৃথিবীতে যুগে যুগে মানুষ সামনে এগিয়ে যাওয়ার সংগ্রাম করছে। কোনো গোত্র বা জনগোষ্ঠীর সব নিয়ম কানুন বা প্রথা সর্ব গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে, তাই যুগে যুগে মানুষ ভালো ব্যবস্থাপনাকেই গ্রহণ করেছে, অপছন্দনীয় বিষয়গুলোকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে, নারী কিংবা পুরুষ সবাইকে মানুষ হিসেবে সমভাবে মূল্যায়ন করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। 

আজ যদি রাজাকারপুত্র দেবাশীষ রায় পাহাড়ের মানুষগুলোকে এভাবে প্রথাগত নিয়ম আর প্রচলিত আইনের মিথ্যা ফাঁদে আটকে না রাখতো তাহলে পাহাড়ের এই সব ভুক্তভোগীরা ন্যায্য বিচার পেত। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীর ডিজিটাল যুগে বাস করেও রাজাকারপুত্র দেবাশীষ রায় তার ক্ষমতার জোরে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য মান্ধাতার আমলের সামন্ত প্রভুর শাসন জারি রাখতে চায়। এভাবে সে পাহাড় এবং সমতলের মাঝে একটা দেয়ালের সৃষ্টি করে পুরো বাংলাদেশের সাথে পাহাড়ের একটা দূরত্ব তৈরী করে দিয়েছে। এখনই সময় সেই দেয়াল সজোরে আঘাত দিয়ে ভেঙ্গে ফেলার।

সন্তোষ বড়ুয়া, রাংগামাটি

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]