দুর্গম পাহাড়ে অবাধে চলছে গাঁজার চাষউঁচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যের দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে অবাধে চলছে ভয়ঙ্কর নেশা গাঁজার চাষাবাদ। বাইরে থেকে সবুজ প্রকৃতিঘেরা নয়নাভিরাম পাহাড় মনে হলেও ভেতরে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে গাঁজা ও ‘পপি’সহ নানা ক্ষতিকারক চাষাবাদ। নিরাপত্তা বাহিনীর দৃষ্টি এড়িয়ে প্রত্যন্ত ও দুর্গম পার্বত্য ভূমি অবৈধভাবে দখল করে একশ্রেণির পাহাড়ি উপজাতি এসব মাদক উৎপাদন করছে। বৃহস্পতিবার পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি সেনা রিজিউনের মহালছড়ি সেনা জোনের সেনাবাহিনীর টহল দল ওই এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে চাষ করা গাঁজাক্ষেত ধ্বংস করেছে। এ সময় স্থানীয় পুলিশও উপস্থিত ছিল। এর দুই সপ্তাহ আগেও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বেশ কিছু গাঁজার ক্ষেত ধ্বংস করেছে সেনাবাহিনী।
স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত গোয়েন্দারা বলছে সাধারণ চোখে শুধু মাদক ব্যবসা কিংবা চাষাবাদ মনে হলেও নেপথ্যে বড় উদ্দেশ্য কাজ করছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলোর সঙ্গে পার্বত্য অঞ্চলের এক শ্রেণির উপজাতিরা জড়িত। যারা পার্বত্য আঞ্চলিক বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে এসব মাদক চাষাবাদ বা ব্যবসার নেপথ্যে আঞ্চলিক দলগুলোর যোগসাজশ রয়েছে। এসব মাদক ব্যবসা থেকে আয় করা অর্থ মূলত ব্যয় হচ্ছে আঞ্চলিক দলগুলোর সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা, অস্ত্র ক্রয় ও তাদের বেতন ভাতাসহ অন্যান্য ‘প্রশাসনিক’ কাজে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের আওতাধীন মহালছড়ি জোনের ধল্যাছড়া পাড়ায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে ৩৫-৪০টি গাঁজাক্ষেত শনাক্ত করে। যার প্রতিটি জায়গায় ৩-৪ বিঘা জমিতে গাঁজা চাষ করা ছিল। এরপরই স্থানীয় পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত হয়। এরপর সেনাবাহিনীর টহল দল অবৈধ ওই গাঁজাক্ষেতগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়।
এ ঘটনার পর বিষয়টি পার্বত্য অঞ্চলের ওই এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় নিরীহ পাহাড়ি উপজাতি ও সাধারণ বাঙালিরা এই অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কেননা, এসব মাদকের চাষাবাদ ঘিরে ওই এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদেরও ব্যাপক আনাগোনা চলছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলেও জানা যায়।
খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আবদুল আজিজ সময়ের আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার মহালছড়িতে ওই গাঁজাক্ষেত ধ্বংসের অভিযানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে পুলিশও অংশগ্রহণ করেছিল। এ ধরনের অভিযান মূলত সমন্বিতভাবেই হয়ে থাকে। এসপি আবদুল আজিজ বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের অনেক দুর্গম ও নির্জন বন-জঙ্গল এলাকায় গাঁজা চাষাবাদ করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে সেনাবাহিনী তথা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে।
তবে এ দুর্গম অঞ্চলে চাইলেই এককভাবে পুলিশ সবখানে অভিযান চালাতে পারে না। এখানে নিরাপত্তার বিষয়টি আগে ভাবতে হয়। এসব মাথায় রেখেই সমন্বিতভাবে অবৈধ গাঁজা চাষ কিংবা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
জানা যায়, ২০ ডিসেম্বরও খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের নেতৃত্বে বেশ কিছু গাঁজাক্ষেত ধংস করা হয়। দুর্গম অঞ্চলে এমন আরও অনেক স্থানেই গাঁজা ও পপি নামে একটি ভয়ঙ্কর নিষিদ্ধ মাদক এই পার্বত্য এলাকায় চাষাবাদ হচ্ছে। বেশকিছু দিন আগে পপি ক্ষেত শনাক্ত করে তা ধ্বংস করেছিল সেনাবাহিনী। কর্মকর্তারা বলেছেন, গহীন অরণ্য ও দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যেখানে জনবসতি তুলনামূলক কম, এ রকম জায়গায় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের নিরাপদ বসবাস এলাকা হিসেবে বেছে নেয়। এ ধরনের মাদক ব্যবসা থেকে আয় করা অর্থ ব্যয় হয় আঞ্চলিক দলগুলোর সাংগঠনিক কাজে।
স্থানীয় সাধারণ মানুষ ও বিশিষ্টজনদের ধারণা, বিতর্কিত ভূমি কমিশন আইনের ফলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পাহাড়ে ভূমির অবাধ দখল ও ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে মাদকের স্বর্গরাজ্য তৈরি করছে।
লেখক : আলমগীর হোসেন
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]