আমেরিকাসহ আরো কিছু বিদেশি শক্তি মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের মতো আরেকটি অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়- এমনই মন্তব্য ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির। তিনি আরো বলেছেন, আমেরিকা ও ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যেই সম্প্রতি ইরাকের কুর্দিস্তানে বিচ্ছিন্নতাকামী গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইরান সফররত তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের সঙ্গে এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, ‘আমেরিকাসহ পশ্চিমা সরকারগুলোকে বিশ্বাস করা যায় না এবং তারা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন একটি ইসরাইল সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’ আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, কুর্দিস্তানে গণভোট অনুষ্ঠান ছিল গোটা মধ্যপ্রাচ্যের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা এবং এটি এ অঞ্চলের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। ইরাকের প্রতিবেশী দেশগুলোতে এই গণভোটের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারেও তিনি সতর্ক করে দেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘ইরাক থেকে কুর্দিস্তানের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ঠেকাতে ইরান ও তুরস্কের উচিত সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেয়া। সেইসঙ্গে ইরাক সরকারকেও এ ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিতে হবে।’ তিনি সিরিয়া বিষয়ক আস্তানা বৈঠকে তেহরান-আঙ্কারা সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ওই সহযোগিতার কারণে সিরিয়ার পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদী ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করা যাবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাতে তেহরান ও আঙ্কারাকে নিয়ে একটি শক্তিশালী জোট গঠনের আগ্রহ প্রকাশ করেন রজব তাইয়্যেব এরদোগান। তিনি বলেন, ইরাক থেকে কুর্দিস্তানের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ঠেকাতে তেহরান, আঙ্কারা ও বাগদাদকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, কুর্দি নেতা মাসুদ বারজানি গণভোটের আয়োজন করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এদিকে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু ও মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে পর্যবেক্ষণমূলক ওয়েবসাইট মিডলইস্ট মনিটর লিখেছে, ইরাকি কুর্দিস্তানের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের যে হুমকি দিয়েছে ইরাক সরকার, তার সাথে যোগ দিয়েছে প্রতিবেশী ইরান ও তুরস্ক। ইরাকি কুর্দিস্তান ইরাক থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ব্যাপারে যে ভোট দিয়েছে সে ব্যাপারে সম্ভাব্য যৌথ পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান গতকাল তেহরানে যান। ইরান ও তুরস্ক উভয়ে কুর্দিস্তানের বিচ্ছিন্নতার ঘোর বিরোধী।
এরদোগান এ সফরে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব করছেন। ইরানের শিল্প, খনিজসম্পদ ও বাণিজ্যমন্ত্রী শরিয়ত মাদার মেহরাবাদ বিমানবন্দরে এরদোগানকে স্বাগত জানান। নিজ দেশের সীমানার মধ্যে বসবাসকারী কুর্দিদের বিচ্ছিন্নতার আশঙ্কায় ইরান ও তুরস্ক বাগদাদের সাথে মিলে ইরাকি কুর্দিস্তানের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের হুমকি প্রদানের পাশাপাশি ওই অঞ্চলের সীমান্তে ইরাকি সেনাদের সাথে সম্মিলিত সামরিক মহড়াও চালিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির খবরে বলা হয়, এরদোগানের এ সফরকালে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার, ইরাক, সিরিয়া ও ইরাকি কুর্দিস্তান পরিস্থিতিসহ আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
তেহরানে এক দিনের সফরে এরদোগান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সাথে বৈঠক করেন। এর আগে তুরস্কের সেনাপ্রধান জে. হুলুসি আকার রোববার তেহরান সফর করেন। কুর্দি নেতাদের ওপর চাপ দিতে উভয় দেশ সম্প্রতি ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলের সাথে তাদের সীমান্তে সামরিক মহড়া চালিয়েছে। এসব মহড়া ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের সেনাবাহিনীও অংশ নেয়। বাগদাদ ২৫ সেপ্টেম্বরের গণভোট বাতিল করার দাবি করছে। ওই গণভোটে ৯২.৭ শতাংশ স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেয়।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জে. আমির হাতামি মঙ্গলবার জে. আকারের সাথে বৈঠককালে বলেন, ‘ইরান, তুরস্ক ও ইরাকের মধ্যে সহযোগিতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী পদক্ষেপ রোধ করতে সহায়ক হতে পারে।
ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চল গত মঙ্গলবার ঘোষণা করে যে, তারা ১ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করবে। এর জবাবে বাগদাদ অঞ্চলটির ওপর আরো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে তারা কুর্দিস্তান ব্যাংকগুলোর ওপর অবরোধ আরোপ, সব ফাইট বন্ধ এবং ওই অঞ্চলে বৈদেশিক মুদ্রা হস্তান্তর বন্ধ করে দিয়েছে। ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকার, তার প্রতিবেশীরা এবং পশ্চিমাশক্তিবর্গ আশঙ্কা করছে যে, বিচ্ছিন্নতার পক্ষে ভোট সিরিয়ার সংঘাতের পাশাপাশি আরো বড় ধরনের আঞ্চলিক লড়াইয়ের সূত্রপাত করতে পারে যা আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে ব্যাহত করতে পারে।
কুর্দিরা হচ্ছে অঞ্চলটির চতুর্থ বৃহৎ জাতিগত গ্রুপ। ইরান, তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরাকে ছড়িয়ে রয়েছে কুর্দিরা। এসব দেশই কুর্দিদের স্বাধীনতার বিরোধী। তুরস্কে কুর্দি বিদ্রোহী পিকেকে ৩০ বছর ধরে দেশটির সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তাদের মধ্যকার অস্ত্রবিরতি দুই বছর আগে ভেঙে গেছে।
নয়া দিগন্ত
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]