
শুরুর কথা : বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এক অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল। সুপ্রাচীনকাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহাসিক এবং ভৌগোলিক অবস্থানজনিত কারণে বাংলাদেশের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আজ থেকে প্রায় ১৫৬ বছর আগে, ১৮৬০ সালে, ব্রিটিশ-ভারতের সরকার তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলার পূর্ব অংশের পার্বত্য অঞ্চলকে আলাদা একটি প্রশাসনিক ইউনিট তথা একটি নতুন জেলার সৃষ্টি করে এবং নতুন জেলার নাম দেওয়া হয় ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম’। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়, তখন পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাটি পাকিস্তান তথা পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ হয়ে যায়। অতএব, পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাও বাংলাদেশের অংশ হিসেবে অব্যাহত থাকে। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে দেশ যখন দ্রুত পুনর্গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল জনগণের ঐক্যবদ্ধতা।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর একটি ক্ষুদ্র অংশ এই যুক্তবদ্ধতার সঙ্গে শামিল না হয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী চেতনায় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। উত্থান হয় ‘শান্তিবাহিনী’ নামক এক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের। স্বাভাবিকভাবে অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকার শক্তি প্রয়োগে বাধ্য হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে শুরু হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের রক্তাক্ত ইতিহাস। ইতিহাসের সেই রক্তাক্ত পথ থেকে শান্তির পথে পার্বত্য চট্টগ্রামকে উত্তরণে বাংলাদেশের সব সরকারই সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে। অবশেষে ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে রক্তাক্ত অধ্যায়ের সফল অবসান ঘটিয়ে সূচিত হয় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বাস্তবায়ন।
“পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি”, যা মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের কাছে পার্বত্য শান্তিচুক্তি নামেই অধিক পরিচিত। অখন্ড পাকিস্তান থেকে ৯মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ৩০ লাখ শহীদের আত্নহুতিতে প্রাপ্ত স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের তিনটি জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ও বান্দরবান নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি এক নেতা মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার নেতৃত্বে গড়ে উঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। আর তৎকালীন সময়ে পাহাড়ে অবস্থানরত বাঙ্গালী-পাহাড়ী অধিবাসীদের লুটপাট, হত্যা, অপহরণই ছিলো এদের মূল কাজ। সদ্য যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত অস্ত্রের জোরে তারা তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে। এরপর ১৯৮৩ সালের ১০ই নভেম্বর নিজ দলেরই একটি সশস্ত্র গ্রুপের হাতে নির্মম ভাবে নিহত হন এমএন লারমা। এরপর তারই আপন ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা পিসিজেএসএসর সভাপতি হন। সেসময় পাহাড়ে ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে ও সরকারী কার্যক্রমকে পাহাড়ে অকার্যকর করার লক্ষ্যে সন্তু লারমা “শান্তিবাহিনী” নামে জেএসএস’র একটি সশস্ত্র শাখা গঠন করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে পাহাড় হয়ে উঠে অশান্ত আর অস্থিতিশীল। এক পর্যায়ে শান্তিবাহিনীর সদস্যরা পাহাড়ে অবস্থানরত সামরিক বাহিনী- আধা সামরিক বাহিনী ও সাধারণ জনগণকে হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট করতে থাকে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম হয়ে উঠে বাংলাদেশের এক অস্থিতিশীল উপত্যাকা। ধীরে ধীরে শান্তিবাহিনীর অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমতাবস্থায় বিষয়টিকে আইনি নয় বরং রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা প্রয়োজন, এমন উপলব্ধি থেকে দীর্ঘদিন ধরেই তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার তাদের নিজ দলীয় নেতা-কর্মীদের দিয়ে জেএসএস তথা শান্তিবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। সেসময় পানছড়ির লোগাং এর দুদুকছড়ায় শান্তিবাহিনীর সাথে জেএসএস নেতৃৃবন্দের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতো। আওয়ামীলীগের এ চেষ্টার ফসল হিসেবে ১৯৯৭ সালে শান্তিবাহিনী বেশ কিছু শর্ত-সাপেক্ষে সরকারের সাথে বৈঠকের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। যার ধারাবাহিকতায় একই বছরের ২রা ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকারের পক্ষে তৎকালীন সংসদ সদস্য ও হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ও শান্তিবাহিনীর পক্ষে জেএসএস প্রধান ও বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন শান্তিবাহিনী সদস্যরা। যার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ ২২ বছরের সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটে। