বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ, ২০২০

মাটিরাঙ্গার ৫ মার্ডার ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট : বিজিবি'র অপেশাদার আচরণ এবং নিরস্ত্র ছিল নিহত গ্রামবাসীরা

গ্রামবাসীকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় গত ৩ মার্চের সহিংসতার ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ গঠিত কমিটি গতকাল বুধবার (১১ মার্চ) রাত ১১ টা ৫০ মিনিটে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে হয়েছে দাবি করেছেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার রিজাউল করিম। এর বেশী প্রতিবেদনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি তিনি। তবে নাম প্রকাশে অনচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিজিবি সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, ভিডিও চিত্র এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনার পেছনের ৫ টি তথ্য উপাত্তের উপর ভিত্তি করে মন্তব্যসহ কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বিজিবি’র পক্ষ থেকে গ্রামবাসীকে জড়িয়ে হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও হত্যার অভিযোগ থাকলেও নিহত গ্রামবাসীরা নিরস্ত্র ছিল বলে জানানো হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। বিজিবির ওপর গ্রামবাসী ও নিহতদের হামলার অভিযোগটির সত্যতা পায়নি কমিটি।

নতুন বিদ্যুৎ লাইনের কাজের জন্য বাড়ির পাশের কাঠাল গাছ কেটে ৫ টুকরো গাছ ট্রাক্টরে (ট্রলি) করে স’মিলে নেয়ার পথে বাধা দিয়েছিল বিজিবি সদস্যরা। এ সময় বাকবিতন্ডতা হয় নিহত শাহাব মিয়া ও মফিজ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। এতে গ্রামের অন্য কেউ ছিল না। তদন্ত কমিটির কাছে গত ১০ মার্চ ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক বিজিবি সদস্যের বক্তব্যে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ার কথা স্বীকার করেছে। নিহত বিজিবি সদস্য মো. শাওন খানের মৃতে্যুর রহস্য উদঘাটন হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিজিবি সদস্যরা গুলি ছোঁড়ার কিছু সময় আগে ধারণ করা কয়েক সেকেন্ডের এক ভিডিও চিত্রে দেখা যায় নিহত বিজিবি সদস্য শাওন খানের কাছে কোন অস্ত্র ছিল না। ভিডিওতে শাওনকে স্বাভাবিক মনে হয়েছিল। আর নিহত এক ব্যক্তি বিজিবি সদস্যের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালানোর কথা বিজিবির পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও একজন প্রশিক্ষিত বিজিবি জোয়ান থেকে পঞ্চাশ বয়সী এক ব্যক্তির পক্ষে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গাছ কাটা ও পরিবহনে বিজিবির বাধা দেয়ার কাজ তাদের দায়িত্বে ছিল না বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। ঘটনার দিন বিজিবি সদস্যরা যদি পেশাদার ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করত তাহলে এতো বড় ঘটনা এড়ানো যেত বলেও মন্তব্য করা হয়।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার রিজাউল করিম ছাড়াও তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মেহেদী হাসান ও সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ হোসেন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৩ মার্চ) জনৈক চান মিয়ার মালিকানাধীন বাগানের চার টুকরা কাঠাল গাছ পরিবহনকালে মাটিরাঙ্গার গাজিনগরে বিজিবি বাঁধা প্রদান করে। একসময় গাছগুলো বিজিবি নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে বিজিবি এলোপাথারী গুলি করে।

এসময় ঘটনাস্থলেও মারা যান মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মো. সাহাব মিয়া প্রকাশ মুছা মিয়া ও তার ছেলে মো. আকবর আলী। এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিজিবি সদস্য শাওন খান, সাহাব মিয়ার আরেক ছেলে আহাম্মদ আলী, মো. মফিজ মিয়া এবং তার ছেলে মো. হানিফ মিয়াকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানেই মারা যান সাহাব মিয়ার ছেলে আহাম্মদ আলী ও বিজিবি সদস্য শাওন খান।

এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান আহাম্মদ আলীর শ্বশুর মো. মফিজ মিয়া। এ ঘটনায় গুরিবিদ্ধ মো. মফিজ মিয়ার ছেলে মো. হানিফ মিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

এ ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ৬ কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এ ঘটনায় বিজিবি ও নিহতদের পরিবার পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে মাটিরাঙ্গা থানায়।

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]