বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৯

সম্ভাবনাময় নাইক্ষ্যংছড়ির স্থলবন্দর ও সীমান্ত হাট


প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সাথে বান্দরবানে হতে যাচ্ছে স্থলবন্দর ও সীমান্ত হাট। জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে খ্যাত ঘুমধুম আর চাকঢালার সুবিধাজনক স্থানে স্থলবন্দর বা সীমান্ত হাট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। স্থলবন্দর আর সীমান্ত হাট চালু হলে ভারতের চেয়ে সুবিধা জনক ভাবে মিয়ানমারের সাথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বাড়বে বাংলাদেশের এমনটি মনে করছেন সীমান্তের ব্যবসায়ী ও সচেতন নাগরিকরা। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের বৃদ্ধির পাশাপাশি বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে এখানে। সঠিক স্থানে এই স্থলবন্দর স্থাপন হলে উপকৃত হবে পার্বত্য এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠি।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক এখন দৃশ্যমান। দোহাজারী থেকে ঘুমধুমে যাওয়ার জন্য রেল লাইন প্রকল্পের কাজও রামু উপজেলায় চলমান রয়েছে। অন্যদিকে রামু আরাকান সড়ক থেকে চাকঢালায় সরাসরি ১৮ কি.মি. সড়ক রয়েছে। বাকী কিছু জায়গায় ব্রিজ ও রাস্তা নির্মিত হলে মিয়ানমারের সাথে সরাসরি যাতায়ত করা সম্ভব হবে।
দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মিয়ানমারের সাথে বাণিজ্যের জন্য স্থলবন্দর ও সীমান্ত হাট স্থাপনের প্রানের দাবি ছিল পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠির।২০১৭ সালের মার্চে তৎকালীন সরকারের নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহাজাহান খান ঘুমধুম ও চাকঢালা আমতলীমাঠ সফরে গিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় স্থলবন্দর ও একটি সীমান্ত হাট স্থাপনের আশ্বাস দেন। পরে পার্বত্য এলাকায়প্রবাহমান নদীসমূহের সীমানা নির্ধারণ নাব্য হ্রাস এবং মিয়ানমার সীমান্তে স্থলবন্দর ও বর্ডার হাট স্থাপনের সম্ভাব্য করণীয় নির্ধারণী বৈঠকে বান্দরবানে স্থলবন্দরস্থাপনের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এর পর থেকে স্থলবন্দর নিয়ে বাড়তে থাকে মানুষের আগ্রহ। এই স্থলবন্দর স্থাপন হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ইতিহাসে রচিত হবে সম্ভাবনার আরেক নতুন দিগন্ত।

বর্তমানে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মাছ, আদা, সুপারি, মাষকলাই, আচার, শুকনো বরই, তেঁতুল, শিমের বীজ, বিভিন্ন প্রকার ডাল, ছোলা, মসলাজাতীয় পণ্য, শুঁটকি মাছ, বাঁশ, বেত, রাবার, কাঠ আমদানি করেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে সিমেন্ট, রড, প্রসাধনসামগ্রী, অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রী ইত্যাদি রফতানি হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খায়রুল বাশার এই প্রতিবেদককে বলেন, ভারত যেমন আমাদের প্রতিবেশী দেশ, তেমনি মিয়ানমারও আমাদের প্রতিবেশী। ইতিহাস বলে, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মিয়ানমার সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিল। উদাহরণ হিসেবে তিনি সম্প্রতি যখন ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ঠিক সেই সময় মিয়ানমার বাংলাশকে পিয়াজ রফতানি করার উদাহরণ তুলে ধরেন। এছাড়া রমজানে ছোলা রফতানিতে মিয়ানমারের ভূমিকা প্রশংসনীয়।

অন্যদিকে ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে মিয়ানমারও বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য করতে আগ্রহী। এই কারণে ঘুমধুমে স্থলবন্দর চালু হলে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে মনে করে প্রবীণ এই রাজনৈতিক নেতা।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় জাতীয় মানের উন্নয়ন হয়েছে। এখানকার মানুষের প্রাণের দাবি স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার জন্য নৌপরিবহন ও পার্বত্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। পার্বত্য জনগোষ্ঠির সুবিধার্থে নাইক্ষ্যংছড়িতে স্থলবন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলে পাল্টে যাবে আশপাশ এলাকার চিত্র।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, ঘুমধুম নোয়াপাড়া, তুমব্রু তেঁতুল গাছতলা কিংবা তুমব্রু বাজারের উত্তর পাড়া হয়ে বাইশফাঁড়ি পর্যন্ত ৩টি স্থানের যেকোন একটি অংশ স্থলবন্দর স্থাপনের জন্য উপযোগী। এছাড়া নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউনিয়নের চাকঢালা আমতলী মাঠ এলাকায় সীমান্ত হাট হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা এগিয়ে রেখেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এব্যাপারে জানতে চাইলে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি বলেন,ঘুমধুমে স্থলবন্দর ও নাইক্ষ্যংছড়িতে সীমান্ত হাট চালুর প্রক্রিয়াটি ২০১৭ সালে পরিদর্শন করেছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী। তৎসময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদনও দেওয়া হয়েছিল। তবে স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা কার্যক্রম এর পর আর আগায়নি।

বান্দরবান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম-সম্পাদক লক্ষী পদ দাশ বলেন, কৃষি, শিল্প, জ্বালানি পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সাথে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তে সংকুচিত বাণিজ্য সম্ভাবনা এগিয়ে নিতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় স্থলবন্দর ও সীমান্ত হাট ভূমিকা রাখবে।

লেখক : মো: আবুল বাশার নয়ন, বান্দরবান

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]