আগের পর্ব: পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যায় ভারতের ভূমিকা : ভারতীয় চক্রান্তের সর্বাধিক প্রকট ফসল হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের চলমান সংকট। নিজেদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত ৭টি রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে নির্মমভাবে দমনকারী ভারত পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিবাহিনী নামক সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে, এ কথা সর্বজনবিদিত। আজ আর কারো সন্দেহ নেই যে, দরিদ্র বাংলাদেশের সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত দেশদ্রোহী উপজাতীয়দের নেপথ্য মদদদাতা শক্তি ভারত। হুমায়ুন আজাদ লিখেছেন, ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে ভারত মানবেন্দ্র নারায়ন লারমাকে ডাকে এবং শান্তিবাহিনীকে সাহায্য করতে চায়। এমনও জানা যায় যে,
মুজিব হত্যাকান্ডের পর লারমা সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের আশ্রয়ে চলে যান এবং ত্রিপুরা রাজ্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত করতে থাকেন। বেশ কিছু গ্রুপকে ট্রেনিং দেয়া ছাড়াও ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে ভারত শান্তি বাহিনীকে অস্ত্র ও গোলা বারুদের দু’টি বড় ধরনের চালান দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সম্পদের এক অনাহরিত রত্নভান্ডার। ভূ-মানচিত্রের এই বর্নিল স্বপ্নিল ভূস্বর্গ নিয়ে অত্যন্ত উৎসাহী বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত। ভারত চাচ্ছে ফেনী নদীর কোল ধরে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করতে। ওদিকে নাফ নদীর তীর পর্যন্ত ভারতের আধিপত্য বিস্তৃত হলে তাদের ‘সাতকন্যার’ স্বাধীনতার আহাজারি পাহাড় পরিবেষ্টিত বিজন জনপদের বন বাদাড়ে গুমরে গুমরে এক সময় নিঃশব্দ হয়ে যাবে। নতজানু করা যাবে বেয়াড়া প্রতিবেশী স্বাধীনতার অহমবোধে উজ্জীবিত বাংলাদেশীদের। প্রাচুর্যের ভান্ডার লোপাট করা সহজ হবে। শ্যেন দৃষ্টি ফেলা যাবে চট্টগ্রাম বন্দরের উপর। চৈনিক চাপ, বার্মিজ প্রভাব সহজেই মুকাবিলা করা যাবে- এমন একটি ‘সহজ-সরল’ অথচ ষড়যন্ত্রমূলক অশুভ পরিকল্পনা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা কাজ শুরু করে। পঞ্চাশের দশক থেকে ভারত অনেক কাষ্ঠখন্ড পুড়িয়েছে- বাংলাদেশ কাবু করার জন্য। স্বাধীনতার উষা লগ্নেই ভারত চেয়েছিলো বাংলাদেশের অর্জনগুলো হাতিয়ে নিতে। তাদের ‘সহায়তায় প্রাপ্ত স্বাধীনতা’কে হাইজাক করতে। বাংলাদেশের গর্ব, অহম ও আত্মমর্যাদাবোধকে দাবিয়ে দিতে।
তাই অকৃতজ্ঞ বাংলাদেশীদের প্রতি ভারত রুষ্ট। নতুন পরিকল্পনায় যাবার আগে ভারত নানা কৌশলে বাংলাদেশের এক শ্রেণীর দেউলে বুদ্ধিজীবীদের মগজ ধোলাই করে নেয়। পরবর্তী সময়ে টার্গেট করে বাংলাদেশের দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীকে। তাই নানা ছল-ছুতায় তারা সহজ-সরল পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ীদেরকে গিনিপিগ হিসেবে বাছাই করে। স্বাধীনতার মন্ত্র শোনায়, আশ্বস্ত করে ‘৯ মাসে বাঙালীদের স্বাধীন করে দিয়েছি। ছ’মাসে তোমাদেরকে (চাকমা) পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন করে দেবো’। ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর মোহনবাঁশী শান্তিবাহিনীকে বাস্তবতা ভুলিয়ে দিলো। চাকমা সন্ত্রাসীরা দলে দলে আশ্রয় নিলো ভারতের শরনার্থী শিবিরে। হাতে পেলো অস্ত্র। ভারতীয় পরিকল্পনার অশুভ ছায়াপাতের কারণে তারা ‘সাতকন্যা’র মাতম শুনলোনা, উলফার (ULFA) লড়াইয়ের খবর পেলো না, ত্রিপুরার ভেতরের খবর জানলো না। মিজোরামে কি ঘটছে বুঝবার সুযোগ হলো না। দম দেয়া কলের পুতুলের মত ভারতীয় ইচ্ছা পূরণ করার আত্মঘাতী মরন খেলায় মেতে উঠলো। বিভিন্ন ভারতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে এমন সব কথা বেরিয়ে আসে যাতে অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই শান্তি বাহিনীর সাথে ভারতের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
ভারতের ‘দি টেলিগ্রাফ’ প্রত্রিকায় নভেম্বর ১৯৯৬-এ শান্তিবাহিনীর সাথে ভারতীয় সংযোগের চিত্র প্রকাশিত হয়। কলকাতার ‘আলোকপাত’ পত্রিকার নভেম্বর ১৯৯৬ সংখ্যায় উত্তম উপাধ্যায় নামে একজন রিপোর্টার খুবই পরিস্কার ভাবে জানিয়েছেন, ‘‘এখন ১০ হাজার চাকমার মিলিশিয়া বাহিনী যে ভারতীয় সাহায্যেই পুষ্ট এটা ত্রিপুরার ছোট ছোট বাচ্চারাও জানে’’। এরূপ প্রকাশ্য ঘোষণার পর এমন কথা বলা নিশ্চয়ই ভুল হবে না যে, শান্তিবাহিনী ভারতেরই সৃষ্টি।
বিশিষ্ট ভারতীয় গবেষক-বিশ্লেষক অশোক এ বিশ্বাস তার “RAW’s Role in