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের এই সংঘাত বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সৃষ্ট একটি রাজনৈতিক সংঘাতরূপে পরিচিত।
ইতিহাস
পাকিস্তান শাসনামলে তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তানে এ সংঘাতের সূচনালগ্ন হিসেবে ধরে নেয়া হয়। ১৯৬২ সালে কাপ্তাই বাঁধ অবকাঠামো নির্মাণের ফলে লক্ষাধিক লোক স্থানচ্যুত হন। তাদের স্থানচ্যুতিতে তৎকালীন সরকার কোনো গুরুত্ব দেয়নি ও হাজারো পরিবার ভারতে চলে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী চাকমা রাজনীতিবিদ মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা স্বায়্ত্তশাসন ও ওই অঞ্চলের জনগণের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য দাবি উত্থাপন করেন। লারমা ও অন্যান্য পার্বত্য উপজাতি প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সংবিধানের খসড়ার বিপক্ষে অবস্থান নেন। তাদের মতে ওই সংবিধানে নৃ-জাতিগোষ্ঠীকে স্বীকৃতিসহ অমুসলিম ও অবাঙালিদের সংস্কৃতিকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। সরকারের নীতি কেবলমাত্র বাঙালি সংস্কৃতি ও বাংলা ভাষাকে ঘিরে। এছাড়াও বাংলাদেশের সব নাগরিককে বাঙালি হিসেবে দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার (এমএন লারমা) আলোচনা হয়।
শান্তিবাহিনী গঠন
১৯৭৩ সালে লারমা ও অন্যান্য নেতারা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) প্রতিষ্ঠা করেন। এ সমিতিতে স্থানীয় উপজাতীয় লোকজন সংশ্লিষ্ট ছিলেন। পিসিজেএসএসের সশস্ত্র সংগঠন শান্তিবাহিনী সরকারি নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যানবাহনে প্রথমবারের মতো আক্রমণ করে শান্তিবাহিনী। শান্তিবাহিনী তাদের আক্রমণ পরিচালনার সুবিধার্থে এ অঞ্চলকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে। স্থানীয় অধিবাসীদের জোরপূর্বক সংগঠনে যোগ দিতে বাধ্য করে ও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করে।
বাঙালি ও সৈনিক, সরকারি কার্যালয়, সরকারি কর্মকর্তা ও এতদাঞ্চলের বাঙালি অধিবাসীদের লক্ষ্য করে আক্রমণ পরিচালনা করতে থাকে। এছাড়াও এ বাহিনীর বিপক্ষে অবস্থানরত যে কোনো উপজাতি ও সরকারকে সমর্থন দানকারীকেও আক্রমণ করতে দ্বিধাবোধ করেনি। সরকারী তথ্য মোতাবেক, ১৯৮০ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে এক হাজার ১৮০ ব্যক্তি শান্তিবাহিনীর হাতে প্রাণ হারায়।
সরকারি পদক্ষেপ
ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীল অবস্থা চলার প্রেক্ষিতে এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বাংলাদেশ সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ওই অঞ্চলের আর্থসামাজিক চাহিদা পূরণকল্পে একজন সেনাবাহিনীর জেনারেলের নিয়ন্ত্রণে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংস্থা গঠন করেন। কিন্তু সরকারের এ পদক্ষেপ জনপ্রিয়তা পায়নি। বিভিন্নভাবে অপপ্রচার রটানো ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধাচরণ এর অন্যতম প্রধান কারণ। সরকার ১৯৬২ সালে সৃষ্ট কাপ্তাই বাঁধের প্রেক্ষিতে প্রায় এক লাখ বাস্তুচ্যুত অধিবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয় বাস্তুচ্যুত অধিবাসীরা ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করেনি ও চল্লিশ সহস্রাধিক চাকমা উপজাতি ভারতে চলে যায় করেছে বরৈ কথিত রয়েছে।
শান্তিচুক্তি
১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে একটি আইন পাস করে সরকার রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান তিনটি জেলায় স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠন করে। প্রত্যেক পরিষদের প্রধান ছিলেন চেয়ারম্যান। তিনি উপজাতিদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন। ৩০ সদস্যবিশিষ্ট এই পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং এক-তৃতীয়াংশ বাঙালি। উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসন জেলার বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টন হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের সরাসরি ভোটে পরিষদের সদস্যরা