তোমার ভূমি তোমার জীবন! আমার ভূমি কেন আমার মরণ হবে? সত্য মিথ্যা যাচাই করতে নিজের বিবেকের দরজা প্রসারিত করাটাই যতেষ্ট। নিজের বিবেক দিয়ে চিন্তা করুন পাহাড়ে কি হচ্ছে। আমি বলবো না পার্বত্য বাঙ্গালীরা খুব ভালো! তবে আপনি যতটুকু খারাপ মনে করেছেন পার্বত্য বাঙ্গালীরা ততোটুকু খারাপ নয়। আপনাকে এটা মানতেই হবে পাহাড়ের সাধারন বাঙ্গালীরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি অসহায়, সুবিধা বঞ্চিত। পার্বত্য বাঙ্গালীদের সরকার পাহাড়ে পূনর্বাসন দিয়েছে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে। পূনর্বাসন হওয়ার পূর্বে এই সমস্ত কথিত অপরাধী বাঙ্গালীরা আপনারই আশেপাশে হতে পাহাড়ে এসেছিলো। এই লোকগুলোর তখন ছিলো এবং এখনো অনেকেরই আছে আপনারই পাশে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পৈত্রিক ভিটেমাটি। পাহাড়ে সেদিন যাদের পূনর্বাসন দেওয়া হয়েছে তাদের কিন্তু পাহাড়ে রাম রাজত্ব্যে সরকারি সান-সওকতে রাখা হয়নি। এমনকি সেদিন সমতলের ভিটেমাটি ছেড়ে ভূমির লালসায় এই বাঙ্গালীরা পাহাড়ে আসেনি। আপনাকে বুঝতে হবে কখন মানুষ ইচ্ছে করে অনিশ্চিত জীবন পথ বেছে নেয়!! ১৯৭৯ তে পার্বত্য বাঙ্গালীদের সরকার পূনর্বাসনের নামে বাঘ ও সাপের ছোবলে নিক্ষেপ করেছিলো। কোনমতে একবেলা খেয়ে না খেয়ে এই সমস্ত বাঙ্গালীরা এই পর্যন্ত এসেছে জীবনের সাথে কঠোর সংগ্রাম করে। সেই সময়ে পূনর্বাসিত বাঙ্গালীর অনেকেই প্রানের ভয়ে পাহাড় ত্যাগ করেছিলো এবং উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাতে এই পর্যন্ত নিহত হয়েছে প্রায় ৩৮ হাজার। বুঝতে হবে প্রানের ভয় উপেক্ষা করে পরিবারের সদস্যের মৃত্যুর পরেও যারা এখন পর্যন্ত পাহাড়ে টিকে আছে তারা কেন আছে?
তাছাড়া সরকার কি কোন উপজাতির জমিতে পার্বত্য বাঙ্গালীদের পূনর্বাসন দিয়েছিলো? রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কি কোন ভূমি নেই? সরকার সরকারি জমিতে উপজাতিদের কোনরুপ উচ্ছেদ ছাড়াই পার্বত্য বাঙ্গালীদের পূনর্বাসন দিয়েছে। হয়তো আমার এই কথা আপনার বিশ্বাস যোগ্য নয়। তবে পার্বত্য তিনটি সার্কেলে উপজাতীয় কর্তৃত্ব্যে এবং সরকারি আইন তোয়াক্কা করে উপজাতির জমি বাঙ্গালীরা এখনো দখল করে আছে — এটা কি হাস্যকর ধারনা নয়?
তাছাড়া আপনি যদি দাবি করেন যে সংসদ ভবন আপনার জায়গায় এবং জায়গার সমস্ত ডকুমেন্টস আপনার আছে। তবে কি উক্ত জায়গা আইনগত ভাবে মালিক আপনি এবং রাষ্ট্র জায়গা আপনাকে দিতে বাধ্য নন??? অবশ্যই রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের আইন তার বৈধ মালিকের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করেছে। কিন্তু কোনরুপ ডকুমেন্টস ছাড়াই যদি বলেন যে সংসদ ভবন আপনার তবে অবশ্যই হবে সেটা পাগলের প্রলাপ।
বস্তুতঃ পাহাড়ে উপজাতিদের নিজস্ব যতেষ্ট জায়গা রয়েছে। তারা যে সমস্ত ভূমির দাবি তুলছে তা হচ্ছে মৌখিক। ওমুক পাহাড় আমার, তমুক পাহাড় তার এভাবেই রয়েছে বাঙ্গালীর ভূমির প্রতি উপজাতির অধিকার। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে মৌখিক কথায় ভূমির মালিকানা আদায় করার মধ্যে যৌক্তিকতা কতটুকু তা আমরা বিবেচনা করিনা। সেটাই আমাদের প্রধান সমস্যা। তাছাড়া ভূমি ক্রয় সূত্রে যে সমস্ত বাঙ্গালী পাহাড়ে বসতি স্থাপন করেছে তাদের আপনি কিভাবে, রাষ্ট্রের কোন আইনে পাহাড় হতে দূরে ঠেলে দিবেন?
আপনি বরিশাল, খুলনা হতে এসে ঢাকায় বাড়ি বানাতে পারবেন আর আমি পাহাড়ে বাড়ি বানাতে পারবো না এটা কেমন কথা?? রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে প্রতিটি নাগরিক ভূমি ক্রয় এবং বসতি স্থাপন করতে পারবে এটা তার নাগরিক অধিকার। তবে পাহাড় কেন ব্যতিক্রম হবে? দীপংকর, বীর বাহাদুর, কুজেন্দ্র, শন্তু লারমা, দেবাসীষ বাবুরা ঢাকাতেও বসবাস করেন। তাছাড়া উপজাতীয় অনেকেরই ঢাকা শহরে ফ্লাট বাড়ি রয়েছে। তবে কেন তাদের "সেটেলার" বলা হয় না? অথচ পাহাড়ে বাঙ্গালী বলতেই বোঝানো হচ্ছে সেটেলার!! আমি যদি পাহাড়ে সেটেলার হই ঢাকা শহরে দেবাসীষ রায়ও নিশ্চিত সেটেলার। অথচ সেটা কিন্তু বলা হয় না।
সুতরাং পার্বত্য বিষয়টা সমাধান করতে হলে সর্ব প্রথম আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গি বদলাতে হবে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে সমস্যা পর্যালোচনা করতে হবে। সমস্যা পর্যালোচনা করতে অবশ্যই রাষ্ট্রের অখন্ডতা এবং প্রতিটি নাগরিকের নাগরিক অধিকার রক্ষা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। যেদিন পাহাড়ে প্রতিটি নাগরিক তার রাষ্ট্র কর্তৃক সম মর্যাদা পাবে সেদিন পাহাড়ের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল হতে আলাদা তাই রাষ্ট্রের নীতি এখানে ব্যতিক্রম থাকবে এই চিন্তা মাথা হতে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে।
আবু উবাইদা
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]