Furthering India’s Foreign Policy” শীর্ষক পুস্তিকায় শান্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় সংযোগের কথা খোলাখুলি বলেছেন। তিনি লিখেছেনঃ “RAW is now
involved in training rebels of chakma tribes and Shanti Bahini who carry out
subversive activities in Bangladesh”. এর অর্থ হচ্ছেঃ ‘র’ বর্তমানে চাকমা উপজাতি ও শান্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণদানে সরাসরি জড়িত যারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নানারকম নাশকতামূলক তৎপরতা চালায়।
১৯৯৭ সালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের প্রাক্তন হাইকমিশনার ফারুক সোবহান (পরে পররাষ্ট্র সচিব) ‘‘এশিয়া এজ’’-কে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেনঃ “The Bangladesh
Government felt that the main support for the ‘Shanti Bahini’ was being
provided by the Research and Analysis Wing in India”.- এর অর্থ হচ্ছেঃ বাংলাদেশ সরকার মনে করে যে, শান্তিবাহিনীর মূল সমর্থন আসছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ এ্যান্ড এনালিসিস উইং- এর কাছ থেকে। এ কথাও আজ জানা হয়ে গেছে যে, বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম সংলগ্ন ভারতের মিজোরাম রাজ্যের ডাইরেন্ডীতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জাংগল ওয়ারফেয়ার স্কুলেও শান্তিবাহিনীর সদস্যদের মিলিটারী ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। এই সামরিক স্কুলের কমানডেন্ট ব্রিগেডিয়ার ত্রিগুলেশ মুখার্জী। এই স্কুলে গ্রুপে গ্রুপে ভাগ করে শান্তিবাহিনীকে ট্রেনিং দেওয়া হয়।
১৯৯৭ সালের নভেম্বরে ভারতীয় চীফ অব আর্মী স্টাফ জেনারেল শংকর রায় চৌধুরী পুরো বাংলাদেশ সফর করে গেলেন। এখানকার পরিস্থিতি তিনি সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করলেন। তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির মিলিটারী ফরমেশনগুলি সফর করার সময় ডাইরেন্ডীতে আসেন। এখানে জাংগল ওয়ারফেয়ার স্কুলে সামরিক প্রশিক্ষণরত বিচ্ছিন্নতাবাদী শান্তিবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জেনারেল শংকর রায় আশা ব্যক্ত করেন যে, শীঘ্রই শান্তিবাহিনী সম্মানের সাথে স্বদেশভূমি জুম্মল্যান্ড-এ ফিরে যেতে পারবে।
লক্ষ্যণীয় যে, শান্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় অবৈধ সংযোগ কত গভীরে রয়েছে জেনারেল শংকরের বক্তব্য থেকে তা বেরিয়ে আসছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের জুনে সরকার গঠন করার পর থেকেই শান্তিবাহিনীকে জামাই আদর করে হাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম তুলে দিচ্ছেন এবং শেষাবধি তা যাচ্ছে ভারতের খপ্পরে। জেনারেল শংকর পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিবাহিনী প্রশ্নে ভারতের পরিকল্পনা এবং নিকট ভবিষ্যতের করণীয় জানতেন বলেই এত নিশ্চিতভাবে শান্তিবাহিনীর স্বদেশভূমি জুম্মল্যান্ডে অচিরেই ফিরে যাবার আশ্বাস দিয়েছেন। ভারত, ভারতীয় RAW এখন এই কাজই করাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারকে দিয়ে। সন্তু লারমার সঙ্গে চুক্তি করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
দুর্ভাগা জাতি টের পেলো না এতসব অশুভ চক্রের গোপন তৎপরতা। আরো দুর্ভাগ্য যে বাংলাদেশের মেরুদন্ডহীন সরকারগুলো জাতিকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বুঝাতে চেষ্টা তো করলোই না, অধিকন্তু ভারতীয়দের অন্যায় চাপ, মিথ্যা অভিযোগ মুকাবিলায় হিমশিম খেলো। ভারত কল্পিত অভিযোগ তুললো, বাংলাদেশ উলফাদের অস্ত্র-প্রশিক্ষণ-আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এটা যে বঙ্গভূমিওয়ালা এবং শান্তিবাহিনী লালনের বৈধতা নেয়ার কূটনৈতিক চাল তা প্রথমেই সরকার বুঝতে পারলো না। উল্টো নতজানু হয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ভারতীয় আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে বেড়ে উঠা সন্ত্রাসীদের সাথে শান্তি চুক্তির মহড়া দিতে শুরু করলো। উস্কানীদাতা ভারত নেপথ্যে খেলে সে প্রচেষ্টাও ভন্ডুল করে দেয় এবং নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষন করে। ভারত বেহুদা গত ৩৫ বছর ধরে জনসংহতি সমিতিকে লালন-পালন করেনি। ইচ্ছা চট্টগ্রাম বন্দরকে নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহার করে মিজোরাম, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুনাচলের সমৃদ্ধি সাধন করা। ভারতের পরিকল্পনা পার্বত্য চট্টগ্রামে তাবেদার প্রশাসনের ব্যবস্থা করে নিজেদের এলাকার স্বাধীনতাকামীদের শায়েস্তা করা। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ন্ত্রণ করা। তার জন্য শান্তি বাহিনীকে তারা জামাই আদরে প্রতিপালন করেছে। তারাই শান্তিবাহিনী ও জনসংহতির বুদ্ধি, পরামর্শ, অস্ত্র, আশ্রয় ও মন্ত্রণাদাতা। তারাই সাপ হয়ে কামড়ায় ওঝা হয়ে ঝাড়ে। তাদের ভারতীয় পরিকল্পনা প্রথমেই বোধগম্য হলো বাংলাদেশের সচেতন ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর কাছে। এক্ষেত্রেও টার্গেট হলো বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। পরিস্থিতিকে ভারত এমন পর্যায়ে ঠেলে এনেছে যে, বর্তমান সরকার নিজ ভূ-খন্ডের সার্বভৌমত্বের কথা না ভেবে সেনা প্রত্যাহারের শান্তিবাহিনীর আবদারে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশের ভেতর ভারতীয় বলয় সমৃদ্ধ আরেক ‘দেশ’ বানানোর চক্রান্ত শান্তিবাহিনী ও ইউপিডিএফ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশীদের ‘নিজভূমে পরবাসী’ করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে।
প্রখ্যাত সাংবাদিক, লেখক, গবেষক ও বহু গ্রন্থ প্রণেতা আবুল আসাদ লিখেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সমস্যাজড়িত ও দুর্বল সময়কালে হঠাৎ করেই চাকমাদের মাথায় এসে প্রবেশ করল যে বাংলাদেশের ঐ অঞ্চলটার মালিক মোক্তার তারাই। এই অমূলক চিন্তা তাদের মাথায় কে ঢুকালো জানি না, তবে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সুযোগে জেনারেল ওবানের মত কূটবুদ্ধির অনেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ করেছিলো। তারাই এই বিভেদ ও ষড়যন্ত্রের বীজ বুনে যেতে পারে। এর কিছু বিশ্বাসযোগ্যতা এ জন্যেই আছে যে, ঐ শ্রেণীর চাকমারা ভারতীয় অর্থ অস্ত্রেই বাংলাদেশের ঐ পাহাড়ী অঞ্চলের নিরীহ বাসিন্দাদের খুন করে চলেছে। এমনটা বিশ্বাসযোগ্য হবার আরেকটা কারণ হলো, ভারতের অন্নদা-শক্তি-সুনীল বাবুরা ঢাকাই পরিচয়ের নাটাই বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে যখন ৪৭ পূর্ব ভারত প্রতিষ্ঠার কথা বলতে পারেন, তখন ষড়যন্ত্র পটু ওবান বাবুরা একশ্রেণীর চাকমাদের মাথায় ঐ ধ্বংসাত্মক চিন্তা অবশ্যই ঢুকাতে পারেন। পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষভাবে ভারতের বেছে নেয়ার কারণ তিনটি- এক. বাংলাদেশের সমতল অঞ্চলে নিরংকুশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্টতা একটি বাধা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতীয়দের সংখ্যাগরিষ্ঠতা সে তুলনায় অনুকূল। দুই. সহজ সরল উপজাতি-গোষ্ঠীগুলোর সম্ভাব্য স্পর্শকাতর দিকগুলোকে দাবী বা সমস্যা হিসেবে কাজে লাগানোর সুযোগ। তিন. বাংলাদেশের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বিশেষ কৌশলগত এলাকা। যার পশ্চাদভূমি একটি প্রাকৃতিক সমুদ্র বন্দর (চট্টগ্রাম)। এই জন্যই পার্বত্য চট্টগ্রামকে কুক্ষিগত করার চেষ্টায় সেখানে অবিরত অশান্তি ও অস্থিতিশীলতা জিইয়ে রাখা হয়।
চাকমা বিচ্ছিন্নতাবাদের উদ্দীপক ভারত অকারণে এই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়নি। ভারতের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামরিক কৌশলগত গুরুত্ব অনেক। ভারতীয় কর্মকর্তা এবং কাউন্টার ইন সারজেন্সি বিশারদরা পার্বত্য চট্টগ্রামের ভৌগলিক অবস্থান ও পরিবেশকে ভারতের স্বার্থ, এমনকি আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষায় হুমকি মনে করেন। মৌসুমি বনভূমির অন্তর্গত পার্বত্য চট্টগ্রাম মাঝারি ধরনের গেরিলা যুদ্ধ চালানোর এবং তাদের অভয়াশ্রমের জন্য আদর্শ স্থানীয় বিধায় পাকিস্তান আমলে ভারতের নাগা-মিজো বিদ্রোহীদের গোপন ঘাঁটি এখানে গড়ে ওঠে। পার্বত্য চট্টগ্রামের রামু, বলিপাড়া, আলিকদম, দীঘীনালা, মোদক ও থানচিতে মিজো গেরিলাদের ঘাঁাটি ছিল। সুতরাং ভারত সরকার পাকিস্তান আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে সব সময়ই ছিল উদ্বিগ্ন।
১৯৭১ সালে সর্বাধিক ভারতীয় সৈন্য মিত্রবাহিনীর ছদ্মাবরণে তৎপর ছিল পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে নয়, নাগা-মিজো বিদ্রোহীদের ঘাঁটি অনুসন্ধান এবং সেগুলো ধ্বংস করার অভিযানে। অপারেশন ‘ঈগল’ নাম দিয়ে জেনারেল ওবানের নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে নাগা-মিজোদের গোপন ঘাঁটি তছনছ করে। এ ছাড়া র’ (RAW) এর সৃষ্ট মুজিব বাহিনী নাগা-মিজো বিদ্রোহীদের নির্মূলকরণে ভারতীয় বাহিনীকে সহায়তা করে। RAW বুঝে শুনেই মুজিব বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় অধিনায়কত্ব মরহুম শেখ ফজলুল হক মণিকে প্রদান করে। বাংলাদেশ যেন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতিতে কখনোই ভারতবিরোধী শিবিরের সাথে হাত মেলাতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশের ওপর চাপ বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ভারত শান্তিবাহিনীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। কারণ ভারত জানত শরণার্থী সমস্যা সমাধান হয়ে গেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে জিইয়ে রাখা যাবে না।