নির্বচিত হবেন। স্থানীয় পরিষদ এর নিজস্ব বাজেট প্রণয়নের দায়িত্ব পালন করবে। উল্লিখিত জেলা পরিষদ আইনের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি না থাকায় জনসংহতি সমিতি তখন তা প্রত্যাখ্যান করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি পাহাড়ি জনগণের বিশেষ অবস্থান ও মর্যাদার স্বীকৃতি দিয়েছে। এই শান্তিচুক্তির আওতায় তিন পার্বত্য জেলার স্থানীয় সরকার পরিষদ সমন্বয়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হয়। আঞ্চলিক পরিষদের গঠন কাঠামো নিম্নরূপ: চেয়ারম্যান ১, সদস্য (উপজাতি) পুরুষ ১২, সদস্য (উপজাতি) মহিলা ২, সদস্য (অ-িউপজাতি) পুরুষ ৬, সদস্য (অ-উপজাতি) মহিলা ১। উপজাতি পুরুষ সদস্যদের মধ্যে পাঁচ জন চাকমা, তিনজন মারমা, দুজন ত্রিপুরা এবং একজন করে মুরং ও তঞ্চঙ্গ্যাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবেন। মহিলা সদস্যের ক্ষেত্রে একজন চাকমা এবং অপরজন অন্য উপজাতি গোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত হবেন।
অ-উপজাতি সদস্যদের ক্ষেত্রে প্রতি জেলা থেকে দুজন করে নির্বাচিত হবেন। তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের ভোটে আঞ্চলিক পরিষদের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা পদাধিকার বলে আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য হবেন এবং তাদের ভোটাধিকার থাকবে। আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্যরা এই পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন করবেন। পরিষদের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। এই পরিষদ তিন পার্বত্য জেলার সাধারণ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা এবং উন্নয়ন কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন ও তত্ত্বাবধান করবে। উপজাতীয় আইন এবং সামাজিক বিচারকার্য এই পরিষদের অধীনে থাকবে। পরিষদ এনজিওদের সঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয় করবে এবং ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেবে। পরিষদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করবে। চুক্তিতে একজন উপজাতিকে প্রধান করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক কার্যক্রম দেখা-শোনার জন্য একটি উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের কথাও বলা হয়েছে। তবে এটা সুস্পষ্ট যে, আঞ্চলিক পরিষদ একটি প্রতীকী প্রতিষ্ঠান। এর ক্ষমতা ও কার্যক্রম সমন্বয় সাধন ও তদারকি ধরনের।
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি পাহাড়িদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্পাদিত একটি শান্তি চুক্তি। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের প্রতিনিধি জনসংহতি সমিতির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২ ডিসেম্বর এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং শান্তিবাহিনীর পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা সন্তু লারমা। এরপর ধীরে ধীরে উপজাতি-বাঙালি সংঘর্ষ হ্রাস পায়। পাহাড়ে বইতে শুরু করে শান্তির সুবাতাস।
শান্তি চুক্তি ও বাস্তবায়ন
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মায়’ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে তৎকালীন চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি শীর্ষ নেতৃবৃন্দের পক্ষে সন্তু লারমা। এখানে উল্লেখ্য, কোনো প্রকার তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই এবং কোনো বিদেশি শক্তিকে যুক্ত না করেই এ শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন হয়েছিল যা বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম। পৃথিবীর যে কোনো দেশে সাধারণত এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায়। শুরু থেকেই এই চুক্তি বাংলাদেশের বহুল আলোচিত-সমালোচিত চুক্তিগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে তৎকালীন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ শান্তি বাহিনীর দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সংগ্রামের। ফলশ্রুতিতে, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও উন্নয়নের নবযাত্রার সূচনা হয়। আশা করা যায়, অদূর ভবিষ্যতে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা হবে শান্তি ও উন্নয়নের রোল মডেল।
