ছোটবেলা থেকেই জেনে এসেছি আর বই পুস্তকে পড়ে এসেছি যে, বাংলাদেশে চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, গারো, খাসিয়া, ত্রিপুরা ইত্যাদি নামে উপজাতি বসবাস করে। কিন্তু হঠাৎ করে এখন শুনছি এরা নাকি উপজাতি নয়, এরা আদিবাসী। বিষয়টা নিয়ে একটু ভাবনা চিন্তা করা শুরু করলাম। এই বিষয় নিয়ে খোঁজ-খবরের ডালপালা বিস্তৃত করলাম। সকল তথ্য-উপাত্ত আর ইতিহাস থেকে যা জানলাম তাতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ পেলাম যে, ওরা আসলেই উপজাতি। আদিবাসী নয়। তবে আমার আজকের লেখার বিষয় উপজাতি-আদিবাসী বিতর্ক নয়। এই বিষয়ে খোঁজ-খবরের ডালপালা বিস্তার করতে গিয়ে দেখেছি যে, উপজাতি নেতারা সবসময় স্ব-বিরোধী বক্তব্য প্রদান করে থাকে। এমনই কিছু বক্তব্যই আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো।
২০১১ সালে সিলেটে এক অনুষ্ঠানে সরকারদলীয় নারী সাংসদ সৈয়দা জেবুন্নেছা হক বলেছিলেন, “আমি তো জানি উপজাতি। সারা জীবন তো এভাবেই বলে আসছি। এখন উপজাতিরা অনুষ্ঠান আয়োজন করে আদিবাসী স্বীকৃতির নামে সরকারের সমালোচনা করবে, আর আমি তো বসে থাকতে পারব না” (দৈনিক প্রথম আলো, ১০-০৮-২০১১)
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ নেয়া চাকমা রাজা ত্রিদিব রায়ের ছেলে বর্তমান চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন- “আমরা চাপিয়ে দেয়া কোনো পরিচয় মানি না। আমরা উপজাতি নই, আদিবাসী। এ দাবি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাবো” (somewhereinblog, ৩০ শে মে, ২০১১)। দেবাশীষ রায়ের এই কথার স্ব-বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়। কারণ, বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের বিশেষ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকালে চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যরিস্টার দেবাশিষ রায় ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে’ অফিসিয়ালি লিখেছিলেন যে, “বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নাই। কিছু জনগোষ্ঠি আছে”।
এ প্রসংগে, জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইকবাল আহমেদ ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে সরকার যে চুক্তি করেছে সে প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেছিলেন, চুক্তির সবখানে তারা নিজেদের উপজাতি হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে সই করেছে। সে সময় এ নিয়ে কোনো কথা তোলেননি। তাদের উপর এ পরিচয় চাপিয়ে দেয়া হয়নি। এমনকি তাদের কেউ এ নিয়ে আপত্তিও করেননি। কারণ ওখানে কোনো আদিবাসী নেই। (somewhereinblog, ৩০ শে মে, ২০১১)
জাতিসংঘের আদিবাসী দশক ঘোষণার পর ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশে যখন প্রথম আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন করা হয়েছিল, তখন সন্তু লারমা বলেছিলেন “এই দেশে কোন আদিবাসী নাই। এখানে আমরা সবাই উপজাতি। জুম্ম জনগনের আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আদিবাসী দিবস পালন করা হচ্ছে”। এ প্রসংগে সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেছিলেন, “১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদনের সময়ে আমি সন্তু লারমাকে বলেছিলাম এসময়ে উপজাতির পরিবর্তে আদিবাসী বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে ফেলি, তখনও সন্তু লারমা রাজি হয়নি। তখনও সন্তু লারমা বলেছিলেন আমরা আদিবাসী নই, আমরা উপজাতি। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তিতে প্রচলিত ‘উপজাতি’ শব্দটি বহাল রাখা হয়”।