সম্প্রতি কলকাতা প্রেসক্লাবে ৩ মার্চ ২০১০ বুধবার ‘চট্টগ্রাম হিল ট্রাক্টস সাপোর্ট গ্রুপ কলকাতা’ নামে একটি সংস্থা পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের কথিত হামলার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন করে। এ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কবি তরুণ সান্যাল। কলকাতা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের চারদিকে বুকে ছবি সংবলিত ও শ্লোগানে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে চাকমা তরুণ-তরুণীরা দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্ল্যকার্ডে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে লেখা ছিল, শান্তিচুক্তির জন্য আমরা অস্ত্র সমর্পণ করেছি, যদি সেই চুক্তি বাস্তবায়িত না হয়, ‘আমরা আবার অস্ত্র ধরতে বাধ্য হব।’ এ সংবাদ সম্মেলনের সভাপতি তরুণ সান্যাল বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পরমাণু শক্তি তৈরির খনিজ রয়েছে সে জন্য চাকমাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছে। উপজাতিদের সাপোর্ট গ্রুপ কলকাতায় কেন বিষয়টি একটু উপলব্ধি করার চেষ্টা করলেই অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।
লেখক-পরিচিতি : জনাব মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম- বিশিষ্ট ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ এবং প্রাবন্ধিক।
লেখা-পরিচিতি : প্রবন্ধটি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০ তারিখে বাংলাদেশ ইসলামিক সেনটার কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে উপস্থাপিত হয়।
ফুটনোটঃ
. ড. মোহাম্মদ আবদুর রব, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূগোল ও ভূ-রাজনীতি, আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!!, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক স্মারক, অতন্দ্র জনতা বাংলাদেশ, ধানমন্ডি, ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ১৯৯৭, পৃ.১১০-১১১।
. ড. এমাজউদদীন আহমদ, জুমল্যান্ডের পরিণতি, আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!!, পূর্বোক্ত, পৃ.১৭।
. ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী ও ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব, পার্বত্য চট্টগ্রাম : ভূ-রাজনীতি ও বিপন্ন সার্বভৌমত্ব, লেখকদ্বয় কতৃৃক প্রকাশিত, ঢাকা, ১লা জানুয়ারী, ১৯৯৭, পৃ.-৫।
. জাফর আহমদ নূর, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশ্বমোড়লদের হেড লাইটের আলো পড়েছে (প্রবন্ধ), পৃ-১।
. খাগড়াছড়ি জেলার সামুতং-এ ০.১৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ইতোমধ্যে আবিস্কৃত হয়েছে। কাপ্তাই ও আলীকদমে কঠিন শিলা পাওয়া গেছে। রামুতে পাওয়া গেছে গ্যাস, সেই সাথে আলিকদমে পেট্রোলিয়াম ও লামায় পাওয়া গেছে কয়লা। মানিকছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে রয়েছে পাথরের বিরাট মওজুদ। দেখুন ড. তারেক শামসুর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম কোন পথে? আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!!, পূর্বোক্ত, পৃ. ৯৩।
. সুগত চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি ও সংস্কৃতি, ট্রাইবাল অফিসার্স কলোনী, রাঙ্গামাটি, ১৯৯৩, পৃ.১৫।
. পার্বত্য চট্টগ্রামের পার্বত্য খাগড়াছড়ি, পার্বত্য রাঙ্গামাটি, পার্বত্য বান্দরবান ১৯৮৮ সালে তিনটি জেলার মর্যাদায় বিভক্ত হয়। দ্রষ্টব্য : জাতীয় সংসদের এ্যাক্ট, বাংলাদেশ গেজেট, ২রা মার্চ, ১৯৮৯।
. জয়নাল আবেদিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম: স্বরূপ সন্ধান, বুক মিউজিয়াম পরিবেশিত, ২৬ মার্চ ১৯৯৭, পৃ. ১৭।
. জয়নাল আবেদীন, পূর্বোক্ত, পৃ. ১৭-১৮।
. লেবানন ৪০৩৪ বর্গমাইল (১৪৪৩২ বর্গ কি.মি.), সাইপ্রাস ৩৫৭১ বর্গমাইল (৯২৫০ বর্গ কি.মি), ব্রুনাই ২২২৫ বর্গমাইল (৫৭৭০ বর্গ কি.মি), কাতার ৪৪০২ বর্গমাইল (১১৪০০ কি.মি) সিঙ্গাপুর ২৪০ বর্গমাইল (৬২২ বর্গ কি.মি), মরিশাস ৭২০ বর্গমাইল (১৮৬৫ বর্গ কি.মি), লুক্সেমবার্গ ৯৯৮ বর্গমাইল (২৫৮৬ বর্গ কি.মি) আয়তন বিশিষ্ট।
. সার্ভে অব বাংলাদেশের তথ্য, উদ্বৃত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি প্রক্রিয়া ও পরিবেশ পরিস্থিতির মূল্যায়ন, মাওলা ব্রাদার্স, ফেব্রুয়ারী ২০০১, পৃ. ১৭।
. দৈনিক জনকন্ঠ, ৩০ জানুয়ারী ২০০০।
