বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যা স্বীকার করুন : ৭ নোবেলজয়ীর আহ্বান

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সহ নৃশংস অপরাধের বিচারে আর কিছুক্ষণের মধ্যে হেগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়াচ্ছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি। এ আদালতে তিনি তার দেশের সেনাবাহিনীর পক্ষ অবলম্বন করছেন। এ জন্য সারা বিশ্ব থেকে তার দিকে বাঁকা চোখে তাকাচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর হলো, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সহ চালানো অপরাধ প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিতে অং সান সুচির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাতজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। তারা হলেন ২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইরানের শিরিন এবাদি, ২০১১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী লাইবেরিয়ার লিমাহ গোউই, ২০১১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইয়েমেনের তাওয়াক্কাল কারমান, ১৯৭৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নেদারল্যান্ডের মেইরিড মাগুয়েরে, ১৯৯২ সালে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী গুয়েতেমালার রিগোবার্তা মেনচু তুম, ১৯৯৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী জোডি উইলিয়ামস এবং ২০১৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ভারতীয় কৈলাশ সত্যার্থী। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা ইউএনবি।

এই সাত নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এক বিবৃতিতে বলেছেন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির প্রতি আমাদের আহ্বান রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যা সহ সব অপরাধ প্রকাশ্যে স্বীকার করুন। যে অপরাধ ঘটানো হয়েছে তার জন্য সেনা কমান্ডার সহ অং সান সুচিকে অবশ্যই ফৌজদারি অপরাধের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। তারা আরো বলেছেন, শান্তির পক্ষের মানুষ হিসেবে আমরা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে পর্যায়ক্রমিক বৈষম্য চালানো হয় তা নিরসনের আহ্বান জানাচ্ছি সুচির প্রতি।

একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের অধিকার, ভূমির মালিকানার অধিকার, মুক্তভাবে চলাচলের অধিকার ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। রোহিঙ্গাদের প্রতি সুচির ব্যক্তিগত ও নৈতিক দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করছি। একই সঙ্গে তার নজরদারির অধীনে গণহত্যার বিষয়টি স্বীকার করতে এবং এর নিন্দা জানাতে অনুরোধ করছি। 

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন প্রদেশে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের চৌকিতে হামলা চালায় উগ্রপন্থি আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’র (আরসা) সদস্যরা। এতে কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। এর পরই সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস নির্যাতন শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধরা। গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা সহ এমন কোনো অপরাধ নেই, যা সেখানে ঘটায় নি তারা। রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো অগ্নিকু-ে রূপ নেয়। সন্তান, স্বামীর সামনে ধর্ষণ করা হয় নারীদের। এমন ভয়াবহতায় জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসে কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু সেনাবাহিনীর নৃশংসতার অভিযোগ যেমন সেনাবাহিনী প্রত্যাখ্যান করেছে, তেমনি যাকে মানবতার প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হতো সেই অং সান সুচি পর্যন্ত এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। ফলে তার এমন অবস্থানের কারণে ওই সাত নোবেলজয়ী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তারা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করে হেগের আদালতে করা মামলার প্রশংসা করি আমরা। একই সঙ্গে ওইসব অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের জন্য ন্যায়বিচারের জন্য অগ্রসর হওয়ার জন্য তাদের প্রশংসা করি। উল্লেখ্য, ৫৭ জাতির সংগঠন ওআইসির পক্ষে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মামলা করে আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া। এর কয়েকদিন পরেই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি) ঘোষণা করে যে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের তদন্ত করবে তারা। ওদিকে বিবৃতি দেয়া সাত নোবেল বিজয়ীর মধ্যে তিনজন ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কক্সবাজারে শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। এ সময় শতাধিক রোহিঙ্গা নারীর নির্যাতনের কাহিনী তারা শুনে গেছেন।

সু চির প্রয়াত স্বামী ও সন্তানেরা বিদেশি নাগরিক হওয়ায় সংবিধান অনুসারে তিনি রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না; তাই তিনি নবপ্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা পদটি গ্রহণ করেন যা কিনা প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধানের সমান।

আধুনিক মায়ানমারের জাতির জনক অং সান এবং খিন চির কন্যা সু চির জন্ম হয় ব্রিটিশ বার্মার রেঙ্গুনে। ১৯৬৪ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও ১৯৬৮-তে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক অর্জন করার পর তিনি জাতিসংঘে তিন বছর কাজ করেন।

১৯৭২ সালে মাইকেল অ্যারিসকে বিয়ে করেন এবং তাদের দুই ছেলে হয়। ১৯৮৮-র গণআন্দোলনের সময় সু চি সবার নজর কাড়েন এবং ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) সাধারণ সম্পাদক হন।

সেসময় সদ্যগঠিত দলটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সামরিক জান্তার বিরোধী অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:

·      পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা

·     পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস


[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]