বাংলাদেশ যে রিফিউজি লোকদের হাতেই একপ্রকার গঠিত হয়েছে, একথা শুনলে হয়ত অনেকের কাছে অবাক লাগবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওগ্রাফির প্রফেসর ড. এ এফ এম কামাল উদ্দিনের একটি গবেষণা প্রবন্ধে দেখা যায় ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৫১ সালের মধ্যে প্রায় ৭ লক্ষ ভারতীয় বর্তমান বাংলাদেশে রিফিউজি হিসেবে এসেছে। ১৯৫১ সালের আদমশুমারিতে সেটা উল্লেখিত হয়েছে। এরপর ১৯৫০ সালের কলকাতা দাঙ্গায়, ১৯৬১ সালের মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশে মুসলিম নিধন, ১৯৬২ সালে আসামে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা, এবং ১৯৬৪ সালে কলকাতা দাঙ্গায় লক্ষ লক্ষ ভারতীয় মুসলিম আমাদের এখানে চলে আসে। কেবল ১৯৬৪ সালের কলকাতা দাঙ্গায় ৮ লক্ষ মুসলমান পূর্ব-পাকিস্তানে পালাতে বাধ্য হয়। ১৯৬৭ সাল নাগাদ আরো ৫ লক্ষ ৪০ হাজার রিফিউজি আসে, যাদের অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা। (১) বাংলাদেশের নামকরা শিল্পপতি, একাডেমিক, সাহিত্যিক, শিল্পী এদের বড় অংশ রিফিউজি।যদিও তাঁরা সেই পরিচয় দেননা। রিফিউজি শুনতে কি ভাল লাগে? এলিটিজম থাকে? বলা হয়ে থাকে বিহারীরা না আসলে রেলের চাকা চলত না পূর্ববাংলায়। সমস্যা হচ্ছে, আমরা ক্রমাগত ভারতীয়দের ইউকিপিডিয়া নির্ভর বানোয়াট প্রোপ্যাগান্ডায় এতটাই আচ্ছন্ন যে, এসবের দালিলিক প্রমাণ তালাশ করতে অভ্যস্ত নই।
যাই হোক, প্রথম দিকে রিফিউজিদের দ্বারা সাম্প্রদায়িকতার কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা অনেকাংশে ভারতে দাঙ্গার প্রতিক্রিয়া। এই রিফিউজিরা বাংলাদেশ সমাজের সাথে মিশে গেছেন। আমরা আলাদা করে তাঁদের চিহ্নিতও করিনা। বিহারীদের ব্যাপারটা স্বতন্ত্র। ৬৪ সালের পর থেকে আমাদের এখানে বড় কোন দাঙ্গা হয়নি। ৭১ এর ঘটনাকে আলাদা রাখছি এখানে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হবার পরে এখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা একেবারেই হয়নি বলা চলে। তবে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর বিভিন্ন সময়ে ভূমি দস্যুরা নির্যাতন চালিয়েছে, এখনো এরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায়। এরকম ভূমি দস্যুতার শিকার, নিপীড়নের শিকার দেশের মুসলমান জনগোষ্ঠীও।
পশ্চিমবঙ্গে যে এন্টি-মুসলিম বয়ান সারফেসিং করতেছে, কারা করতেছে? তপন ঘোষের মত রিফিউজিরাই কিন্তু। এদের সাথে তেল ঢালতেছেন আমাদের দেশের মহামান্য রানা দাস গুপ্তরা। আমাদের আবুল স্যার ঐতিহাসিক এই বাস্তবতার দিকে খেয়াল না করেই বিশাল এক 'গবেষণা' ফেঁদে ফেললেন। বলে বসলেন, ১ কোটির বেশি হিন্দু নাকি 'মুসলিম নির্যাতনে' ভারতে চলে গেছে। তাহলে দেশটা যে ভাগ হল, এত এত মানুষ যে দুই পাড়ে শরণার্থী হল, সেটা কি গোলাপ ফুলের মালার বিনিময়ে হল?
নোটঃ
(১ AFM Kamaluddin (1985), Refugee Problems in Bangladesh in Kosinski, L.A. and Elahi, K.M. (ed.) Population Redistribution and Development in South Asia, pp.221-236, D. Reidel Publishing Company, 1985
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা সমূহ:
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙ্গালী গণহত্যা
· পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাহত্যার ইতিহাস
[লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে? তাহলে দয়াকরে গবেষণামূলক ও ইতিহাস ভিত্তিক এই সাইটটি চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার বঞ্চিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী সাইটটি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার কতৃক চরমভাবে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত, পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ঠ এনজিও সমূহের একচোখা নীতি, সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) 'এর নিপিড়িত, নির্যাতিত ও বর্বরতম সন্ত্রাসের নির্মম ও অসহায় শিকার - পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রতম এক প্রয়াস]