. ড. মাহফুজ পারভেজ, বিদ্রেহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তি চুক্তি, সন্দেশ, শাহবাগ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারী ১৯৯৯, পৃ.৯।
. বাংলাদেশে কতটি নৃ-গোষ্ঠী বসবাস করে তা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে রয়েছে মত পার্থক্য। এ বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি দলিলপত্র এবং বিভিন্ন গবেষণাপত্রে ভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া যায়। কেউ বলেছেন, বাংলাদেশে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা ১২, কেউ বলেছেন ১৫, আবার কেউ বলেছেন ৪৬। যেমন, মাহমুদ শাহ কোরেশি সম্পাদিত ‘ট্রাইবাল কালচার ইন বাংলাদেশ’ গ্রন্থে মার্কিন নৃ-বিজ্ঞানী Peter J. Bertocci ১৯৯১ সালের আদমশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বলেছেন, বাংলাদেশে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা ১২। আবার ১৯৯৪ সালের আদম শুমারী রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ.জি.সামাদ বলেছেন, দেশে ১৫টি নৃ-গোষ্ঠী বাস করছে। মাহমুদ শাহ কোরেশি নিজেই বলেছেন বাংলাদেশে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা ৩১। অন্যদিকে নৃতত্ত্ববিধ সি. মেলোনি বলেছেন, বাংলাদেশে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা ৪৬। তিনি অবশ্য ভাষাগত দিক থেকে নৃ-গোষ্ঠী গুলোকে ওই ৪৬ ভাগে ভাগ করেন। দেখুন, গৌতম মন্ডল, অশান্তির বেড়াজালে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী, নিউজ নেটওয়ার্ক, ধানমন্ডি, ঢাকা, জুলাই ২০০৫, পৃ.৩৩।
. রাঙ্গামাটিতে বসবাসকারী উপজাতির সংখ্যা ১১টি (চাকমা, মারমা, তংচংগ্যা, ত্রিপুরা, পাংখো, লুসাই, বোম, খিয়াং, মুরং, চাক, খুমি)। খাগড়াছড়ি জেলায় বসবাসকারী উজাতির সংখ্যা ৪টি (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল)। বান্দরবন জেলায় বসবাসকারী উপজাতির সংখ্যা ১২টি (মারমা, মুরং, ত্রিপুরা, তংচংগ্যা, বোম, চাকমা, খুমী, খিয়াং, চাক, উসাই, লুসাই, পাংখো)। বিস্তারিত দেখুন অশোক কুমার দেওয়ান, চাকমাজাতির ইতিহাস বিচার, দিপীকা দেওয়ান প্রকাশিত, খবংপর্যা, খাগড়াছড়ি, নভেম্বর ১৯৯১; বিরাজ মোহন দেওয়ান, চাকমা জাতির ইতিবৃত্ত, উদয় শংকর দেওয়ান প্রকাশিত, উত্তর কালিন্দীপুর, রাঙ্গামাটি, জানুয়ারী ২০০৫;
প্রভাংশু ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ইতিহাস, এপ্রিল ২০০৬; আতিকুর রহমান, পার্বত্য তথ্য কোষ ১-৯ খন্ড, পর্বত প্রকাশনী, সিলেট, নভেম্বর ২০০৭; আবদুস সাত্তার, পাকিস্তানের উপজাতি, পাকিস্তান পাবলিকেশন্স ঢাকা, ১৯৬৬।
. S. Mahmood Ali,
‘The Fearful state: Power people and Internal war in South Asia’, London and
new Jersy: ZED Books, 1993, উদ্বৃত ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, পূর্বোক্ত, পৃ.৫।
. ৫ম খন্ড- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের এ্যাকট, বিল ইত্যাদি, বাংলাদেশ গেজেট, মার্চ ২, ১৯৮৯; উদ্বৃত ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, পূর্বোক্ত পৃ. ৫।
. জাফর আহমদ নূর, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশ্ব মোড়লদের হেড লাইটের আলো পড়েছে (প্রবন্ধ), পৃ.১।
. ধর্মযাজক ফাদার টীম ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে খৃস্টানীকরণ (Christianization) প্রোগ্রাম
শুরু করেন। পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া তিনি এখানে বিগত ৩৭ বছর যাবত অবস্থান করে ছোট বড় সকল উপজাতি সদস্যদের খৃস্টান ধর্মে দীক্ষিত করে পার্শ্ববর্তী মিজোরাম (৯০% খৃস্টান ও ইহুদী), ত্রিপুরা (৩০% খৃস্টান), মনিপুর (৪০% খৃস্টান), আসাম (৪৫% খৃস্টান), মেঘালয় (৮০% খৃস্টান), অরুনাচল (৭০% খৃস্টান) রাজ্যের খৃস্টান ও ইহুদীদের সাথে ধর্মীয় বন্ধন গড়ার কাজটি লোকচক্ষুর অন্তরালে সাফল্যের সাথে করতে সক্ষম হয়েছেন। এ ধর্মযাজক বিশাল কর্মকান্ড পরিচালনা করে পার্বত্য চট্টগ্রামের ডেমোগ্রাফিক ডিনামিকস পরিবর্তনের পাশাপাশি সকল উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অত্যাধুনিক বিশাল খৃস্টান ডরমিটরী, গীর্জা, মিশনারী স্কুল, বাইবেল কেন্দ্র, পাঠাগার, সার্ভিস সেন্টার, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ও শক্তিশালী স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন।
. ড. এমাজউদদীন আহমদ, বাংলাদেশ রাজনীতি : কিছু কথা ও কথকথা, মৌলি প্রকাশনী, বাংলা বাজার, ঢাকা, মে ২০০২, পৃ. ১৬২-১৬৩।
