বুধবার, ১৭ মে, ২০১৭

ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস


১৬ মে, ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির মাধ্যমে ফারাক্কার বাঁধ চালু হয়। ১৯৭৬ সালের এই দিনে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে সারাদেশের লাখ লাখ মানুষ রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দান থেকে মরণ বাঁধ ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চে অংশগ্রহণ করেন। দেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জনদুর্ভোগের জন্য তারা ওইদিন লংমার্চ করে ভারত সরকারের কাছে প্রতিবাদ জানায়। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন মওলানা ভাসানী। তাই এ দিনটি আজও শোষণ, বৈষম্য আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং দাবি আদায়ের পক্ষে বঞ্চিতদের প্রেরণার উৎস হয়ে আছে। উল্লেখ্য, ভারতের একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহারের উদ্দেশ্যে ১৯৬১ সালের ৩০ জানুয়ারি ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ শুরু করে। আর ১৯৭০ সালে শেষ হয় বাঁধটির নির্মাণকাজ। তখন পরীক্ষামূলকভাবে ভারত কিছু কিছু পানি ছাড়ে। আর ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ফারাক্কা বাঁধের সবকটি গেট খুলে দেয় দেশটি, সেবারই মূলত চাহিদা অনুযায়ী পানি পেয়েছিল বাংলাদেশ, তারপর ১৯৭৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত চাহিদানুযায়ী পানির নায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিতই রয়ে গেছে বাংলাদেশ। অথচ ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের আগে, শীতকালের শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মা নদী থেকে ৪০ হাজার কিউসেক পর্যন্ত পানি পেত বাংলাদেশ।
ফারাক্কার অভিশাপে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯ ফুট উঁচুতে অবস্থিত রাজশাহীর গোদাগাড়ীসহ সমগ্র বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিনিয়তই নিচে নামছে। এতে অগভীর কোন নলকূপ থেকে বর্তমানে কোন পানি উঠছে না। সরকারি গবেষণায় দেখা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রতিবছর ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর স্থানভেদে ১-২ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে যাচ্ছে। এরমধ্যে ২০১০ সালে বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে খ্যাত গোদাগাড়ী এলাকায় পানির স্তর ছিল মাটির ১৯ ফুট গভীরে। ২০১১ সালে স্থানভেদে ১৯-২১ ফুট। ২০১২ সালে ২০-২৩ ফুট এবং ২০১৩ সালে পানির স্তর ছিল স্থানভেদে ২৩-২৫ ফুট মাটির গভীরে।

চুক্তি অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশকে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি প্রদান করবে। শুষ্ক মৌসুমের এ সময়ে ভারত বাংলাদেশকে চুক্তি অনুযায়ী পানি প্রদান করলে পদ্মায় অন্তত পানি প্রবাহ থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন। গত নভেম্বরের প্রথম থেকেই পদ্মায় পানির প্রবাহ একেবারেই কমে গেছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মায় সর্বোচ্চ পানির পরিমাণ রেকর্ড করা হয় ২৪ দশমিক ১৪ মিটার। গত কয়েক বছর থেকে পদ্মায় পানির পরিমাণ ১৩-১৪ মিটারে উঠা-নামা করে। তবে এক দশক পর গত ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী অঞ্চলে পদ্মার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপরে ১৮ দশমিক ৬২ মিটারে। পরদিন সকালে পদ্মার পানি ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার নিচে এসে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৪৬ মিটারে।

দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দেয়া এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে ৫৪টি অভিন্ন নদীতে ভারত আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে একতরফাভাবে বাঁধ নির্মাণ করে অভিন্ন নদীর ধারাকে বাধাগ্রস্ত করে একতরফা নিজেদের অনুকূলে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সারা বাংলাদেশ মরুভুমিতে পরিণত হবে।  ১৬ মে “ফারাক্কা দিবস” আমাদের জাতীয় আন্দোলনের এক ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজ থেকে ৩৮ বছর আগে আফ্রো, এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার অবিসাংবাদিত মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ডাকে সারাদেশ থেকে লাখো জনতা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সংগ্রামে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিলে অংশ নেয়।’
প্রতি বছর ১৬ মে ‘ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস’ বৈদেশিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা ও অধিকার আদায়ে উদ্বুদ্ধ করে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]