উপজাতি কোটা সংস্কার পূর্বক পার্বত্য চট্টগ্রামের অনগ্রসর সকল সম্প্রদায়ের জন্য বৈষম্যহীন পার্বত্য কোটা চালু করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে চাকুরির ক্ষেত্রে ৫৬% কোটা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যার মধ্যে ৫% হল উপজাতি কোটা। তাছাড়া সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপজাতি দের জন্য ২% কোটা চালু রয়েছে। পার্বত্য চট্রগ্রামে বসবাসরত মোট জনগোষ্ঠীর ৫০% বাঙালি হলেও তাদের জন্য কোন কোটার সুবিধা না থাকাই বাঙালিরা শিক্ষা ও চাকুরি কেত্রে উপজাতিদের চেয়ে দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া একই কোটা একাধিকবার ব্যবহার করার সুযোগ থাকায় যে সকল বাঙালি ছাত্র ছাত্রীরা মেধার ভিত্তিতে বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে তারা চাকুরী ক্ষেত্রে পুনঃরাই উপজাতি ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখিন হচ্ছে। ফলে উপজাতি ও বাঙালিদের মধ্যে শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে বৈষম্য প্রকট আকার ধারন করছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯(১), ২৯(১), ২৯(২) নং অনুচ্ছেদ সমুহে চাকুরী কেত্রে সকল নাগরিকদের সমান সুযোগের কথা থাকলেও একই অঞ্চলে বসবাস করে, একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করে পার্বত্য এলাকার বাঙালিরা উপজাতিদের মত কোটার সুবিধা পাচ্ছেনা। দীর্ঘ দিন ধরে এই কোটা ব্যবস্তা চালু থাকায় পার্বত্য চট্রগ্রামের বাঙ্গালিরা উপজাতিদের তুলনায় একটি অনগ্রসর জাতিতে পরিণত হয়েছে।সংবিধানের ২৯(৩) অনুচ্ছেদে অনগ্রসর নাগরিকাদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানের বিধান তাকলেও একই অঞ্চলে বসবাসরত বাঙালিদেরকে কোটার সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এই কোটার সুবিধা ভোগ করে পার্বত্য এলাকার ১৩ টি উপজাতির মধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী অগ্রসর জাতিতে রুপান্তরিত হলেও বাঙালিদের পাশাপাশি খুমি, মোরুং, তঞ্চংগা সহ বাকি উপজাতিরা অনগ্রসর রয়ে গেছে। এমতাবস্থায় পার্বত্য অঞ্চলে প্রকৃতপক্ষে অনগ্রসর জাতি কারা তা নির্ধারনের জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির সমন্নয়ে একটি কমিশন গঠন করে বৈষম্যমূলক উপজাতি কোটা সংস্কার করে সকল অনগ্রসরত সম্প্রদায়ের জন্য বৈষম্যহীন পার্বত্য কোটা চালু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
পার্বত্য কোটা নাকি অনগ্রসর কোটা?