. কামিনী মোহন দেওয়ান ও স্নেহকুমার চাকমার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসমিতির একটি প্রতিনিধি দল এবং ভুবন মোহন রায়ের নেতৃত্বে পার্বত্য রাজাদের আরেকটি প্রতিনিধি দল দিল্লি গিয়ে পৃথক পৃথকভাবে কংগ্রেস নেতাদের সাথে সাক্ষাত করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানান।
. পার্বত্যাঞ্চলের প্রথম গনসংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সমিতির সভাপতি ছিলেন কামিনী মোহন দেওয়ান। পিতার নাম ত্রিলোচন দেওয়ান। দেশ বিভাগের সময় ভারতের সঙ্গে একীভূত হওয়ার লক্ষ্যে তৎপরতা চালানোর দায়ে তিনি কারাবরন করেন। রাঙ্গামাটি জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান (১৯৮৯) গৌতম দেওয়ান তার নাতি।
. বৃটিশ আমলের অন্যমত উপজাতীয় নেতা। পিতার নাম শ্যামচন্দ্র চাকমা। জনসংহতি সমিতি তথা শান্তি বাহিনীর অন্যতম উপদেষ্টা। ভারতের পক্ষ নেয়ায় হুলিয়া জারী হওয়ায় তিনি ত্রিপুরা রাজ্যে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে ত্রিপুরা রাজ্য থেকে জনপ্রতিধি নির্বাচিত হন।
. ভারতপন্থী চাকমা নেতা, পিতার নাম কালাহুলা দেওয়ান। ঘনশ্যাম দেওয়ানের আপন ভাগ্নে শান্তিবাহিনীর অন্যতম নেতা সমীরন দেওয়ান (মেজর মলয়)।
. এস.বি. চাকমা, উপজাতীয় নেতৃত্ব: সশস্ত্র আন্দোলনের ইতিকথা, উদ্বৃত ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, পূর্বোক্ত, পৃ.৩৭।
. সৈয়দ আজিজ উল আহসান ও ভূমিত্র চাকমা, ‘প্রব্লেমস অব ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেশন ইন বাংলাদেশ : দি চিটাগাং হিল ট্রাকটস’, এশিয়ান সার্ভে, ভলিউম ২৯, নং-১০, অকটোবর, ১৯৮৯, পৃ-৯৫৯-৯৭০।
. সত্তর এর নির্বাচনের সময় মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার উপদেষ্টা ছিলেন। বাড়ী মোবাছড়িতে। পার্বত্য এলাকায় বেশ কয়েকটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অনন্ত বাবুর ছেলে প্রসীত বিকাশ খীসা পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালের নেতা এবং ইউপিডিএফের বর্তমান সভাপতি।
. সালাম আজাদ, শান্তিবাহিনী ও শান্তিচুক্তি, আফসার ব্রাদার্স, ঢাকা, ১৯৯৯, পৃ.২২।
. মানবেন্দ্র নারায়ন লারমার পিতার নাম বিত্ত কিশোর লারমা, মায়ের নাম সুহাসিনী। তিনি অমৃতলাল দেওয়ানের ভাগ্নে। উল্লেখ্য সন্তু লারমা মামাতো বোন বিয়ে করেন। অন্যকথায় অমৃতলাল দেওয়ানের মেয়েকে বিয়ে করেন।
. হুমায়ুন আজাদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম: সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হিংসার ঝরনাধারা, আগামী প্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৯৭, পৃ.১৮।
. সালাম আজাদ, পূর্বোক্ত, পৃ.১২-১৩।
. পার্বত্য চট্টগ্রামের এককালের শক্তিশালী আওয়ামী লীগ নেতা। পিতা দিগম্বর চাকমা। দাদা লালমনি ডাক্তার স্বাস্থ্য বিভাগে চাকুরী করতেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্য নিয়ে সব সময় চিন্তা করতেন এবং সমস্যা সমাধানে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিবাদী ভূমিকায় বিশ্বাসী ছিলেন।
. আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!!, পূর্বোক্ত, পৃ. ৩১-৩২।
. ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর চাকমা রাজা নলিনাক্ষ রায় মারা যাওয়ার পর ১৯৫৩ সালের ২ মার্চ তদীয় পুত্র রাজা ত্রিদিব রায় রাজ সিংহাসনে আরোহন করেন। পাকিস্তান শাসনামলে রাজা ত্রিবিদ রায়ের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। পাকিস্তান সরকারের সাথে তিনি নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে বিজয়ী হন।
. কলিকাতার তৎকালীন হিন্দু ব্যারিষ্টার সরল সেনের কন্যা বিনীতা রায়কে চাকমা রাজা নলিনাক্ষ রায় বিয়ে করেন। এই বিয়ের মাধ্যমে চাকমা রাজ পরিবারে হিন্দু আচার অনুষ্ঠানের বিকাশ ঘটে।
. সিদ্ধার্থ চাকমা, প্রসঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রাম, নাথ ব্রাদার্স, কলকাতা, ১৯৮৬, পৃ.৯।
. এ দলের সদস্য ছিলেন : মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা, জ্ঞানেন্দ্র বিকাশ চাকমা, চারু বিকাশ চাকমা, বি.কে. রোয়াজা, স্নেহকুমার চাকমা প্রমুখ।
. ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারী খাগড়াছড়ির ইটছড়ির গভীর অরণ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখা ‘শান্তিবাহিনী’ প্রতিষ্ঠিত হয়। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার অনুজ জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার ডাকনাম শন্তু বা শান্তি অবলম্বনে এদেরকে ডাকা হতো শান্তিবাহিনী। ১৯৭৪ সালের জানুয়ারী মাসে রিজার্ভ আর্মড পুলিশের ওপর অতর্কিতে প্রথম-হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে শান্তি বাহিনী; দেশব্যাপী শান্তিবাহিনীর নাম আলোচিত হতে থাকে।
