গত ১৬ অক্টোবর বুধবার ও পরদিন ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুই দিন ব্যাপী পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের আয়োজনে ও রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সহযোহিতায় অনুষ্ঠিত দুটি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভায় উপস্থিত ছিলেন না পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)’র সভাপতি, তৎকালীন শান্তি বাহিনী প্রধান ও বর্তমান পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা। এমনকি দুটি সভাতেই উপস্থিত ছিলেন না তার কোন প্রতিনিধিও। উক্ত সভাগুলোতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য ও টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার, নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিজিবি মহাপরিচালক, সেনাবাহিনীর এরিয়া কমান্ডার, র্যাব প্রধানসহ দেশের উচ্চ পর্যায়ের আইন শৃঙ্খলা বাজিনীর প্রধানগণ উপস্থিত থাকলেও সন্তু লারমার অনুপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে পাহাড়ে এক ধরণের ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, পাহাড় নিয়ে সরকারী যেকোন সিদ্ধান্তে সব সময় সরব ও সরকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া সন্তু লারমা কেন অতীব গুরুত্বপূর্ন বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভায় উপস্থিত থাকেন নি?
১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবারের সভায় চাকমা সার্কেল ব্যারিষ্টার দেবাশীয় রায় কর্তৃক ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিশেষ সভায় দাওয়াত দরকার ছিল’ এমন মন্তব্যের পর সভার সভাপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং বলেন, “সন্তু লারমা মহোদয়কে পার্বত্য মন্ত্রনালয় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে এবং তাকে বলা হয়েছে তিনি যেন এখানে উপস্থিত থাকেন, আর কোন কারনে যদি তিনি উপস্থিত থাকতে না পারেন তাহলে তার যেন প্রতিনিধি পাঠান। কিন্তু তিনি তো আসেননি, তার কোন প্রতিনিধিও পাঠাননি এটা খুব দু:খজনক।” এসময় বীর বাহাদুর বলেন, তিনি আরো জানান, সরকারি অনুষ্ঠানে তার বা প্রতিনিধির অনুপস্থিতির বিষয়টি সরকারের উচ্চ মহলে অবহিত করা হবে।
উল্লেখ্য, পাহাড় নিয়ে সরকারী যেকোন সিদ্ধান্তে সব সময় সরব ও সরকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া সন্তু লারমার বিরুদ্ধে সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছিল যে, সন্তু লারমা জাতীয় কোন দিবসে শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধে যান না, এমনকি গত ২০১৮ সালে রাঙামাটিতে এক জনসভায় তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেছিলেন, সন্তু লারমা বাংলাদেশের নাগরিক নন এবং তার কাছে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। কিন্তু সন্তু লারমা আর্থিকসহ রাষ্ট্রীয় অন্য সকল সুযোগ-সুবিধাও তিনি ভোগ করে চলেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রায় সব সভায় প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে অস্থিতিশীল বক্তব্য দিয়ে পাহাড়কে পুনরায় অস্থির করে তুলতে চাওয়া সন্তু লারমার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবৎ পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিচালিত হওয়া শান্তি বাহিনীকে আত্নসমর্পনের মাধ্যমে পাহাড়ে স্থায়ী আনয়নে ১৯৯৭ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাথে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন। শান্তি চুক্তির ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার আন্তরিকতার সহিত চুক্তির সকল ধারা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করে গেলেও সন্তু লারমা চুক্তি অনুযায়ী তার সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধ না করে উল্টো চুক্তি ভঙ্গ করে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারী টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারে বিষয়টি সন্তু লারমা স্বীকারও করেছেন।
প্রসঙ্গত, সন্তু লারমার জন্ম ১৯৪৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি জেলার মহাপুরম এলাকায়। তার পিতার নাম চিত্তকিশোর চাকমা, মাতা সুভাষিণী দেওয়ান। তিনি অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মহাপুরম জুনিয়র হাই স্কুলে পড়েন। ১৯৫৯ সালে রাঙামাটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর চট্টগ্রামের স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে আই এ এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বি এ পাস করেন। ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম এ পাস করেন। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধের পানিতে মহাপুরম এলাকা ডুবে যাওয়ায় সন্তু লারমাদের পরিবার খাগড়াছড়ির পানছড়িতে আবাস গড়ে তোলেন। ১৯৭২ সালে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন সন্তু লারমা। তার ভাই মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ছিলেন এর সাধারণ সম্পাদক। ১৯৭৩ সালে তারা সংগঠনের সামরিক শাখা শান্তিবাহিনী গঠন করে পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাস শুরু করেন। এসময় সংগঠনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে সমঝোতা হলেও ১৯৮২ সালে অপর গ্রুপের আক্রমণে নিহত হন মানবেন্দ্র লারমা ও আরো আটজন (কথিত রয়েছে নেতৃত্বের লোভে সন্তু লারমা তার ভাই মানবেন্দ্র নারায়ন লারমাকে হত্যা করেছেন)। সন্তু লারমা দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন। সে বছর অনুষ্ঠিত সংগঠনের জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়, যার সভাপতি নির্বাচিত হন সন্তু লারমা। সেই থেকে অদ্যাবধি তিনি দলটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি
সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
·
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস
ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত
বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও
সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও
প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায়
শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে
ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]