শান্তি চুক্তির শর্তানুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ভারত থেকে প্রত্যাগত ১২,২২৩টি পরিবারের মোট ৬৪,৬১২ জন শরণার্থীকে পুনর্বাসন করেছে। চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণরূপে এবং ১৫টি ধারা আংশিক রূপে বাস্তবায়ন করেছে। এ ছাড়াও ৯টি ধারার বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৩৩টি বিভাগ/বিষয়ের মধ্যে ৩০টি বিভাগ/বিষয় রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে এবং ২৮টি বিভাগ/বিষয় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব বিভাগে লোকবল নিয়োগে চুক্তির শর্তানুযায়ী ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সদস্যদের প্রাধান্য দেওয়ায় স্থানীয়ভাবে তাদের বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত একটি ব্রিগেড এবং ২৩৯টি অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প গুটিয়ে ফেলা হয়েছে।
ভূমি ব্যবস্থাপনা : শান্তি চুক্তির সবচেয়ে জটিল যে বিষয়টি তা হচ্ছে ভূমি ব্যবস্থাপনা। এর জটিলতার প্রধান কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপ না হওয়া। সরকার একাধিকবার পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপের উদ্যোগ নিলেও পাহাড়ি সংগঠনগুলোর বিরোধিতা, অপহরণ ও সন্ত্রাসী তত্পরতার কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে ভূমি কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং সেই কমিশন কাজ করছে। ভূমি কমিশনের প্রধান ছাড়া বাকি সব সদস্যই পার্বত্য ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রতিনিধি। বিষয়টির ব্যাপকতা এবং জটিলতার কারণেই বাস্তবায়নে একটু বেশি সময় লাগছে সমাধান করতে।
শান্তি চুক্তির সাফল্য
শান্তি চুক্তির ফলে পাহাড়ি শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, দলের অন্যান্য সদস্য এবং পাহাড়ের সাধারণ মানুষ যে সুবিধা ভোগ করছে তা ভুলে গেলে চলবে না। শান্তি চুক্তির পর পাহাড়ে উন্নয়ন প্রবলভাবে গতি পেয়েছে। সমতলের জেলাগুলোর মতো বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো সুবিধা গড়ে উঠেছে। সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করে ইতিমধ্যে পাহাড়ের সব উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে স্বাধীনতার আগে ১৯৭০ সালে মাত্র ৪৮ কিমি রাস্তা ছিল। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য অঞ্চলে নির্মাণ করেছে প্রায় ১৫৩৫ কিমি রাস্তা, অসংখ্য ব্রিজ ও কালভার্ট। এ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি, আধাসরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, কলকারখানাসহ সম্পন্ন হয়েছে অনেক উন্নয়ন কার্যক্রম। সরকারের প্রচেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রামে আজ মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে এককালের পশ্চাত্পদ জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রভূত উন্নতির ছোঁয়া লেগেছে। যেখানে পশ্চাত্পদ জনগোষ্ঠীর শিক্ষার মান উন্নয়নে মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ হচ্ছে সেখানেও কতিপয় স্বার্থান্বেষী নেতৃবৃন্দ বাধার সৃষ্টি করছেন। ইতিহাসে উন্নয়নকে পেছনে টেনে নিয়ে যাওয়ার এমন নজির সম্ভবত আর নেই। ১৯৭০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে মাত্র ছয়টি উচ্চবিদ্যালয়/কলেজ ছিল যার বর্তমান সংখ্যা ৪৭৯টি। প্রাথমিক বিদ্যালয় এখন প্রায় প্রতিটি পাড়ায়। এ ছাড়াও ৫টি স্টেডিয়াম, ২৫টি হাসপাতাল এবং বর্তমানে ১৩৮২টি বিভিন্ন কটেজ ইন্ডাস্ট্রি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার হার ১৯৭০ সালে মাত্র ২% শতাংশ ছিল যা বেড়ে এখন ৪৪.৬% হয়েছে।
চাকমা জনগোষ্ঠীর শিক্ষার হার ৭৩ শতাংশে পৌঁছেছে। আমরা এ অবস্থার আরও উন্নতি দেখতে চাই। পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিবেশবান্ধব শিল্পকারখানা এবং পর্যটন সহায়ক শিল্প গড়ে তোলার সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। নতুন নতুন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামকে এখন আর বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া কোনো জনপদ বলে দাবি করা যায় না। অন্যদিকে, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৩৫ কিমি দীর্ঘ থানচি-আলীকদম সড়ক নির্মাণ, নীলগিরি ও সাজেকের মতো উন্নত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন আরও অনেক আকর্ষণীয় ও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ সুবিধা আরও সম্প্রসারিত করা গেলে নেপাল এবং থাইল্যান্ডের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪৫টি নয়নাভিরাম পর্যটন স্পট রয়েছে। সেগুলো সঠিকভাবে বিকাশ করতে পারলে প্রতিবছর ১৫-২০ হাজার কোটি টাকা উপার্জন করা সম্ভব। এতে করে রাষ্ট্র যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে তেমনি পর্যটন বিকাশের ফলে স্থানীয় পাহাড়ি জনসাধারণের একটি বিরাট অংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলে চাঁদাবাজি/সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অনেকাংশে কমে যাবে বলে সহজেই অনুমেয়।
শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথমত, যানবাহন চলাচলে একধরনের অলিখিত নিষেধাজ্ঞা ছিল, যেন এক প্রতিবন্ধকতা। যার পরিপ্রেক্ষিতে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যই শুধু পাহাড়ের রাস্তায় গোটা কয়েক যানবাহন দেখা যেত, এমনকি উক্ত সময়ের পূর্বে বা পরে কোন লোক মুমূর্ষ অবস্থায় মারা গেলেও তাকে হাসপাতালে নেওয়ার মতো কোন যানবাহন পাওয়া যেতনো। কিন্তু চুক্তির ধারাবাহিকতায় বর্তমানে পাহাড়ী রাস্তায় ২৪ ঘন্টাই যানবাহনের আনাগোনা লেগেই থাকে। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাস্তাঘাট ছিল অনুন্নত, পাহাড়ের প্রধান সড়ক বাদে শতকরা ৯০ ভাগ রাস্তাই ছিল কাচা, ছিলোনা কোন ব্রীজ কালবার্ট। কিন্তু চুক্তির ধারাবাহিকতায় বর্তমানে পাহাড়ের শতভাগ রাস্তাই উন্নত, নির্মিত হচ্ছে আধুনিকমানের সব সেতু, ব্রীজ-কালভার্ট। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের দূর্গম এলাকাগুলোতে সন্ধ্যার সাথে সাথেই প্রত্যেকটি পাহাড়ী পল্লিতে নেমে আসতো ভুতূড়ে এক নিরবতা, কিন্তু চুক্তির ধারাবাহিকতায় বর্তমানে পাহাড়ের আনাছে-কানাছে প্রতিটি বাড়িতেই সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জ্বলছে সৌরবিদ্যুতের আলো, লেখাপড়া করছে শিশুরা, নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ সারছে গৃহিীনিরা। শান্তিচুক্তি ফলে পাহাড়ে নির্মিত হয়েছে পাড়াকেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ, মহিলা কলেজ, মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ আধুনিকসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি। শান্তিচুক্তি ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ ২২ বছরের সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটে বর্তমানে পাহাড় একটি শান্তির জনপদ, কমে এসেছে হানাহানি, খুন, চাঁদাবাজি। মহাজোট সরকারের শাসনামলে তিন পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। যে দুর্গম এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে ছিল সে স্থানগুলো তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় আনা হয়েছে।
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি-পাহাড়ীদের সঙ্গে বাঙালী ও সরকারী বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২২ বছর আগে চুক্তিটি সম্পাদিত হয়। অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রাম নিষিদ্ধ এলাকায় পরিণত হয়েছিল। দুই দশক স্বাভাবিক জীবনযাত্রার চাকা বন্ধ ছিল। শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় পার্বত্য এলাকা তার স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পায়; সমসাময়িককালে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সফল রাজনৈতিক পরিসমাপ্তি আমাদের দেশের জন্য এক বিরল অর্জন হিসেবে গণ্য হয়। এ কারণে শেখ হাসিনার ইউনেস্কো পুরস্কার প্রাপ্তি ছিল শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অনন্য অবদানের স্বীকৃতি। চুক্তির পর পুরো পার্বত্যাঞ্চল জুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিকাশ যথেষ্ট বেগবান হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গত ২২ বছর ধরে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সফলভাবে পরিচালনার উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত থেকে পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের অপরিহার্যতা লক্ষ্য করা যায়। তবে শান্তি চুক্তিতে বর্ণিত সকল নাগরিকের অধিকার সমুন্নত রাখার প্রত্যয় বাস্তবায়নে পাহাড়ী-বাঙালীর যৌথ প্রচেষ্টা দরকার।
শেখ হাসিনা সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের আশা-আকাক্সক্ষা ও প্রত্যাশা পূরণে সর্বদা সচেষ্ট। পার্বত্য অঞ্চলকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের কোন অগণতান্ত্রিক ও জনবিরোধী উদ্যোগ নেই। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ পেয়েছেন। ভূমি কমিশন গঠন ও ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বিল ২০১০’ জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের অখন্ডতা রক্ষার জন্য উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের ধারণা সবাই মেনে নিয়েছে।
সুতরাং, পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো একটি স্পর্শকাতর অঞ্চলের বিরাজমান সমস্যাকে সম্ভাবনায় রুপান্তর করতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি একটি মাইল ফলক। এছাড়া এ চুক্তির মতো একটি বিশাল সম্ভাবনা বাস্তবায়নে মাত্র ২২ বছর কিছুই নয়। পার্বত্যবাসী আশা রাখে পাহাড়ের সমস্যাকে সম্ভাবনায় রুপান্তরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরলস প্রচেষ্টা খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]