. প্রীতিকুমার চাকমা ছিলেন ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত পাহাড়ী ছাত্র সমিতির সভাপতি। ১৯৮৫ সালের ২০ এপ্রিল রাঙ্গামাটি স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রীতি গ্রুপের ২৩৩ জন শান্তিবাহিনীর সদস্য আত্মসমর্পন করেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অধিনায়ক মেজর জেনারেল এম. নুরুদ্দীন খানের কাছে অস্ত্র জমা দেন। ২৯ জুন বাংলাদেশ সরকার ও প্রীতি গ্রুপের মধ্যে আত্মসমর্পনের পর প্রীতি কুমার চাকমা বিদ্রোহ ছেড়ে ভারতে পরম সুখে সংসার করছেন। দেখুন হুমায়ুন আজাদ, পূর্বোক্ত। উদ্বৃত ড. মাহফুজ পারভেজ, পূর্বোক্ত পৃ. ৪৭।
. উল্লেখ্য ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে পিই- ২৯৯ পার্বত্য চট্টগ্রাম-১ আসন থেকে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা পুনরায় জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ১৯৭৪ সালের ২৫ জানুয়ারী মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা, অনন্ত বিহারী খিসা, চারু বিকাশ চাকমা প্রমুখ বাকশালে যোগদান করেন। ‘বাকশাল’ (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ) ছিল রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবের নেতৃত্বে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত দেশের একমাত্র দল; সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান বদলে ফেলে ‘বাকশাল’ এর মাধ্যমে দেশে একদলীয় স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
. অমৃত লাল চাকমা ওরফে ক্যাপ্টেন অসাধ্য (বলি ওস্তাদ) ইপি আর এর হাবিলদার ছিলেন। তিনি শান্তি বাহিনীর প্রথম অস্ত্র প্রশিক্ষক নলিনী, রনজন চাকমা ওরফে মেজর অফুরন্ত এর অধীনে শান্তি বাহিনীর সহকারী অস্ত্র প্রশিক্ষক ছিলেন।
. Life is not Ours. The Report of the Chittagong Hill Tracts Commission, May
1991, P-20.
. সালাম আজাদ, পূর্বোক্ত, পৃ.১৬-১৭।
. উষাতন তালুকদার পাহাড়ী ছাত্র সমিতির অন্যতম নেতা ছিলেন। শান্তি বাহিনীর তিনি প্রভাবশালী সদস্য এবং মেজর উষাতন তালুকদার সমীরন নামে পরিচিত। তার অপর নাম মলয়।
. রূপায়ণ দেওয়ান ওরফে মেজর রিপ হচ্ছেন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার জামাতা, শান্তিবাহিনীর প্রভাবশালী ফিল্ড কামান্ডার। তিনি পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের প্রথম সেক্রেটারী ছিলেন।
. পাহাড়ী গন পরিষদের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন প্রসীত বিকাশ খীসা। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘জনসংহতি সমিতি ফ্যাসিস্ট কায়দায় এগুচ্ছে... .. এ চুক্তিতে শান্তি আসবে না’ (সাক্ষাৎকার মানব জমিন, ১৯ অক্টোবর ১৯৯৭)।
. পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ২১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গত ২০ মে ২০০৯ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান অবস্থায় জনগণের বিরুদ্ধে সরকার। সরকার, সেনাবাহিনী ও সন্তু লারমা চক্রের মিলিত ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের এ গ্রুপটি ইউপিডিএফের অংগ সংগঠন।
. হিল ‘উইমেন্স ফেডারেশনের তৎকালীন নেত্রী কল্পনা চাকমা ১৯৯৬ সালের ১২ জুন শান্তিবাহিনী কর্তৃক অপহৃত হন।
. তিন পার্বত্য জেলায় চাঁদাবাজি চলছেই, সমকাল রিপোর্ট, ৫ ডিসেম্বর ২০০৯ সংখ্যা, পৃ-৩।
. দেখুন দৈনিক সমকাল, ৩ ডিসেম্বর ২০০৯, পৃ-৯
. নিরাপত্তা বিশ্লেষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক তালুকদার মনিরুজ্জামানের মতামত, দৈনিক নয়াদিগন্ত, ৮ অগাস্ট ২০০৯, পৃ-১।
. দেখুন দৈনিক নয়াদিগন্ত, ২৭ অগাস্ট ২০০৯, পৃ-১৬।
. মাসুদ মজুমদার, মাসুমুর রহমান খলিলী, আলম আজাদ, সম্পাদকীয়, আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!! পূর্বোক্ত, পৃ.৬।
. হুমায়ুন আজাদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম: সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হিংসার ঝরনাধারা, পূর্বোক্ত, পৃ.২৪।
. ড. আমেনা মহসীন, The politics of Natinalism: The case of chittagong
Hill Tracts, ইউপিএল, ঢাকা ১৯৯৭, পৃ. ৬৬।
. এস. কালাম উদ্দীন, A Tangled Web of Insurgency, ফারইস্ট ইকনমিক রিভিউ, হংকং, ২৩ মে ১৯৮০: সুবীর ভৌমিক, Insurgent Crossfire: North-East India, ল্যানসার পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, ১৯৯৬, নয়াদিল্লী; উদ্বৃত ড. মাহফুজ পারভেজ, পূর্বোক্ত, পৃ. ৪৫-৪৬।
. তালুকদার মনিরুজ্জামান, বিদেশী সাহায্যপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদ সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না, আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!!
