উত্তর-পূর্ব ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্য আসাম ‘বিদেশি’ ইস্যুতে ফের উত্তপ্ত হতে চলেছে। চলতি বছরেই ৩০ লাখ বাঙালির গায়ে সরকারিভাবে পড়তে চলেছে বিদেশি তকমা। তাই তাদের রাজ্য থেকে বের করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো পথই খোলা থাকছে না আসাম সরকারের হাতে। কিন্তু ৩০ লাখ মানুষ যাবে কোথায়, এর কোনো উত্তর নেই।বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের ছেড়ে আসা ছাত্রসংগঠন নিখিল আসাম ছাত্র সংস্থা বা আসু দাবি করেছে বিদেশি বিতাড়নে কোনো রকম ঢিলেমি তারা বরদাশত করবে না। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ সবাকেই রাজ্যছাড়া করতে হবে। ভারতে একমাত্র আসামেই রয়েছে ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজেনশিপ (এনআরসি)। এআরসির সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা সম্প্রতি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে পেশ করেছেন এনআরসির খসড়া তালিকা। তাঁর দেওয়া তালিকামতে, আসামের বাসিন্দাদের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখের নাগরিকত্ব অবৈধ। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে তিনি এ তথ্য দিলেন বা নাগরিকত্বের সংজ্ঞাটাই বা কী, তা নিয়ে কোনো তথ্য এখনো জানা যায়নি।
সুপ্রিম কোর্টে হাজেলা শুনিয়েছেন, আসামের অরিজিনাল ইনহ্যাবিট্যান্ট (আদি বাসিন্দা) বা ওআইদের কথা। কিন্তু কারা ওআই, তা-ও ব্যাখ্যা করেননি হাজেলা। অথচ আসাম চুক্তি অনুযায়ী ১৫ মার্চ ১৯৭৫-এর আগে থেকে যারা আসামে বসবাস করছেন, তাঁরা সবাই আসামের স্থায়ী বাসিন্দা। এরই মধ্যে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এনআরসি তালিকা প্রকাশ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এ নির্দেশ পেয়ে কট্টর বাঙালি-বিদ্বেষী বলে পরিচিত আসু ফের বিদেশি খেদাওয়ের দাবিতে সোচ্চার।
বিজেপির উসকানিতেই আসুর এ অবস্থান বলে মনে করছেন অসমের ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা। কংগ্রেসের আশঙ্কা, ৩০ লাখ মানুষের গায়ে বিদেশি তকমা লাগিয়ে দেওয়া হলে ফের অশান্তির আগুন জ্বলবে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তরুণ গগৈ সাংবাদিকদের সামনে পাল্টা প্রশ্ন করেন, নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ রাজ্যবাসী কোথায় যাবেন? নিজেদের দারিদ্র্য বা অন্যান্য কারণে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে না পারা মানুষগুলো যে কথিত বাংলাদেশি, সেই প্রমাণও তো কারও কাছে নেই। ফলে বাংলাদেশ তাঁদের কোনো অবস্থাতেই গ্রহণ করবে না। গগৈয়ের মতে, বহু গরিব মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। বন্যায় ফি বছর অনেকের ঘর-গৃহস্থালির জিনিসপত্র ভেসে যায়। তাই আইনি লড়াই ঠিকমতো লড়তে না পেরে অনেকেই নিজেদের ভারতীয়ত্ব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এঁদের গায়ে বিদেশি তকমা লাগিয়ে বিতাড়নের উদ্যোগ নেওয়া হলে রাজ্যে অশান্তির আগুন জ্বলবে। আর সেটা হলে রাজ্যের বিজেপি সরকারই দায়ী থাকবে বলে মন্তব্য করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপন বরা।
পরিস্থিতি যে খুব খারাপ, সেটা মেনে নিয়েছেন রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রাজেন গোঁহাইও। তিনি সাংবাদিকদের সামনে মন্তব্য করেন, রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষ এআরসি নিয়ে আতঙ্কিত। আসামের বরাক উপত্যকায় তো রীতিমতো পৃথক বাঙালি রাজ্যের দাবি উঠতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আসুর সভাপতি দীপঙ্ক কুমার নাথ মন্তব্য করেছেন, বাঙালি হিন্দু ও মুসলিমরা যদি একজোট হয়, তবে তো অসমিয়াদের অস্তিত্ব-সংকট দেখা দেবে। এ অবস্থায় রাজ্যবাসীর নিরাপত্তার অভয় দেওয়ার বদলে বিজেপি সরকারের পুলিশপ্রধান মুকেশ সহায় সাংবাদিক সম্মেলন করে হুমকি দেন, অশান্তি সৃষ্টির কোনো চেষ্টা বরদাশত করা হবে না। আদালতের নির্দেশ মেনেই পুলিশ কাজ করবে বলেও তিনি আগাম জানিয়ে দেন।
শিলচর থেকে মানবাধিকারকর্মী সাধন পুরকায়স্থ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসামে বাঙালিদের অবস্থা রোহিঙ্গাদের চেয়েও খারাপ। রোহিঙ্গারা শরণার্থী হয়ে অন্যত্র যেতে পারছে, আসমের বাঙালিদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। বিজেপির আমলে জেলে বসেই চিতা বা কবরেই মুক্তির প্রার্থনা তাঁদের একমাত্র ভবিতব্য।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে সংখ্যালঘুরা প্রতিবাদ করতে পারেন। এখানে কান্নাকাটিরও সুযোগ নেই। বিনা অপরাধে বাঙালি ছাত্রনেতা সুবোধ বিশ্বাসকে মাসের পর মাস জেলে আটকে রেখেছে বিজেপির পুলিশ।’
তরুণ চক্রবর্তী, ত্রিপুরা
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]