নিয়মিত চাঁদা আদায়ের পাশাপাশি নানা উপলক্ষে উপজাতি সংগঠনগুলো চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এটাই তাদের আয়ের অন্যতম উৎস। উপজাতি-বাঙালি কেউই রেহাই পায় না এ থেকে। চাঁদাবাজির দু-একটি ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলেও বেশিরভাগই থাকে অন্তরালে। পার্বত্য শান্তি চুক্তির বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে চিঠি দিয়ে চাঁদা আদায় করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে চাঁদা আদায়ের নির্দেশনা দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সংগঠনের নেতারা। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদা দিতে কেউ অস্বীকার করলে তাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। তবে সংগঠনের নেতারা একে চাঁদা বলতে নারাজ। তাদের দাবি, তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে অনুদান নেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, বছরে পাহাড়ে ৩০০-৪০০ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার পক্ষ থেকে সংগঠনটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা তার সংগঠনের সদস্যদের চিঠি দিয়ে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, ‘প্রিয় সহকর্মীরা সবাইকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা। আপনারা সবাই অবগত আছেন যে আগামী ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তির ২২ বছর পূর্তি। প্রতিবছরের মতো এ বছরও দিবসকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে নানা ধরনের সভা সেমিনার ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এজন্য আমাদের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। তাই সব চিফ কালেক্টরদের জানাচ্ছি যে, আপনারা নিজ নিজ এলাকার জনসাধারণ, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, পরিবহন মালিক সমিতি, হোটেল-মোটেল মালিক, পর্যটকসহ সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করে পার্বত্য চুক্তির অনুষ্ঠানাদি পালনে সহায়তা করুন। কেউ অনুদান প্রদানে অস্বীকৃতি বা অসম্মতি জানালে প্রয়োজন অনুযায়ী শক্তি প্রয়োগ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। মনে রাখবেন, আদায়কৃত অনুদানের অর্থ থেকে আপনাদের বিশেষ সম্মানি প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন মিডিয়া, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ বিভিন্ন খাতে অর্থ ব্যয় হবে। তাই যত বেশি সম্ভব অনুদান আদায় করতে নির্দেশ দেওয়া করা হলো।’
এই বিষয়ে জানতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক এর সভাপতি শ্যামল চাকমা বলেন, সংগঠন চালাতে কিংবা কোনও অনুষ্ঠান করতে তারা মানুষের সহযোগিতা নেন, চাঁদা নেন না। জোর করে তারা চাঁদা নেন না।
স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সদস্য রূপ কুমার চাকমা বলেন, ‘পাহাড়ি কিংবা বাঙালি যেই হোন না কেন তাকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিয়ে থাকতে হয়। তা সবাই জানে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাঙামাটি ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী সমিতির এক সদস্য বলেন, তাদের সমিতিতে ৫৫ জনের মতো সদস্য রয়েছেন। প্রতিবছর ৬০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয় তাদের।প্রত্যেককে এক থেকে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। না হলে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মাছের বোট ও ট্রাক আটকে আমাদের লোকদের অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে। চাঁদা না দিলে হত্যা করে ফেলে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলো জানায়, রাঙামাটিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র সংগঠন যানবাহন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মালিকানাধীন বিভিন্ন বাগান, বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঠিকাদার ও সাধারণ নাগরিকসহ বিভিন্ন খাত থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে থাকে। এসব চাঁদার টাকা দিয়ে তারা অস্ত্রের ভাণ্ডার সমৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে ব্যয় করে। শুধু রাঙামাটিতেই ২০১৮ সালে ১২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার চাঁদাবাজি করেছে তারা। আর তিন পার্বত্য জেলায় এর পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু এ প্রসঙ্গে বলেন, পাহাড়ে চাঁদাবাজি নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। শান্তি চুক্তি দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবির করার বিষয়টি তিনি বিভিন্ন জনের কাছে শুনেছেন।
জামাল উদ্দিন, রাঙামাটি থেকে ফিরে
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]