পূর্বোক্ত, পৃ. ২৩।
. উদ্বৃত ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী ও ড. মোহাম্মদ আবদুর রব, পূর্বোক্ত, পৃ.৫৪।
. উদ্বুত ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী ও ড. মোহাম্মদ আবদুর রব, পূর্বোক্ত, পৃ.৫৪।
. ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম : শান্তিবাহিনী ও ভারতীয় অবৈধ সংযোগ, পূর্বোক্ত, পৃ.৫৪-৫৫।
. মাসুদ মজুমদার ও অন্যান্য, পূর্বোক্ত, পৃ.৭।
. ড. সাঈদ-উর-রহমান, প্রসঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রাম : খসড়া চুক্তি প্রকাশ করা দরকার, আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!!, পূর্বোক্ত, পৃ. ৮১।
. আবুল আসাদ, উড়ে আসাদের জুড়ে বসতে দেয়া যায় না, আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!!, পূর্বোক্ত, পৃ. ৫১।
. আমির খসরু, প্রসঙ্গ: পার্বত্য চট্টগ্রাম, আহা পর্বত! আহা চট্টগ্রাম!! পূর্বোক্ত, পৃ. ১৫২।
. এম. আবদুল হাফিজ, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব, অন্য দিগন্ত, মার্চ ২০১০, পৃ. ৩০।
. মোহাম্মদ মাতিন উদ্দিন, এইচ. এম. এরশাদের মন্তব্য নিয়ে কিছু কথা, দৈনিক আমার দেশ, ৯ মার্চ ২০১০, পৃ.৬।
. উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও সমসাময়িক ঘটনা বিষয়ে গত ৬ মার্চ ২০১০ ‘ঢাকা পোষ্ট’ এর গোলটেবিল আলোচনায় বক্তৃতা, দৈনিক সংগ্রাম, ৭ মার্চ ২০১০, পৃ.১।
. উদ্বৃত গৌতম মন্ডল, অশান্তির বেড়াজালে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী, নিউজ নেটওয়ার্ক, জুলাই ২০০৫, পৃ. ৬২-৬৩।
. RHS Hutchinson, An Account of Chittagong Hill Tracts গ্রন্থটি ১৯০৬ সালে প্রকাশিত হয়। চাকমা জাতির পরিচয় সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিবিধ বিষয়ের উপর এ গ্রন্থে আলোকপাত করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম ইংরেজ ডেপুটি কমিশনার Capt. T. H. Leara বিরচিত
‘The Hill Tracts of chittagong and the Dewllers Therein গ্রন্থটি’ ১৮৬৯ সালে প্রকাশিত হয়। J.Jaffa, Chakmas: Victims of Colonialism and
Ethro-centric Nationalism, The Main Stress, 28 Oct. 1989; অমরেন্দ্র লাল খিসা, সিফটিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয ১৯৯৬; এন. আহমেদ, The Evolution of Bounderies of East Pakistan, Oriental
Geographer, Vol.ii, No.4, Dhaka, 1958.
. দেখুন দৈনিক সংগ্রাম, ১৪ মে ২০১০, পৃ.১।
. জয়নাল আবেদীন,পার্বত্য চট্টগ্রাম, স্বরূপ সন্ধান, ২৬ মার্চ ১৯৯৭, ঢাকা, পৃ-৯।
. ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, পূর্বোক্ত, পৃ. ২৭।
. ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, পূর্বোক্ত, পৃ. ২৭।
. এবনে গেলাম সামাদ, পাহাড়িরা স্বতন্ত্র জাতি নয়, অন্য দিগন্ত, মার্চ ২০১০, পৃ.৩৩।
. ড. মাহফুজ পারভেজ, বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি, সন্দেশ, শাহবাগ, ঢাকা ফেব্রুয়ারী ১৯৯৯, পৃ.২০। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম (The Management of Ethic conflicts in South Asia: The
case of Chittagong Hill Tracts) বিষয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তাঁর গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ড. আমেনা মহসীন।
. বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি দুর্গম ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জনপদের নাম সাজেক। প্রায় ২০ হাজার জনবসতি নিয়ে ৬শ’ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে ভারতের মিজোরাম সংলগ্ন এলাকাটি ৩৬নং সাজেক ইউনিয়ন নামে পরিচিত। এটি একটি সাধারণ জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন গহীন পার্বত্য অঞ্চল।
. সংসদীয় কমিটির পার্বত্য রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড়, দৈনিক নয়াদিগন্ত ১১ মার্চ ২০১০ পৃ.১।
. দেখুন দৈনিক ইনকিলাব এল থাঙ্গা পাঙ্খোর সাক্ষাৎকার, ৮ মার্চ, ২০১০। মি. পাঙ্খো সাক্ষাৎকারে আরো অনেক তথ্য দিয়েছেন। নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন; ৪১টি বাঙালী পরিবারের জায়গা দখল করে নিয়েছে চাকমারা, বাঙালিরা কোন ত্রাণ পাচ্ছে না।
. খাগড়াছড়িতে বাঙালীদের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৬ জন নাগরিক পুলিশের হাতে ধরা পড়ে খাগড়াছড়ি জেল হাজতে রয়েছে। দেখুন দৈনিক সংগ্রাম, ২৫ মে ২০১০, পৃ.-৪।
. গত ১ মার্চ ২০১০ বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় যুব সংহতির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ. এম. এরশাদ এ মন্তব্য করেন। দেখুন মোহাম্মদ মতিন উদ্দিন, এইচ এম এরশাদের মন্তব্য নিয়ে কিছু কথা, আমার দেশ ৯ মার্চ ২০১০, পৃ.৬।
পরের
পর্ব: পর্ব-৫ পর্ব-৬ পর্ব-৭ পর্ব-৮ পর্ব-৯
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক
বাঙ্গালী গণহত্যা
সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে
গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য
চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার
কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা
নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস
ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম
সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির
সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]