বৃহস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮

আবারও রক্তাক্তের পথে কি পার্বত্য চট্টগ্রাম?

রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি বান্দরবান এই তিন জেলা নিয়ে গড়ে উঠা পার্বত্য চট্টগ্রাম, যার মোট আয়তন প্রায় ৫ হাজার ৯৩ বর্গমাইল, যা আমাদের দেশের মূল ভূখন্ডের ১০ ভাগ! প্রকৃতির সৃষ্টরূপ এই পার্বত্য অঞ্চলে ১২ টি ভিন্ন ভাষাভাষি পাহাড়ি আদিবাসীর জনগোষ্ঠীর বসবাস। পাহাড়ি বাঙালি মিলিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষের মতো লোকের বাস। সর্বশেষ একটা জরিপ মনে আছে, যদি ভুল না হয় তাহলো পার্বত্য চট্টগ্রামে ৪৯ শতাংশ বাঙালি ও ৫১ শতাংশ পাহড়ি সেখানের বাসিন্দা। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভবিষ্যত কি যদি জানতে চায়, উত্তর কেউ দিতে পারবে না, পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। অর্থাৎ বঞ্চনার আরেক নাম পার্বত্য চট্টগ্রাম। আমরা কি রক্তাক্ত, যুদ্ধবিধ্বস্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম কি দেখতে যাচ্ছি? নাকি পাহাড় আবার অশান্ত হয়ে মেশিনগানের শব্দে জর্জরিত হয়ে সংঘাতের পথে হাটছে? একটি গোষ্ঠি এসবি কামনা করে, আবার ও ভূমি দখল করে, মানুষ হত্যা করে লোভের অনল ছড়িয়ে দিতে তারা মরিয়া। তিন পার্বত্য জেলা এখন সশস্ত্র চার গ্রুপের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। ভূমি যার বেশি, চাঁদা তার বেশি এই আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে সশস্ত্র চার গ্রুপ। এটাই তাদের মূল দ্বন্দ্ব। অনেকটাই খুন করার নিরাপদ এলাকা যেন এখন পাবর্ত্য চট্টগ্রাম।


শান্তি চুক্তির পর এ পর্যন্ত ২১ বছরে সশস্ত্র গ্রুপের দ্বন্দ্বে ৮ শতাধিক খুন হয় এবং ১৫শ’ গুম হয়েছে। আগে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার ও ভাগবণ্টন নিয়ে খুনখারাপি হলেও এখন আগামী নির্বাচনে কে কোন দলে যাবে তাই নিয়েই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। তার চাইতে বড় কথা প্রতিশোধ, পাহাড়ে একটা রীতি চালু তাহলো লাশের বদলা ডাবল লাশ। এক গ্রুপ ব্রাশফায়ার করলো ৫ জন মারলো অপর গ্রুপ ১০ জন মারবে যেভাবেই হোক। পাহাড়ের জনপদে এখন অস্ত্রের ঝনঝনানি। কোথায় কখন কার লাশ পড়ে সেই আতংক সবার মনে পাহাড় যে বারবার অশান্ত হয় তা এসবের ধারাবাহিকতায়। একটি খুনের রেশ না কাটতেই হচ্ছে আরেক খুন। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) নেতা শক্তিমান চাকমাকে হত্যা এবং পরদিন তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে রাঙামাটিতে একটি মাইক্রোবাসে গুলি চালিয়ে পাঁচজনকে হত্যা করেছিল। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, স্থানীয় রাজনৈতিক কোন্দলসহ নানা কারণে খুন-খারাপিতে জড়িয়ে পড়ছে পাহাড়ের সশস্ত্র আঞ্চলিক চার সংগঠন। এসব ঘটনায় যেমন খুন হচ্ছেন রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধি, আবার এসব ঘটনায় সন্দেহের তীর গিয়ে পড়ছে তাদের ওপরেই।

পাহাড়ে রক্তের দাগ শুকায় না, পাহাড় রক্ত ছাড়া কথা বলে না। পাহাড় যেমন সুন্দর তেমনি পাহাড়ের মানুষ ও সুন্দর। কিন্তু এখন পাহাড় ভয়ংকর, যে ভয়ংকররূপী ছিল পার্বত্য শান্তিচুক্তি আগে ঠিক তেমনি। পাহাড়ে এখন ব্রাশ ফায়ার ছাড়া বিচার নেই, লাশের বদলা লাশ, ভ্রাতৃঘাতী হয়েছে সংগঠন গুলো। যা সর্বশেষ ৭ জন নিহত স্বনির্ভর এলাকায়। এই রক্ত এখন প্রতিশোধে মরিয়া, যা সংগঠন গুলো পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে যেন মিটাতে চাইছে। যা থেকে সুযোগ নিচ্ছে সেই দেশ বিধ্বংসী নিষিদ্ধ সংগঠন গুলো। এখনি প্রশাসনের উচিত এসব থামানো।

এসময়ে দরকার শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন তাহলে সংঘাত কমবে। আস্থা বাড়বে সরকারের উপর। আর যদি সরকারের উদাসীনতা আর প্রতিশ্রুতির ডালপালা ছড়ায় তাহলে পাহাড়ে সংঘাত নিশ্চিত। এই বাংলাদেশে পাহাড়ি বাঙালি সবাই এক, দেশ আমাদের বাংলাদেশ।

নয়ন চক্রবর্ত্তী, সংবাদকর্মী, চট্টগ্রাম

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]