আমার মতে সারাদেশে অনগ্রসর কোটা চালু করা হোক। পার্বত্য চট্টগ্রাম যেহেতু বাংলাদেশেরই অংশ সেহেতু এখানে আলাদা কোন কোটা সিস্টেম রাখার প্রয়োজন নাই। দেশে প্রকৃতপক্ষে যারা সুবিধা বঞ্চিত, অনগ্রসর তাদের জন্যেই দেওয়া যেতে পারে কোটা সুবিধা। তাও আবার পরিবারের সবাইকে নয়। এক পরিবার হতে একজন করে। তবেই সফল হবে কোটা পদ্ধতি। এই জন্যে প্রথমে আমাদের জরিপ করতে হবে দেশে প্রকৃত পক্ষে সুবিধা বঞ্চিত নাগরিক কারা কারা এবং তাদের মোট পরিবারের সংখ্যা কয়টি। পরিবার দেখে দেখে প্রতিটি পরিবারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিক একটি একটি করে সুবিধা দিতে হবে। এভাবে যদি দেওয়া যায় তবে আশাকরি নির্দিষ্ট একটা সময়ে দেশের হতদরিদ্র পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
পাহাড়ে পার্বত্য কোটা দাবি করে যারা আন্দোলন করছি, নিতান্তই আমরা বোকার স্বর্গে বসবাস করছি। ধরুন, পার্বত্য কোটা চালু হলো। এখন কিভাবে নিশ্চিত যে পার্বত্য বাঙ্গালীরা এই কোটা সুবিধা পাবে? ফলাফলে দেখবেন উপরটা পার্বত্য কোটা, ভেতরটা উপজাতি (তথাকথিত আদিবাসী) কোটা।
কিন্তু; দেশে যদি সঠিকভাবে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জরিপ হয় হবে প্রথম সারীতে আসবে পার্বত্য বাঙ্গালীরা। কেননা সারা দেশে জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-দীক্ষা, জীবনযাত্রা সর্বদিকে পিছিয়ে আছে পার্বত্য বাঙ্গালীরা। কেমন যেন রাষ্ট্র এবং বৈদেশিক দাতা সংস্থার নজর পাহাড়ে পড়লেই পড়ে যায় বিশেষ একটা গোষ্ঠীর উপর। রাষ্ট্র এবং বৈদেশিক সংস্থা পাহাড়ে হাজার হাজার কোটি টাকা সহায়তা করলেও পার্বত্য বাঙ্গালীর ভাগ্যে জোটেনি তার বিন্দুমাত্র লেশ। অর্থাৎ পাহাড়ে উন্নয়ন হয়েছে তবে পার্বত্য বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর নয়। এখনো পার্বত্য বাঙ্গালী রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সুবিধা বঞ্চিত নাগরিক।
এমনি ভাবে পার্বত্য বাঙ্গালীদের মতো সারা দেশে যতো সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা দারিদ্রতার অভিশাপ মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে অপরিহার্য। সরকার যদি সত্যিই দেশের উন্নয়ন চায় তবে এভাবেই একমাত্র সম্ভব। এভাবে না করে যদি চলমান কোঠা পদ্ধতি আজীবন দেওয়া হয় তবে কখনোই দারিদ্রতা মুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়।
সুতরাং রাষ্ট্রের উন্নয়নে আমি কোন বিশেষ স্থান, জাতিগোষ্ঠী, পরিবারের জন্য আজীবন কোটা সুবিধা বিধানকে সমর্থন করিনা। নিজেও প্রত্যাশা করিনা আমার পরিবারে কোটা প্রাপ্তি। যিনি প্রকৃত দাবিদার অসহায়, সুবিধা বঞ্চিত তাকেই দেওয়া হোক কোটা। সারা দেশে নির্দিষ্ট টার্গেট মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিটি পরিবারের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন পর্যন্ত অব্যহত থাকবে এই কোটা। আশাকরি এতে কোন মেধাবী ব্যক্তি অসন্তোষ হবেনা। তাকে দেওয়া সম্ভব হবে যথাযথ সম্মান। আর আমাদের পার্বত্য বাঙ্গালী ভিত্তিক সংগঠনগুলো যদি এই এই দাবিতে আন্দোলন করে তবে আমি নিশ্চিত যে সারাদেশে কোটা পদ্ধতির জাতাকলে পৃষ্ট মানুষ এবং সর্বস্থরের শিক্ষানুরাগী মানুষ তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানাবে। ঠিক তখনই পার্বত্য বাঙ্গালী অনগ্রসর হিসেবে কোটা সুবিধায় অন্তরভূক্ত হবে। অর্থাৎ তাদের বর্তমান পার্বত্য কোটা দাবিটিতে রয়েছে শুভংকরের ফাকি সেটা তাদের বুঝতে হবে। বুঝতে হবে এটাতে সারাদেশের মানুষ সমর্থন দিবে কিনা!
লেখকঃ আবু উবাইদা
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]