বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০১৫

পাহাড়ীরাও রেশন খায় কিন্তু কেবল বাঙালিকেই রেশনখোর বলা হয়

নিউজ ডেস্ক : পাহাড়ে বাঙালিদের রেশন নিয়ে নানামুখী প্রচারণা থাকলেও উপজাতিদের রেশন প্রদানের বিষয়টি বরাবরই আলোচনার বাইরে রয়েছে। কারণ উপজাতি’রা সব সময় বাঙালীদের ‘রেশন খোর’ বলে গালি দেয়। এটা বাঙালীদের কাছে অসম্মানের মনে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গুচ্ছগ্রামের বাঙালি বাসিন্দা ক্ষোভের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীকে বলেন, আমরা কেউই রেশন চাই নি। আমরা নিজ বসত ভিটায় বসবাস করে নিজ নামে রেকর্ডীয় জমিতে চাষাবাদ করে জীবন নির্বাহ করতে চেয়েছি। কিন্তু সরকারই আমাদের বসতভিটা ও চাষের জমি থেকে সরিয়ে গুচ্ছগ্রামে আবদ্ধ করে রেশন দিচ্ছে। ৩ বছরের জন্য বলা হলেও আজো আমাদের বসত ভিটায় ফিরতে দিচ্ছে না। আমরা গুচ্ছগ্রামে আর থাকতে চাই না। নিজ বসত ভিটায় বসবাস করে নিজ নামে রেকর্ডীয় জমিতে চাষাবাদ করে জীবন নির্বাহ করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, শুধু বাঙালিরা নয়, পাহাড়িরাও রেশন খায়। কিন্তু কেবল বাঙালিদেরই রেশনখোর বলে গালি দেয়া হয়। অথচ সরকারি রেশন সুবিধার আওতায় রয়েছে ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী এবং চুক্তির পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্যরাও।

এই সিরিজের পর্বগুলো পড়ুন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থীদের ১ হাজার ৩শ’ ৮৩ পরিবারের ৫ হাজার ৯শ’ ৪৪ জন প্রাপ্ত বয়স্ক ও ১ হাজার ৩শ’ ৬৭ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক সরকারি রেশন সুবিধা ভোগ করছে। অন্যদিকে সরকারি রেশন সুবিধার আওতায় রয়েছে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ৬৪ পরিবার। এদের মধ্যে ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থীরা ১৯৯৭ সালের ৭ এপ্রিল থেকে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্যরা শান্তিচুক্তির পর থেকে রেশন পেয়ে আসছে। সব মিলিয়ে ২৬ হাজার ২শ’ ২০ পরিবার পুনর্বাসিত বাঙালি, ১২ হাজার ১শ’ ৭০টি ভারত প্রত্যাগত পাহাড়ি এবং ১ হাজার ৯শ’ ৪৫ পরিবার অস্ত্র জমাদানকারী শান্তি বাহিনীর সদস্য রেশন সুবিধা পায়। কিন্তু বাঙালি মাত্রেই রেশনখোর গালি দেয়া হয়। অথচ ৮ লাখ বাঙালির সামান্য অংশই কেবল রেশন সুবিধা পায়।

এদিকে নিজের বাস্তুভিটায় পুনর্বাসনের অপেক্ষায় দিন গুণছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার ২৩ গুচ্ছগ্রামের প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দা। কিন্তু কবে তাদের পুনর্বাসন হবে তা জানা নেই কারো। পাহাড়ের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে আশির দশকের গোড়ার দিকে স্ব স্ব বাস্তুভিটা থেকে স্থানীয় বাঙালিদের গুচ্ছগ্রামে নিয়ে আসার পর ৩৩ বছর পেরুলেও এসব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। গুচ্ছগ্রাম নামক বন্দিশালায় কাটছে তাদের দিন

পাহাড়ের নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য্যের মাঝে এই গুচ্ছগ্রামের গল্পটা বেমানান হলেও তাদের মুক্তি মিলছে না। এদিকে গুচ্ছগ্রামের এসব মানুষের বন্দিদশাকে পুঁজি করেআঙুল ফুলে কলা গাছবনে গেছে একটি মহল। বিশেষ প্রভাবশালী মহলটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির হাতিয়ারে পরিণত গুচ্ছগ্রামে বাসিন্দারা

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুরুর দিকে গুচ্ছগ্রামে প্রতি পরিবারকে মাসিক ৮৪ কেজি করে চাউল দেয়া হলেও সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়েছে প্রদেয় খাদ্য শস্যের মান পরিমাণ। তিন দশকে গুচ্ছগ্রামে আসা পরিবারের সদস্য সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি বা এক পরিবার ভেঙে বহু পরিবার হলেও বাড়েনি বরাদ্দ। বর্তমানে গুচ্ছগ্রামে আশ্রিত এসব কার্ডধারী পরিবার প্রতিমাসে ৩৫. কেজি চাউল এবং  ৪৯.১০ কেজি গম প্রদান করা হচ্ছে

এবিষয়ে গুচ্ছগ্রামে আশ্রিত একাধিক কার্ডধারীর সাথে কথা বললে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সময়ের সাথে সাথে এক পরিবার ভেঙে বহু পরিবার গড়ে উঠলেও সেসব পরিবারের জন্য কোন বরাদ্দ নেই। তারা বলেন, আমরা খয়রাতি রেশন চাই না। আমাদেরকে সম্মানের সাথে স্ব স্ব বাস্তুভিটায় পুনর্বাসন করা হোক

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাঙালি গুচ্ছগ্রামে আশ্রিত কার্ডধারী পরিবারগুলো প্রতিমাসে ৩৫. কেজি চাউল এবং ৪৯.১০ কেজি গম পেলেও আত্মসমর্পণ করা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতি পরিবার পিছু ১০০ কেজি করে চাউল দেয়া হচ্ছে। যা বাঙালি পরিবারগুলোর চেয়ে ১৬ কেজি বেশি। এদিকে ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতি পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্যের অনুকূলে ২০.৭০ কেজি এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক সদস্যের অনুকূলে ১০.৮৫ কেজি করে চাউল দেয়া হচ্ছে

বাঙালি গুচ্ছগ্রামগুলোতে দুই বছর পরপর প্রকল্প চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হলেও ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থীরা গ্রুপ লিডারের মাধ্যমে রেশন পেয়ে থাকেন। গ্রুপ লিডার মারা গেলে বা তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেই কেবল গ্রুপ লিডার পরিবর্তন করা হয়। অন্যদিকে ২০১৩ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রেশন বিতরণ করে আসছেন জেএসএস নেতা চন্দ্র নাথ চাকমা


তবে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র মনে করে, বাঙালি গুচ্ছগ্রামগুলোর পাশাপাশি উপজাতীয়দের রেশন বিতরণেও দুই বছর পরপর রেশন বিতরণ কর্তৃপক্ষ পরিবর্তন করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা উচিত

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]