পার্বত্য নেতাদের এরকম স্ব-বিরোধী বক্তব্য জনমনে যেমন হাস্যরসের সৃষ্টি করছে তেমনি তারা তাদের নিজস্ব অবস্থান এবং পদমর্যাদাকে উপহাসের পাত্রে পরিণত করছে। আসল কথা হচ্ছে একজন মানুষ যখন মিথ্যার পিছনে ছোটে এবং যখন সে নিজেই জানে না যে সে কি চায় শুধুমাত্র তখনই সম্ভব এ ধরনের গাঁজাখুরি আর স্ব-বিরোধী বক্তব্য প্রদান করা। নেতাদের এরুপ স্ব-বিরোধী বক্তব্য আর কর্মকান্ডের কারণে তাদেরই স্বজাতি উপজাতিরা তাদের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের এ পাগলের প্রলাপ এখন আর সরকার, জনগণ এবং মিডিয়ার কাছে গুরুত্ব পায় না।
পার্বত্য নেতা সন্তু লারমার কিছু স্ব-বিরোধী বক্তব্য নীচে দেয়া হলঃ
৪৬ বছর ধরে সেনা শাসন চলছে: সন্তু লারমা (পরিবর্তন ডট কম, ১২ নভেম্বর ২০১৬)।
পাহাড়ে সেনা শাসন চলছে: সন্তু লারমা (bbartanet, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭)
পার্বত্য অঞ্চলে এখনও সেনা কর্তৃত্ব বলবৎ: সন্তু লারমা (jagonewscom, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭)।
পার্বত্যাঞ্চলে ৪৬ বছর ধরে চলছে সেনা শাসন : সন্তু লারমা (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৩ নভেম্বর ২০১৬)
সেনা শাসনের কারণে রাষ্টের আইনগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামে অকার্যকর – সন্তু লারমা (com, ১২ নভেম্বর ২০১৬)
পার্বত্য অঞ্চলে চলছে এক ধরনের সেনা শাসন :সন্তু লারমা (ইত্তেফাক,২৪ নভেম্বর ২০১৩)
পার্বত্য অঞ্চলে সামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে সেনাবাহিনী: সন্তু লারমা (ভোরের কাগজ, ৯ নভেম্বর ২০১৬)
পাহাড়ে মানব সম্পদ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে সেনাবাহিনী: সন্তু লারমা (com, ৮ নভেম্বর ২০১৬)
একটা সময় সবাই মনে করত, জনগণের সঙ্গে সেনাবাহিনীর থাকা ঠিক নয়। কিন্তু এখন সেই ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। সেনাবাহিনী নানাভাবে দেশ ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করছে: সন্তু লারমা (প্রথম আলো, ১৯ মার্চ ২০১৫)
সেনাবাহিনী নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি জনকল্যাণে অবদান রেখে চলেছে। সারা বিশ্বে এখন এটাই চলছে। এমন কার্যক্রম শুধু আমার কাছে নয়, সব নেতা ও শিক্ষিত সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য: সন্তু লারমা (প্রথম আলো, ১৯ মার্চ ২০১৫)
সেনাবাহিনী জনকল্যাণে ব্যাপক কাজ করে চলেছে: সন্তু লারমা (নয়াদিগন্ত, ১৯ মার্চ ২০১৫)
সেনাবাহিনী সামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে: সন্তু লারমা (কালেরকন্ঠ, ৮ নভেম্বর, ২০১৬)
পাহাড়ে ক্রীড়ার উন্নয়নে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে: সন্তু লারমা (ntvbd.com, ০৯ জানুয়ারি ২০১৬)
পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করছে সেনাবাহিনীঃ সন্তু লারমা (পরিবর্তন ডট কম, ৮ নভেম্বর ২০১৬)।
সামাজিক উন্নয়নে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণঃ সন্তু লারমা (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৯ নভেম্বর ২০১৬)।
দেবাশীষ রায় ও সন্তু লারমার এই স্ববিরোধী বক্তব্য মূলত তাদের স্বার্থপর রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব ও মুখোশ উন্মোচন করে।
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]